রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৫

টুইয়া জাহাজে আমাদের শেষ রাত বলেই কিনা জানি না, ডাইনিং হলে প্রবেশের সময় চণ্ডীদাসের খুড়ো একগাল হেসে দুই হাত বাড়িয়ে দিয়ে সাদর সম্ভাষণ জানালো। ভেতরে চক্কর দিয়ে দেখলাম প্রতিদিনের মতোই বুফে ডিনার সাজানো, খুব আড়ম্বর পূর্ণ কিছু মনে হলো না। খাবারের প্লেট হাতে ফিরে এসে টেবিলে বসার আগে খুড়োকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আজ তোমাদের ফেয়ারওয়েল ডিনারের কোনো বিশেষ ব্যবস্থা আছে বলে তো মনে হচ্ছে না।’ চণ্ডীদাসের খুড়োর উত্তর প্রস্তুত ছিল। বললো, ‘দেয়ার ইজ গ্রান্ড গালাবাই পার্টি অপস্টেয়ার, প্লিজ জয়েন আফটার দ্য ডিনার।’  এরপরই রানাভাইকে না দেখে জিজ্ঞেস করলো, ‘হোয়ার ইজ ইওর সিনিয়ার ফ্রেন্ড?’ বললাম, তিনি শিগগিরই আমাদের সাথে যোগ দেবেন। আসলে রানাভাই প্রতিদিনই প্রায় প্রতিদিনই শেষ সময়ে আসায় রেস্টুরেন্টের প্রত্যেকে ধরেই নিয়েছিল রানাভাই আসবেন সবার শেষে। কিন্তু চণ্ডীদাসের খুড়োকে অবাক করে দিয়ে রানাভাই কিছুক্ষণের মধ্যে ডিনার টেবিলে আমাদের সাথে এসে বসলেন। ফাইয়াজ নামের যে ছেলেটা আমাদের টেবিলের খোঁজ খবর রাখতো, রানাভাইয়ের সাথে তার বেশ কথাবার্তাও বেশ জমে উঠেছিল। সে একটু রসিকতা করে বললো, ‘টু নাইট ইউ আর টু আর্লি স্যার!’   

টুইয়ার বেলিড্যান্স

ডিনার শেষে আমরা যখন সিঁড়ি বেয়ে উপরের দিকে উঠে যাচ্ছি তখন দোতলার হলঘরে সমবেত যন্ত্রসঙ্গীত বেজে উঠেছে। আগেই খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি মিউজিক্যাল পারফর্মেন্স ছাড়াও রয়েছে সুফি ড্যান্স এবং বেলিড্যান্স! এমনিতেই বিস্তর ঘোরাঘুরির ফলে ক্লান্ত ছিলাম, তাছাড়া সস্ত্রীক বসে উদর নৃত্য দেখার মতো উদার চিত্ত না হতে পারার কারণে সোজা উপরে উঠে গেলাম। রানাভাইকে বললাম, পরে একবার এসে ঘুরে যাবো। ঘরে ফিরে বিছানায় পড়ে প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। আধাঘণ্টা পরে ভাবলাম গ্রান্ড গালাবাই পার্টিটা কেমন হচ্ছে একবার দেখে আসা যায়। আমি যখন নিচের নাচঘরে পৌছলাম তখন এক বিপুলা তার উদরে ঢেউ তুলে বেলিড্যান্স পরিবেশন করছেন। রীতিমতো উপর পূর্তির পরে উদর নৃত্য দর্শন মন্দ নয়, কিন্তু এ পর্যন্ত টেলিভিশনে বা চলচ্চিত্রে দেখা নৃত্য পটিয়সীদের দেখে যা ধারণা হয়েছিল তার সাথে এর আকার আকৃতির তেমন মিল নেই। এমন স্থূলকায়া রমনীর উদর নৃত্য খুব একটা রমনীয় বলে মনে হলো না। রানাভাই বললেন, ‘আহা আপনি তো সুফি ডান্সের চক্করটা মিস করলেন।’  বললাম, ‘সুফি নাচের ঘুর্ণি না হয় তুর্কিস্থানে খোদ ম্যাওলানা জালালউদ্দিন রুমির মাজার প্রাঙ্গণেই দেখা যাবে। আপাতত বেলিডান্সই দেখা যাক।’ আমাদের দেশে যা মাওলানা, পশ্চিমের দিকে বিশেষ করে তুরস্কে তা লেখা হয় গবাষধহধ। ‘ভি’ এর উচ্চারন ‘ওয়া’র মতো হওয়ায় গবাষধহধ-র উচ্চারণ আসলে মেওলানা বা ম্যাওলানা। যাই হোক বেইলি ডান্সের সাথে মাওলানাদের সুফি নাচ এক কাতারে এনে ফেললে অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করতে পারেন। ফলে উদর নৃত্য অসমাপ্ত রেখেই আমি আবার ঘরে ফিরে গেলাম। 

ভ্যালি অফ কিংস

আমাদের সকালের গন্তব্য ‘ভ্যালি অফ কিংস এ্যান্ড কুইন্স’, তবে যাবার অগেই জাহাজের ঘর খালি করে দিয়ে যেতে হবে। রাতেই বাক্স পেটরা গুছিয়ে রেখেছিলাম। শেষবারের মতো টুইয়ার ব্রেকফাস্ট শেষ করে লাগেজ জমা দিয়ে টোকেন নিয়ে নিলাম। পুরো লবি জুড়ে ট্যাগ লাগানো স্যুটকেস, ব্যাগ, ব্যাকপ্যাক, বিভিন্ন ভাগে স্তূপ করে রাখা। বেলা দশটার পর থেকে নতুন যাত্রীর দল জাহাজে এসে উঠতে থাকবে। সন্ধ্যায় নোঙর তুলে জাহাজ আবার যাত্রা শুরু করবে আসোয়ানের পথে। অতএব আমাদের ফিরে আসতে হবে জাহাজ ভেসে যাবার আগেই আর তা না হলে আমরা লুক্সরে থেকে গেলেও আমাদের গাট্টি বোচকা আসোয়ান চলে যাবে। 

সমাধিতে প্রবেশ পথ

নয়টায় বেরোবার কথা থাকলেও মিনিট দশেক পরে আমাদের পুরোনো সহযাত্রীদের নিয়ে যাত্রা শুরু হলো এবং একই সাথে শুরু হলো মোস্তফার আরবি ধারা বিবরণী। নীল নদের পশ্চিম তীরে লুক্সর থেকে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার দূরে ‘ভ্যালি অফ কিংস এ্যান্ড কুইন্স’এর যাত্রা পথের প্রায় পুরোটাই জুড়েই সবুজ ফসলের ক্ষেত। গম ভুট্টা এবং আখক্ষেতের মাঝে মাঝে খেজুর গাছ ছাড়াও সবুজের সমারোহ দেখে মনেই হয় না আমরা প্রকৃতপক্ষে একটি মরুময় দেশের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। মিশরের স্থলভাগের পঁচানব্বই শতাংশই মরুভূমি। নীলের তীর থেকে দূরে সরে যেতে যেতেই সবুজ উধাও হয়ে যায়। তার পরিবর্তে দেখা দেয় উঁচু নিচু ঊসর পাহাড়। এ সব পাহাড়ের গায়ে গাছপালা তো দূরে থাক, সবুজের ছিঁটেফোটাও নেই। ধীরে ধীরে পাথুরে পাহাড়ের সারি বাড়তে থাকে। কোথাও স্তরে স্তরে সাজানো শিলার এবড়ো থেবড়ো ছোট ছোট পাহাড়ের পায়ের কাছে গড়াগড়ি খাচ্ছে ছোট বড় পাথরের চাঁই থেকে শুরু করে অসংখ্য নুড়ি পাথর।  

সমাধি মন্দিরে নামার সিঁড়ি

মাইক্রোবাস থেকে নেমে আসার পরে এবারেই প্রথম একটি নিষেধাজ্ঞা চোখে পড়লো, আর তা হলো ভ্যালি অফ কিংস-এর ভেতরে ছবি তোলা বা ভিডিও চিত্র ধারণ করা নিষেধ! তবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ছবি তোলা যেতে পারে। আজকাল যে মোবাইল ফোনে প্রফেশনাল স্টিল এবং ভিডিও ধারণ করা যায়, তা সম্ভবত মিশরের প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ এখনো জানে না। মোস্তফা প্রবেশপত্র নিয়ে এলে আমরা ক্যামেরা ব্যাগে ঢুকিয়ে নিরাপত্তা তোরণ পার হয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখলাম পর্যটক বোঝাই দুই ট্রেইলার বিশিষ্ট হলুদ রঙের একটি বাহন ছেড়ে যাচ্ছে। অন্য দিকে দূরে থেকে একই রকমের আরেকটি বাহন ফিরে আসছে। একটু অপেক্ষা করতেই হলুদ গাড়ি একদল দর্শনার্থী নারী পুরুষ নামিয়ে দিলে আমরা বাহনে উঠে পড়লাম।      

দেয়ালে রিলিফের কাজ

রাজা রাণীর উপত্যকা নাম থেকেই ধারণা করা যায় এলাকাটি সুনির্দিষ্টভাবে ফারাও সম্রাট সম্রাজ্ঞীদের বসবাসের জন্যে নির্ধারিত।  তবে এই বসবাস মহামান্যদের জীবদ্দশায় শান শওকতের সাথে কালাতিপাত করার জন্যে নয়। রাজা রাণীর জীবনাবসানের পরেই কেবল এখানে তাঁদের স্থায়ীভাবে বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধারণভাবে দেখলে এই উপত্যকা লাল বা হলদে পাথরের ছোট বড় টিলার বেশি কিছু মনে হয় না। কিন্তু এইসব ধূলি ধুসর পাহাড়ের নীচেই রয়েছে প্রাচীন মিশরের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেষট্টিজন ফারাও সম্রাটের সমাধি। খ্রিস্টপূর্ব ষোল থেকে এগারো শতক, অর্থাৎ প্রায় পাঁচশ বছর ধরে এই উপত্যকা ব্যবহৃত হয়েছে রাজা এবং রাজ পরিবারের সদস্যদের সমাধিক্ষেত্র হিসাবে। মৃত্যু পরবর্তী জীবনে তাঁদের আরাম আয়েশে যাতে ব্যঘাত না ঘটে কিংবা জাঁক জমকের ঘাটতি না হয় সে জন্যে তাঁরা যথেষ্ট ধন সম্পদ এবং শান্ত্রী-সেপাই, চাকর-নফর সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। হায় নশ্বর মানুষের অমরত্ব লাভের বিশ্বাস! একবিংশ শতকের এই আধুনিক যুগে এসেও সাড়ে তিন হাজার বছর আগের সেই বিশ্বাসে এতোটুকু চিড় ধরেছে বলে মনে হয় না।  

করিডোরে দেয়াল চিত্র

ফারাও রাজা গজাদের তেষট্টিটি সমাধিস্থলের মাত্র আট-দশটিতে বর্তমানে পর্যটক প্রবেশের অনুমতি রয়েছে। অবশ্য সবগুলোতে ঢুকবার ব্যবস্থা থাকলে তা সাতদিনেও দেখে শেষ করা প্রায় অসম্ভব। প্রতিটি সমাধি মন্দিরই নির্মিত হয়েছে পাহাড়ের তলদেশে সুড়ঙ্গ কেটে মাটির অনেক গভীরে। ভূমিতল থেকে গভীরতম সমাধি মন্দিরটি সম্রাট প্রথম সেতির। এটি সবচেয়ে সুসজ্জিত এবং সুরক্ষিত বলে জানার পরেও সিঁড়ি বেয়ে দুইশ ফুট নিচে নেমে যাবার সাহস হলো না। এ ছাড়া বিশেষ উল্লেখযোগ্য দ্বিতীয় রামেসেসের পুত্র কন্যাদের সমাধিক্ষেত্রটি পঞ্চম গুহায়। উপত্যকার সবচেয়ে বড় এই সমাধিমন্দিরে কক্ষের সংখ্যা মোট একশ ত্রিশটি তবে বর্তমানে সত্তুরটিতে দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারেন। আরো ষাটটির উন্মোচন এখনো সম্পন্ন হয়নি বলে খনন কাজ চলছে। দীর্ঘতম এবং অন্যতম গভীর সুড়ঙ্গে প্রবেশ না করে তুলনামূলকভাবে অগভীর তিন চারটি সমাধি মন্দির দেখেই ভ্যালি অফ দ্য কিংম সফর শেষ করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। 

  দেযাল হায়রোগ্লিফিক লিপি

অর্ধবৃত্তাকারে ছড়িয়ে থাকা পাহাড়ের তলায় খানিকটা দূরে দূরে তিনটি চিহ্নিত গুহামুখ দিয়ে প্রবেশ করতে হবে তিন হাজার বছর আগের এক সমৃদ্ধ জগতে। সম্রাট তৃতীয় রামেসেসের সমাধি মন্দিরের প্রবেশ পথের সামনে বোর্ডে লেখা কেভ নং-১১, রামেসেস-৩! গুহামুখের লম্বা বাধানো বেদীতে বসে শর্টস পরা দুই শ্বেতাঙ্গ তরুণ তরুণী পানির বোতল উপর করে গলায় ঢালছে। বাইরে রোদের তাপ আর ভেতরে সিঁড়ি ভাঙার ক্লান্তি দেখে মনে পড়লো হোটেল থেকে পানির বোতল নিয়ে বেরোবার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভুলে গেছি,  এখন আর কিছু করার নেই। পাতালরেলের স্টেশনে ঢুকবার মতো খোলা অংশটি দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়লো কাঠের দীর্ঘ সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে। রামেসেস থ্রির গভীরতা কম হলেও প্রায় ২৫ মিটার। যেখানে আমাদের ভূগর্ভস্থ রেলস্টেশনগুলোর গভীরতা ১৫ থেকে ২০ মিটারের বেশি নয়, সেখানে আধুনিক প্রযুক্তিবিহীন তিন হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রা সভ্যতার কোনো স্তরে পৌঁছে মাটির নিচে এই সম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল! 

 

সিঁড়ি ভেঙে প্রথম করিডোরে পৌঁছালে দুদিকের দেয়ালে দেবী মাআত হাঁটু গেড়ে বসে অভ্যাগতদের ডানার নিচে আশ্রয় দিচ্ছেন। এরপর থেকে দীর্ঘ দেয়ালে উৎকীর্ণ দেব-দেবী, প্রাণী ও সরিসৃপ এবং দাস দাসীদের চিত্রকর্মে বিষয় এবং রঙের বৈচিত্র্য বিশেষ ভাবে লক্ষণীয়। করিডোরে দর্শনার্থীরা স্রোতের মতো আসা যাওয়া করছে। দ্বিতীয় করিডোর পেরিয়ে বাঁ দিকের তৃতীয় পাশ্ববর্তী কক্ষে দেখা দেন নীল নদের দেবতা। তাঁর মাথার দুদিকে ভুট্টার মতো কান, তিনি আরাও রাজকে সাতটি ঊর্বরতা উপহার দিচ্ছেন। ধারণা করা যায় এখনকার মতো প্রাচীন কালেও নীল নদের দেবতার আশীর্বাদেই চাষাবাদ হতো মিশরের ঊষর মাটিতে! এরপর ডান দিকের চতুর্থ কক্ষটি ছিল সম্রাটের অস্ত্রাগার। তবে অস্ত্রভাণ্ডারও শিল্প সুষমা থেকে বঞ্চিত হয়নি। এখানেও রয়েছে পবিত্র কালো ষাঁড় মেরি এবং কালো গরু হেসির দেয়ালচিত্র।  

 

যদিও গবেষকদের ধারণা অন্য অনেক সুড়ঙ্গ দেয়ালের তুলনায় এগারো নম্বর সমাধি মন্দিরে রিলিফের কাজ তেমন উল্লেখযোগ্য নয়, কিন্তু যে কয়েকটি কাজের নমুনা এখানকার দেয়ালে ছড়িয়ে আছে তার রঙ ও রূপের তুলনাও সারা বিশ্বে খুব একটা নেই। সবচেয়ে বড় বিস্ময়, এখানে দেয়ালে এবং সিলিংয়ে আঁকাআঁকির কাজে যে রঙ ব্যবহার করা হয়েছিল তার উজ্জ্বলতা তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার বছর পরেও এতোটুকু ম্লান হয়নি! 

চতুর্থ করিডোরের দেয়ালে চিত্রিত হয়েছে সূর্যের পথযাত্রা। এই পথে চারটি স্তম্ভের ভেতর দিয়ে ঢালু পথে খানিকটা এগিয়ে গেলেই ষষ্ঠ প্রকোষ্ঠে। এখানে নানা গুণে গুণান্বিত দেবতারা মহামহিম সম্রাটকে ঘিরে রেখেছেন। সপ্তম কক্ষের ডান দিকে রয়েছে থোথের পরিচালনায় ফারাও সম্রাট তৃতীয় রামেসেসের প্রতিকৃতি এবং বাজপাখির মাথাওয়ালা হারখেন তেখতাইয়ের চিত্র। বাঁ দিকের দেয়ালে ফারাও সম্রাট দেবতা ওরিসিসের কাছে উপস্থাপন করছেন সত্যের প্রতিরূপ। দীর্ঘ পথের শেষ প্রান্তে দশম কক্ষে এক সময় ফারাও তৃতীয় রামেসেসের শিলালিপি খোদিত পাথরের শবাধার রক্ষিত ছিল বলে জানা যায়। বর্তমানে সম্রাটের মমিটি মিশরের জাতীয় জাদুঘরে স্থান পেলেও শবাধারটি কোথায় তা জানতে পারিনি। 


আমরা যখন আবার কাঠের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসেছি তখন গুহামুখে এক অশিতিপর বৃদ্ধ দম্পতি নিচে নামবেন কিনা এই দ্বিধা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমাকে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইজ ইট ওয়র্থ ভিজিটিং?’ বললাম, ‘আই থিংক সো। ভ্যালি অফ দ্য কিংস-এ এসে ভূগর্ভের গভীরে অন্তত দু তিনটি সমাধি ক্ষেত্র দেখে না গেলে তোমাদের মিশর ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।’ ‘উই উইল ট্রাই টু মেক ইট। থ্যাঙ্ক ইউ।’ আমি বললাম, ‘ইউ আর স্টিল ইয়াং এনাফ টু মেক ইট!’


বৃৃদ্ধ দম্পতি খুশি হয়ে নিচে নামতে শুরু করলে আমরা পরবর্তী সমাধি মন্দিরে যাবার পথে ভাবছিলাম, এই যে জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও অভিজ্ঞতায় নতুন কিছু যুক্ত করার যে আকাক্সক্ষা এইটুকুই তো জীবন!   

 

 

চলবে...

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১১

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১০

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৯

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৮

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৭

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৬

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৫

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৪

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ৩

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ২

প্যাপিরাসের পুরোনো পাতা, পর্ব: ১

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর মান্দায় সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি’র সভাপতি ও জাতীয় পার্টি’র নেতা আব্দুল মান্নানকে গণধোলাই এর শিকার হয়েছেন। রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে তাকে গণধোলাই দিয়ে সতীহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকায় আটকে রাখেন বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। মান্নান উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং মান্দা উপজেলা জাতীয়পার্টির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

গ্রাহকদের অভিযোগ, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে এফডিআরের নামে আমানত সংগ্রহ করেন আব্দুল মান্নান ও ওই সমবায় সমিতির সম্পাদক শাহিন আক্তার মিঠু। শুরুর দিকে মুনাফার টাকা দিলেও বেশ কিছুদিন টালবাহানা করেন তারা। এ অবস্থায় আমানতের টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিলে সমিতির সাইনবোর্ড গুটিয়ে নিয়ে সটকে পড়ার পাঁয়তারা করেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক লাখপতি অফারে আমানতের নামে শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে দুই কোটি ৩৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করেন। প্রত্যেক মাসে এক লাখ টাকায় দুই হাজার টাকা করে মুনাফা দেওয়ার চুক্তি ছিল। প্রথমদিকে সঠিকভাবে মুনাফার টাকা পরিশোধ করা হলেও গত ছয় মাস ধরে টালবাহানা শুরু করেন তারা।

গ্রাহক ফারমিন আক্তার বলেন, ‘বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে ওই সংস্থার সভাপতি আব্দুল মান্নান আমার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নেয়। গত দেড় বছর ধরে মুনাফা দিচ্ছেন না। আমানতের টাকা ফেরত দিতেও টালবাহানা করছে তিনি।’

আরেক গ্রাহক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এক লাখ টাকায় মাসিক দুই হাজার টাকা মুনাফা দেওয়ার অঙ্গীকারে আমার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
সঠিকভাবে কয়েক মাস মুনাফা পেয়েছি। বর্তমানে সংস্থার লোকজন কার্যক্রম গুটিয়ে আত্মগোপনে আছেন। রবিবার সকালে আব্দুল মান্নানকে পেয়ে গ্রাহকরা আটকিয়ে গণধোলাই দেয়।’

সংস্থার সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া টাকা মাঠেই পড়ে আছে। যারা সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা টাকা ফেরত দিচ্ছে না। মাঠ থেকে টাকা উঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। টাকাগুলো উঠে এলেই গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

স্থানীয় গনেশপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবুল ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে গ্রাহকরা আমানতের টাকা ফেরতের জন্য আমার কাছে অভিযোগ দিয়ে আসছিল। পর্যায়ক্রমে টাকা ফেরতের অঙ্গীকারও করেছিলেন সংস্থার সভাপতি ও জাতীয় পার্টির নেতা। এ অবস্থায় আজ তাকে ধরে গণধোলাই দেয় গ্রাহকরা।’

মান্দা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুর রশীদ বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে সোনালী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় গ্রাহকের টাকা আটকে রাখা সঠিক হয়নি। আমানতের টাকা ফেরত পাওয়া গ্রাহকের ন্যায্য অধিকার।’

এ প্রসঙ্গে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। তবে,অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Header Ad
Header Ad

পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির

ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এরই ধারাবাহিকতায়, ভারতের বিজেপি সংসদ সদস্য নিশিকান্ত দুবে বাংলাদেশকেও পানি সরবরাহ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, পেহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এ সময়ে, নিশিকান্ত দুবে বাংলাদেশের পানি সরবরাহও বন্ধ করার দাবি তুলেছেন এবং ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি চুক্তিকে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই চুক্তি ছিল কংগ্রেস সরকারের একটি ভুল সিদ্ধান্ত, যা এখন সংশোধন করার সময় এসেছে।

দুবে আরও দাবি করেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে লস্কর-ই-তৈয়বার সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের সাথে সম্পর্ক রোধ করতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত আরও সুরক্ষিত করার প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগে দেওয়া বক্তব্যের কথা, যেখানে তারা বাংলাদেশকে পানি সরবরাহ বন্ধ করার পক্ষে কথা বলেছেন।

পেহেলগাম হামলার পর ভারত বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিল, বাণিজ্য স্থগিত করা এবং বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা অন্তর্ভুক্ত। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান ভারতীয়দের জন্য ভিসা বন্ধ করেছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করেছে।

Header Ad
Header Ad

এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) নিয়োগ-২০২৫-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এবছরের নিয়োগে লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা, বুদ্ধিমত্তা এবং মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ৫৯৯ জন প্রার্থীর প্রাথমিক সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬৬ জন মেধাভিত্তিক, ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়, ২ জন ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী কোটায় এবং ১ জন শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় সুপারিশ পেয়েছেন।

সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে অনুষ্ঠিত হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময়সূচি বাংলাদেশ পুলিশের ওয়েবসাইট (www.police.gov.bd) এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু
নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা চায় জামায়াত
কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক এমপি জাফর আলম গ্রেপ্তার
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞায় তাওহিদ হৃদয়, বাড়ছে নাটকের রঙ
উত্তেজনার মধ্যেই যুদ্ধজাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত
ছেলে খুঁজে পাচ্ছি না, একজন জীবনসঙ্গী দরকার: মিলা
টাঙ্গাইলে শ্রমিকদলের নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধে ভারতের ১.১৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির শঙ্কা
দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে, এটি সংস্কার করা প্রয়োজন: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
উত্তাল ইউআইইউ ক্যাম্পাস, ভিসি-ডিনসহ ১১ কর্মকর্তার পদত্যাগ
এপ্রিলেই দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, সঙ্গে থাকবেন দুই পুত্রবধূ