বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২০

বিষাদ বসুধা

আসিফ আহমেদ নিজের কক্ষে পাগলের মতো ছোটাছুটি করছেন। ছাঁটাইয়ের চাপ জগদ্দল পাথরের মতো তার মাথার ওপর চেপে বসেছে। ছাঁটাই বন্ধ করার উপায় খুঁজছেন তিনি। দিন-রাত তার এক চিন্তা। ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে। কিন্তু কীভাবে? কি বললে কর্তৃপক্ষ ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে তা নিয়ে তিনি ভাবেন। বিকল্প প্রস্তাবগুলো তো ভালো ছিল। কেন তারা সেগুলোকে গ্রহণ করছে না? কেন সেগুলোকে যৌক্তিক মনে করছে না? কেন তারা ভাবছেন, ছাঁটাই-ই তাদের একমাত্র সমাধান? যাদের ছাঁটাই করতে চাচ্ছে সেই লোকগুলো বছরের পর বছর প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করেছে। প্রতিষ্ঠানকে তারা অনেক দিয়েছে। দিন নেই রাত নেই গাধার খাটুনি খেটে তারা প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করিয়েছে। অথচ বিপদের দিনে সেই প্রতিষ্ঠানই তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে! না না! এটা মানা যায় না।

আসিফ মনে মনে বললেন, আমি আমার কথা বলে যাব। তালিকা চাইলে বলব, আমার পক্ষে তালিকা করা সম্ভব না। ছাঁটাই করার মতো কাউকে দেখছি না। প্রয়োজনে বেতন কমিয়ে দিন। সেটাও মানা যায়। এই বিপদের দিনে ছাঁটাই কেন? এরা যাবে কোথায়?

আসিফ আহমেদের ভাবনাগুলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তার কক্ষে কয়েকজন বিভাগীয় প্রধান এল। তাদের দেখে আসিফ আহমেদ নিজের চেয়ারে গিয়ে বসলেন। তাদেরকেও বসতে বললেন। পিয়ন এসে সবাইকে চা-নাশতা দিতে শুরু করে। কারো মুখে কোনো কথা নেই। সবাই চুপচাপ। আসিফ বললেন, কি হলো, চা নাও!

বিজ্ঞাপন বিভাগের নুরুজ্জামান চায়ে চুমুক দিয়ে কাপটা টেবিলের ওপর রাখল। তারপর বলল, কিছু করতে পারলেন?
এমডি সাহেব ছাঁটাইয়ের বিকল্প কিছু দেখছেন না।
কেন? আমাদের প্রস্তাবগুলো পছন্দ হয়নি!
না। উনি বললেন, এসব দিয়ে হবে না। তালিকা করে আনেন। ছাঁটাই ছাড়া বিকল্প নেই। এত লোক আমার কোনো প্রয়োজন নেই। কাগজের ভলিউম কমে গেছে। লোকও কমাতে হবে। যখন ভলিউম বাড়বে তখন লোক বাড়াব। নতুন লোক দিয়ে চালাব! আমার প্রস্তাবগুলো পড়েও দেখল না। আচ্ছা অন্যরা কি করছে? কোনো খবর পেলে?
এখনো কেউ ছাঁটাইয়ে যায়নি। তবে ছাঁটাইয়ের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। নুরুজ্জামান বলল।
সুনির্দিষ্ট করে বলো না! কোন কোন পত্রিকা ছাঁটাই করতে পারে?
প্রথম আলো, ইত্তেফাক, সমকাল, ডেইলি স্টারসহ অনেকেই। বেশ কিছু পত্রিকা তো বন্ধই হয়ে গেছে। অনেক সাংবাদিক বেকার হয়েছে।
কিন্তু বড় কাগজগুলো এখনো ছাঁটাইয়ে যায়নি, তাই না?

নুরুজ্জামান কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল। এরমধ্যেই মামুন রশিদ হন হন করে সম্পাদকের কক্ষে এসে হাজির হলো। এসেই সে বলল, কোনো পত্রিকাই ছাঁটাই করছে না। আমাদের কেন ছাঁটাই করতে হবে আসিফ ভাই? আপনি এমডি সাহেবকে বুঝিয়ে বলেন। প্রয়োজন হলে আমাদেরকে নিয়ে চলেন।
আমি স্পষ্ট করেই তোমাদের বলছি, ছাঁটাই করতে হলে আমি নাই। প্রয়োজন হলে আমি পদত্যাগ করব। তবু ছাঁটাই করতে পারব না। আমি কারো পেটে লাথি দিতে পারব না।

ঠিক আছে আসিফ ভাই। আপনার এই সিদ্ধান্তকে স্যালুট জানাই।
না মানে আমার নিজস্ব একটা নীতি তো আছে! নীতি-নৈতিকতার বাইরে আমি কিভাবে যাব? আমি নীতি বিসর্জন দিতে পারব না। অন্যরা পারতে পারে। আমার পক্ষে সম্ভব না। আমি যদি ভাবি, অন্যদের ডুবিয়ে দিয়ে আমি নিজে বাঁচব। তাহলে তা সম্ভব হবে না। কোনো দিনও হবে না। একা বাঁচা যায় না। এটা যদি কেউ ভাবে, তাহলে তা ভুল।
ধন্যবাদ আসিফ ভাই। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমি আসি।
কথা শেষ করেই মামুন রশিদ চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায়। এ সময় তার বেতনের কথা মনে পড়ে। আচ্ছা আসিফ ভাই, আরেকটা কথা ভুলে গেছি বলতে। বেতনের কি অবস্থা আমাদের?
নুরুজ্জামানের সঙ্গে সে বিষয় নিয়েই কথা বলছিলাম। বিজ্ঞাপনের তো কোনো টাকাই পাচ্ছি না। কিছু টাকা পাওয়া গেলে নিচের দিক থেকে শুরু করা যেত। চেষ্টা করছি। দেখা যাক।
কেন আমাদের কর্তৃপক্ষ কোনো টাকা দেবে না? মামুন রশিদ জানতে চাইল।
কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা বার বারই বলছে, আমরা কোনো টাকা-পয়সা দিতে পারব না। তারা নিজেদের বিজ্ঞাপনের টাকাটাও যদি দিত তাহলেও কিন্তু আমাদের কোনো সংকট থাকত না। তারা বিজ্ঞাপন করবে কিন্তু টাকা দেবে না। এ এক আজব জায়গা!
মামুন রশিদ আর দাঁড়াল না। আসিফ আহমেদ নুরুজ্জামানকে উদ্দেশ করে বললেন, তুমি সর্বোচ্চ চেষ্টা কর। আমি যাদেরকে ফোন করলাম তারা কি কোনো চেক দিয়েছে?
রেডি করছে। শিগগিরই দেবে বলেছে। আপনি একটু চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেন না; আমাদের বিজ্ঞাপনের টাকাও যদি এই বিপদের সময় দিত!
বলেছি। অনেকবার বলেছি। উনি বললেন, আমি এমডিকে বলে দিচ্ছি। এমডি সাহেব সেদিক ডেকে নিয়ে বলল, আপনাদের বেতনের বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেবকে কিছু বলার দরকার নেই। আমি দেখছি কি করা যায়। আর তাকে কেনই বা বলেন, বুঝি না! তাকে বললে কি সমাধান হবে?
নুরুজ্জামান বলল, বিপদের সময় যদি বেতনটাও ঠিকমতো না দেওয়া যায়!
দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে আসিফ আহমেদ বললেন, হুম। আচ্ছা, তুমি তাহলে যাও। চেষ্টা কর। সর্বোচ্চ চেষ্টা কর। আমরা দেখি কতদূর কি করতে পারি।
জি। ঠিক আছে।
নুরুজ্জামান চলে যেতে না যেতেই প্রশাসন বিভাগের রাকিব এসে বলল, স্যার এমডি স্যার নাকি বলছে, করোনার মধ্যে যারা অফিস করে না; তাদের বেতন কাটতে!
কে বলেছে তোমাকে?
স্যার, অ্যাকাউন্টস থেকে বলছে।
কি বলেছে?
বলেছে, করোনাকালীন কে কয়দিন অফিস করেছে তার তালিকা দেন। বেতন হওয়ার আগেই দিতে হবে।
আমরা তো অনেককে বাসা থেকে অফিস (হোম অফিস) করার জন্য বলেছি। তারা বাসায় থেকে নিয়মিত রিপোর্ট পাঠাচ্ছে। অনলাইনে সাপোর্ট দিচ্ছে। তাদের কি হবে? আমাদের লোকবল তো এমনিতেই কম। করোনার মধ্যে প্রতিদিন পত্রিকাটা বের করতে হয়। কাজ না করলে কিভাবে বের হয়? করোনার মধ্যে সবাই কষ্ট করে অফিসে আসে। আমরা কাউকে গাড়ি সাপোর্টও ঠিকমতো দিতে পারি না।
জি স্যার। রাকিব বলল।
তুমি বলো, আমাদের সবাই অফিস করছে। অফিসের নির্দেশেই অনেকে বাসা থেকে অফিস করছে। কারণ, সবাইকে অফিসে টেনে আনলে আরও বিপজ্জনক কিছু ঘটলে পত্রিকা বের করাই সম্ভব হবে না। আর ওরা আমার সঙ্গে কেন কথা বলে না?
স্যার, আমি বলেছি আপনার সঙ্গে কথা বলতে।
ঠিক আছে তুমি যাও।

রাকিব চলে যাওয়ার পর আসিফ আহমেদ আয়-ব্যয়ের হিসাবের ফাইলে চোখ রাখে। আর কোন কোন খাত থেকে খরচ কমানো যায় তা ভালো করে দেখে। পত্রিকার প্রেস, হিসাব বিভাগ এবং সাধারণ বিভাগে লোকবল অনেক বেশি। সেখানে বাড়তি প্রায় চল্লিশ লাখ টাকা খরচ হয়। এই খরচের কথা মুখে আনা যায় না। তা ছাড়া প্রতিমাসে গ্রুপের বিজ্ঞাপন বাবদ বিশ থেকে পঁচিশ লাখ টাকার বিল হয়। ওই বিলও প্রতি মাসে পাওয়া যায় না। ওই বিষয় নিয়ে কথা বলাই মানা। তার মানে ন্যূনতম ষাট লাখ টাকা বাড়তি খরচের বোঝা!

আসিফ আহমেদ মনে মনে ভাবেন, কেন এই খরচের বোঝা আমি বহন করব? কেন আমাকে বলা হবে, লোক কমাও লোক কমাও! এই এক গীত তো শুরু থেকেই শুনে আসছি। কত লোক চলে গেল! নতুন লোক তার পরিবর্তে কয়জন নেওয়া হয়েছে? লোক না থাকলে পত্রিকা বের করব কাদের দিয়ে? ভালো পত্রিকা বানাতে চাই ভালো লোক। পত্রিকা চাইবে প্রথম আলোর মতো! আর লোক দেবে মানবকণ্ঠের মতো! তাহলে ভালো পত্রিকা কীভাবে হবে?

আরেকটা বিষয় আসিফের মাথায় ঘুরপাক খায়। পত্রিকার মালিকরা পত্রিকা বের করার সময় বলেন, আমি ভাই প্রথম আলোর মতো একটা পত্রিকা চাই। কিন্তু প্রথম আলোর মালিকের মতো আমরা হতে পারব না। ওটা সম্ভব নয়। আমরা পত্রিকা চালাব আমাদের মতো করে। আপনারা আমাদের নির্দেশ মোতাবেক পত্রিকা করবেন। ভালো পত্রিকা করার জন্য যে পেশাদার লোক লাগে সেটাও তারা বুঝতে চান না। অথচ প্রতিদিন প্রথম আলোর সঙ্গে তুলনা করেন। কথায় কথায় বলেন, ওরা পারলে আপনারা কেন পারছেন না?

আসিফ মনে মনে সিদ্ধান্ত নেন, দিনের পর দিন আপোস করবেন না তিনি। কিছুতেই তিনি মেরুদণ্ডহীন প্রাণীতে পরিণত হবেন না। নিজের নীতি-নৈতিকতা, সত্ত্বাকে তিনি বিকিয়ে দেবেন না। সম্পাদকগিরিই তার কাছে বড় নয়। বড় হচ্ছে মানবিকতা। একজন মানুষ মানবিক না হলে সে আর মানুষ থাকে না। নিজের স্বার্থে সেই মানবিকতা তিনি জলাঞ্জলি দেবেন না। সবকিছু জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না। তাহলে আর কিছু থাকে না।

আসিফ আহমেদের ভাবনাগুলো মিলিয়ে যাওয়ার আগেই তার মোবাইলে ফোন আসে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখেন, এমডি সাহেবের ফোন। ফোন তুলে হ্যালো বলতেই অপর প্রান্ত থেকে ভেসে এল অচেনা এক কণ্ঠস্বর। আসিফ ভাবে, এটা তো এমডি সাহেবের কণ্ঠস্বর নয়! দুদিন আগেও তার কণ্ঠস্বর এমন ছিল না। তার মানে কী!

শাহবাজ খান রাশভারী কণ্ঠে বললেন, আমি শাহবাজ খান বলছি। তালিকা বানিয়েছেন? ছাঁটাইয়ের তালিকা! বুঝতে পারছেন? তালিকাটা নিয়ে কালই আমার সঙ্গে দেখা করেন। বেতন পারপাস কত যেন কমাতে বলেছিলাম? মনে আছে নিশ্চয়ই। অ্যাকাউন্টস নিয়ে বসেন। ভালো করে হিসেব কষে তালিকাটা বানান। আমি কালই তালিকাটা চাই।
কথা বলা শেষ করে শাহবাজ খান ফোন কেটে দিলেন। আসিফ আহমেদ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি কী করবেন কিছুই বুঝতে পারছেন না। হতাশায় ডুবে যান তিনি।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৯

Header Ad

লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় নিহত অন্তত ২২

ছবি: সংগৃহীত

লেবাননজুড়ে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও বহুসংখ্যক। মঙ্গলবার যে দিন লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাল ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার, সেই দিনই এ হামলা চালাল ইসরায়েলের বিমান বাহিনী।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মঙ্গলবারের বিমান হামলায় লেবাননের রাজধানী বৈরুত, পূর্ব লেবাননের বালবেক, দক্ষিণ লেবানের বেন্ত জেবেইল, চাকরা, মধ্যাঞ্চলের আল বাস্তা ও বারবোর থেকে নিহত ও আহতের সংবাদ পাওয়া গেছে।

এদিকে, মঙ্গলবার ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর লেবানন অভিযানের মধ্যেই যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার বিশেষ সেশন আহ্বান করেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেই সেশনে লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে অনুমোদন দেওয়া হয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ অবশ্য সোমবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে যুদ্ধবিরতির ‘আগ মুহূর্ত পর্যন্ত’ লেবাননে অভিযান জারি রাখবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

মঙ্গলবার দুই মাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহ। এ যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরায়েল লেবানন থেকে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে যাবে ইসরায়েল। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ সীমান্ত এলাকা থেকে সরে গিয়ে লিটানি নদীর অপরপ্রান্তে চলে যাবে। এছাড়া হিজবুল্লাহ সীমান্তে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ ও নিজেদের পুনরায় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত করতে পারবে না।

প্রসঙ্গত, ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। লেবাননভিত্তিক এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই গোষ্ঠীটি ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তের অপর পাশেই লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল। এ অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর প্রধান ঘাঁটি এবং গোষ্ঠীটির অধিকাংশ সামরিক স্থাপনার অবস্থান এখানে। গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলও। গত এক বছরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫ শতাধিক। তবে আইডিএফের দাবি, এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯৪০ জন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ও যোদ্ধা রয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।

বিমান অভিযান পর্বের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী। এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে লেবাননে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি

Header Ad

স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দিনভর সিলেটে বিএনপির উদ্যোগে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালা শেষে বিকালে সমাপনী বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, দেশের মানুষ বিএনপির সঙ্গে রয়েছেন। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব বিএনপি নেতাকর্মীদের।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দল কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশ ও দেশের গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি আরও বলেন, আগামীতে বাংলাদেশকে কোনো হুমকি থেকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে হবে।

সিলেট শিল্পকলা একাডেমিতে সকাল থেকে শুরু হওয়া রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক কর্মশালায় অংশ নেন সিলেট বিভাগের পাঁচ ইউনিটের নেতারা।

কর্মশালায় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউসের সভাপতিত্বে ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রশিক্ষণ প্রদানকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতার ৩১ দফা কর্মসূচির ওপর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

প্রশিক্ষণে প্যানেল আলোচক ছিলেন- ডা. মওদুদ আলমগীর, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহবায়ক ডা. মহিউদ্দিন আলমগীর পাবেল, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবা হাবিবা, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আলি, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু।

কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আনিসুর রহমান তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন ও মিফতাহ্ সিদ্দিকী। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য তাহসিনা রুশদির লুনা, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও ড. এনামুল হক চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবান ফজলুল হক ময়ুন, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যের শুরুতেই ঢাকায় গত দুই দিনের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পতিত স্বৈরাচারের সময়ে যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে তারা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আপনাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে এবং তারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা কিন্তু বসে নেই। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে শক্তি, দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছে। মানুষ মনে করে বিএনপির কাছে গণতন্ত্র ও বাক-স্বাধীনতা নিরাপদ। এজন্য মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।

নেতাকর্মীদের প্রতি তারেক রহমান বলেন, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখার দায়িত্ব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। জনগণের এ আস্থাকে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনার।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা সব দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। এটির মধ্যে রাষ্ট্রকাঠামোর অধিকাংশই আছে। আরও যত প্রস্তাব আসবে তা যুক্তিসংগত হলে যুক্ত করা হবে। আজকে বিভাগ পর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে আলোচনার পর জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বইয়ে অনেক কিছু সুন্দরভাবে লিখা থাকে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করতে হয় মানুষকে। তাই ভালো নিয়ত নিয়ে ভালো নিয়ত থাকলে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলার পথে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বিগত ১৬ বছরে বহু মানুষ গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জুলাই-আগস্টে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ শহিদ হয়েছেন। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে এ প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন সম্ভব। গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতাকে বজায় রাখলে জবাবদিহিতা তৈরি হবে। এজন্য যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখব।

Header Ad

সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ

ছবি: সংগৃহীত

পরাজয়ের মঞ্চ প্রস্তুত হয়েই ছিল। দেখার ছিল টেস্টের শেষ দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঠিক কতটা অপেক্ষায় রাখতে পারে বাংলাদেশ। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ক্যারিবীয়দের। দ্রুতই সফরকারীদের গুটিয়ে বড় রনের জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা।

অ্যান্টিগা টেস্টের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার মেহেদী হাসান মিরাজের দল হারের ব্যবধান কতোটা কমাতে পারে সেটাই ছিল দেখার। কিন্তু ৩ উইকেট নিয়ে লড়তেই পারলেন না ব্যাটাররা। দিনের খেলা শুরুর ৪০ মিনিটের মধ্যেই জয় নিশ্চিত করে ফেলে উইন্ডিজ।

অ্যান্টিগা টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতল ২০১ রানে। একইসঙ্গে ২ ম্যাচ টেস্ট সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। জ্যামাইকায় ৩০ নভেম্বর সিরিজের ২য় ও শেষ টেস্টে মুখোমুখি হবে এই দুই দল।

আগের দিন জয়ের জন্য ৩৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১০৯ রানে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। আর আজ ২ উইকেট হারাতেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। শরিফুল ইসলাম চোটে থাকায় ব্যাট করতে করতে পারেন নি। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে তিনি ড্রেসিংরুমে।

কাঁধে আঘাত পাওয়ার ব্যাটিং চালিয়ে যেতে পারেননি শরিফুল। তাতেই ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। হাতে ১ উইকেট থাকলেও বাংলাদেশ হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়ে। আগের দিন ১ উইকেট হাতে থাকলেও ১৮১ রানে পিছিয়ে থেকে ইনিংস ঘোষণা করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

আজ টেস্টের প্রথম দিনে উইকেটে আসা-যাওয়ার দায়টুকু সারতেই যেন মাঠে নামল বাংলাদেশ ব্যাটাররা। ৪০ মিনিটের কম সময়ের মধ্যে শেষ ইনিংস। খেলতে পারল মাত্র ৭ ওভার। আগের দিনের রানের সঙ্গে যোগ করতে পারল মাত্র ২৩ রান।

জাকের আলি ফিরে গেলেন ৩১ রানে। আগের দিন মিরাজ করেন ৪৫ রান। এ নিয়ে টানা তিন সফরে অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে হারল বাংলাদেশ দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা পঞ্চম হার দেখল দলটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৪৫০/৯ ডিক্লে.
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২৬৯/৯ ডিক্লে.
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ১৫২/১০
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৩৮ ওভারে ১৩২/১০ (জাকের ৩১, হাসান ০, তাসকিন ৪*, শরিফুল ১ আহত আউট; রোচ ৮-১-২০-৩, সিলস ১৩-৩-৪৫-৩, শামার জোসেফ ৬-১-২২-১, আলজারি জোসেফ ৮-১-৩২-২, গ্রেভস ৩-১-১২-০)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০১ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
পরবর্তী টেস্ট: ৩০ নভেম্বর, জ্যামাইকায়

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

লেবাননে ইসরায়েলের হামলায় নিহত অন্তত ২২
স্বৈরাচার পালিয়েছে কিন্তু লেজ রেখে গেছে, তারা ষড়যন্ত্র করছে: তারেক রহমান
সহজেই বাংলাদেশকে হারাল উইন্ডিজ
আইনজীবী হত্যায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান
এ আর রহমান আমার বাবার মতো: মোহিনী দে
ইসকন আন্দোলনে দেশি-বিদেশি ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সাইম আইয়ুবের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে সমতায় ফিরলো পাকিস্তান
কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, তাকে গ্রেপ্তার নিয়ে কেন এত হইচই
ভারত থেকে আলু ও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, বেড়েছে দাম
৮০ বছর বয়সেও মডেলিং করবেন রুনা খান
চট্টগ্রামে চিন্ময়ের অনুসারীদের হামলায় আইনজীবী নিহত
গুলিবিদ্ধ হওয়ার ২২ দিন পর নওগাঁ যুবদল নেতার মৃত্যু
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন
চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি
সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে নয়, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার: আসিফ মাহমুদ
সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব বিএনপির
বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন
শাপলা চত্বর গণহত্যায় শেখ হাসিনাসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ
এখনও দেশের প্রতিষ্ঠিত অনেক গণমাধ্যম ভুল সংবাদ ও গুজব প্রচার করছে : উপদেষ্টা নাহিদ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে প্রেরণ