প্রায় ছয়দিন পর অবশেষে রাজধানীর সড়কে দ্বায়িত্বে ফিরেছে ট্রাফিক পুলিশ। আজ সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। এর ফলে প্রায় এক সপ্তাহ পর শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সড়কের দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
গতকাল রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর আন্দোলনকারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও কনস্টেবল শোয়াইব হাসান সোমবার থেকে কাজে যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন। পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারের আশ্বাসে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন বলে জানান তাঁরা।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার পর বেশকিছু দাবিতে ৬ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠন।
এদিকে, রবিবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের ৬৩৯টি থানার মধ্যে ৫৯৯টির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহার। ছবি: সংগৃহীত
কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে এবার বড় পদক্ষেপ নিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আদালতের আদেশে জব্দ করা হয়েছে তার একটি বাড়ি ও ১৫ শতক জমি। পাশাপাশি অবরুদ্ধ করা হয়েছে তার এবং সংশ্লিষ্টদের ২৯টি ব্যাংক হিসাব।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন। দুদকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থার জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কুমিল্লার মনোহরপুর এলাকায় অবস্থিত জব্দ হওয়া বাড়িটির নির্মাণে আনুমানিক ১৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকার ১৫ শতক জমির মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
দুদক দাবি করেছে, আ.ক.ম. বাহাউদ্দিন বর্তমানে পলাতক অবস্থায় রয়েছেন এবং তিনি তার স্থাবর সম্পদ বিক্রির পাশাপাশি ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ উত্তোলন ও স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। এমন প্রেক্ষাপটে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন জানানো হয়।
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সম্পর্কে সম্প্রতি যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশ। তবে নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে—বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরণের বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া-র এক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্প্রতি ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, যা ভারতের কূটনৈতিক মহলে কিছুটা নেতিবাচক বার্তা হিসেবেই ধরা পড়েছে। অন্যদিকে ভারত দাবি করেছে, তারা ২০২০ সালে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে শুধুমাত্র নিজেদের বন্দর ও বিমানবন্দরের চাপ কমাতে।
ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর নিশ্চিত করেছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ থেকে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির উপর কোনও প্রভাব পড়বে না।
সম্প্রতি ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মোদী স্পষ্টভাবে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন উস্কানিমূলক বক্তব্য ও কঠোর সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলা হয়—যাতে দুই দেশের সম্পর্কের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
ভারতের অভিযোগ, ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা বন্ধের আগেই বাংলাদেশ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে যা তাদের দৃষ্টিতে সীমাবদ্ধতামূলক। এর মধ্যে রয়েছে—মার্চে ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা, তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ এবং জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমসে কড়াকড়ি নজরদারি।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা ইতিমধ্যে সরকারকে সতর্ক করেছেন—ভারত থেকে সুতা আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হলে তা দেশের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হতে পারে। কারণ দেশের পোশাকশিল্প এখনও বহুলাংশে ভারতীয় সুতার ওপর নির্ভরশীল।
এই পরিস্থিতিতে যখন বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কঠোর করছে, তখন একই সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক আবার চালু করেছে ঢাকা। ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের ট্রেডিং কর্পোরেশন থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশে বাড়তে থাকা ধর্মীয় উগ্রপন্থার প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ইসলামাবাদকে বরাবরই সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দেখে এসেছে নয়াদিল্লি।
জানা গেছে, পাকিস্তান এখন বাংলাদেশে তাদের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে আগ্রহী। এমনকি দুই দেশের মধ্যকার উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার সচল হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ খুব শিগগিরই ঢাকা সফর করবেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দারও আগামী সপ্তাহে আসছেন।
এবার মানুষের দাঁতের পুনর্জন্ম নিয়ে বাস্তব স্বপ্ন দেখছেন গবেষকেরা। একাধিকবার দাঁত গজানো সম্ভব হলেও মানুষের ক্ষেত্রে দাঁত হারালে আর ফিরে পাওয়ার সুযোগ একবারই। তবে এই বাস্তবতা বদলে যেতে চলেছে বলে মনে করছেন লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষকরা।
সম্প্রতি তারা পরীক্ষাগারে কৃত্রিম উপায়ে দাঁত গজাতে সক্ষম হয়েছেন, যা দন্তচিকিৎসায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদিও এখনই এই পদ্ধতি মানুষের মুখে প্রয়োগ হচ্ছে না, তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন—এই অগ্রগতি ভবিষ্যতের চিকিৎসাব্যবস্থায় একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
কিংস কলেজের রিজেনারেটিভ ডেন্টিস্ট্রির পরিচালক ডা. আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপনি বলেন, “জৈবিকভাবে দাঁত গজানোর চিন্তাই আমাকে এই গবেষণায় টেনেছে। আমরা পরীক্ষাগারে দাঁত গজিয়ে দীর্ঘদিনের জ্ঞানগত ঘাটতি পূরণে এগিয়ে যাচ্ছি।”
বর্তমানে অনেকেই নিখুঁত দাঁতের আশায় ইমপ্লান্ট বা ব্রেসের ওপর নির্ভরশীল হলেও, ইমপ্লান্ট সবসময় ঝুঁকিমুক্ত নয়। অস্ত্রোপচার, জটিলতা এবং দীর্ঘস্থায়ী চিকিৎসা–সব মিলিয়ে এটি রোগী ও চিকিৎসক, উভয়ের জন্যই একটি চ্যালেঞ্জ।
ডা. আনা অ্যাঞ্জেলোভা ভলপনি এবং গবেষক জুয়েচেন ঝাং
এই প্রেক্ষাপটে দাঁত গজানোর নতুন পদ্ধতিটি হয়ে উঠতে পারে এক বিকল্প সমাধান। কিংস কলেজের পিএইচডি গবেষক জুয়েচেন ঝাং জানান, “ল্যাবে তৈরি দাঁত প্রাকৃতিকভাবে গজাবে এবং চোয়ালের সঙ্গে একীভূত হবে। এটি হবে অধিক টেকসই, শরীরবান্ধব এবং কার্যকর।”
গবেষক দল কিংস কলেজ ও ইমপেরিয়াল কলেজ লন্ডনের যৌথ প্রচেষ্টায় এমন একটি উপাদান তৈরি করেছেন যা কোষগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। এই সংযোগ দাঁতের কোষ তৈরির সংকেত পাঠাতে সক্ষম—ফলে প্রাকৃতিকভাবে দাঁত গজানোর পরিবেশ অনুকরণ করা সম্ভব হয়।
গবেষণাটি এখনো পরীক্ষাগারের স্তরে থাকলেও, গবেষকেরা দুটি সম্ভাব্য পথ দেখছেন—এক, দাঁতের কোষ সরাসরি মুখে প্রতিস্থাপন করে তা গজানো; দুই, ল্যাবে দাঁত তৈরি করে তা মুখে স্থাপন করা।
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ দাঁত হারানোর সমস্যায় ভুগছেন, যা শুধু দৈনন্দিন কার্যকলাপ নয়, বরং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে। দাঁতের ক্ষয়জনিত জীবাণু রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে হৃদরোগের ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
এই প্রযুক্তিকে দন্তচিকিৎসার ভবিষ্যৎ বলেই মনে করছেন ক্লিনিক্যাল লেকচারার ও প্রস্থোডন্টিক্স বিশেষজ্ঞ সাওরশে ও’টুল। তিনি বলেন, “এটি আমার চিকিৎসাজীবনে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে কিনা জানি না, তবে আমার সন্তানেরা হয়তো এই প্রযুক্তির সুফল দেখতে পাবে, এবং তাদের সন্তানেরা এটি নিয়মিত ব্যবহার করবে।”