প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনেও আপনাদের কাছে নৌকায় ভোট চাই। এসময় নৌকায় ভোট দেওয়ার ওয়াদা করিয়ে তিনি বলেন, আবার আসিব ফিরে, এই সৈকতের তীরে।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে দেশের ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা করেছে। খালেদা-তারেক মানুষ হত্যা, অগ্নিসংযোগ, গুম ছাড়া কিছু করতে পারে না। অস্ত্র চোরাকারবারের মামলায় অভিযুক্ত তারেক জিয়া চক্র জঙ্গিবাদের মদদদাতা। তারা ধ্বংস ছাড়া কিছুই পারে না।

তিনি বলেন, আমি বাবা, মা ও ভাই সবাইকে হারিয়েছি। নতুন করে হারানোর কিছু নেই। হারানোর কষ্ট আমার চেয়ে কেউ ভালো বুঝবে না। আপনাদের মাঝে বাবা, মায়ের স্নেহ, ভাই-বোনের ভালোবাসা পাওয়ার আশা করি। আপনারা আমার পরিবার। আপনারা আমাকে আগলে রেখেছেন। আমার একমাত্র চাওয়া আমি যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকব দেশের মানুষের আহার সংস্থান করা আমার কাজ। টিসিবির মাধ্যমে সস্তায় চাল, ডাল, তেল, চিনি পাওয়ার সু-ব্যবস্থা করেছি। এদের একজন মানুষও অভুক্ত থাকবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক কারণে আমরা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছিলাম। তাদের যত দ্রুত সম্ভব স্বদেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, আপনারা জানেন এই কক্সবাজারে একসময় লবণ চাষিরা খুব কষ্ট পেত। আমরা বিরোধী দলে থাকতে সেই বদরখালীতে লবণ চাষি ও চিংড়ি চাষি সম্মেলন করেছি। ক্ষমতায় আসার পর লবণ চাষিদের সার্বিক উন্নতির জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। লবণ চাষিরা যেন আরও আধুনিক পদ্ধতিকে লবণ চাষ করতে পারে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। দেশের চাহিদা মিটিয়ে যেন বাইরে রপ্তানি করতে পারি সেই ব্যবস্থাও আমরা নেব।

কক্সবাজার পর্যটনের জন্য সবচেয়ে উন্নত জায়গা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করার পর এরশাদ সরকার এসেছে, খালেদা জিয়ার সরকার এসেছে, কেউ এই কক্সবাজারের মানুষের দিকে ফিরে তাকায় নাই। এখানে কোনো উন্নয়ন করে নাই। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই কক্সবাজারের উন্নয়ন হয়েছে। আমি আপনাদের এলাকায় ২৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি, ৪টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছি। বিজয়ের মাসে এসব আপনাদের উপহার।

প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে আসার পর কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান প্রধানন্ত্রীকে নৌকা উপহার দেন।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, আমিনুল হক আমিন, আশিকুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যরিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ এমপি, প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া, মাহবুব মোর্শেদ, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, আলমগীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ শহীদ, সিরাজুল ইসলাম বাবলা, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, তারেক বিন ওসমান, শামশুল আলম মন্ডল প্রমুখ।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রী উখিয়া উপজেলার সমুদ্র তীরবর্তী ইনানীতে বাংলাদেশসহ ২৮টি দেশের নৌবাহিনী ও উপকূলীয় সংগঠনগুলোর অংশগ্রহণে ৪ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ এর উদ্বোধন করেন।

এসজি