ঢাকা-কক্সবাজারে রেলের ভাড়া ও সময়সূচি
ছবি সংগৃহিত
বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারে এখন ট্রেনে করেই যাওয়া যাবে। শনিবার (১১ নভেম্বর) স্টেশনসহ নবনির্মিত রেলপথের উদ্বোধনের মাধ্যমে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী পর্যটকদের প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে। রেললাইনের দুই পাশের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে নিরাপদ ও দ্রুত সময়ে কক্সবাজারে পৌঁছে যাবেন পর্যটকেরা। ভাড়াও থাকবে সহনীয় পর্যায়ে।
এ রেলসংযোগ সমুদ্র নগরীর যোগাযোগ, পর্যটন এবং কৃষি ও মৎস্য খাতে নতুন দুয়ার খুলে দেবে বলে মনে করছেন কক্সবাজারের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে নতুন রেলপথটি।
দোহাজারী-কক্সবাজার ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথসহ কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশন উদ্বোধন করতে আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও তিনি প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে রেললাইনসহ ১৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও মহেশখালীর মাতারবাড়িতে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তার ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজিপাড়া এলাকায় ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনটি। যাতে থাকবে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা। ঝিনুকের আদলে তৈরি দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর এই স্টেশন ভবনটির আয়তন এক লাখ ৮২ হাজার বর্গফুট। ছয় তলা বিশিষ্ট ভবনটির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কাজ শেষের পর থেকে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে অসংখ্যক মানুষ। এই স্টেশনেই হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
উদ্বোধনের পর কক্সবাজার-চট্টগ্রামে রেল যোগাযোগ শুরু হবে। পরে ঢাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগ চালু হবে। এজন্য সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১ ডিসেম্বর। এদিন রাজধানী থেকে সমুদ্র নগরীতে টেন চলাচল শুরুর পরিকল্পনা করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।
তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা থেকে প্রথমদিকে দিনে একটি আন্তঃনগর ট্রেন চলবে। ট্রেনটি ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। আর কক্সবাজার থেকে বেলা ১টায় যাত্রা করে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ফিরতি পথেও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিমানবন্দর স্টেশনে যাত্রাবিরতি থাকবে। পরে আরও একাধিক ট্রেন যুক্ত করা হবে এই রেলপথে।
জানা গেছে, ঢাকা-কক্সবাজার রুটে নন এসি মেইল ট্রেনে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ১৮৮ টাকা। আর সর্বোচ্চ ভাড়া এসি বার্থে ১ হাজার ৭২৫ টাকা। বর্তমানে রেলের যে ভাড়ার হার আছে, সেই অনুযায়ী তা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এই রেলপথে মঙ্গলবার সাপ্তাহিক বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিন রেল চলবে না। কক্সবাজারকে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে নির্মিত নতুন রেলপথ তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। পরে ঘুমধুম সীমান্ত পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে এই রেললাইন।