সাকিব আমাকে মারতে এসেছিল: ব্যারিস্টার সুমন

বিতর্ক যেন পিছুই ছাড়ছে না সাকিব আল হাসানের। মাঠ ও মাঠের বাইরে একের পর এক বিতর্কিত কাণ্ডে নাম জড়িয়ে শিরোনাম হয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের এই তারকা অলরাউন্ডার। ফের মাঠের বাইরের কাণ্ডে শিরোনামে উঠে এসেছেন সাকিব।
সম্প্রতি দুবাইয়ে একটি জুয়েলারি দোকানের উদ্বোধন করতে যান সাকিব। আর সেই জুয়েলারি দোকানের কর্ণধার আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান খুনের মামলার আসামি। সাকিব একজন খুনের মামলার আসামির দোকানের উদ্বোধন করতে যাওয়ায় এ নিয়ে দেশব্যাপী চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
সাকিবকে নিয়ে যখন দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বইছে ঠিক সেসময় আরেক বিস্ফোরক তথ্য দিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সাকিব তাকে একবার মারতে এসেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে নিজের ফেসবুক লাইভে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘সাকিব আল হাসান একজন নামি-দামী ক্রিকেটার যার জন্য আমরা গর্ববোধ করি। উনি একটি স্বর্ণের দোকানের উদ্বোধনের জন্য দুবাইয়ে গেছেন। যেকোনো সেলিব্রেটিকে দাওয়াত দিলে তিনি যেতেই পারেন। আমি সাকিব আল হাসানের কোনো দোষ এই পর্যন্ত দেখি না।
কিন্তু যখন জানতে পারলাম ডিবির পক্ষ থেকে সাকিবকে জানানো হয়েছিল, যার দোকান উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন তিনি একজন পুলিশ হত্যার আসামি এবং পলাতক অবস্থায় ইন্টারপোলের সাহায্যে আছে, আমরা তাকে ধরে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি আপনি তার দোকান উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন এরপরেও সাকিব শুনেননি। এটা যে একটা অপরাধ সেটা তিনি জানেন কি না। সেলিব্রেটি হলেই কি তার কোনো অপরাধের বিচার হবে না?’
সাকিবের ভক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি একটা ভিডিও করে সাকিবকে অনুরোধ করেছিলাম যেন জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত না হওয়ার জন্য বলছিলাম যদি ৩ লাখ টাকা লাগে তাকে সেটা দিতেও রাজি।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘সাকিব এমন একজন মানুষ যে কোনো সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না। কিছুদিন আগে তার সঙ্গে সোনারগাঁও হোটেলে দেখা হয়েছিল। তখন ভারতের বিপক্ষে সিরিজ ছিল। সাকিব আমাকে দেখেই পুলিশ-বিসিবির কর্মকর্তার সামনে মারতে এসেছিল। সেখানে আমেরিকান কিছু লোকজন ছিল যাদের সঙ্গে আমি দেখা করতে গিয়েছিলাম। তাদেরকে ইগনোর করে আমাকে মারতে এসেছিল। আমি কিছু বলি নাই। তখন পুলিশরা এসে বলেছিল, বাদ দেন ভাই, সে (সাকিব) সেলিব্রেটি, তার কথা বলে লাভ নাই। আমিও মনে করেছিলাম সেলিব্রেটি মানুষ তার অপরাধ থাকলে, আমি যদি মারও খাই আপনাদের কার কাছে বিচার দেব? তারপরেও কিছু বলি নাই।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু আজ আমার মনে হচ্ছে জুয়া থেকে শুরু করে দুবাইতে উদ্বোধন করা পর্যন্ত বিদ্বান যদি খারাপ মানুষও হয় তাহলে পরিতাজ্য। সে যতই কোয়ালিফাইড লোকই হোক না কেন যদি মানুষ হিসেবে ভালো না হয় তাহলে তার ফ্যান হওয়ার সুযোগ নাই। সাধারণ মানুষ যেভাবে বিচারের মুখোমুখি হয় সাকিবের মতো মানুষ যদি টাকার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে এমন ম্যাসেজ দেই তাহলে কিন্তু আপনি কোনোদিন সোনার বাংলা বানাতে পারবেন না।’
সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘ভালো ফুটবল খেলে, ভালো ক্রিকেট খেলে একজন মানুষ যদি দেশ বিক্রি করে দিতেও চিন্তা না করে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে পারে তাহলে তাকে দিয়ে এ দেশের ভালো কিছু হতে পারে না। যেদিন আমাকে মারতে এসেছিল আমি কাউকে বলি নাই। আমি মনে করছি থাকুক, আল্লাহর কাছে বিচার দিসি।
বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবেও এ ধরনের মানুষ যদি বেয়াদব হয় তারপরে আর বিচার দেওয়ার জায়গা থাকে না। আজ মনে হলো দুয়েক কথা বলা দরকার। তাকে যাকে ফলো করেন, যারা তার ফ্যান তাদেরকে একটা অনুরোধ করব তাকে বলেন দিনে ৮-১০ ঘণ্টা ক্রিকেটের পেছনে সময় দিয়ে ভালো ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি এক ঘণ্টা সময় দিক, ভালো মানুষ হোক। ভালো মানুষ না হলে এই ধরনের মানুষের বাংলাদেশের দরকার পড়ে না। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাব, তাকে ঠিক করেন, তাকে মানুষ বানান। না হয় সে এ ধরনের কাজ করতেই থাকবে।’
এসজি
