৫ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ২৯ জুনের মধ্যে: ইসি সচিব

দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী ২৩ মে’র পর থেকে ২৯ জুনের মধ্যে দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানটি হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ জাহাংগীর আলম।
বুধবার (১৫ মার্চ) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ইসি সচিব।
এ সময় তিনি আরও জানান, প্রবাসীদের ভোটার করতে ঈদের পর আরব আমিরাতে পাইলট প্রকল্প শুরু হবে।
ইসি সচিব জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটি করপোরেশনের ভোট তিন ধাপে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুনের মধ্যে গাজীপুর, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, ‘মে থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। কোনটা কখন হবে তখন জানাব। এইচএসসি পরীক্ষা হবে সম্ভাব্য ৭ জুলাই থেকে। সেজন্য এসএসসি পরীক্ষা শেষে ২৩ মে থেকে ২৯ জুনের মধ্যবর্তী সময়ের তিন ধাপে পাঁচটি সিটির ভোট করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
তিনি জানান, এই তারিখ নির্ধারণের কারণ, রমজান শেষে যে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে, তা চলবে ২৩ মে পর্যন্ত। আর ২৯ জুলাই হচ্ছে ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহার আগে এবং এসএসসি পরীক্ষা শেষে মধ্যবর্তী সময়ে আমরা পাঁচটি সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের আয়োজন করব-এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। তফসিলের সময় কোনটা কোন তারিখে হবে, তা বিস্তারিত জানানো হবে।
জাহাংগীর আলম বলেন, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনে ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে। ভোটকেন্দ্রে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাও রাখতে চায় কমিশন। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তফসিলের আগে।
ইসি সচিব আরও জানান, সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। ‘রোডম্যাপের আলোকে’ কোন কাজে কতটুকু অগ্রগতি, তা কমিশনকে জানানো হযেছে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, নতুন দল নিবন্ধন, নির্বাচনী সীমানার খসড়া প্রকাশ, পর্যবেক্ষক সংস্থার আবেদন যাচাই বাছাই চলছে।
তিনি জানান, মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে- যে ১ লাখ ১০ হাজার মেশিনকে মেরামত করে আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করতে পারব।
অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কত সংখ্যক ইভিএম এবং কতটা আসনে আমরা ব্যবহার হবে, তা চূড়ান্ত করতে পারব। এ বিষয়ে কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
ইসি সচিব জানান, অর্থ ছাড়ে চিঠি দেওয়া হবে। যদি সম্মতি দেয় তাহলে পরবর্তী ধাপে আমরা জানাতে পারব আসলে কোন কোন আসনে কতটি নির্বাচনী এলাকায় ইভিএম ব্যবহার করতে পারব।
সর্বোচ্চ ৬০-৭০টি আসনে সম্ভব কি না জানতে চাইলে সচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত হবে। সংখ্যা নির্ভর করবে ইভিএম মেশিনের উপর। কতগুলোকে ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে পারব, তার উপর নির্ভর করছে কতটি আসনে ইভিএমে ভোট হবে। সক্ষমতার বিষয়ে কমিশন সব সময় বলেছে, সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০ আসনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে। এটার আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে, এ সিদ্ধান্ত থেকে আমরা সরে আসিনি।
সচিব বলেন, আয়তনে ছোট এবং ভোটার সংখ্যা কম, এমন এলাকা বেছে নিলে বেশি সংখ্যক আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়া যাবে। এলাকা বড় হলে ইভিএমের আসন কমে যাবে। কমিশন সচিবালয় এসব বিষয়ে চূড়ান্ত করে পরে কমিশন সভায় উপস্থাপন করবে।
ঈদের পরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি
জাহাংগীর আলম জানান, ঈদুল ফিতরের পরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি দল পাঠিয়ে প্রবাসীদের এনআইডি সেবার বিষয়ে প্রাইলট প্রকল্প চালু করা হবে।
ভোটাররা সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে এসে আবেদন করবেন। সেই আবেদন স্থানীয়ভাবে যাচাই বাছাই ও তদন্ত হবে। পরে দূতাবাসে এসে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও অন্যান্য তথ্য নেওয়া হবে।
এরপর নির্বাচন কমিশন স্মার্ট কার্ড তৈরি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে পাঠাবে। সেখান থেকে এনআইডি নিতে পারবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এখন পর্যন্ত ছয় দেশ থেকে পাঁচ হাজারের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশির ভোটার নিবন্ধনের আবেদন পাওয়ার পর তাদের স্থানীয় ঠিকানা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। এর মধ্যে সাড়ে চার হাজার আবেদনের তদন্ত বাকি রয়েছে; প্রায় তিনশ আবেদন অনুমোদন পেয়েছে আর দুইশ আবেদন বাতিল হয়েছে।
এনএইচবি/এমএমএ/
