পদ্মা সেতু আমার কাছে সাহসের প্রতীক: লি জিমিং
পদ্মা সেতুকে সাহসের প্রতীক হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে (২৪ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় লি জিমিং এ কথা বলেন।
ভিডিও বার্তায় লি জিমিং বলেন, 'আগামীকাল (২৫ জুন) একটি মহৎ দিন! বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা বহুমুখী সেতু অবশেষে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, আর এক দশকের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে! এ পর্যায়ে, আমি এই অসামান্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন জানাতে চাই!
আজ আমার কাছে রয়েছে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি এই ক্ষুদ্রাকৃতির পদ্মা সেতু। সেতুটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নকারী কোম্পানি চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ বা এমবিইসি এটিকে আমার কাছে একটি স্মারক হিসেবে পাঠিয়েছে।
সেতুটি আমার কাছে সাহসের একটি প্রতীক। স্বল্পোন্নত দেশ বাংলাদেশ এমন সেতু নির্মাণ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল। তারপরও বাংলাদেশের মানুষ তাঁদের স্বপ্ন অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। আজ, সেতুটি শুধু বাস্তবায়নই হয়নি, বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে এর শতভাগ নির্মিত হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, যদি সাহসের কোন সীমা না থাকে, তবে আকাশ তার সীমা।
পদ্মা সেতু একটি সংকল্পের প্রতীক। সেতুটি নির্মাণে সময় লেগেছে আট বছর; শক্তিশালী পদ্মার স্রোতধারার উপর এর অবয়ব একটি গল্প বলছে যে কীভাবে মানব প্রকৌশল প্রকৃতির শক্তিকে জয় করেছে। নদী হয়তো হাজার বছর ধরে বহমান, কিন্তু এর চেয়ে বেশি টেকসই হল সেই মানুষদের অধ্যবসায় যারা একদম শূন্য থেকে সেতুটি তৈরি করেছে।
পদ্মা সেতু সমৃদ্ধিরও প্রতীক। বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে সেতুটি বাংলাদেশের জিডিপি ১.৫% বৃদ্ধি করতে পারে এবং বাংলাদেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে উপকৃত করতে পারে। এটি কেবল এ দেশ এবং অঞ্চলকে সংযুক্ত করবে না, বরং অভিন্ন সমৃদ্ধি এবং একটি সমন্বিত ভবিষ্যতের পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে আমাদের দুই দেশের মানুষকে হৃদয় দিয়ে সংযুক্ত করবে।
আপনারা কী মনে করেন?'
উল্লেখ্য, সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার ২৫ শে জুন সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে বহুল কাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পশ্চিমের ২১টি জেলার প্রাপ্ত ৪ কোটি মানুষের বঞ্চনার অবসান ঘটবে। খুলে যাবে অর্থনীতির নতুন দুয়ার।
নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে সাজ সজ্জা সবকিছুই শেষ এখন অপেক্ষা শুধু দ্বার উন্মোচনের। উদ্বোধনের দিন সকাল ১০টায় সেতুর মাওয়া প্রান্তে উপস্থিত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন শেষে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ী বহর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সেতুর উপর দিয়ে চলে যাবে জাজিরা প্রান্তে সেখানেও আর একটি ফলক উন্মোচন করবেন। শুরু হবে সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল। তবে সাধারণ যানবহন চলাচল শুরু হবে ২৬ জুন সকাল থেকে।
এরমধ্য দিয়ে প্রমত্তা পদ্মা পারি দিতে আর ফেরি বা লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এখন মুহূর্তেই প্রমত্তা পদ্মার উপর দিয়ে মাত্র ৬ থেকে ৭ মিনিটে পার হয়ে যাবে শত শত গাড়ি। যে নদী পার হতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাগতো সেটি এখন ৭ মিনিটেই পার হওয়া যাবে।
/এএস