মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর ২০২৪ | ২০ কার্তিক ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

কিশোরীদের দেখা একাত্তরের ভয়াবহ স্মৃতি

মধুবন্তী ডায়েসের গল্প

[২] হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত। নদী পার হয়ে আমরা কেউ আর হাঁটতে পারছি না। পেটে ক্ষুধা আছেই। নদী পার হয়ে দেখি কোন বাড়িঘর নেই। চারদিকে সবুজ আর সবুজ। একটু দূরে কয়েকটা ছোট ছোট চালা। বুঝতে পারলাম এটা কোন একটা বাজার। নির্দিস্ট দিনে, নির্দিস্ট সময়ে হাট বসে। ঐখানেও কোন খাবার পাওয়া যাবে না। দেখি সামনে মানুষ নদী থেকে পানি পান করছে। আমিও গেলাম এবং নদী থেকে পানি পান করলাম। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। পানি পান করার পর মনে হল ভেতরটা ঠান্ডা হয়েছে। শরীরে একটু শক্তি ফিরে এসেছে। আরও কিছুক্ষণ বসে আছি। একটু পর দেখি, দুই তিনজন লোক এগিয়ে আসছে, একজনের মাথায় মাটির কলসি আর একজনের মাথায় অনেক বড় একটা সিলভারের গামলা। আমাদের কাছে এসে দাঁড়ালেন, সঙ্গের লোকটি বললেন, এই নেন, আপনারা একটু খেয়ে পানি পান করেন। দেখি মুড়ি, আমরা সবাই খেলাম। এতজনের মধ্য থেকে একজন জানতে চান, আশে পাশে কোন বাড়িঘর নেই, নেই কোন লোকজন, আপনি এত খাবার কোথা থেকে নিয়ে এলেন। ঐ লোকটি তখন বললেন, যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে তখন থেকেই দেখি, এদিক দিয়ে শত শত লোক নদী পার হয়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যায়, সবাই ক্লান্ত থাকে। একদিন দেখি সকালে কয়েকজন লোক আধা মরার মতন পড়ে আছে, আমি তাদের খাবার খাওয়াই। তারপর তারা সুস্থ হয়ে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যায়। তার পরদিন থেকে আমি মুড়ি আর পানি নিয়ে আসি। প্রতিদিন তিনবার মুড়ি আর পানি আনি। আর নৌকা দিয়ে লোক পার করার জন্য আমরা চারজন লোক রেখেছি । আমার বাড়ি ঐখান থেকে প্রায় এক মাইল দূরে। লোকটির নাম কি, কি তার পরিচয়, তা কিছুই জানতে পারিনি। তখন এসব জানার মতন মনমানসিকতা ছিল না।

মুড়ি পানি খেয়ে আবার হাঁটতে শুরু করি। কিছুক্ষণ হাঁটার পর আবার গরুর গাড়ি পেলাম। গরুর গাড়ি চলছে তো চলছেই। মাঝে তিন জায়গায় গাড়ি থেমেছে। কিন্তু আমরা নামছি না। না নামার কারণও ছিল, কারণটা হল, আমরা এতই ঠাসাঠাসি করে গাড়িতে বসে আছি যে, নড়ার শক্তি নেই। নামলে পরে যদি আবার উঠে বসতে না পারি, তাই আমরা আর নামি নি। গাড়ি চলছে, আর একেক জন একেক গল্প বলছে। এত কস্টের মাঝেও হাসি আটকে রাখতে পারছে না কেউ। এত দু:সময়েও মানুষ যে এত সুন্দর করে কথা বলতে পারে, আর মানুষকে এত আনন্দ দিতে পারে, সেই দিন ঐ গরুর গাড়ি দিয়ে না গেলে তা কোন দিনও বুঝতে পারতাম না। সেই দিনের সেই সময় থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমার জীবনে আরও কত দেশ বিদেশ ঘুরেছি কিন্তু সেই দিনের সেই জার্নির কথা আমি কখনো ভুলিনি এবং আর ভুলবোও না। যদিও সেই সময়টা খুব খারাপ ছিল। কিন্তু দুই তিনজনে সেই খারাপ সময়টাকে কেমন করে যে ভাল করে দিয়েছিল। তারা তো সত্যিই খুব ভাল, বুদ্ধিমান, তাই না। সেই জার্নিটা খুব মিস করি। যখন মনে হয় সেই দিনের কথা, তখনই নিজের অজান্তে চোখের পাতায় ভেসে উঠে সেই স্মৃতি। একেই হয়ত বলে ফেলে আসা দিন।

দেখতে দেখতে কখন যে সন্ধ্যা নেমে এসেছে টেরই পাইনি। সন্ধ্যার পরও গাড়ি চলছে, কারণ, পুরো আকাশ জুড়ে পূর্ণিমার চাঁদটা ঝলমল করে উঠেছিল। আর যে গরুর গাড়ি চালাচ্ছিল, সে-ও নিজের দায়িত্ব নিয়ে চালাচ্ছে এবং আনন্দের সঙ্গেই চালাচ্ছে। সে বুঝতে পেরেছিল, আমরা মহাবিপদে পড়ে আছি। সে শুধু গাড়িই চালায় নি, মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসাও করতেন যে, আপনাদের কারো কিছু লাগবে, আপনাদের কি কোন সমস্যা আছে? যদি কিছু প্রয়োজন হয় তবে আমাকে বলবেন, যদি কোন সমস্যা হয় আমাকে স্মরণ করবেন। আমি সব সময় হাজির আছি। একেক বার একেক কথা বলছে আর একেকটা গানের দুই চার লাইন গেয়ে আবার চুপ। হঠাৎ আবার গলা ছেড়ে জোড়ে আওয়াজ করে গেয়ে উঠে। তার গাওয়া কয়েকটি গানের লাইন আমার বেশ মনে আছে। এবং সেই গানগুলো আমার খুব প্রিয়। এখনও মাঝে মাঝে থেকে থেকে সেই গানগুলি শুনি। যখন একা থাকি, বা কখনো মন খারাপ হয়, তখন বারান্দায় গিয়ে একাকী বসে বসে গুন গুন করে গানগুলি গাই। তখন আমার মন ভাল হয়ে যায়। কখনো কখনো মন চায় সেই দিনটা যদি ফিরে আসতো, তবে যুদ্ধ না নিশ্চয়ই।

রাত তখন দশটা কি এগারটা বাজে। গাড়ি থেমে গিয়েছে। ড্রাইভার জানালেন, আমরা এসে গিয়েছি। একে একে সবাই গাড়ি থেকে নামছি। আমাদের মাঝ থেকে একজন গাড়ি থেকে নামার সময় মাটিতে পড়ে গিয়ে ব্যথা পায়। তখন সবাই তার জন্য কতই না ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে। দাঁড়িয়ে দেখছি আর মনে মনে ভাবছি, কেউ কাউকে চেনে না, জানে না, তারপরও তার জন্য সবাই কত ব্যস্ত । এখন সেই দিনটা আর আগের মতন নেই। বিশ্বাস করতেই ইচ্ছে করে না। মনে মনে ভাবি সত্যিই কি এটি বাস্তব ছিল নাকি স্বপ্নের মাঝে দেখেছিলাম।

ঐ রাতে আরও কিছুদূর হাঁটার পর আস্তে আস্তে সবাই ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি আর সেই ফুটন্ত উজ্জ্বল চাঁদটাও আস্তে আস্তে জ্যোতি কমে যেতে যেতে এক সময় আঁধারে হারিয়ে গিয়েছে, নেমে এসেছে অন্ধকার। তখন আর হাঁটা সম্ভব হচ্ছে না। তারপর একটু সময় হাঁটি। কিছুক্ষণ হাঁটার পর একটা বাড়ি পাওয়া গিয়েছে। সেই বাড়িতে একটা ঘরে টিম টিম করে কুপি বাতির আলো জ্বলছে। তাই দেখে বুঝতে পারি এটা একটা বাড়ি। আমরা সেই বাড়ির কাছাকাছি গিয়ে সবাই যেমন ক্ষুধার্ত তেমনি ক্লান্ত। আমরা ফিস ফিস করে কথা বলি। তারপরও আমাদের অনেক মানুষের ফিসফিসানি শুনে সেই ঘর থেকে একজন বৃদ্ধা মহিলা লাঠি হাতে নিয়ে বাহির হয়ে এল, জিজ্ঞাসা করে আমরা কারা। আমাদের এখান থেকে একজন সব খুলে বলে। তখন ঐ বুড়ি আমাদেরকে জায়গা দিয়েছে আর একটা কথা বলি, তখন এই গভীর অন্ধকার রাতে অজানা অচেনা পথ দিয়ে যখন হেঁটে যাচ্ছি তখন কিন্তু জঙ্গলের হিংস্র প্রাণীর ভয় ছিলনা আমাদের। ভয় ছিল মানুষের, মানুষের ভয়ে আমরা গভীর জঙ্গলে রাতের আঁধারে হিংস্র প্রাণির কাছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এটা চিন্তা করলে মনে হয় পুরো পাকিস্তানিদেরকে কিছু একটা করে ফেলি।

এভাবেই আমরা এক সময় আমাদের গন্তব্যস্থানে এসে পৌঁছালাম। দাদার বাড়িতে এসে দেখি অনেক বড় বাড়ি না হলেও, বাড়িটা বেশ সুন্দর। গ্রামের বাড়ি সাধারনত: এত সুন্দর পরিপাটি থাকে না। বাড়ি ভর্তি লোকজন। আমাদেরকে পেয়ে সবাই বেশ খুশি। খুব সহজেই আপন করে নিয়েছে তারা আমাদেরকে। বাড়ির সকলের বিশেষ করে দাদার আন্তরিকতা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। সে যে সন্তানকে কত ভালবাসে তা বুঝতে একটুও সময় লাগেনি। কিন্তু দু:খ একটা আছে, থাকবেই। সেই দু:খ দাদা কখনো আমাদের প্রকাশ করেন নি। কথাবার্তা, চলাফেরা থেকে। আব্বার ঘরটায় আমরা থাকতাম। যাক এসব কথা।

গ্রামে যাওয়ার পর প্রাণ খুলে চলাফেরা করতে পারছি। গ্রামে কোথাও ভয় আতংক নেই। পুরো গ্রাম জুড়ে চলাফেরা করছি, কি যে ভাল লাগছে, তা বলে বুঝানো যাবে না। তবে শহরের কথা সব সময়ই শুনা যাচ্ছে, গ্রামে আলোচনা করে সবাই। দেখতে দেখতে বেশ ক’টা দিন ভালভাবেই কেটে গিয়েছে।ঐখানে গিয়ে আমার বয়সি আরও চাচাতো বোন পেলাম, দুই চাচার ঘরের তিনজন। তাদের নাম পারুল, নার্গিস আর রেনুকা। তারাও আমাদেরকে বেশ আপন করে নিয়েছে। আশপাশের বাড়ির আরও অনেক ছেলেমেয়ে আছে আমার বয়সি। সকলের সঙ্গেই মিলেমিশে আছি।

লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক

Header Ad

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল

ছবি: সংগৃহীত

তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) সম্প্রতি আরও ২৯ জন সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট পেশার ব্যক্তির প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। রোববার (৩ নভেম্বর) পিআইডির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

আদেশে বলা হয়, প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন নীতিমালা অনুযায়ী এই সাংবাদিকদের স্থায়ী এবং অস্থায়ী অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। বাতিল হওয়া কার্ডধারীদের মধ্যে আছেন বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমের সম্পাদক, সংবাদ প্রধান এবং বিশেষ প্রতিনিধি।

কার্ড বাতিল হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন টিভি টুডের প্রধান সম্পাদক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ২৪-এর হেড অব নিউজ রাহুল রাহা, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান নুরুল আমিন প্রভাষ, দৈনিক ডেসটিনির উপ-সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিবিসি নিউজের প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, সময় টিভির সিইও আহমেদ জোবায়ের, দৈনিক জাগরণের সম্পাদক আবেদ খান, এবং নিউজ২৪-এর সিনিয়র রিপোর্টার জয়দেব চন্দ্র দাস।

এছাড়া, নাগরিক টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক দীপ আজাদ, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী জ.ই. মামুন, বাসসের উপপ্রধান বার্তা সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি হোসনে আরা মমতা ইসলাম সোমা, দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি হায়দার আলী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি, দৈনিক পূর্বকোণের ঢাকা ব্যুরো প্রধান কুদ্দুস আফ্রাদ, বৈশাখী টিভির প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের অ্যাসাইমেন্ট এডিটর নাজনীন নাহার মুন্নী, ফ্রিল্যান্সার নাদিম কাদির, বাসসের নগর সম্পাদক মধুসূদন মন্ডল, এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির প্রধান বার্তা সম্পাদক আশিষ ঘোষ সৈকত।

তালিকায় আরও আছেন দৈনিক বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাফরউল্লাহ শরাফত, দৈনিক আনন্দ বাজারের বিশেষ প্রতিনিধি কিশোর কুমার সরকার, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন, আরটিভির সিইও আশিকুর রহমান, একুশে টিভির হেড অব ইনপুট অখিল কুমার পোদ্দার, গাজী টিভির এডিটর রিসার্চ অঞ্জন রায় এবং দৈনিক ভোরের কাগজের বার্তা সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দিন।

এই সাংবাদিকদের কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের পর গণমাধ্যমজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

Header Ad

কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন

সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ। ছবি: সংগৃহীত

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের। ২০তম বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় পুলিশে যোগ দিলেও তার বাবা মো. হাসিদ ভূঁইয়া প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে হারুনের পুলিশের চাকরির ক্ষেত্রে সহায়তা করে।

২০১১ সালের ৬ জুলাই সংসদ ভবনের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বিএনপি নেতা জয়নুল আবদীন ফারুককে মারধর করে আলোচনায় আসেন হারুন। এ ঘটনার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করেন তিনি এবং তার পর থেকেই একের পর এক পদোন্নতির মাধ্যমে পুলিশের অন্যতম প্রভাবশালী কর্মকর্তায় পরিণত হন।

হারুন অর রশীদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি সম্পদের পাহাড় গড়েন। বলা হয়, সাধারণত হেলিকপ্টার ছাড়া তিনি বাড়িতে আসতেন না। তার বিরুদ্ধে দেশ ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগও ওঠে। মিঠামইনে নিজ গ্রামের বাড়িতে শতকোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলেন বিলাসবহুল 'প্রেসিডেন্ট রিসোর্ট', যেখানে রয়েছে হেলিপ্যাড এবং অত্যাধুনিক সুইমিং পুল।

প্রেসিডেন্ট রিসোর্টটি একসময় ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর রিসোর্টের জৌলুসও কমে যায় এবং অবশেষে রিসোর্টের সব কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেখানে জনমানবহীন ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হারুনের রিসোর্টটির জন্য এলাকার সংখ্যালঘু ও অন্যান্য ভূমি মালিকদের ভয় দেখিয়ে জমি দখল করা হয়েছিল এবং অধিকাংশ মালিক এখনো তাদের জমির মূল্য পাননি। স্থানীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধি দীলিপ চৌধুরী জানান, তার কোটি টাকার মূল্যমানের জমি হারুন ভয় দেখিয়ে দখল করেছেন, কিন্তু টাকা পরিশোধ করেননি। একইভাবে মানিক মিয়া নামে আরেক ব্যক্তি তার ৫ একর জমির কোনো মূল্যই পাননি।

স্থানীয়রা বলছেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করা হারুন পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন।

Header Ad

হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী

সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী-এমপিদের লাল পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এর ধারাবাহিকতায় বাতিল করা হয়েছে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কূটনৈতিক পাসপোর্টও। রংপুরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলার আসামি শিরীন শারমিন আত্মগোপনে রয়েছেন এবং গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকায় সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে।

৩ অক্টোবর, তিনি এবং তার স্বামী সৈয়দ ইশতিয়াক হোসাইন সাধারণ ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। অভিযোগ রয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত না হয়ে তারা বাসায় বসেই আঙুলের ছাপ ও আইরিশ স্ক্যান জমা দেন। অথচ নিয়ম অনুসারে, এসব তথ্য পাসপোর্ট অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে জমা দিতে হয়।

এ প্রসঙ্গে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও তার স্বামী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন এবং এর জন্য মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করছেন। যদিও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন জানান, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে আইনের সীমার মধ্যে থেকে পাসপোর্ট অধিদপ্তর কাজ করে।

সাবেক এ স্পিকারের বাসার ঠিকানা হিসেবে ধানমণ্ডির একটি বাসার উল্লেখ থাকলেও সেই ঠিকানায় তাদের পাওয়া যায়নি বলে জানান রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্মচারী শাহাবুদ্দীন। তিনি জানান, শিরীন শারমিন এ বাসায় থাকেন না এবং এখানে তার উপস্থিতি গত কয়েক মাসে দেখা যায়নি।

পাসপোর্ট বিষয়ক এই বিতর্কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই সময়ে হত্যা মামলার আসামিদের পাসপোর্ট প্রক্রিয়া সহজ করা সন্দেহজনক। এতে বিচার প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ সরকার এ ধরনের সুবিধা সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং জানান, নিয়মের বাইরে কেউ এভাবে সুবিধা নিতে পারেন না। এদিকে মামলার তদন্তকারী রংপুর মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শিরীন শারমিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে এবং তার সন্ধান পাওয়া মাত্রই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আরও ২৯ জন সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল
কৃষক বাবাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পুলিশের এএসপি হন শতকোটি টাকার মালিক হারুন
হত্যা মামলার আসামি হয়েও পাসপোর্ট পেতে যাচ্ছেন শিরীন শারমিন চৌধুরী
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে ছাত্রদলের দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা
শেখ হাসিনা কীভাবে ভারতে আছেন, জানতে চাইলেন ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী
মানুষ আগেও ভোটারবিহীন সরকারকে মানেনি, এখনও মানবে না: মির্জা আব্বাস
মাওলানা সাদকে দেশে আসতে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের পতন
সরকারি অনুষ্ঠানে স্লোগান ও জয়ধ্বনি থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভোক্তা অধিকারের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
গুম কমিশনে জমা পড়েছে ১৬০০ অভিযোগ, সবচেয়ে বেশি র‌্যাবের বিরুদ্ধে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হত্যার হুমকি, থানায় জিডি
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে ছয় বাংলাদেশিকে উদ্ধার, মানবপাচার চক্র আটক
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ১ টাকা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড পুনঃতদন্তে হাইকোর্টের জাতীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ কেন নয়
বাংলাদেশে ইজতেমা একবারই হবে, দুবার নয়: মহাসম্মেলনে বক্তারা
এক মাস পর খাগড়াছড়ি ও সাজেক পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত
মার্কিন নির্বাচনে লড়ছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ৬ প্রার্থী
শাকিব খানের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন পূজা চেরি
মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা রেখেই ঢাবির ভর্তি কার্যক্রম শুরু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলায় ব্যালট পেপার