ডিসি নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ, যা বললেন জনপ্রশাসন সচিব
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন মোখলেস উর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেনের অভিযোগে সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ সংবাদকে ‘ফেইক’ (মিথ্যা) বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
ডিসি নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মোখলেস উর রহমান বলেন, ইটস এ ফেক নিউজ (এটি মিথ্যা সংবাদ)। প্রতিবেদনে যে স্ক্রিনশট প্রকাশ করা হয়েছে, তা আইফোনের কিন্তু তিনি স্যামসাং ফোন ব্যবহার করেন বলেও দাবি করেন সিনিয়র সচিব।
যে খবর প্রকাশিত হয়েছে সেটা নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ, সরকার যে টেলিফোন (মুঠোফোন) দিয়েছে সেটাও আমি ব্যবহার করি না। আপনারা যারা জানেন, আমার আগের যে নম্বর, সেটিই আমি ব্যবহার করতেছি সরকারিভাবে।
এই খবরের সত্যতা আছে কি না, আপনি পদত্যাগ করবেন কি না—এ বিষয়ে তিনি বলেন, আপনারা যদি নিউজ করতে চান, স্ট্যান্ডবাজি নিউজ করতে চান, তাহলে এ প্রশ্ন করতে পারেন। এতদিন আমার সঙ্গে কাজ করেছেন, বিন্দু-বিসর্গ যেখানে সত্যতা নেই। এই প্রশ্ন করার আগে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করেন, কতটুকু যৌক্তিক হচ্ছে আমাকে এই প্রশ্ন করা?
আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের কাছে আপনি আহ্বান জানাবেন কি না, জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, অভিযোগটা যিনি করেছেন এই অভিযোগকারী আমার কাছে কোনো বিবেচনায় নেই। এই অভিযোগটি আমি মূল্যহীন মনে করি। এটা ভুয়া নিউজ।
প্রসঙ্গত, আজ বৃহস্পতিবার দেশের একটি দৈনিক গণমাধ্যমের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং ‘বিতর্কিত’ দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযম মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ডিসি নিয়োগ দিয়ে থাকেন। ওই প্রতিবেদনে সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের সঙ্গে যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদের হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের কিছু স্ক্রিনশট যুক্ত করে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের একপর্যায়ে নিজেকে নির্লোভ দাবি করেন সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান। টাকা-পয়সার প্রতি কোনো লোভ নেই জানিয়ে ডিসি নিয়োগে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করেন তিনি। সম্প্রতি এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক এবং ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু চিরকুট উদ্ধার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক কালবেলা। সেই প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড় তৈরি হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ঘটনা তদন্তে এক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে যে কর্মকর্তার দিকে সন্দেহের আঙুল উঠেছিল, সেই যুগ্ম সচিবকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
যদিও এর আগেও সংবাদ সম্মেলন ডেকে গণমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনকে ‘গুজব’ ও ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে দাবি করেছিলেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।