বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

হাছান মাহমুদ-ফজলে করিমের বিপুল অর্থপাচার, দুবাই ও আমিরাতে হাজার কোটি টাকার ব্যবসা

ড. হাছান মাহমুদ এবং ফজলে করিম চৌধুরী জুনু। ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার দেশ কাঁপানো আন্দোলনে পতন হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের। আর এরপর থেকেই আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে বিভিন্ন মহলের কর্তা-ব্যক্তিদের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য সামনে আসছে। স্বৈরশাসকের সময়কালে উপর মহলের কয়েকজন রাঘববোয়াল কলকাঠি নাড়তেন সব সেক্টরের। তাদের মধ্যে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী দুজন ছিলেন চট্টগ্রামের দুই আওয়ামী নেতা, সাবেক মন্ত্রী-এমপি ড. হাছান মাহমুদ এবং ফজলে করিম চৌধুরী জুনু। তারা দু’জনই হাসিনার ‘খাস লোক’ হিসেবে পরিচিত।

তাদের ক্ষমতার দাপট এতোটাই জোরালো ছিল যে চট্টগ্রামের রাউজান এলাকায় এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এবং রাঙ্গুনিয়ায় ড. হাছান মাহমুদের কথায় ও ইশারায় প্রশাসন উঠতো-বসতো। যা হিন্দি মুভির মাফিয়া ডনকেও হার মানায়। হাসিনার পতনকালে ড. হাছান মাহমুদ ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইতোপূর্বে হাসিনার দুই টার্মে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

অন্যদিকে হাসিনার পতনকালে ও আগে ফজলে করিম চৌধুরী জুনু ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি। দলীয়ভাবে ফজলে করিম চৌধুরী জুনু আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সহ-সভাপতি এবং ড. হাসান মাহমুদ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, আগে ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ফজলে করিম জুনু এবং হাছান মাহমুদ উভয়েই হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের চলাফেরা ও দাপট এতোটাই বেশি ছিল যে এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো মতপ্রকাশ করার সাহস রাখতো না। ছিল না ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কোন মানুষের ঠাঁই। এখানেই শেষ নয়; এই দুই আওয়ামী নেতা ক্ষমতা ও পদ-পদবির চরম অপব্যবহার করে গড়ে তোলেন দুর্নীতির এক সাম্রাজ্য যেখানে তাদের ইচ্ছামতোই হতো সবকিছু। সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশেও পাচার করেছেন বিপুল অঙ্কের অর্থ-সম্পদ। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গড়ে তুলেছেন তাদের কালো টাকায় ব্যাবসা-বাণিজ্য।

চট্টগ্রামের রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া আসন থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার জোরে তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন যথাক্রমে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী জুনু এবং ড. হাছান মাহমুদ। ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল। পুরো সময় জুড়ে রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে রীতিমতো রামরাজত্ব কায়েম করেন ফজলে করিম চৌধুরী জুনু ও ড. হাছান মাহমুদ। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ফজলে করিম চৌধুরী জুনু ও ড. হাছান মাহমুদের তাবৎ অবৈধ উপায়ে কাড়ি কাড়ি উপার্জিত অর্থ আরব আমিরাতের আজমাইনে পুঁজি বিনিয়োগ নোয়াপাড়ার প্রবাসী জসিম উদ্দিন (ওরফে সিএনজি জসিম)-এর মাধ্যমে।

জানা গেছে, ফজলে করিম চৌধুরী জুনু দেড় হাজার কোটি টাকা দুবাইসহ আমিরাতের বিভিন্ন শহরে আবাসন ও ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট খাতে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন জুনুর পক্ষ থেকে সিএনজি জসিম। এর মধ্যে আজমাইন শহরের সউদি জার্মান হসপিটালের পেছনে চল্লিশ বিঘা জায়গা ক্রয় করেছেন সিএনজি জসিম। বিনিয়োগকৃত অর্থের পুরোটাই রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী জুনুর।

দীর্ঘ ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই সিটিতে ব্যবসা করছেন ফটিকছড়ির প্রবাসী রফিক আহমেদ। তিনি জানান, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করে আবাসনখাতে বিনিয়োগ করেছেন ফজলে করিম চৌধুরী ও ড. হাছান মাহমুদ। রাউজানের সিএনজি জসিম এই দুই আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষ হয়ে অবৈধ অর্থ আরব আমিরাতের আজমাইনে বিনিয়োগ করেছেন। এখন পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন পাচারকৃত বিপুল অঙ্কের অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সৃজিত বিশাল মাপের ব্যবসা।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের ওমানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংগঠন ওমান-বাংলাদেশ এসোাসিয়েশনের কয়েকজন নেতা ফজলে করিম চৌধুরী জুনুর অর্থ বিনিয়োগ সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন। তারা জানান, ড. হাছান মাহমুদ ও ফজলে করিম চৌধুরী বিদেশে অর্থ পাচার করে বিনিয়োগের জন্য কয়েকজন প্রবাসী ব্যবসায়ীর সাহায্য নিয়েছেন। তারা প্রবাসে এক সময় শ্রমিকের কাজ করলেও এখন সবাই অবৈধ অর্থ বিনিয়োগ করে আলাদীনের চেরাগ পেয়ে গেছেন। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, অবৈধ অর্থ বিদেশে সরিয়ে নিতে সাহায্য করার প্রতিদান হিসেবে সিএনজি জসিমের ছেলে জোবায়েরকে সিআইপি (কমার্শিয়াল ইম্পর্ট্যান্ট পারসন) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে তদবির করেন ড. হাছান মাহমুদ।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে সোনা চোরাচালানের বড় অংশই নিয়ন্ত্রণ করে আসছিলেন ফজলে করিম জুনু ও হাছান মাহমুদ। হাছান মাহমুদের ভাই খালেদ মাহমুদ ও এরশাদ মাহমুদ চট্টগ্রাম মহানগরী এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন এমন তথ্য গোয়েন্দা শাখায় রয়েছে। ফজলে করিম চৌধুরীর হয়ে সোনা চোরাচালানের বিষয়টি দেখভাল করতেন তার ব্যক্তিগত সহকারী সুমন। সোনা চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ছিলেন এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক জিএস, নগর আওয়ামী লীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চু ও পটিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুনকে ব্যবহার করেছেন ড. হাছান মাহমুদ। দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন ফজলে করিম জুনু। ফজলে করিমের প্রত্যক্ষ মদদে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল এবং রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়। হাতিয়ে নেন কোটি কোটি টাকা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সূত্র জানায়, গত ১৬ বছরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান কার্যালয়ের সব দরপত্র এবং ইজারা নিয়ন্ত্রণ করতেন নগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর ও আইয়ুব আলী। এই সিন্ডিকেটকে মূলত আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে টাকা ভাগাভাগি করতেন ফজলে করিম চৌধুরী জুনু।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে থেকেই ফজলে করিম রেলের সংসদীয় কমিটিত সভাপতি হন। এই দীর্ঘ সময় রেলের কিছু কর্মকর্তার সহায়তায় তিনি নানা রকম অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রতি রেলের পাওয়ার কারে ব্যবহারের জন্য যে সকল স্পেয়ার পার্টস লাগে তাক ডয়েজ স্পেয়ার পার্টস বলে। ফজলে বাংলাদেশে ডয়েজের ডিলার হন। রেলের যে কোন টেন্ডার তা উম্মুক্ত বা ইজিপি যাই হোক না কেন, সব টাতেই তার কাছ থেকে মালামাল নিতে হত। পিপিআর-২০০৮ লংঘন করে অনেক কর্মকর্তা ফজলে করিমের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য তার ক কথামত টেন্ডারে শর্ত জুড়ে দিত।
কিছু দলবাজ আওয়ামী আশীর্বাদ পুষ্ট কর্মকর্তা টেন্ডারে এভাবে শর্ত দিত যে, দরপত্রে অংশগ্রহণকারী দরদাতাকে অবশ্যই বাংলাদেশে ডয়েজের স্থানীয় প্রতিনিধির নিকট হতে প্রদত্ত Authorization Letter Submit করতে হবে। যেহেতু কোন দরদাতাকে তারা Authorization letter দেয় না, ফলে একক দরদাতা হিসেবে ফজলে করিমের ফার্ম FAV অথবা NGGL প্রতিটি মালের দাম ৫/৬ গুন বেশি দরে কোট করত। অথচ একই মালের দাম ইন্ডিয়া বা চায়নায় এর চেয়ে অনেক কম। গত ১৫ বছরে ফজলে করিম এভাবে রেলের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে এবং রেলের কিছু সুবিধাভোগী কর্মকর্তা তাদের সহযোগী হয়ে কাজ করে তারাও এই দুর্নীতির অংশীদার হন।

সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ২০০৮ সালের পর চট্টগ্রামের রাজনীতিতে শীর্ষ প্রতাপশালী হিসেবে আবির্ভূত হন। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালীন জলবায়ু তহবিলের অর্থ লোপাট করে গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন ২০১৫ সালে। ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র, শিপ বিল্ডিং ও শিপ ব্রেকিং শিল্পের ছাড়পত্রের নামে শতকোটি টাকা চাঁদাবাজি করেছেন তিনি। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালে আওয়ামী সরকারের প্রথম মেয়াদে সীতাকুণ্ডের অধিকাংশ শিপব্রেকিং ইয়ার্ড নামে বেনামে দখলে নেন হাছান মাহমুদ ও তার সহযোগীরা। সীতাকুণ্ডের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান (পরবর্তীতে এমপি) মামুনের দখলবাজির গডফাদার হিসেবে কাজ করেছেন ড. হাছান মাহমুদ।

স্ত্রীর নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা খুলে জলবায়ু তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ করেন ড. হাছান মাহমুদ। মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে ‘সোনার বাংলা’ নামে এনজিও খুলে তার চেয়ারম্যান হিসেবে নিজে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজের স্ত্রীর নাম দেন। সেই প্রতিষ্ঠান কাজে লাগিয়ে জলবায়ু তহবিলের ২৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন ড. হাছান মাহমুদ। এ বিষয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সেই প্রতিবেদনও ক্ষমতার জোরে সরিয়ে নেয়া হয়।

হাসিনা সরকারের প্রথম মেয়াদে পরিবেশ ফান্ডে (জলবায়ু) বাংলাদেশ ব্যাপক বিদেশি বাজেট বরাদ্দ পায়। ৯টি এনজিও’র মাধ্যমে এসব টাকা বিতরণ করা হয়েছিলো, যার প্রত্যেকটির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. হাছান মাহমুদ নিজেই। জলবায়ু তহবিল, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আত্মসাৎকৃত বিপুল বিদেশে অর্থ পাচার করেই ড. হাছান মাহমুদ বিদেশেই ব্যবসা চালাচ্ছেন। একইভাবে ফজলে করিম চৌধুরী জুনু রেলওয়ের দরপত্র, ইজারাসহ বিভিন্ন খাতে লুটপাটের বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার করে মধ্যপ্রাচ্যে ব্যবসার বিশাল এক জগৎ গড়ে তুলেছেন।

Header Ad

প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব হলেন সাংবাদিক সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী

সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন সাংবাদিক সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব নিলুফা ইয়াসমিনের সই করা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘দুই সাংবাদিকের নামের পাশে সহকারী প্রেস সচিব পদে অন্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে প্রধান উপদেষ্টার মেয়াদকাল অথবা তার সন্তুষ্টি সাপেক্ষে (যেটি আগে ঘটে) জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ এর গ্রেড-১ ভুক্ত ৫৩,০৬০ টাকা নির্ধারিত বেতনে প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হলো।’

বলা হয়েছে, এই নিয়োগের অন্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা

ছবি: সংগৃহীত

মানহানিকর এবং মিথ্যা প্রতিবেদন প্রচার করার অভিযোগে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ওরিয়ন গ্রুপ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের পক্ষে এর প্রধান সম্পাদক ও প্রধান নির্বাহী মো. শামসুর রহমান এবং টেলিভিশনটির সংবাদকর্মী আব্দুল্লাহ রাফিকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য আগামী ১০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।

মামলায় ওরিওন গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন বারবার একটি বিভ্রান্তিকর ও সম্পূর্ন অসত্য প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছে। ওই প্রতিবেদনে মিথ্যা অভিযোগ করে বলা হয় যে সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারকে কোনো বিদ্যুৎ না দিয়েও ওরিয়ন সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচার করেছে।

ওরিয়ন গ্রুপ দৃঢ়ভাবে এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে। এ কোম্পানি সবসময় জাতীয় নিয়মনীতি পুরোপুরি মেনে ব্যবসা করেছে। বাংলাদেশের আরও শতাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের মতো একই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) করেছে ওরিয়ন গ্রুপ। প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে ২০১১ সাল থেকে ওরিয়ন তাদের ছয়টি অত্যাধুনিক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সম্পূর্ণরূপে চালু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৬.৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।

বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওরিয়ন গ্রুপ নিশ্চিত করছে যে, কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সমন্বয়ে সমস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার অর্থায়ন করা হয়েছে। ব্যবসায়িক ঋণ ওরিয়ন ধারাবাহিকভাবে সময়মতো পরিশোধ করে চলছে।

এ ছাড়া দুবাই ও চীনের দুটি বিদেশি কোম্পানি ওরিয়ন গ্রুপের মালিকানাধীন হওয়ার অভিযোগও মিথ্যা। এই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ওরিয়নের অংশীদারত্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিডিং প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং কোম্পানি দুটির কোনোটিই ওরিয়নের চেয়ারম্যান বা কোন বাংলাদেশি ব্যক্তির মালিকানাধীন নয়। ওরিয়ন গ্রুপের কোনো কোম্পানিতে কোনো বহিরাগত রাজনৈতিক মালিকানা নেই।

এসব মিথ্যা দাবি ও মানহানিকর সংবাদ প্রচার করা হয়েছে তা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার লঙ্ঘনও। যাচাই না করে প্রমাণ ছাড়া এসব প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্দেশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ওরিয়ন গ্রুপের সুনাম নষ্ট করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ওরিয়ন গ্রুপ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের এই উদ্যোগ নিয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা। ছবি কোলাজ: ঢাকাপ্রকাশ

গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাংবিধানিক শূন্যতার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নিয়ে গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবার অধ্যাদেশের মাধ্যমে সেই সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে আনুষ্ঠানিকতা চূড়ান্ত হলো।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা, পদত্যাগ এবং আনুষঙ্গিক অন্য বিষয়ে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। অধ্যাদেশ বিধান করতে এর খসড়া প্রস্তুত করেছে আইন ও বিচার বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,

১. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ব্যাপক দমন-পীড়ন ও গণহত্যা চালানোর ফলশ্রুতিতে সমগ্র দেশে দল-মত-নির্বিশেষে ছাত্র-জনতা উত্তাল গণবিক্ষোভ করে এবং আন্দোলনের এক পর্যায়ে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ২১ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৫ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে রাষ্ট্রপতির নিকট পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।

২. মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিগত ২২ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৬ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন।

৩. উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক সংকট মোকাবেলা, জনস্বার্থ ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা রক্ষা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সচল রাখা এবং রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন বিষয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের মতামত যাচনা করেন।

৪. সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ৮ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে স্পেশাল রেফারেন্স নম্বর-০১/২০২৪ দ্বারা মতামত প্রদান করেছে যে, ‘রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার নিমিত্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি উক্তরূপে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টা এবং অন্য উপদেষ্টাগণকে শপথ পাঠ করাতে পারবেন।

৫. বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ডকট্রিন অব নেসেসিটি অনুসারে সাংবিধানিক সংকট মোকাবেলায় সর্বস্তরের জনগণের ঐকান্তিক ইচ্ছা ও পরম অভিপ্রায়ের প্রেক্ষিতে, গণ-অভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার প্রতিনিধিদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে এবং ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের রাষ্ট্র সংস্কার আকাঙ্ক্ষা পূরণের ও রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ৮ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে।

৬. উক্তরূপে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা ও দায়িত্ব, প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের পদমর্যাদা ও সুযোগ-সুবিধা, পদত্যাগ এবং আনুষঙ্গিক অন্য বিষয়ে বিধান করা জরুরি।

৭. বর্ণিত প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদ ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে।

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা, ২০২৪-এর খসড়ার অনুমোদনও দিয়েছে সরকার।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালার খসড়া প্রণয়নপূর্বক উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা এবং সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ যারা সরকার অথবা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত, তারা প্রতিবছর আয়কর জমা দেওয়ার সর্বশেষ তারিখের পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নীতিমালায় সংযুক্ত ছকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার নিকট তাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার বিধান রেখে খসড়া ‘আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা' উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে অনুমোদিত হয়।

সর্বশেষ সংবাদ

প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব হলেন সাংবাদিক সুচিস্মিতা তিথি ও নাইম আলী
৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন
ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ: আসিফ নজরুল
সালমান শাহ এক অকৃত্রিম ভালোবাসার নাম: শাবনূর
সাবেক মন্ত্রী রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মানুষটার শরীর দেখে বারবার আবরারের কথা মনে পড়েছে: সারজিস
দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরে বেড়াচ্ছেন পার্কে
ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেই আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ও বাংলাদেশের অবস্থান কত?
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ২ শিক্ষার্থী আটক
সৌদি আরবে হতে পারে আইপিএলের নিলাম
নিউইয়র্কে ড. ইউনূস-মোদির বৈঠক হচ্ছে না
শেখ হাসিনার ভারতেই থাকা উচিত : শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি
আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জনের মৃত্যু
ঢাবি ও জাবিতে পিটিয়ে হত্যা দুঃখজনক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাড়ে ২০ লাখ টাকা খরচে চালু হচ্ছে কাজিপাড়া স্টেশন
এস আলম গ্রুপের তথ্য চেয়েছে সিঙ্গাপুরের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঈদে মিলাদুন্নবী নিয়ে দুই দলের সংঘর্ষ, আহত ১৫
চাকরির বয়সসীমা ৩৫ চান না সারজিস