শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

তুমি মায়ের কাছে বস বাবা। আমাকে শরণার্থী কার্ড দাও। আমি ঘুরে দেখে আসি কোথাও কিছু খাবার পাই কি না। এই যে ট্রানজিস্টারটা রেখে গেলাম। নিউজ শোন। নতুন কিছু খবর থাকলে আমাকে জানিও।

– আচ্ছা যা, তাড়াতাড়ি ঘুরে আয়।

– মাকে ঘুম থেকে জাগিওনা বাবা। মা জেগে উঠলে তখন কথা বলবে। আনজুমও যেন মাকে ডিস্টার্ব না করে।

– ঠিক আছে, আমি তাঁবুর বাইরে এখানে বসে থাকছি। তুই খাবার নিয়ে ফিরে আয়, এই দোয়া করি।
অঞ্জন হনহনিয়ে হেঁটে যায়। ফুটে ওঠে নিজের ডাক্তারি সত্তা। চারদিকে তাকায়। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে কেউ চিকিৎসার জন্য ক্যাম্পে আনেনিতো? যাক, খুঁজতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটা হোক ওর যুদ্ধ। যশোর রোডে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকায়। দেখতে পায় মারুফ এগিয়ে আসছে ওর দিকে। সীমান্তে পরিচয় হওয়ার পর থেকে মারুফকে ওর পছন্দ হয়েছে। বন্ধুত্বের অনাবিল আঁচ আছে ওর মধ্যে।

– কোথায় যাচ্ছেন অঞ্জন ভাই?

– যশোর রোডেই আছি। দূরে কোথাও যাব না। বাবা-মা-বোন ক্ষুধায় কাতর হয়ে আছে।

– ও তাই। চাল-ডাল পাননি?

 

– না, পাইনি।

– কোথা থেকে নিতে হবে সেখানে আপনাকে নিয়ে যাই।

– চলো, চলো। থ্যাঙ্ক ইউ মারুফ।

মারুফ হেসে অঞ্জনের হাত ধরে। আজ যশোর রোডে কোনো গাড়ি নেই। হাত ধরে নিয়ে যায় মারুফ। একজন ডাক্তার বন্ধুর হাত ছেড়ে দেয় না। ভারতীয় বন্ধুদের স্টক থেকে চাল-ডালসহ সবকিছু নিয়ে ফিরে আসে দুজনে। রান্নার জন্য দুটো মাটির হাঁড়ি সংগ্রহ করে অঞ্জন। হঠাৎ মনে হয় মাতো বেশকিছু হাঁড়ি, প্লেট, গ্লাস এনেছে।

মারুফ বলে, চলেন আমার তাঁবুতে। ভাত-তরকারি রান্না আছে।

– তাই! তাহলেতো খুব ভালো। তাবুতে গিয়ে মা-বোনকে ভাত খাওয়াব। মা পরে রান্না করবে।
দুই মাটির হাঁড়িতে অঞ্জনকে ভাত-তরকারি দেয় মারুফ।

– সব দিয়ে দিলে যে?

– এখনই আবার রান্না হবে। পাশে দাঁড়িয়ে ওর বউ বলে, আমরা এভাবে সহযোগিতা করতে ভালোবাসি।

– তাহলে যাই। আমি থাকলে রান্না হতে দেরি হবে।

– আবার দেখা হবে অঞ্জন ভাই।

– কারো শরীর খারাপ হলে আমাকে খবর দিও।

– হ্যাঁ, দিবো। আপনি এখন আমাদের বড় ভরসার মানুষ।

অঞ্জন হেসে বেরিয়ে আসে। বেশ কিছুদূর হেঁটে আসার পরে দেখতে পায় একজন বৃদ্ধ গাছের নিচে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। আশেপাশে কেউ নেই। অঞ্জনের মাথা ঝমঝমিয়ে উঠে। পাশে বসে নাকে হাত দিলে বুঝতে পারে বেঁচে নেই। নিজের হাতের জিনিসপত্র বাড়িতে রেখে আবার আসবে এই চিন্তায় দ্রুত হেঁটে তাঁবুতে যায়। বাবার হাতে খাবার আর চাল-ডাল দিয়ে বলে, মা কি উঠেছে?

– হ্যাঁরে উঠেছি বাবা। আয় ভেতরে আয়। খালিদা ছেলের গায়ে হাত রেখে বলে, বস।

– না মা, এখন বসবনা। রাস্তার ধারে দৌড়ে যাব। একজন মানুষ পড়ে আছে সেখানে। দেখব কি হয়েছে। তোমরা ভাত খাও।

তোজাম্মেল তাঁবুর ভেতর মাথা ঢুকিয়ে বলে, আমি যাব তোর সঙ্গে?

– না, বাবা। তুমি ভাত খাও। আমি একটু পরে ফিরে আসছি।

তাঁবুর ভেতর থেকে বেরিয়ে ও দ্রুতপায়ে হাঁটে। চারদিকে তাকালে বুকের ভেতর অমিয়ার ছবি ভেসে ওঠে। ভারতে আসবে একথা ওকে বলা হয়নি। ও কোথায় আছে তাও জানেনা। অঞ্জন নিজেকে ধমকায়। মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে ও কেন অমিয়ার কথা ভাবছে। গাছতলায় পৌঁছালে একজন মৃত মানুষকে দেখবে। ও নিজের ভেতরের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে ছুটে এসে বসে পড়ে বৃদ্ধের কাছে। ভাবতে থাকে, তার সঙ্গে কেউ কি শরণার্থী শিবিরে আসেনি? কেন কেউ খোঁজ করছে না তার? ও একটুপরে উঠে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চারদিকের লোকজনকে হাত ঈশারায় ডাকে। মানুষেরা এগিয়ে আসে।

– কি হয়েছে?

সমবেত কন্ঠের জিজ্ঞাসা।

– আমি ডাক্তার। যশোর রোডের শরণার্থী। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে চেক করলাম। উনি মারা গিয়েছেন।
চারপাশের দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন জিজ্ঞেস করে, ওনার কি কেউ নেই?

– আমিতো জানিনা।

– তাহলে আমরা কয়েকজন যশোর রোডের এদিক-ওদিক গিয়ে খোঁজ করি যে ওনার কেউ আছে কিনা। একজন বুড়ো মানুষ ছাড়া আমরা কিছু বলতে পারবনা। ওনার নামওতো জানিনা।

অঞ্জন মাথা নেড়ে বলে, গিয়ে দেখেন। জিজ্ঞেস করেন বিভিন্নজনকে। তারা এসে ওনাকে দেখুক। এই খবর পেয়ে লোক চলাচলে সরগরম হয়ে ওঠে যশোর রোড। ছুটতে ছুটতে আসে অনেক মানুষ। কেউ তাকে চিনতে পারেনা। মারুফ বলে, তিনি হয়তো একাই এসেছেন। হাঁটতে হাঁটতে এসে এখানে হয়তো পড়ে গেছেন। কিংবা ওনার কেউ কলকাতায় যেতে পারে। ওনাকে এখানে থাকতে বলে গেছে।

সবাই মিলে জোরে জোরে বলে, আমরা এখন কি করব?

মারুফ বলে, ওনাকে এখানে ঢেকে রেখে দেই আমরা। কেউ যদি খোঁজ করতে আসে, সেজন্য। না আসলে কাল সকালে ওখানে কবর দেয়ার ব্যবস্থা করব।

– ভালো সিদ্ধান্ত। আজকেতো বিকেল হয়ে গেছে। একটুপরে রাত নামবে। অঞ্জন আপনি এখানে অপেক্ষা করেন। আমি একটা মাদুর জোগাড় করার ব্যবস্থা করছি। চলেন সবাই।

মারুফ কথা বলে এগিয়ে যায়। একজন মৃত মানুষকে আগলে রেখে বসে থাকে অঞ্জন। চারদিকে তাকায়। কেউ এখানে আসছে কিনা দেখতে চায়।

কিছুক্ষণ পর দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসে। যশোর রোডের সীমান্তের দিক থেকে নয়, উল্টো দিক থেকে আসছে। ওরা হয়তো দূরে কোথাও গিয়েছিল। ওদের দৌড়ে আসার গতি বিস্মিত করে অঞ্জনকে। ওর মনে হয় ওরা বাবাকে খুঁজতে আসছে। নাকি অন্য কোথাও যাবে? অল্পক্ষণে ওরা পৌঁছে যায় ওদের কাছে। দাঁড়িয়ে থেকে চিৎকার করে, বাবা, বাবা–

অঞ্জন নিজেও উঠে দাঁড়িয়ে বলে, তোমাদের বাবা মারা গেছেন। আমি ওনাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে ওনাকে আগলে রেখে বসে আছি।

ওরা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। চারদিক থেকে অন্যরা এসে জড়ো হয়।

বড় ছেলে সুরঞ্জন কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমরা বাবার জন্য খাবার খুঁজতে গিয়েছিলাম। অঞ্জন বলে, আমি ডাক্তার। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে কাছে এসে চেক করে দেখলাম উনি মারা গেছেন।

তখন মাদুর নিয়ে মারুফ আসে। মাদুর কাছে রেখে ওদের পাশে বসে পড়ে। অঞ্জন বলে, এরা এনার ছেলেমেয়ে।

– আমার বাবার নাম নিরঞ্জন বসু। আমি সুরঞ্জন, ও আমার ছোটভাই দেবপ্রিয়, আর আমাদের ছোটবোন মধুমালা। আমি পড়ালেখা শেষ করেছি। ওরা দুজন কলেজে পড়ে।

কথা শেষ করে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে তিনজন। মধুমালা বাবার গায়ের ওপর গড়িয়ে পড়ে বাবা, বাবা বলে চিৎকার করে। দুই ভাই ওকে টেনে তুলে বসিয়ে দেয়। সুরঞ্জন মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, এখন আর কাঁদিসনা বোন। বাবাকেতো আমরা চিতায় তুলতে পারবনা। কি করব ভাবতে হবে। অঞ্জনদা আপনি কি বলেন?

– আমি কিছু বলতে পারবনা। এমন মৃত্যুতো আমি দেখিনি। দেশে হলে আমরা শ্মশানে নিয়ে যেতাম। বিদেশের মাটিতে আমরা কি করব? এটাতো একটা রাস্তা এখানে শ্মশান ঘাট নাই।

মারুফ এতক্ষণ চুপ করেছিল। অঞ্জনের কথা শেষ হলে বলে, আমার মাথায় একটা চিন্তা এসেছে।
মধুমালা কাঁদতে কাঁদতে বলে, কি চিন্তা দাদা?

– এখান থেকেতো আপনারা বাবাকে নিয়ে কোথায় যেতে পারবেন না।

– হ্যাঁ, তা পারবনা। আপনার চিন্তার কথা বলেন?

– আমি ভাবছি ওনাকে সামনের নদীতে ডুবিয়ে দেব। তাঁকেতো চিতায় ওঠানো হবেনা, সেজন্য নদীতে ডুবিয়ে দেব। তিনি জলের মধ্যে ডুবে থেকে নদীর মাটিতে তলিয়ে যাবেন।

সুরঞ্জন কান্না থামিয়ে বলে, আপনি ভালো চিন্তা করেছেন দাদা। চলেন আমরা বাবাকে নিয়ে নদীর ধারে যাই। সূর্য এখনো ডোবেনি। একটুপরে ডুবে যাবে।

– আমার কাছে একটি মাদুর আছে। ওনাকে মাদুরের ওপরে উঠিয়ে আমরা সবাই মিলে ধরে নিয়ে যাব।

– ঠিক, ঠিক কথা মারুফ। মাদুরটা বিছিয়ে দাও। ওনাকে মাদুরের ওপর ওঠাব তুমি আর আমি।

অঞ্জন তিন ভাইবোনকে বলে, তোমাদের ধরতে হবেনা। আমরা দুজনেই পারব।

দুজনে মাথা আর পা ধরে নিরঞ্জন বাবুকে মাদুরের ওপর ওঠায়। তখন সবাই মিলে মাদুরের চারপাশ ধরে রাস্তার উল্টোদিকে নদীর ধারে যায়। নদীর ধারে মাদুরের ওপর রেখে দিয়ে তিন ভাইবোন বাবার মরদেহ নিয়ে প্রার্থণা করে। নদীর স্রোতের কুলকুল ধ্বনি কান্নার ধ্বনি হয়ে যায় সবার কাছে। বাবাকে চিতায় ওঠানো হলোনা এজন্য তিন ভাইবোন আবার কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে তিনজনই মরদেহ নদীতে নামায়। স্রোতের টানে ডুবে যায় লাশ। সবাই জানে কিছুদূর গিয়ে ভেসে উঠবে। তারপর আবার তলিয়ে যাবে।

মধুমালা বলে, আমরা কি নদীর ধার দিয়ে হেঁটে যাব। দেখব কতদূর গিয়ে ভেসে উঠবে বাবা?

অঞ্জন বলে, এটা ঠিক হবে না। একটুপরই অন্ধকার হয়ে যাবে চারদিক। আমাদের যার যার তাঁবুতে ফিরে যাওয়া উচিত।

আবার কান্নার তোলপাড় ওঠে। মধুমালা নদীর পানি দিয়ে নিজের মুখ ধোয়। অন্যরাও মুখে পানি দেয়। বলে, এই জলে ভেসে যাও বাবা। এই জল বাবার ভালোবাসা। অঞ্জন সুরঞ্জনের মাথায় হাত রেখে বলে, ঠিক আছে তোমরা এখানে কিছুক্ষণ হাত রাখ। আমরা যাচ্ছি।

ওরা কথা বলেনা। অঞ্জন আর মারুফ চলে আসে। একটুখানি এসে, আবার নদীর দিকে তাকিয়ে দাঁড়ায়। সূর্যের শেষ অপরূপ আলোর দিকে তাকিয়ে অঞ্জনের বুকে স্বাধীনতার ছবি ফুটে ওঠে। ভাবে, এই আলোতে জ¦লজ¦ল করছে বঙ্গবন্ধুর চেহারা। অন্যদিকে একজন মানুষ যুদ্ধের শরণার্থী হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অঞ্জন নিজেকে বিড়বিড়িয়ে বলে, মৃত্যু ও স্বাধীনতা একই আলোর ছায়া। নদীর বুকে এই ছায়া শরণার্থী শিবিরে সবখানে স্বাধীনতার আলো ফেলে।

অঞ্জন হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসে নিজের তাবুতে। মারুফ চলে যায় ওর তাঁবুতে। দুজনে হাত ধরে বলে, মুক্তিযুদ্ধই আমাদের শেষ ঠিকানা।

বাতাসে উড়ে যায় শব্দ মুক্তিযুদ্ধ। শরণার্থী শিবিরে ছেয়ে যায় শব্দের বাতাস।

চলবে....

এসএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা

আজিনুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ফের উত্তেজনা। সীমান্ত এলাকায় ভুট্টাক্ষেতে কাজ করার সময় ভারতের কয়েকজন নাগরিক এক বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে সোপর্দ করেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে। এ ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের জমগ্রাম ডাঙ্গার পার এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ৮০১-এর ১০/১১ নম্বর সাব-পিলারের কাছে এই ঘটনা ঘটে।

ধৃত যুবকের নাম আজিনুর রহমান (২৬)। তিনি ওই ইউনিয়নের জমগ্রাম ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুর হোসেনের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো আজিনুর তার মায়ের সঙ্গে ভুট্টা জমিতে পাতা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। তখন ভারতের কোচবিহার জেলার ছোট কুচলীবাড়ি এলাকার অন্তত ১০-১২ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে আজিনুরকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যায়।

এরপর তাকে বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

বিজিবির ঠ্যাংঝাড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, "আমাদের প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, আজিনুরকে ভারতীয় নাগরিকরা ধরে নিয়ে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকের চেষ্টা করছি।"

তিনি আরও জানান, ঘটনার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত আজিনুরকে দেশে ফেরত আনার চেষ্টা চলছে।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে শনিবার (১৯ এপ্রিল) বৈঠকে বসছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মুশফিক উস সালেহীন জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এনসিপির প্রতিনিধি দল অংশ নেবে।

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব। ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিন পর অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খুলেছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সদ্য অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের বিষয়ে যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি হয়েছে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও গঠনমূলক পরিবেশে। আলোচনায় উঠে এসেছে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত এবং কৌশলগত সহযোগিতার নানা দিক।

বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা এবং পারস্পরিক সংযোগ বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দ্রুত চূড়ান্ত করা হবে বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তিও।

পাকিস্তান তাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশ মৎস্য ও সামুদ্রিক খাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করে।

দুই দেশ চট্টগ্রাম-করাচি রুটে সরাসরি নৌ চলাচল চালুর ব্যাপারে একমত হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা-ইসলামাবাদ সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালুর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণের ক্ষেত্রেও অগ্রগতির প্রশংসা করে উভয়পক্ষ।

বৈঠকে শিক্ষাখাতে গভীর সহযোগিতা ও পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তির প্রস্তাবের জন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যম, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াক্ষেত্রে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব বাড়াতে সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারক নিয়েও আলোচনা হয়।

সার্ক বিষয়েও উভয়পক্ষ একমত হয় যে, আঞ্চলিক এই জোটকে পুনরুজ্জীবিত করা দরকার এবং তা যেন রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে থাকে।

বৈঠকে গাজায় ইসরায়েলের হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানায় দুই দেশ। কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তান জাতিসংঘ প্রস্তাব অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে অবস্থানকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্রসচিব তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
গাইবান্ধায় আগুনে পুড়লো ৫ দোকান, ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পথে বড় সমস্যা আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
টঙ্গীতে ফ্ল্যাট বাসা থেকে দুই শিশুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার
মালয়েশিয়ায় ১৬৫ বাংলাদেশিসহ ৫০৬ অবৈধ অভিবাসী আটক
ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া
বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি