খুলল জট, মালয়েশিয়ায় কর্মী যাবে এ মাসেই
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির জট খুলল। চলতি মাস থেকেই বাংলাদেশি কর্মী যাবে দেশটিতে। বৃহস্পতিবার (২ জুন) প্রবাসী কল্যাণ ভবনে সফররত মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভাননের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ। এসময় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন উপস্থিত ছিলেন।
ইমরাম আহমদ বলেন, একটি সমঝোতাতে এসেছি। চলতি মাসেই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারব। এ সময় প্রবাসী কল্যাণ সচিব সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, এটা ছিল প্রথম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ মিটিং। বাংলাদেশের দেওয়া লিস্ট অনুয়ায়ীই কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) যেভাবে আছে সেভাবেই হবে।
আগামী এক বছরে ২ লাখ মানুষ যাবে দেশটিতে। ওয়ার্কারদের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের নূন্যতম বেতন দেড় হাজার রিঙ্গিত ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে ইমরান আহমদ বলেন, বৈধ ১৫২০ টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই কর্মী যাবে। কিন্তু সিলেকশন দেবে মালয়েশিয়া সরকার। ২৫ এজেন্সির বিষয় এমওইউতে নাই।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সিন্ডিকেশনের বিষয়টা আসবে না। এটা উনাদের কাজ। উনারা করবেন। এমওইউতে কস্ট নির্ধারণ করা আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জিরো কস্ট মাইগ্রেশান উনারা করার চেষ্টা করে যাবেন। এর বাইরে কোনো এজেন্সি ফিস নিলে ব্যবস্থা উভয় পক্ষ নেবো। ১ লাখ ৬০ হাজার থেকে কম হবে ব্যয়। মার্কেট খোলার জন্য আর কোনো মিটিং লাগবে না আশা করি।
একেক দেশের সঙ্গে ওদের নানা চুক্তি আছে। আমাদেরটা আমরা বলতে পারি এমনটা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৫ বছরে ৫ লাখ কর্মী নেবে তারা। কিন্তু উনাদের চাহিদা বেশি। আমরা এ বছরেই ৫ লাখ কর্মী পাঠাতে পারব ইনশাআল্লাহ। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান বুধবার রাতে (১ জুন) ঢাকায় আসেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদের আমন্ত্রণে এম সারাভানান বাংলাদেশে এসেছেন।
দীর্ঘ ৩ বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। এর মাধ্যমে নতুন করে দেশটিতে কর্মী পাঠানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু মালয়েশিয়ার একটি শর্তের কারণে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। মালয়েশিয়া শর্ত দেয় তাদের নির্বাচিত ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নেবে তারা। এ শর্তের কথা জানিয়ে এম সারাভানান চিঠিও দেন ইমরান আহমদকে।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন বায়রাও এতে রাজি নয়। সংগঠনটির দাবি যোগ্য সব এজেন্টই লোক পাঠাতে পারবে। সিন্ডিকেট চলবে না। এই সিন্ডিকেটের কারণেই ৩ বছর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ ছিল। তাছাড়া এই শর্ত অন্য ১৩টি দেশকে দেয়নি মালয়েশিয়া। এ অবস্থায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানানের চিঠির জবাবে বলেন, ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সির শর্তে বাংলাদেশ রাজি নয়। এ অবস্থায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে জনশক্তি রপ্তানি।
আরইউ/এএজেড