শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৯

বিষাদ বসুধা

মোহিনী সারারাত ঘুমাতে পারেননি। একটা দুঃস্বপ্ন তাকে সারারাত তাড়া করেছে। তিনি ঘুমের ঘোরে দেখেন, আরেফিন তার কাছে এসেছে ক্ষমা চাইতে। তিনি চিরদিনের জন্য মোহিনীকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাবেন। আর কোনোদিন মোহিনীর সঙ্গে দেখা হবে না। কথা হবে না। এটাই তাদের শেষ দেখা। শেষ কথা।

আরেফিনকে হঠাৎ নিজের কক্ষে দেখে ঘুমের ঘোরেই আতকে ওঠেন মোহিনী। এসব তিনি কি দেখছেন! আরেফিন দেশে নেই। দেশে আসার কোনো সুযোগও নেই। কারণ, বিমান চলাচল বন্ধ। বিমান চালু না হলে উহান থেকে তার খুব সহসা দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই। অথচ আরেফিন তার কক্ষে! ঘুমের ঘোরেই তিনি আরেফিনকে ডাকেন। আরেফিন! আরেফিন!

আরেফিন আবেগপ্রবণ কণ্ঠে মোহিনীকে বলেন, আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। বিয়ের পর এতোটুকু সুখও দেইনি। সেই মর্মবেদনায় আমি কেবল পুড়ছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও মোহিনী। তা নাহলে আমার ভেতরের মর্মযাতনা কমবে না। প্লিজ মোহিনী!
আরেফিন আর কথা বলতে পারেননি। কথা বলার এক পর্যায়ে হো হো করে কেঁদে ওঠেন তিনি। তখনই মোহিনীর ঘুম ভেঙে যায়। সেই থেকে আর ঘুমাতে পারেননি। ঘুরেফিরে ওই একটি স্বপ্নই তাকে তাড়া করে ফেরে। দুই চোখের পাতা বন্ধ হলেই যেন আরেফিন তার সামনে এসে দাঁড়ায়। ভয়ঙ্কর একটা অবস্থার মধ্যদিয়ে তার রাত কাটে।

সকালের দিকে রাজ্যের ঘুম নেমে আসে মোহিনীর দুই চোখে। ঠিক সেই সময়ই মোহিনীর মোবাইল বেজে ওঠে। ফোনের রিংটোনটা বড়ই বিরক্তিকর লাগছিল তার কাছে। হাতের কাছে পেলে হয়তো ছুড়ে ফেলতো। আবার এও ভাবে, এই অসময়ে কে ফোন করল? না। ফোন ধরতে মন চাইছে না। কিন্তু বেয়াড়া ফোনটা বেজেই চলছে। ফোন ধরতে হলে তাকে বিছানা থেকে উঠতে হবে। শরীরটাও যেন নেতিয়ে পড়েছে। মোটেই সায় দিচ্ছে না।

মোহিনী ভীষণ বিরক্ত। তিনি মনে মনে ভাবেন, মানুষ এতো বেকুব কেন? সময় বুঝে ফোন দেবে না! তা ছাড়া দেখছে যে আমি ফোনটা ধরছি না। তারপরও বার বার কেন ফোন করতে হবে!

মোহিনী বিরক্ত নিয়েই বিছানা থেকে ওঠেন। টেবিলের ওপরে রাখা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে খাটের ওপর বসেন। কিছুতেই তিনি বসে থাকতে পারছিলেন না। খাটের পাশে বালিশ টেনে তাতে মাথা ঠেকান। তারপর ফোন কানে তোলেন। হ্যালো বলতেই টেলিফোনের অপর প্রান্ত থেকে পুরুষ কণ্ঠ ভেসে আসে। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জুনায়েদ বলছি। অসময়ে ফোন করার জন্য দুঃখিত। আপনি কি মিসেস আরেফিন?
মোহিনী খুবই নিচু স্বরে জবাব দেন। জি।
আপনার হাজবেন্ড; মানে মি. আরেফিন কি চীনের উহানে গিয়েছিলেন?
এবারও মোহিনী নিচু স্বরে বলেন, জি।
আমি আবারও দুঃখিত। এই অসময়ে আপনাকে একটা দুঃসংবাদ দিতে হচ্ছে।
জি! বলেই লাফিয়ে ওঠেন মোহিনী। বিস্ময়ভরা কণ্ঠে তিনি বললেন, কি বললেন? দুঃসংবাদ?
হ্যাঁ। আরেফিন সাহেব মারা গেছেন। আমরা তার মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করছি। খবরটা জানানোর জন্যই আপনাকে ফোন দিয়েছি। স্যরি। অসময়ে ফোন দিয়েছি বলে কিছু মনে করবেন না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার কথা পুরোটা শুনতে পাননি মোহিনী। শুধু আরেফিনের মারা যাওয়ার খবরটুকু শুনেছেন। তারপর মোহিনীর হাত থেকে মোবাইলটা নিচে পড়ে যায়। মোহিনীর মাথাটা ঘুরে যায়। চারদিকে কেবল অন্ধকার দেখে। এ কী হোলো! কেমন করে হোলো! না না! এ হতে পারে না!
আরেফিন মারা গেছে! এ কথা বিশ্বাসই করতে পারছেন না মোহিনী। তিনি আরেফিনের কথা ভাবেন। একেবারে গভীর ভাবনায় তলিয়ে যান। মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধে। এজন্যই কি বার বার তিনি আরেফিনকে স্বপ্নে দেখেছেন? তার মানে আরেফিনের মৃত্যুর খবর তার কাছে আগেই পৌঁছেছে! আরেফিনের প্রেতাত্মা মোহিনীর সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করে গেছে!
গভীর বেদনার সঙ্গে মোহিনী বলেন, হায় খোদা! এ তুমি কী করলে!

মোহিনীর সমস্ত সত্তাজুড়ে আরেফিন। তাদের ভালোবাসার মুহূর্তগুলো মনের আয়নায় ভেসে উঠছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানা স্মৃতি তাকে আচ্ছন্ন করছে। কী গভীরভাবে মোহিনীকে ভালোবাসতেন আরেফিন। নেহায়েত পাগলের মতো ছিল সেই ভালোবাসা। মোহিনীকে ছাড়া তিনি কিছুই বুঝতেন না। মোহিনীই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। আরেফিনের সমস্ত ভালোলাগা অনুভূতিগুলো মোহিনীকে ঘিরে আছে। আর কিছুই ভাবতে পারেন না মোহিনী। আরেফিন আরেফিন বলে তিনি শুধু বিলাপ করেন। আর মনে মনে বলেন, এভাবে তুমি চলে যেতে পারো না আরেফিন! এভাবে চলে যাওয়া যায় না! এতো বড় ফাঁকি তুমি কেন দিলে? যাওয়ার সময়ই তুমি বলে দিতে পারতে, তুমি জীবনের তরে চলে গেছ। আর কখনো ফিরবে না! আমি যে তোমার পথ চেয়ে বসে ছিলাম আরেফিন।
দুঃখ কষ্ট বেদনায় মোহিনীর বুক ফেটে যায়। তিনি তার জন্য চিৎকার দিয়ে কাঁদতে চান। কিন্তু কিছুতেই কাঁদতে পারেন না। কান্না আসছে না। কষ্টের বাষ্প জমছে তার বুকে। ধীরে ধীরে সেই কষ্টগুলো ভারী পাথরের মতো বুকের ওপর চেপে বসে। কথায় বলে না, অল্প সুখে কাতর অধিক শোকে পাথর। অধিক শোকে মোহিনী পাথর হয়ে গেছেন। কাঁদতে পারলে হয়তো কিছুটা হালকা হতে পারতেন তিনি।

মোহিনী এও ভাবেন, কেন সেদিন আরেফিনের ওপর রাগ করে বাসা থেকে চলে এসেছিলাম? এতোটা রাগ না করলেও পারতাম। ও অনেকবার উহান থেকে আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে। সেদিন আমি ফোন ধরিনি। কেন ধরিনি? কি বলতে চেয়েছিল ও? মৃত্যুর আগ মুহূর্তে নিশ্চয়ই ও আমার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল! আহারে! কী কষ্টই না পেয়েছে সে। হে বিধাতা, তুমি আমায় ক্ষমা করো। আমি ভুল করেছি। অন্যায় করেছি। ক্ষমা করো, ক্ষমা করো।

আরেফিনের পরিবারের কথাও ভাবেন মোহিনী। দরিদ্র পরিবারটি আরেফিনের টাকায় চলতো। এখন কি হবে? কিভাবে চলবে? আমি কি টাকা পাঠাবো? এই পরিবারটির সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় ছিল না। শুধু আরেফিনকে দেখে বিয়ে করেছিলাম। তাও আবার কোর্টে গিয়ে। কারো সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতেরও প্রয়োজন ছিল না। আরেফিনও কোনোদিন বলেনি। চাপ দেয়নি। এখন আমি টাকা পাঠালে তারা বিষয়টিকে কিভাবে নেবে?

হঠাৎ আপামনি আপামনি করে রহিমাবিবি ছুটে আসে মোহিনীর কাছে। মোহিনীকে শুয়ে থাকতে দেখে সে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে, আপামনি, আপনার কি হইছে? এখনো শুইয়া আছেন কেন?
মোহিনী কোনো কথা বলেন না। তার কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। সে ওকে কি বলবে? ও কি বুঝবে? ওর কাছে বললে কি মোহিনীর কষ্ট দূর হবে? কিন্তু মোহিনী জানেন, রহিমাবিবি নাছোরবান্দা। না জেনে সে যাবে না। তাই তিনি অনিচ্ছা সত্ত্বেও বলেন, আমার মন ভালো নেই। আমার কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। তুই এখন যা।
রহিমাবিবি বিস্ময়ের সঙ্গে বলে, আপামনি! আপনার মনও খারাপ হয়!

রহিমাবিবির কথাটা মোহিনীর কানে লাগে। রহিমার মুখ থেকে এই কথা শুনবেন ভাবতেও পারেননি তিনি। বিস্ময়ের সঙ্গে মোহিনী বললেন, কেন আমার মন খারাপ হতে পারে না?
আপনার মন খারাপ হইলে দুনিয়ার সব মানুষের মন খারাপ হবে। রহিমাবিবি বলল।
মোহিনী রহিমাবিবির দিকে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। তিনি নিজের শরীরে চিমটি কেটে বোঝার চেষ্টা করছেন, তিনি নিজে ঠিক আছেন কী না। তার মনে প্রশ্ন জাগে, ও কি আসলেই রহিমা; নাকি অন্য কেউ! এমন পরিণত কথা বলার মেয়ে কি রহিমা? বিস্ময়কর ব্যাপার তো!

হন্তদন্ত হয়ে মোহিনীর কক্ষে ঢুকলেন আনোয়ারা বেগম। উদ্বেগের সঙ্গে বললেন, কি রে মোহিনী! কি হয়েছে তোর? একদম ঘর থেকেই বের হচ্ছিস না! কোনো সমস্যা হয়েছে?
উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন মোহিনী। তিনি কোনো কথা বলেন না। আসলে তিনি কথা বলতে পারেন না। আনোয়ারা বেগম মেয়ের পাশে বসে তাকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। গভীর মমতায় মেয়েকে আদর করতে করতে বলেন, তুই আমাকে বল তো! কি হয়েছে মা?

আবেগের দৃষ্টিতে আনোয়ারা বেগমের দিকে তাকান মোহিনী। তবু তিনি তার কষ্টের কথা বলেন না। এই মুহূর্তে তিনি যদি কাঁদতে পারতেন তাহলে খুব ভালো হতো। তিনি নিজে কিছুটা হালকা হতে পারতেন। কিন্তু চেষ্টা করেও তিনি কাঁদতে পারছেন না। কান্নাও যে কঠিন সেটা আজ তিনি বুঝতে পারছেন। ইচ্ছা করলেই কাঁদা যায় না।

আনোয়ারা বেগম মেয়ের চিন্তায় অস্থির। হঠাৎ মেয়েটা এমন উদাসীন হয়ে গেল কেন তা নিয়ে তার দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কথাটা না জানা পর্যন্ত তিনি স্বস্তি পাচ্ছেন না। এক পর্যায়ে মোহিনীই মুখ খুললেন। তিনি ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বললেন, মা আরেফিন আর নেই!

আনোয়ারা বেগম এসব কী শুনছেন! তিনি নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। তিনি বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, আরেফিন আর নেই মানে কী? কি হয়েছে আরেফিনের?
আরেফিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে!
মোহিনীকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে ধরে থাকেন আনোয়ারা বেগম। এ ছাড়া মেয়েকে সান্ত্বনা দেওয়ার আর কিছুই খুঁজে পেলেন না।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) সরফরাজ হাসান সিদ্দিকী পদত্যাগ করেছেন। ফেডারেশন তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছে, যা ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, পদত্যাগ কার্যকর হলেও আরও তিন মাস দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বাফুফেতে যুক্ত থাকবেন তিনি।

সিএফও সরফরাজের পরিবর্তে এখন থেকে বাফুফের ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিষয় এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফা, এএফসি ও সাফের সঙ্গে আর্থিক যোগাযোগ করবেন ফিন্যান্স বিভাগের আরেক কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল।

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার নির্বাহী কমিটির সকল সদস্যকে বিষয়টি একটি বার্তার মাধ্যমে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, প্রশাসনিক কাঠামোয় বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ হলো প্রধান অর্থ কর্মকর্তার। এই দুই পদের জন্যই বাফুফেকে প্রতি মাসে প্রায় আট লাখ টাকা ব্যয় করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই পদটি ঘিরে বাফুফে নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে।

২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করে ফিফা। এরপর আর্থিক অনিয়ম নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ফেডারেশন। তদন্ত চলাকালে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন পদত্যাগ করেন। এরপরই সরফরাজ হাসান সিদ্দিকীকে দায়িত্ব দেন তৎকালীন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। কয়েক মাসের মধ্যেই তাকেও পদত্যাগ করতে হলো, যা বাফুফের প্রশাসনিক অস্থিরতার ইঙ্গিত বহন করে।

Header Ad
Header Ad

ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পলিথিন শপিং ব্যাগের বিকল্প হিসেবে সাধারণ মানুষের মাঝে পাটের তৈরি ব্যাগ সরবরাহ করা হবে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যার আওতায় ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়া হবে। তিনি জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করা হবে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে “প্লাস্টিক দূষণ রোধে করণীয়” শীর্ষক সেমিনার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পাটের ব্যাগ ব্যবহারে জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে পাটের ব্যাগ উৎপাদন সম্প্রসারণ করা হবে। এ কার্যক্রমে জেডিপিসি, এসএমইএফ ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

তিনি বলেন, “প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ব্যবহার আমাদের নিজেরাই বন্ধ করতে হবে। ‘প্লাস্টিকের বিকল্প নেই’—এই ধারণা ভুল। সরকারের উদ্যোগগুলো রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও ধাপে ধাপে তা বাস্তবায়ন করা হবে।”

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। আরও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান মারিয়ান রাবে ক্নাভেলসরুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, ইউনিডোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জাকি উজ জামান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আফিয়া শাহনাজ, এবং বুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।

উপদেষ্টা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও শব্দ দূষণমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের

ছবি: সংগৃহীত

ছয় দফা দাবি আদায়ে এবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে কারিগরি শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল রোববার (২০ এপ্রিল) দেশব্যাপী নিজ নিজ ইনস্টিটিউটের সামনে এই কর্মসূচি পালন করবেন তারা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) 'রাইজ ইন রেড' শীর্ষক মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে এ ঘোষণা দেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি জোবায়ের পাটোয়ারী।

কুমিল্লায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালন করেন। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মূল ফটকের সামনে দুপুর পৌনে ১২টায় শুরু হয় মানববন্ধন। এ সময় শিক্ষার্থীরা "রক্তে আগুন লেগেছে", "আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ", "দেশ গড়ার হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার", "কুমিল্লায় হামলা কেন, জবাব চাই"—এমন নানা স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করেন।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে গণমিছিল করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে এক ব্রিফিংয়ে জোবায়ের পাটোয়ারী বলেন, “আমাদের দাবি দ্রুত মানা না হলে আমরা রাজপথ ছাড়বো না। কুমিল্লার ভাইদের ওপর হামলার তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করুন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করুন। আমরা চাইলে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারি।”

কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের আরেক প্রতিনিধি মাশফিক ইসলাম দেওয়ান বলেন, “এই সরকার আমাদের সরকার। আমরা চাই সরকার কারিগরি শিক্ষায় বিদ্যমান বৈষম্য দূর করুক। আমরা সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।”

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল করেন। এর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেও সন্তুষ্ট না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

গত বুধবার সকাল থেকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সাত রাস্তা, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। ছয় দফা দাবিতে ধারাবাহিকভাবে চলছে এই আন্দোলন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সরফরাজের পদত্যাগ
ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি বাজারের ব্যাগ সরবরাহ করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা
রবিবার সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
দেশের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন সর্বোত্তম হবে: প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আটক
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা