শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ | ২৭ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ নিজের কক্ষে পাগলের মতো ছোটাছুটি করছেন। ছাঁটাইয়ের চাপ জগদ্দল পাথরের মতো তার মাথার ওপর চেপে বসেছে। ছাঁটাই বন্ধ করার উপায় খুঁজছেন তিনি। দিন-রাত তার এক চিন্তা। ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? কি বললে কর্তৃপক্ষ ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে তা নিয়ে তিনি ভাবেন। বিকল্প প্রস্তাবগুলো তো ভালো ছিল। কেন তারা সেগুলোকে গ্রহণ করছে না? কেন সেগুলোকে যৌক্তিক মনে করছে না? কেন তারা ভাবছেন, ছাঁটাই-ই তাদের একমাত্র সমাধান? যাদের ছাঁটাই করতে চাচ্ছে সেই লোকগুলো বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠানকে তারা অনেক দিয়েছে। দিন নেই রাত নেই গাধার খাটুনি খেটে তারা প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করিয়েছে। অথচ বিপদের দিনে সেই প্রতিষ্ঠানই তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে! না না! এটা মানা যায় না।

আসিফ মনে মনে বললেন, আমি আমার কথা বলে যাব। তালিকা চাইলে বলব, আমার পক্ষে তালিকা করা সম্ভব না। ছাঁটাই করার মতো কাউকে দেখছি না। প্রয়োজনে বেতন কমিয়ে দিন। সেটাও মানা যায়। এই বিপদের দিনে ছাঁটাই কেন? এরা যাবে কোথায়?

আসিফ আহমেদের ভাবনাগুলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তার কক্ষে কয়েকজন বিভাগীয় প্রধান এল। তাদের দেখে আসিফ আহমেদ নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলেন। তাদেরকেও বসতে বললেন। পিয়ন এসে সবাইকে চা-নাশতা দিতে শুরু করে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। সবাই চুপচাপ। আসিফ বললেন, কি হলো, চা নাও!

বিজ্ঞাপন বিভাগের নুরুজ্জামান চায়ে চুমুক দিয়ে কাপটা টেবিলের ওপর রাখল। তারপর বলল, কিছু করতে পারলেন?
এমডি সাহেব ছাঁটাইয়ের বিকল্প কিছু দেখছেন না।
কেন? আমাদের প্রস্তাবগুলো পছন্দ হয়নি!
না। উনি বললেন, এসব দিয়ে হবে না। তালিকা করে আনেন। ছাঁটাই ছাড়া বিকল্প নেই। এত লোক আমার কোনো প্রয়োজন নেই। কাগজের ভলিউম কমে গেছে। লোকও কমাতে হবে। যখন ভলিউম বাড়বে তখন লোক বাড়াব। নতুন লোক দিয়ে চালাব! আমার প্রস্তাবগুলো পড়েও দেখল না। আচ্ছা অন্যরা কি করছে? কোনো খবর পেলে?
এখনো কেউ ছাঁটাইয়ে যায়নি। তবে ছাঁটাইয়ের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নুরুজ্জামান বলল।
সুনির্দিষ্ট করে বলো না! কোন কোন পত্রিকা ছাঁটাই করতে পারে?
প্রথম আলো, ইত্তেফাক, সমকাল, ডেইলি স্টারসহ অনেকেই। বেশ কিছু পত্রিকা তো বন্ধই হয়ে গেছে। অনেক সাংবাদিক বেকার হয়েছে।
কিন্তু বড় কাগজগুলো এখনো ছাঁটাইয়ে যায়নি, তাই না?

নুরুজ্জামান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। এরমধ্যেই মামুন রশিদ হন হন করে সম্পাদকের কক্ষে এসে হাজির হলো। এসেই সে বলল, কোনো পত্রিকাই ছাঁটাই করছে না। আমাদের কেন ছাঁটাই করতে হবে আসিফ ভাই? আপনি এমডি সাহেবকে বুঝিয়ে বলেন। প্রয়োজন হলে আমাদেরকে নিয়ে চলেন।
আমি স্পষ্ট করেই তোমাদের বলছি, ছাঁটাই করতে হলে আমি নাই। প্রয়োজন হলে আমি পদত্যাগ করব। তবু ছাঁটাই করতে পারব না। আমি কারো পেটে লাথি দিতে পারব না।

ঠিক আছে আসিফ ভাই। আপনার এই সিদ্ধান্তকে স্যালুট জানাই।
না মানে আমার নিজস্ব একটা নীতি তো আছে! নীতি-নৈতিকতার বাইরে আমি কিভাবে যাব? আমি নীতি বিসর্জন দিতে পারব না। অন্যরা পারতে পারে। আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি যদি ভাবি, অন্যদের ডুবিয়ে দিয়ে আমি নিজে বাঁচব। তাহলে তা সম্ভব হবে না। কোনো দিনও হবে না। একা বাঁচা যায় না। এটা যদি কেউ ভাবে, তাহলে তা ভুল।
ধন্যবাদ আসিফ ভাই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি আসি।
কথা শেষ করেই মামুন রশিদ চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায়। এ সময় তার বেতনের কথা মনে পড়ে। আচ্ছা আসিফ ভাই, আরেকটা কথা ভুলে গেছি বলতে। বেতনের কি অবস্থা আমাদের?
নুরুজ্জামানের সঙ্গে সে বিষয় নিয়েই কথা বলছিলাম। বিজ্ঞাপনের তো কোনো টাকাই পাচ্ছি না। কিছু টাকা পাওয়া গেলে নিচের দিক থেকে শুরু করা যেত। চেষ্টা করছি। দেখা যাক।
কেন আমাদের কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা দেবে না? মামুন রশিদ জানতে চাইল।
কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা বার বারই বলছে, আমরা কোনো টাকা-পয়সা দিতে পারব না। তারা নিজেদের বিজ্ঞাপনের টাকাটাও যদি দিত তাহলেও কিন্তু আমাদের কোনো সংকট থাকত না। তারা বিজ্ঞাপন করবে কিন্তু টাকা দেবে না। এ এক আজব জায়গা!
মামুন রশিদ আর দাঁড়াল না। আসিফ আহমেদ নুরুজ্জামানকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি সর্বোচ্চ চেষ্টা কর। আমি যাদেরকে ফোন করলাম তারা কি কোনো চেক দিয়েছে?
রেডি করছে। শিগগিরই দেবে বলেছে। আপনি একটু চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেন না; আমাদের বিজ্ঞাপনের টাকাও যদি এই বিপদের সময় দিত!
বলেছি। অনেকবার বলেছি। উনি বললেন, আমি এমডিকে বলে দিচ্ছি। এমডি সাহেব সেদিক ডেকে নিয়ে বলল, আপনাদের বেতনের বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেবকে কিছু বলার দরকার নেই। আমি দেখছি কি করা যায়। আর তাকে কেনই বা বলেন, বুঝি না! তাকে বললে কি সমাধান হবে?
নুরুজ্জামান বলল, বিপদের সময় যদি বেতনটাও ঠিকমতো না দেওয়া যায়!
দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে আসিফ আহমেদ বললেন, হুম। আচ্ছা, তুমি তাহলে যাও। চেষ্টা কর। সর্বোচ্চ চেষ্টা কর। আমরা দেখি কতদূর কি করতে পারি।
জি। ঠিক আছে।
নুরুজ্জামান চলে যেতে না যেতেই প্রশাসন বিভাগের রাকিব এসে বলল, স্যার এমডি স্যার নাকি বলছে, করোনার মধ্যে যারা অফিস করে না; তাদের বেতন কাটতে!
কে বলেছে তোমাকে?
স্যার, অ্যাকাউন্টস থেকে বলছে।
কি বলেছে?
বলেছে, করোনাকালীন কে কয়দিন অফিস করেছে তার তালিকা দেন। বেতন হওয়ার আগেই দিতে হবে।
আমরা তো অনেককে বাসা থেকে অফিস (হোম অফিস) করার জন্য বলেছি। তারা বাসায় থেকে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাচ্ছে। অনলাইনে সাপোর্ট দিচ্ছে। তাদের কি হবে? আমাদের লোকবল তো এমনিতেই কম। করোনার মধ্যে প্রতিদিন পত্রিকাটা বের করতে হয়। কাজ না করলে কিভাবে বের হয়? করোনার মধ্যে সবাই কষ্ট করে অফিসে আসে। আমরা কাউকে গাড়ি সাপোর্টও ঠিকমতো দিতে পারি না।
জি স্যার। রাকিব বলল।
তুমি বলো, আমাদের সবাই অফিস করছে। অফিসের নির্দেশেই অনেকে বাসা থেকে অফিস করছে। কারণ, সবাইকে অফিসে টেনে আনলে আরও বিপজ্জনক কিছু ঘটলে পত্রিকা বের করাই সম্ভব হবে না। আর ওরা আমার সঙ্গে কেন কথা বলে না?
স্যার, আমি বলেছি আপনার সঙ্গে কথা বলতে।
ঠিক আছে তুমি যাও।

রাকিব চলে যাওয়ার পর আসিফ আহমেদ আয়-ব্যয়ের হিসাবের ফাইলে চোখ রাখে। আর কোন কোন খাত থেকে খরচ কমানো যায় তা ভালো করে দেখে। পত্রিকার প্রেস, হিসাব বিভাগ এবং সাধারণ বিভাগে লোকবল অনেক বেশি। সেখানে বাড়তি প্রায় চল্লিশ লাখ টাকা খরচ হয়। এই খরচের কথা মুখে আনা যায় না। তা ছাড়া প্রতিমাসে গ্রুপের বিজ্ঞাপন বাবদ বিশ থেকে পঁচিশ লাখ টাকার বিল হয়। ওই বিলও প্রতি মাসে পাওয়া যায় না। ওই বিষয় নিয়ে কথা বলাই মানা। তার মানে ন্যূনতম ষাট লাখ টাকা বাড়তি খরচের বোঝা!

আসিফ আহমেদ মনে মনে ভাবেন, কেন এই খরচের বোঝা আমি বহন করব? কেন আমাকে বলা হবে, লোক কমাও লোক কমাও! এই এক গীত তো শুরু থেকেই শুনে আসছি। কত লোক চলে গেল! নতুন লোক তার পরিবর্তে কয়জন নেওয়া হয়েছে? লোক না থাকলে পত্রিকা বের করব কাদের দিয়ে? ভালো পত্রিকা বানাতে চাই ভালো লোক। পত্রিকা চাইবে প্রথম আলোর মতো! আর লোক দেবে মানবকণ্ঠের মতো! তাহলে ভালো পত্রিকা কীভাবে হবে?

আরেকটা বিষয় আসিফের মাথায় ঘুরপাক খায়। পত্রিকার মালিকরা পত্রিকা বের করার সময় বলেন, আমি ভাই প্রথম আলোর মতো একটা পত্রিকা চাই। কিন্তু প্রথম আলোর মালিকের মতো আমরা হতে পারব না। ওটা সম্ভব নয়। আমরা পত্রিকা চালাব আমাদের মতো করে। আপনারা আমাদের নির্দেশ মোতাবেক পত্রিকা করবেন। ভালো পত্রিকা করার জন্য যে পেশাদার লোক লাগে সেটাও তারা বুঝতে চান না। অথচ প্রতিদিন প্রথম আলোর সঙ্গে তুলনা করেন। কথায় কথায় বলেন, ওরা পারলে আপনারা কেন পারছেন না?

আসিফ মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, দিনের পর দিন আপোস করবেন না তিনি। কিছুতেই তিনি মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হবেন না। নিজের নীতি-নৈতিকতা, সত্ত্বাকে তিনি বিকিয়ে দেবেন না। সম্পাদকগিরিই তার কাছে বড় নয়। বড় হচ্ছে মানবিকতা। একজন মানুষ মানবিক না হলে সে আর মানুষ থাকে না। নিজের স্বার্থে সেই মানবিকতা তিনি জলাঞ্জলি দেবেন না। সবকিছু জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না। তাহলে আর কিছু থাকে না।

আসিফ আহমেদের ভাবনাগুলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তার মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখেন, এমডি সাহেবের ফোন। ফোন তুলে হ্যালো বলতেই অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল অচেনা এক কণ্ঠস্বর। আসিফ ভাবে, এটা তো এমডি সাহেবের কণ্ঠস্বর নয়! দুদিন আগেও তার কণ্ঠস্বর এমন ছিল না। তার মানে কী!

শাহবাজ খান রাশভারী কণ্ঠে বললেন, আমি শাহবাজ খান বলছি। তালিকা বানিয়েছেন? ছাঁটাইয়ের তালিকা! বুঝতে পারছেন? তালিকাটা নিয়ে কালই আমার সঙ্গে দেখা করেন। বেতন পারপাস কত যেন কমাতে বলেছিলাম? মনে আছে নিশ্চয়ই। অ্যাকাউন্টস নিয়ে বসেন। ভালো করে হিসেব কষে তালিকাটা বানান। আমি কালই তালিকাটা চাই।
কথা বলা শেষ করে শাহবাজ খান ফোন কেটে দিলেন। আসিফ আহমেদ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। হতাশায় ডুবে যান তিনি।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad
Header Ad

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার

দিলশাদ আফরিন। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক কমিটির শৃঙ্খলা ও আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সংগঠনটির নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা শাখার সদস্য দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এই বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়।

বিষয়টি বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) গণমাধ্যমের সামনে আসে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই বহিষ্কারাদেশে বলা হয়, ‘এই পত্রের মাধ্যমে আপনাকে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি-এর নিয়ম ও নীতিমালা অনুযায়ী আপনার সাম্প্রতিক কর্মকান্ড আমাদের সংগঠনের শৃঙ্খলা এবং আদর্শের পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হয়েছে। সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে এবং সংগঠনের শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন এর অনুরোধক্রমে আপনাকে জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলার দায়িত্বে থাকা জাতীয় নাগরিক কমিটির সাবেক যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন দিলশাদ আফরিনকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছিল। জাতীয় নাগরিক কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় গত ৮ এপ্রিল তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

আফরিন জাতীয় নাগরিক কমিটির শহীদ আহত কল্যাণ সেলের কোনো দায়িত্বে ছিলেন না। তারপরেও তিনি ব্যক্তিগতভাবে শহীদ ও আহত পরিবারের আর্থিক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। যা নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটি অবগত ছিল না বলেও জানান তিনি।

Header Ad
Header Ad

সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে বিএনপি ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। এ ছাড়া জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বাড়ানো যায়, তা নিয়েও দলটি কাজ করতে চায়।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) আয়োজনে বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫–এ অংশ নিয়ে বিএনপি এসব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘১ ট্রিলিয়ন ডলার ইকোনমি’ শিরোনামে দেওয়া ওই পোস্টে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লিখেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থান বা চাকরির ব্যবস্থা করবে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই)/মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) লক্ষ্যমাত্রার শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ থেকে জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। ২০৩৪ সালে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ১ ট্রিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে বিএনপি। জনগণের ঘাড় থেকে বাড়তি করের লাগাম টেনে ধরা, মানুষের মন থেকে করের ভয় দূর করে কীভাবে কর আহরণ বৃদ্ধি করা যায়, তা নিয়েও কাজ করতে চায় বিএনপি।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ বা এফডিআইকে জনপ্রিয় করতে বিএনপি ১১টি রেগুলেটরি পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছে বলেও পোস্টে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। এর মধ্যে আটটি প্রস্তাবের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এগুলো হলো বিডাকে কার্যকর করা, ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট বিধির আধুনিকীকরণ, বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৪x৭ (দিনে ২৪ ঘণ্টা ও সপ্তাহে ৭ দিন) সেবা চালু করা, স্বয়ংক্রিয় মুনাফা প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা, স্থানীয়ভাবে দক্ষ জনশক্তির ব্যবস্থা করা, বিনিয়োগকারীদের নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধি।

সরকার গঠন করতে পারলে দেশের মানবসম্পদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা নেওয়া, প্রকৃত প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের পরিমাণ ও আওতা বৃদ্ধির জন্য বিএনপি অতীতের চেয়েও ব্যাপক সফলতা অর্জন করতে চায় বলে জানান মির্জা ফখরুল। পোস্টে তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিনিয়োগ সম্মেলন উপলক্ষে এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনটি বিষয় বলেছেন। এগুলো হলো ঐক্যই ভবিষ্যৎ জাতীয় উন্নয়নের সোপান, এফডিআই আকৃষ্ট করতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকার আইন করেছিল এবং দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকারগুলোর বিনিয়োগবান্ধব নীতি ছিল।

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১ টা থেকে ‍দুপুর ১২ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকা মেহেরপুর জেলার ইছাখালি সীমান্ত এলাকার মেইন পিলার ১২৪ এর নিকট শূন্য রেখা বরাবর ভারতীয় পার্শ্বে বিএসএফ নব চন্দ্রপুর ক্যাম্পে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এবং প্রতিপক্ষ ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সাথে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বিজিবি’র পক্ষে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্টাফ অফিসারসহ মোট ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব প্রদান করেন।

অপরদিকে বিএসএফ এর পক্ষে ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী বিনয় কুমার তাঁর স্টাফ অফিসারসহ ৮ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বৈঠকের শুরুতে উভয় পক্ষ ঈদ-উল-ফিতর পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার সীমান্ত এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার লক্ষ্যে চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, যৌথ টহল তৎপরতা জোরদারকরণ এবং গোয়েন্দা নজরদারির বিষয়সমূহে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সীমান্তকে অধিক সুসংহত ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। এছাড়াও, সীমান্তে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা ও সীমান্ত সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ সম্মত হন।

বৈঠক শেষে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডার মেইন পিলার ১২৪ সহ তৎসংলগ্ন সীমান্ত পিলারসমূহ যৌথভাবে পায়ে হেঁটে পরিদর্শন করেন।
দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আন্তরিক ও সদ্ভাবপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক শেষ হয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন বহিষ্কার
সরকারে এলে প্রথম ১৮ মাসে ১ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিএনপি
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
আবারও চেন্নাইয়ের অধিনায়ক হলেন ধোনি
‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলা গ্রেফতার
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা, ভরি ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা
ভিন্ন ধর্মের ছেলের সঙ্গে প্রেম, বাবার হাতে প্রাণ গেল মেয়ের
পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হলেন সাবেক আইজিপি ময়নুল
জেনে নিন গ্রীষ্মে সুস্বাদু আর উপকারী কাঁচা আমের ১১টি বিস্ময়কর গুণ
এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে কিশোরী
সাধারণ মানুষ চায় এই সরকার আরো ৫ বছর থাকুক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে টাঙ্গাইলে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মানববন্ধন (ভিডিও)
জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরায়েল এমন অপকর্মের সাহস পেত না: মির্জা আব্বাস (ভিডিও)
নওগাঁয় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২
বাংলাদেশ রেলওয়ের দুই কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি
২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশে হাসপাতাল বানাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি
কাদের-কামালসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করতে চিঠি
সিলেটে থানায় লালগালিচা দেখে ক্ষোভ ঝাড়লেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দিল্লিতে লিঙ্গ পরিবর্তনের চিকিৎসা নিতে এসে গ্রেপ্তার ৫ বাংলাদেশি
রবিবার ৩ জেলায় সাধারণ ছুটি, সবমিলিয়ে টানা ৪ দিনের অবকাশ