শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

পর্ব-২৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

কিছুক্ষণ পর দূর থেকে ছুটে আসে পাকিস্তানি সেনাদের গুলি। অনেকের গায়ে গুলি লাগে। পড়ে যায় অনেকে। যাদের গায়ে গুলি লাগেনি তারা গড়াতে গড়াতে সীমান্তের এপাশে চলে আসে। একসময় গুলি থেমে গেলে উঠে দাঁড়ায় অনেকে। দেখতে পায় বেশ দূর থেকে গুলি আসছে। এখন ওরা থেমে গেছে। বোধহয় গুলি ফুরিয়েছে। যাদের গায়ে গুলি লাগেনি তারা উঠে দাঁড়ায়। দেখতে পায় পাকিস্তানি সেনারা অন্যদিকে যাচ্ছে। যারা আহত হয়েছে তাদের নিজ নিজ তাঁবুতে পৌঁছে দেয় সবাই। পাঁচ জন মারা গেছে। চারদিকে কান্নার ধ্বনি প্রবল শব্দে মিশে যায় বাতাসে। শরণার্থী শিবিরজুড়ে কান্নার শব্দ ছাড়া আর কোনো শব্দ নাই। আহতদের আর্তনাদ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকেই জ্ঞান হারিয়েছে। বাকিরা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। থমথম করছে চারদিক। স্তব্ধ যশোর রোডের মাঝখানে নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকে অঞ্জন। মনে হয় বুকের ভেতরে নিঃশ্বাসও পড়ছে না। পরক্ষণে মনে হয় কিছু ওষুধ আনার জন্য কাছের হাসপাতালে যাওয়া দরকার। অঞ্জন ছুটতে থাকে বনগাঁওয়ের দিকে। নিজেতো ডাক্তার, বনগাঁও হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধ আনতে পারলে আহতদের সুস্থ করা যাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বনগাঁও পর্যন্ত যেতে পারে না অঞ্জন। মাথা ঘুরে ওঠে। পথের ধারে পড়ে যায়। ঘাস ও মাটির মাঝে পড়ে গেলে শরীরজুড়ে ময়লা ভরে যায়। উঠে বসে, কিন্তু হাঁটার জন্য দাঁড়াতে পারে না। কেমন অবশ লাগছে শরীর। হাঁটুর ওপর মাথা রেখে চুপচাপ বসে থাকে। একটুপরে মাথা সোজা করলে দেখতে পায় একটি মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসছে। কাছে এসে মুখোমুখি বসে বলে, আমি দূর থেকে আপনাকে পড়ে যেতে দেখেছি। আপনাকে ধরে ওঠাব?

-না, এখন না। আর একটুক্ষণ বসি। তোমার নাম কি?

-ছবিরাণী। আমি বড় হলে বাবা আমাকে বলেছিলেন, তুমি আমার কাছে দেশের ছবি। সেজন্য তোমার নাম ছবি রেখেছি। বড় হয়ে সবসময় দেশের কথা মাথায় রাখবে। দেশের জন্য যা কিছু করা দরকার করবে। কখনো পিছিয়ে থাকবে না।

-ছবিরাণী তোমার বাবা একজন মহান মানুষ।

ছবিরাণী হাসতে হাসতে বলে, হ্যাঁ, ঠিক বলেছেন। আপনি কোথায় যাবেন? চলেন আপনাকে পৌঁছে দেই।

-না, আমাকে পৌঁছাতে হবে না। আমি চলে যেতে পারব।

-আবার যদি পড়ে যান?

-পড়ে গেলে আবার উঠব, আবার হাঁটব।

-আচ্ছা, তাহলে আমি যাই।

-হ্যাঁ, যাও। কোথায় যাবে?

-শরণার্থী শিবিরে যাব। দেখব কারো কিছু লাগবে কি না।

-তোমাকেতো আমি শরণার্থী শিবিরে আগে কখনো দেখিনি।

-আমি তিন-চার মাস আগে এসেছি। আপনাকেও দেখিনি। যে মায়েরা ভাতের অভাবে কেঁদেছে তাদেরকে চাল এনে দিয়েছি। বেশিজন না, কয়েকজনকে মাত্র। একটি মেয়ের জন্ম হলে মরে যায়। ওকে কোলে করে নিয়ে গিয়েছিলাম আমার বাড়িতে। ভাইদের দিয়ে গর্ত খুঁড়ে ওকে মাটি চাপা দিয়েছি ধানক্ষেতের পাশে।

-ছবিরাণী তোমার মতো মেয়ে আমি দেখিনি। তুমি এত ভালো মেয়ে-

-চলেন আপনাকে পৌঁছে দিয়ে আসি। আমি চাইনা আপনি আর একবার পড়ে যান।

ছবিরাণী দুহাত টেনে ধরে অঞ্জনের। অঞ্জন উঠে দাঁড়ায়। ছবিরাণী ওর হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে। অঞ্জনের তাঁবুতে এসে দাঁড়ালে তার বাবা-মাকে দেখতে পায়। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে। বলে, মাসীমা আমার নাম ছবিরাণী। আমি দাদাকে পথে পড়ে যেতে দেখেছি।

-মাগো তোমাকে দেখে মন ভরে গেছে। তুমি লক্ষ্মী মেয়ে। তোমার বাড়ি কোথায়?

-চৌগাছায়।

-তোমার বাবা কি করে?

-আমার বাবা কৃষিকাজ করে। বাবাকে কৃষক বলতে পারেন। নিজের দেশ নিয়ে বাবা অনেক চিন্তা করেন। বলে, আমি অনেক ধান চাষ করব। আমার চারদিকের লোকজন যেন না খেয়ে থাকে। যার থালায় ভাত থাকবেনা আমি তার থালায় ভাত দিয়ে আসব।

-বাব্বা তোমার বাবাতো একজন মহান মানুষ। তুমিও বাবার মতো হয়েছ। আমাদের ছেলেকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছ।

-দিবইতো। রাস্তায় উপুড় হয়ে পড়ে গেলে আমি কি তাকে ছেড়ে দিতে পারি? আমিতো মানুষ, ব্যাঙ না।
হা-হা করে হাসে সবাই। ছবিরাণী নিজেও হাসে। তারপর বলে, এখন যাই। মাঝে মাঝে এসে আপনাদের খোঁজ করব।

-আমার ছেলে ডাক্তার। তোমার বাবা-মায়ের অসুখ হলে ওকে ডেকে নিয়ে যেও।

-হ্যাঁ, মাসীমা ঠিক বলেছেন। যাচ্ছি। দাদা, ভালো থাকুন।

ছবিরাণী শরণার্থী শিবির থেকে বের হওয়ার জন্য দৌড়াতে শুরু করে। অঞ্জন বাবা-মাসহ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। ও দৌড়াচ্ছে দেখে অঞ্জন বলে, এই গতি শরণার্থী শিবিরের না। এখানে আছে দুঃখ-কষ্ট-মৃত্যু-কান্না। মায়ের দিকে ঘুরে ও বলে, ওর ছবি চোখে নিওনা মাগো। ও যাচ্ছে, যাক।

ওর বাবা ওর হাতে ট্রানজিস্টার দিয়ে বলে, নে বিবিসির খবর শোন।

-দাও ওই গাছের নিচে বসে খবর শুনব। যশোর রোডে এত গাছ দেখে আমি ভাবছি, গাছের ছায়ায় বেঁচে থাকব বলে এখানে এসেছি।

-থাক, এত কথা বলতে হবে না। মানুষের কষ্ট চোখে দেখিস না।

-শুধু কি চোখে দেখি? কান্নাকাটিও শুনি বাবা। সেটাতো বুক দিয়ে শুনি।

-চল, তোর সঙ্গে আমি যাব। দুজনে গাছের নিচে বসব। আমারও গাছের নিচে বসতে ভালোলাগে।
-মা যাবেন?

-নারে। আমি এখানে থাকব। জীবনে কখনো তাঁবুতে থাকিনি। এখন স্বাধীনতার স্বপ্ন নিয়ে তাঁবুতে থাকব।

-শুধু তাঁবুতে থাকলেতো হবে না। যুদ্ধ লাগবে মা।

-আমি কেমন করে যুদ্ধ করব? আমি কি অস্ত্র ধরতে পারি?

-আপনি যুদ্ধ করতে পারবেন না। যুদ্ধ আমাকে করতে হবে।

-না, তুই ডাক্তারী করবি। যারা যুদ্ধ করবে তাদের সেবা করবি।

-হ্যাঁ, তাই করব। এটাও যুদ্ধের একটা দিক।

-আর কথা বলতে হবে না। চল, চল।

বাবার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করে অঞ্জন। অনেক তাঁবু থেকে কান্নার শব্দ আসছে। শুধু শিশুদের কান্না না, বড়দেরও। অঞ্জন থমকে দাঁড়ায়। বাবার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলে, আমাদের কিছু করার আছে?

-আমরা কি করতে পারি? আমাদের চালের গুদাম থাকলে ঘরে ঘরে চাল পৌঁছে দিতাম।

-এমন কথা শুনলে আমার মন খারাপ হয়। যা পারব না-

-থাক, চুপ কর। একটা তাঁবু থেকে কান্না শুনলে নিজেদের তাঁবু থেকে চাল নিয়ে যেতাম।

-নিজেদের তাঁবুতে যে অল্প চাল আছে। সেখান থেকেতো দেয়ার মতো নেই বাবা।

-তা ঠিক। চল বুকের ভেতর কান্নার শব্দ নিয়ে হাঁটি।

শুনতে পায় কান্নার ধ্বনি বেড়েছে। মন খারাপ করে দুজনে যশোর রোডের গাছের নিচে এসে বসে। দুজনেই চুপচাপ বসে থাকে। কান্নার ধ্বনি বুকের ভেতর জমে আছে। একসময় দেখতে পায় মৃত শিশু দুহাতে ধরে এগিয়ে আসছে আমেনা বেগম। দুজনকে দেখে দ্রুতপায়ে কাছে এসে বসে পড়ে চিৎকার করে কাঁদে।

-মাইয়াটা মইরা গেল ভাত খাইতে না পাইয়া। আমিও মইরা যামু ওর লগে। আমি আর বাঁচমুনা।

অঞ্জন মেয়েটিকে নিজের কোলে তুলে নেয়। শীতল হয়ে গেছে মেয়েটির শরীর। নিষ্প্রাণ দেহটির স্পর্শ ওকে শীতল করে দেয়। ও মেয়েটিকে বুখে জড়িয়ে ধরে। আমেনা বেগম মেয়েটিকে অঞ্জনের কাছ থেকে টেনে নিয়ে বুকে জড়িয়ে হাঁটতে শুরু করে। কান্নার ধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে শরণার্থী শিবিরে। জোর কান্নার ধ্বনিতে চারদিক থেকে লোক এগিয়ে আসতে থাকে। আমেনা বেগম দ্রুত হেঁটে ঝাঁপিয়ে পড়ে নদীতে। ডুবে যায় শরীর। চারদিকে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে সবাই। অনেক মেয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদে। শরণার্থী শিবিরে পরিচিত হওয়া খালার জন্য কান্নার ধ্বনি আপনজনের আর্তনাদের বার্তা ছড়ায়। আমেনা বেগমের নিজের কেউ নেই। শরণার্থী শিবিরে আসার সময় পাকসেনাদের গুলিতে শহীদ হয় স্বামী আফজাল। মেয়েটিকে বুকে নিয়ে স্বাধীনতার স্বপ্নে মগ্ন ছিল। কিন্তু মেয়েটির মৃত্যু ওকে নিঃসঙ্গ করে দিলে বেঁচে থাকার স্বপ্ন ফুরিয়ে যায়।

চলবে...

এমএমএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা পর্ব: ২৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

 

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট