আগারগাঁও-মতিঝিল রুটের মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিনই শুরু হবে হেমায়েতপুর-ভাটারা রুটের কাজ
শুরু হবে হেমায়েতপুর-ভাটারা রুটের কাজ : ছবি সংগৃহীত
আগামী ৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও থেকে মতিঝিল রুটের মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন, এরপরই মতিঝিল স্টেশন চত্বরে এমআরটি লাইন-৫ এর উদ্বোধনী ফলকের রেপ্লিকা উন্মোচন করবেন। মেট্রোরেলে মতিঝিল থেকে উত্তরা (২০.১ কিলোমিটার পথ) যেতে ৩৬.৪ মিনিট সময় লাগবে। বর্তমানে সড়কপথে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে ১০৫ মিনিট সময় লাগে।
আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুটের মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-৬) উদ্বোধনের দিনই সাভারের হেমায়েতপুর থেকে ঢাকার ভাটারা পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের (এমআরটি লাইন-৫) কাজ শুরু হবে।
আগামী ৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও থেকে মতিঝিল রুটের মেট্রোরেলের উদ্বোধন করবেন, এরপরই মতিঝিল স্টেশন চত্বরে এমআরটি লাইন-৫ এর উদ্বোধনী ফলকের রেপ্লিকা উন্মোচন করবেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, "একটি লাইনে মেট্রোরেল পরিষেবার উদ্বোধন ও অন্য লাইনের নির্মাণকাজ উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা।"
তিনি বলেন, "দুটি অনুষ্ঠান আলাদা দিনে রাখার কথা হলেও, প্রধানমন্ত্রী একইদিনে উদ্বোধনের প্রস্তাব দেন।"
এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম জানান, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মতিঝিল স্টেশন চত্বরে আওয়ামী লীগের সভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
৩৩,৪৭২ কোটি টাকার এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত ডিসেম্বরে উত্তরা-আগারগাঁও রুটে মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধনের পর মেট্রোরেলে ভ্রমণ করা যাবে ২০.১ কিলোমিটার পথ।
শুক্রবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল), এমআরটি লাইন-৬, এবং লাইন-৫-এর কর্মকর্তারা আগারগাঁও স্টেশন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের একটি মহড়ায় অংশ নেন। অন্যদিকে, উভয় প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সব ধরনের ছুটি আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
ডিএমটিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক টিবিএসকে বলেন, উদ্বোধনের পরের দিনই আগারগাঁও-মতিঝিল রুটে সর্বসাধারণের জন্য মেট্রোরেল খুলে দেওয়া হবে।
ফার্মগেট, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং মতিঝিল এলাকায় তিনটি নতুন মেট্রো স্টেশন খোলার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে সকাল ৮টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চালু হবে মেট্রোরেল পরিষেবা। স্টেশনের সংখ্যা ও পরিষেবার সময় ধীরে ধীরে বাড়ানো হবে বলে জানান এম এ এন সিদ্দিক।
মেট্রোরেলে মতিঝিল থেকে উত্তরা (২০.১ কিলোমিটার পথ) যেতে ৩৬.৪ মিনিট সময় লাগবে। বর্তমানে সড়কপথে এই দূরত্ব অতিক্রম করতে ১০৫ মিনিট সময় লাগে। পুরোদমে পরিষেবা চালু হলে এই রুটের যাত্রীদের যাতায়াতের সময় বাঁচবে ৬৮.৬ মিনিট বা ৬৫.৩৩%।
প্রকল্পটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী বছর কমলাপুরে এ সেবা চালু হলে এ লাইনে দৈনিক যাত্রীর সংখ্যা আরও এক লাখ বাড়বে বলে ধারণা কর্তৃপক্ষের।
তবে, আগারগাঁও-মতিঝিল রুটের তিনটি মেট্রো স্টেশনের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
প্রতিটি স্টেশনের এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট নির্মাণ, ফুটপাত উন্নয়ন এবং এসকেলেটর স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব কাজ শেষ হতে আরও কয়েকদিন লাগবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
হেমায়েতপুর-ভাটারা লাইনের কাজ শুরু হবে ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে সাভারের হেমায়েতপুরে ডিপোর মাটি ও ভূমি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমআরটি লাইন-৫ প্রকল্পের পরিচালক আফতাব হোসেন খান।
১,১৮৯ কোটি টাকার একটি চুক্তির অধীনে জাপানের টি এ ও করপোরেশন এবং বাংলাদেশের স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগের এ প্রকল্পের কাজ উদ্বোধনের পর ডিপোর জন্য ৯৯.২৫ একর জমির উন্নয়নকাজ শুরু হবে।
১৩.৫ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ অংশ এবং ৬.৫ কিলোমিটার এলিভেটেড অংশ নিয়ে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ প্রকল্প ২০১৯ সালে অনুমোদন পায়। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১,২৩৮.৫৫ কোটি টাকা।
২০ কিলোমিটারের মধ্যে নির্মাণ করা হবে ১৪টি স্টেশন, এরমধ্যে নয়টি হবে আন্ডারগ্রাউন্ডে।
২০২৮ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্য ডিএমটিসিএল-এর। এ রুটের মেট্রোরেলে প্রতিদিন প্রায় ১.২৩ মিলিয়ন মানুষ যাতায়াত করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে।