বিশ্বকে দেখাতে হবে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে: সিইসি
ছবি: সংগৃহীত
ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটিকে দেখাতে হবে নির্বাচনটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সোমবার (১ জানুয়ারি) তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইন্টারন্যাশনাল ডাইমেনশন আছে। সেটাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটির কাছে দেখাতে হবে নির্বাচনটা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। সহিংসতাকে কোনোভাবেই বরদাস্ত করা উচিৎ না, এটা জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে।
দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটি অংশ নির্বাচন বর্জন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের বিরুদ্ধে নির্বাচনের বিপক্ষে বক্তব্য রাখছেন। এতে অসুবিধা নেই, তারা জনমত সৃষ্টি করতে পারেন। কিন্তু সহিংস পন্থায় যদি বিরুদ্ধাচরণ করা হয় বা যারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তাদের যদি বাধা প্রদান করা হয়, তাহলে অবশ্যই সংকট দেখা দেবে। সেই সংকট মোকাবিলা আমাদের করতে হবে।
সিইসি বলেন, আমাদের কাজ কিন্তু সরকার গঠন করা নয়। আমাদের কাজ খুব সীমিত। নির্বাচনটা আয়োজন করে দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার ব্যবস্থা করা। নির্বাচনের মাধ্যমে যদি সরকার নির্বাচিত না হয় তাহলে অগণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হওয়ার অবকাশ থাকে।
সিইসি জানান, অনেকেই বলেন উনারা (কমিশন) নির্বাচনটা তিনমাস পিছিয়ে দিলে ভালো হতো। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। নির্বাচন তিনমাস পিছিয়ে দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। অনেকে মনে করেন নির্বাচন কমিশন অসীম ক্ষমতার অধিকারী। প্রয়োজনে তিনমাস, তিন বছর বা ত্রিশ বছর পিছিয়ে দিতে পারে। এগুলো সত্য নয়।
একই দিনে ৪৩ হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ দায়িত্ব কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কখনোই তার একক শক্তিতে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। এ কারণেই আরপিওতে সুষ্পষ্ট করে বলা আছে, নির্বাচন পরিচালনা করতে কমিশন যেভাবে জনবল চাইবে রাষ্ট্র বা সরকার তা দিতে বাধ্য।
তিনি বলেন, এরপরও এটা ঐতিহাসিক সত্য, বাংলাদেশের নির্বাচন আজ পর্যন্ত স্থিতিশীল অবস্থানে এসে থিতু হতে পারেনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ের নির্বাচন দেখেছি। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে না বা হয় না। মোটামুটি যদি গ্রহণযোগ্য হয়, সেটা নির্বাচন। কারণ নিরুঙ্কুশ অর্থে সামান্যতম অনিয়ম যে হবে না, এটি কখনোই বলা যাবে না। কিছুটা উত্তপ্ত নির্বাচন হবে, কিছুটা গন্ডগোল হতে পারে। সহিংসতা হতে পারে। এগুলো খুব বেশি ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। যেটা অসহনীয় সহিংসতা সেটা প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের চেষ্টা করতে হবে যতদূর সম্ভব নির্বাচনটাকে দৃশ্যমানভাবে স্বচ্ছ করে তুলতে হবে। দৃশ্যমানতার মাধ্যমে জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে হবে।
ভবিষ্যতের জন্য অনুকরণীয় ভোট করার আহ্বান জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেন, নির্বাচনটা ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য, ভবিষ্যতে যারা নির্বাচন কন্ডাক্ট করবে তাদের জন্য অনুসরণীয়, অনুকরণীয় এবং মনে রাখার বিষয়বস্তু হয়।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।