সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

রাজেকুজ্জামান রতন

মৃত্যু, মৃত্যুদণ্ড এবং তারপর?

 দেশের মানুষ যখন শুনেছিল সারারাত ধরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে তারই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীরা পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আহত সেই ছাত্র যন্ত্রণায় কাতরেছে, অনুনয় করেছে আর না মারার জন্য, নিজের পরিচয় দিয়ে বারবার বলেছে যারা তাঁকে মারছে সেও তাদের রাজনীতি করে, মার খেতে খেতে মৃত প্রায় সেই ছাত্র তরুণ যার নাম আবরার ফাহাদ একটু পানি খেতে চেয়েছিল কিন্তু পায় নি। কিল ঘুষি শুধু নয়, ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প সহ লাঠি সোটা দিয়ে মারতে মারতে যখন দেখেছে মরেই গেল তখন তোষকে মুড়িয়ে সিঁড়ির নিচে রেখে এসেছিল তাঁকে। এই বর্ণনা দিয়েছিল যারা মেরেছে তাদেরই কয়েকজন। মানুষ পত্রিকায় এসব পড়ে শিউরে উঠেছে, অনেকেই পড়তে পারেন নি। কেউ কেঁদেছেন, কেউ স্তব্ধ হয়ে ভেবেছেন, এও কি সম্ভব !

 

দুই বছর আগে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের আঘাতে আঘাতে প্রায় থেঁতলে যাওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। প্রথম দিকে বুয়েট এর ছাত্র ছাত্রীরা আতংকিত হলেও পরবর্তীতে তাঁরাও নেমে আসে প্রতিবাদ বিক্ষোভে। নির্যাতিত ও নিহত  আবরারের বাবা সন্তান হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন।

 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, প্রগতিশীল ছাত্র জোট সহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, রাজনৈতিক মহল, সামাজিক সংগঠন দেশব্যাপী যে প্রতিবাদ গড়ে তোলে তার ফলে এই হত্যা মামলাটি দ্রুত তদন্ত করে বুয়েটের ২৫ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ২২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পলাতক হয়  তিনজন। ছাত্রলীগ বহিস্কার করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকেই।

 

এরপর দুই বছর ধরে মামলা চলার পর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ৫ জনকে  যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর  ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। শাস্তির রায় ঘোষণার যুক্তি হিসেবে আদালতে বিচারক বলেন, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির রায় দেওয়া হয়েছে।  


রাগে উত্তেজনায় কাউকে আঘাত করার মধ্যে খুব একটা অস্বাভাবিকতা নেই। দুই পক্ষের সংঘর্ষে লাঠির আঘাতে বা গুলিতে কেউ মারা যাওয়া বা টার্গেট করে কাউকে হত্যা করা বা অকস্মাৎ আঘাতে মরে যাওয়া এক কথা। কিন্তু  একজন সহপাঠীকে রাতভর পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করার মধ্যে বিকৃত আনন্দ উপভোগ করা সম্পূর্ণ আলাদা কথা। আবরারকে পিটিয়ে অর্ধমৃত রেখে তারা রাতের খাবার খেয়েছে, খেলা দেখেছে। সবাই মিলে এ অবস্থায় যেতে পারলো কি ভাবে?  এই ধরণের  নৃশংসতার কোনও নজির কি আছে? অনেকেই বলেন  ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এই নৃশংসতার তুলনা হতে পারে কেবল ছাত্রলীগের সঙ্গেই। ২০১২ সালে পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কুপিয়ে হত্যা করেছিল বিশ্বজিৎ দাসকে। এ দুটি ঘটনায় কোনটি বেশি নৃশংস তা নিয়ে তর্ক হতে পারে। অনেকেই বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডকেই শীর্ষে রাখবেন। কারণ, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছিল দিনের বেলায় সবার চোখের সামনে। সব টিভির ক্যামেরায় তার ছবি আছে। এক্ষেত্রে বলা যায় ঘটনাটি তাৎক্ষনিক উত্তেজনায়, স্রেফ সন্দেহের ভিত্তিতে স্বল্পসময়ে ঘটেছে। কিন্তু আবরার হত্যাকাণ্ড তা নয়। প্রস্তুতি নিয়ে এই ভয়াবহ ও নৃশংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে দলবেঁধে দফায় দফায় পিটিয়ে হত্যা করার মধ্যে ঠান্ডা মাথায় নির্মমতার কি কোনও তুলনা হয়।  

 

আবরার ফাহাদের অপরাধ ছিল, তিনি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এর জন্যে কি কাউকে পেটাতে হবে? ছাত্রলীগ তখন আইন হাতে তুলে নিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর, আইনের শাসনের ওপর তাদের আস্থা নেই।
সাধারণত বলা হয়ে থাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে অপরাধী ভয় পাবে এবং অপরাধ প্রবণতা কমবে। শাস্তি দেয়ার আইন, শাস্তি কার্যকর করার এত ব্যবস্থা সত্ত্বেও অপরাধ কি কমছে? শাস্তির ঝুঁকি আর অপরাধের ফলে অর্জিত সুবিধা এই দুইয়ের তুলনামূলক বিচারে সুবিধা পেতে শাস্তির ঝুঁকি নিতে পিছু পা হয় না অনেকেই। এর সাথে ক্ষমতার রসায়ন মিলে গেলে তো সোনায় সোহাগা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের কোন কোন নেতা কর্মী শাস্তি পেয়েছে, বহিস্কার হয়েছে কিন্তু  ক্ষমতার দম্ভে ছাত্রলীগের বেপরোয়া আচরণ কি কমেছে?  দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেআইনি কর্মকাণ্ড, হল দখল, গেস্টরুম, গণরুম- নানা প্রক্রিয়ায় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালায়। কুয়েটে তাদের নির্যাতনে প্রভোস্টের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গেলো। তাদের নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বেও বিপর্যস্ত হয় শিক্ষার পরিবেশ, বন্ধ হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কেউ মৃত্যুবরণ করলে  আলোচনার ঝড় উঠে কিন্তু  প্রতিদিন ছাত্রলীগের নির্যাতনের অসংখ্য  খবর অন্তরালে চাপা পড়ে থাকে।



এই যে  আদালতের রায়ে দণ্ডিত হলো বুয়েট ছাত্রলীগের ২৫জন নেতাকর্মী তারা কিন্তু খুনি হতে বুয়েটে ভর্তি হয়নি, ভর্তি হয়েছিল প্রকৌশলী হতে এবং তারা মেধার ভিত্তিতেই ভর্তি হয়েছিল।  কি প্রক্রিয়ায় বা কেন তারা এই মানসিকতা অর্জন করলো তা যদি বিচার করা না হয় তাহলে একটা দুইটা আলোচিত মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে খুনি মানসিকতা তৈরির  এই প্রক্রিয়া বন্ধ হবে না। যারা তাদের খুনি বানায়, তাদেরকে কি খুঁজে বের করা হয়েছে কখনো?  আর অতীতেও অনেক কঠিন রায় হয়েছে কিন্তু ফলাফল কি? তাই শুধু কঠোর শাস্তির রায় হলেই  অপরাধ থামবে না। সে রায় কার্যকর হবে কি না তার নিশ্চয়তা নিয়েও সংশয় আছে, ক্ষমা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যেমন ৯ বছর পরও নৃশংসভাবে নিহত বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় কার্যকর হয়নি। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে এই সমাজে কারণ তাদের রাজনৈতিক সুরক্ষা আছে এবং তারা ক্ষমতা বলয়ের আশেপাশেই আছে।   

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার দম্ভে বেপরোয়া হয়ে ওঠা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের থামানোর আকুল আবেদন করছেন অনেকেই। কেউ আবার বলছেন ব্যবস্থা তো নেয়া হচ্ছে। কিন্তু নতুন নতুন ঘটনার কারণে এটা এখন দিনের আলোর মত পরিস্কার যে এতে কাজ হচ্ছে না। এই দুর্বৃত্তপনার  উৎসের সন্ধান করতে হবে। কারণ লতিফ সিদ্দিকী, সম্রাট, পাপিয়া, সাহেদ, শোভন বা জাহাঙ্গীর আলমের পরিনতি দেখেও তো নিবৃত্ত হয়নি ডা. মুরাদ হাসান। চাঁদাবাজির অভিযোগে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে  বহিষ্কার করেও তো  থামানো যাচ্ছেনা ছাত্রলীগকে। 

 

নিম্ন আদালতের রায় হয়েছে, এটা একটা দৃষ্টান্ত। আবরারের মা বলেছেন শাস্তি দেখতে চাই। আর সাজা প্রাপ্তদের বাবা রা বলছেন, চিন্তা কোরো না বাবা। উচ্চতর আদালত থেকে ছাড়িয়ে আনবোই। দুজনেই তো বাবা ! তাই শাস্তি থেকে শিক্ষা নিতে হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগ, দ্রুত বিচার, রায় কার্যকর কি পারবে এই প্রবণতা থামাতে ? যে ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি একদল মেধাবী ছাত্রের মনে খুনের সংস্কৃতি গড়ে তোলে তা কি অধরাই থেকে যাবে? না কি পাল্টা রাজনীতি ও সংস্কৃতি গড়ে তোলার পথে এগিয়ে আসবেন এটিই এখন বড় প্রশ্ন। এর উত্তর খুঁজে নেয়ার মধ্যেই আছে আমাদের ভবিষ্যৎ।  আবরার হত্যা মামলার রায়ের ক্ষেত্রে এই কথাটি প্রযোজ্য। এই ঘটনায় আবরার তো নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেনই একই সঙ্গে ধ্বংস হয়ে গেলো আরও ২৫ মেধাবীর জীবন, আজীবন বেদনা বহন করবে তাদের পরিবার। দণ্ডিত ২৫ জনই বুয়েটের শিক্ষার্থী। এমন মেধাবী ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন দিতে গিয়ে বিচারকের হৃদয়ও নিশ্চয়ই ক্ষণিকের জন্য হলেও কেঁদেছে। তারুণ্যের কি বেদনাময় অপচয়!

 

একটা কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। এই মৃত্যুর দায় কে নেবে ? কেউ কি নেবে ? ২০ জন তরুণকে ফাঁসির দণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেতে হলো কেন? বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে খুনি মানসিকতা গড়ে উঠেছিল কেন তাদের? যারা এবং যে রাজনীতি তাদেরকে এই পথে এনেছিলো  তাদের পরিচয় উদঘাটন করাটাও জরুরী।  

 
লেখক: সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)

  

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু