বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট নির্মাণের কাজ চলছে। এটি চালু হলে আমরা আবহাওয়া থেকে শুরু করে সব প্রয়োজনীয় তথ্য পাবো।
শুক্রবার (১০ মে) বেলা ১২টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক খুলেছি যাতে যুবকরা বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে স্বাবলম্বী হতে পারে। চাকরির পেছনে না ছুটে, নিজেরা উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবার জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছি। এতে কেউ যদি ৫০০ টাকা জমা দেয় তাহলে তাকে সরকারের পক্ষ থেকে আরও ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সারাদেশে সমবায় ছড়িয়ে দিতে হবে, খাদ্যের নিশ্চয়তা ও আর্থসামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। সরকারে আসার পর থেকেই প্রচেষ্টা ছিল দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হবে।
তিনি বলেন, এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখা যাবে না। সারা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে যৌথভাবে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চাই।
জলবায়ু পরিবর্তন থেকে দেশকে বাঁচাতে প্রত্যেকে দুই-তিনটা করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সম্মানজনক পদে শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের দায়িত্ব পালন দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর বলে মন্তব্য করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুদকের উপ-পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তিনি জানান, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের আশ্রয় নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশনের পাওয়া অভিযোগের ওপর পরিচালিত অনুসন্ধানে পাওয়া প্রাথমিক তথ্য থেকে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশের মনোনয়নের ভিত্তিতে পদায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
আকতারুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে- যুক্তিযুক্ত কোনও কারণ ছাড়াই সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে সঙ্গী করা হয়। তাছাড়া, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা হিসেবে প্রদত্ত তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। ওই মনোনয়নকালে তিনি কানাডার পাসপোর্টধারী তথা কানাডার নাগরিক ছিলেন বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭৬তম সম্মেলন উপলক্ষ্যে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত দিল্লিতে বাংলাদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে শতাধিক কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি দল উপস্থিত হয়। এক্ষেত্রে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল নিজের পারিবারিক প্রভাব এবং তার নিকটাত্মীয়দের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের বিপুল অর্থ ক্ষতিসাধন করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের পাওয়া ভিন্ন একটি অভিযোগের ওপর পরিচালিত অনুসন্ধানকালে জানা গেছে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এবং তার পরিবারিক রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহারের মাধ্যমে বেআইনিভাবে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পের ডিপ্লোমেটিক জোনে ১০ কাঠা প্লট করায়ত্ব করেন। সে কারণে তার ও অন্যদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা দায়ের করেছে।
এছাড়াও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ‘সূচনা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক উপঢৌকন আদায় এবং অর্থ আত্মসাৎ করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় অটিস্টিক সেলকে ব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে নিজে লাভবান হয়েছেন। ওই অভিযোগ মতে, তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করে বর্ণিত ফাউন্ডেশনের নামে পাওয়া অর্থ করমুক্ত করিয়ে নেন। যাতে সরকারের বিপুল অর্থের ক্ষতিসাধন হয়।
দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, সার্বিকভাবে দেখা গেছে- সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। এমন একজন ব্যক্তি বাংলাদেশের মনোনীত হয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি সম্মানজনক পদে দায়িত্ব পালন করে যাওয়া দেশের জন্য মর্যাদাহানিকর। এতে বিশ্বে দেশের সুনাম ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজ একটি পবিত্র রজনী। মেরাজ আরবি শব্দ, এর শাব্দিক অর্থ ঊর্ধ্বগমন। আরবি রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা হয়ে বোরাকে করে ঊর্ধ্বাকাশ পাড়ি দিয়ে আরশে আজিমে আল্লাহর দিদার লাভ করেন মুহাম্মদ (স.)। একেই ইসলামে মেরাজ বলা হয়।
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় আগামী (২৭ জানুয়ারি) সোমবার দিবাগত রাতে পবিত্র লাইলাতুল মেরাজ পালন করবেন মুসুল্লিরা। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, রোজা রাখা, নফল নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা শবে মেরাজ পালন করেন। এ কারণেই রাতটি মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র।
মুসলমানরা এ মহিমান্বিত রাতটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, জিকির-আসকার, দোয়া-দরুদ ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পালন করবেন।
শবে মেরাজের নফল নামাজ ও ইবাদত: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এ রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ; সুতরাং নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল ইবাদতের জন্য তাজা অজু বা নতুন অজু করা মোস্তাহাব। বিশেষ ইবাদতের জন্য গোসল করাও মোস্তাহাব। ইবাদতের জন্য দিন অপেক্ষা রাত শ্রেয়তর।
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, এ রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো; কেন না, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন; কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৩৮৪)।
মুসলিমদের ইবাদত পালন করার রাতগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি রাত হচ্ছে শবে। মেরাজ। এ রাতে আল্লাহর হুকুমে হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরশে আজিম পর্যন্ত গমনের সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন।
তিনি এ রাতে আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। এ কারণেই রাতটি মুসলমানদের কাছে খুবই পবিত্র।
আল্লাহ বলেন, পবিত্র সত্তা তিনি, যিনি বান্দাকে তার নিদর্শনগুলো দেখানোর জন্য রাতে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত ভ্রমণ করিয়েছেন। যার পরিবেশ পবিত্র, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত-১)
নবুয়তের দশম বর্ষের রজব মাসের ২৭ তারিখ হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর ৫০ বছর বয়সে পবিত্র মেরাজ সংঘটিত হয়। এ রাতে আল্লাহর রহমত কামনায় মুসলমানরা মসজিদে, নিজগৃহে কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোরআনখানি, জিকির-আজগার এবং ইবাদত-বন্দেগীর মধ্য দিয়ে পবিত্র শবে মেরাজ উদযাপন করেন।
এই মেরাজের রাতেই মুসলমানদের জন্য নামাজ ফরজ করা হয়। এ রাতেই প্রতিদিন পাঁচ বার নামাজ আদায় করার বিধান নিয়ে আসেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
এ রাতে হজরত মুহাম্মদ (স.) যে দোয়া করতেন তাতে রজব ও শাবান মাসের বরকত ও পবিত্র রমজান পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধির আবেদন ফুটে ওঠে। দোয়াটি তিনি নিজে পড়তেন এবং মুসলিম উম্মাহকে পড়তে বলেছেন।
দোয়াটি হলো- ‘আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাদান। অর্থ, হে আল্লাহ আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’
রজব ও শাবান মাসে হজরত মুহাম্মদ (স.) এ দোয়াটি বেশি বেশি পড়তেন। যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল।
হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, তখন তোমরা এ রাত ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও। দিনের বেলায় রোজা রাখ। কেননা, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন, কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব, কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব, আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৩৮৪)।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। রোববার (২৬ জানুয়ারি) এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
রোববার শুনানিতে বলা হয়, জুলাই আগস্টে আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলি, গণহত্যার পরিকল্পনা,বাস্তবায়ন করেছেন র্যাব প্রধান হারুন। এ সময় ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা জানতে চান হারুন কোথায়? চিফ প্রসিকিউটর জানান, তাকে গ্রেফতারে চেষ্টা করছে তদন্ত সংস্থা।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এখন পর্যন্ত ৯৬ জনের বিরুদ্ধ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এরমধ্যে ৫০ শতাংশের কম আসামি গ্রেফতার হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, শুরুর দিকে দুর্বলতা থাকলে এখন গ্রেফতারে তৎপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদিকে, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আশুলিয়ায় ছয় জনের মরদেহ পোড়ানোর মামলায় দুই সাবেক পুলিশ সদস্যকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। তারা হলেন, এস আই আবদুল মালেক ও কনস্টেবল মুকুল চোকদার। গুলি করে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
এর আগে, আশুলিয়ায় ছয়জনের মরদেহ পোড়ানোর মামলায়, সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম ও চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।