স্বমহিমায় আলো ছড়ানো মুশতারী শফীকে জাতির শ্রদ্ধা
বাংলাদেশ ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনের একজন অন্যতম সংগঠক শহীদজায়া মুশতারী শফীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সকাল সোয়া ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রয়াতের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
সব শেষে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ। তিনি বলেন, 'মুশতারী শফী এমন একজন মানুষ যিনি মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রেখেছেন, স্বজন হারিয়েছেন; একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন বিভিন্ন নাগরিক আন্দোলনে। কেন্দ্র থেকে নয়, চট্টগ্রাম থেকে তিনি যে ভূমিকা রেখেছেন তা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করেছে। স্বমহিমায় আলো সর্বক্ষেত্রে ছড়িয়েছেন। '
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মহদেহ নিয়ে যাওয়া হবে চট্টগ্রামে। বুধবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মরদেহ আনা হবে। এরপর দুপুর ১২টায় জামিয়তুল ফালাহ মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে তাঁকে পরিবার কর্তৃক নির্ধারিত স্থানে দাফন করা হবে।
মুশতারী শফী সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকালে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৮৪ বছর বয়সী মুশতারী শফী কিডনি, রক্তে সংক্রমণসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। ২ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনা হয়েছিল। এরপর কিছুটা সুস্থ হয়ে এক দফা বাসা ঘুরে ১৪ ডিসেম্বর থেকে তিনি সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ এপ্রিল তার স্বামী চিকিৎসক মোহাম্মদ শফী ও ছোট ভাই এহসানুল হক আনসারীকে হত্যা করে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শব্দসৈনিক হিসেবেও কাজ করেছেন বেগম মুশতারী।
এপি/এসএ/