সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান সুজনের
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেছেন, আশা করি নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে আসন্ন সিটি কুমিল্লা করপোরেশন নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবেন।
'একটি রাষ্ট্রে নাগরিকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ নেই' শিরোনামে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানে এ সংবাদ সম্মেলন করেছে সুজন।
সোমবার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়- কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দুটি নির্বাচনের কথা মনে রেখে আমরা আশাবাদী হতে চাই। আমরা জানি যে বিগত দুটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কঠোরতা ও সাহসিকতার সঙ্গে সুচারুরূপে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে কুমিল্লবাসীকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হয়েছিল। এ নির্বাচনের বেশ আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মাঠে নামানো এবং ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্তকে আমরা ইতিবাচকভাবেই দেখছি। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে তাকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কুমিল্লা সিটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানালেও তিনি তা করেননি বলে জানা গেছে। এতে করে একদিকে যেমন নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, অন্যদিকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারপরও আমাদের প্রত্যাশা নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের নেতৃত্বে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়- অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। সফল নির্বাচন অনুষ্ঠানের ভালো দৃষ্টান্তসমূহ অনুসরণ করুন। সব দল ও প্রার্থীর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করুন। প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাই যাতে নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলেন সে ব্যাপারে কঠোর হন। কালো টাকা ও পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। কেউ নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করলে তাৎক্ষণিকভাবে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
সরকারের প্রতি আহ্বান
সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করুন। নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের কোনোভাবেই কোনো দলের পক্ষে প্রভাবিত করবেন না। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবার প্রতি এ বার্তা দিন সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান
যেকোনো মূল্যে বিজয়ী হওয়ার মনোভাব পরিত্যাগ করে নির্বাচনকে একটি প্রতিযোগিতা হিসেবে গ্রহণ করুন। আমরা বিজয়ী হবই এ ধরনের বক্তব্য না দিয়ে গণরায় পেতে নেওয়ার ঘোষণা দিন। দলের মনোনীত বা সমর্থিত প্রার্থীরা যদি নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথভাবে মেনে চলেন সে ব্যাপারে তাদের নির্দেশনা দিন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য কোনোভাবেই প্রভাবিত করবেন না।
ভোটারদের প্রতি আহ্বান
ভোট দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক দায়িত্ব মনে করে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীদের নির্বাচিত করুন। অর্থ বা অন্য কিছুর বিনিময় অথবা অন্ধ আবেগের বশবর্তী হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকুন। দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, যুদ্ধাপরাধী, নারী নির্যাতনকারী, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, ঋণ খেলাপি, বিল খেলাপি, সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি, ভূমিদস্যু, কালো টাকার মালিক অর্থাৎ কোনো অসৎ, অযোগ্য ও গণবিরোধী ব্যক্তিকে ভোট দেবেন না।
সচেতন নাগরিকদের প্রতি আহ্বান
অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য স্ব স্ব অবস্থানে থেকে যথোপযুক্ত ভূমিকা পালন করেন, সেই লক্ষে চাপ সৃষ্টি করুন। সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীদের পক্ষে আওয়াজ তুলুন এবং এমন পরিবেশ সৃষ্টি করুন, যাতে তারা নির্বাচিত হয়ে আসতে পারেন।
এসএন