'আমি আর বাঁচব না, মা ও ছেলেকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে'
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্ঞান ফিরেই দগ্ধ দমকলকর্মী গাউছুল আজম বলেন, 'আমার সহকর্মীরা কেমন আছেন।' তিনি এখনো জানেন না তার ৯ সহকর্মী দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, 'আমি আর বাঁচব না, আমি আমার মাকে দেখতে চাই। আমার ছেলেকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।' হাসপাতালের বেডে শুয়ে বিড়বিড় করে এ কথাগুলো বলছিলেন গাউছুল আজম।
সোমবার (৬ জুন) বিকালে বার্ন ইউনিটে দমকলকর্মী গাউছুল আজমের ভগ্নিপতি মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। এসময় তিনি বলেন, 'গাউছুল আজম পাঁচ বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে যোগদান করেন। দুই বছর আগে তার বিয়ে হয়। তার পাঁচ মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বাড়িতে গেলে ছেলেকে ছাড়া তার একটুও চলে না। গাউছুল তার ছেলেকে অনেক ভালোবাসে।'
রবিবার (৫ জুন) বিকালে গাউছুল আজম ও রবিন মিয়া নামে দুই দমকলকর্মীসহ ৭ জনকে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার করে ঢাকায় আনা হয়। পরে তাদের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
গাউছুল আজমের বরাত দিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, 'অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার স্টেশন থেকে আগুন নেভানোর জন্য ঘটনাস্থলে যান গাউছুল। সেখানে বিস্ফোরণ ঘটলে গাউছুলসহ অনেকেই আহত হন। প্রথমে তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ফায়ার সার্ভিসের দুজনসহ ৭ জনকে ঢাকায় আনা হয়। পরে তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'গাউছুল আজমের অবস্থা ভালো না হওয়ায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। ডিপোতে বিস্ফোরণের পরই আজম অজ্ঞান হয়ে যায়। এরপর তার কিছু মনে ছিল না। সোমবার বিকালে গাউছুল বিড়বিড় করে তার সহকর্মীদের কথা জিজ্ঞাসা করেন তারা কেমন আছে। আর বলে আমি তো মনে হয় বাঁচব না। আমার শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করেন। আমার মা ও ছেলেকে আমাকে একটু দেখান। তাদের দেখতে খুব ইচ্ছে করছে।'
এএইচ/এসজি/