শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

তুমি মায়ের কাছে বস বাবা। আমাকে শরণার্থী কার্ড দাও। আমি ঘুরে দেখে আসি কোথাও কিছু খাবার পাই কিনা। এই যে ট্রানজিস্টারটা রেখে গেলাম। নিউজ শোন। নতুন কিছু খবর থাকলে আমাকে জানিও।

– আচ্ছা যা, তাড়াতাড়ি ঘুরে আয়।

– মাকে ঘুম থেকে জাগিওনা বাবা। মা জেগে উঠলে তখন কথা বলবে। আনজুমও যেন মাকে ডিস্টার্ব না করে।

– ঠিক আছে, আমি তাঁবুর বাইরে এখানে বসে থাকছি। তুই খাবার নিয়ে ফিরে আয়, এই দোয়া করি।

অঞ্জন হনহনিয়ে হেঁটে যায়। ফুটে ওঠে নিজের ডাক্তারি সত্তা। চারদিকে তাকায়। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে কেউ চিকিৎসার জন্য ক্যাম্পে আনেনিতো? যাক, খুঁজতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটা হোক ওর যুদ্ধ। যশোর রোডে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকায়। দেখতে পায় মারুফ এগিয়ে আসছে ওর দিকে। সীমান্তে পরিচয় হওয়ার পর থেকে মারুফকে ওর পছন্দ হয়েছে। বন্ধুত্বের অনাবিল আঁচ আছে ওর মধ্যে।

– কোথায় যাচ্ছেন অঞ্জন ভাই?

– যশোর রোডেই আছি। দূরে কোথাও যাব না। বাবা-মা-বোন ক্ষুধায় কাতর হয়ে আছে।

– ও তাই। চাল-ডাল পাননি?

– না, পাইনি।

– কোথা থেকে নিতে হবে সেখানে আপনাকে নিয়ে যাই।

– চলো, চলো। থ্যাঙ্ক ইউ মারুফ।

মারুফ হেসে অঞ্জনের হাত ধরে। আজ যশোর রোডে কোনো গাড়ি নেই। হাত ধরে নিয়ে যায় মারুফ। একজন ডাক্তার বন্ধুর হাত ছেড়ে দেয় না। ভারতীয় বন্ধুদের স্টক থেকে চাল-ডালসহ সবকিছু নিয়ে ফিরে আসে দুজনে। রান্নার জন্য দুটো মাটির হাঁড়ি সংগ্রহ করে অঞ্জন। হঠাৎ মনে হয় মাতো বেশকিছু হাঁড়ি, প্লেট, গ্লাস এনেছে।

মারুফ বলে, চলেন আমার তাঁবুতে। ভাত-তরকারি রান্না আছে।

– তাই! তাহলেতো খুব ভালো। তাবুতে গিয়ে মা-বোনকে ভাত খাওয়াব। মা পরে রান্না করবে।

দুই মাটির হাঁড়িতে অঞ্জনকে ভাত-তরকারি দেয় মারুফ।

– সব দিয়ে দিলে যে?

– এখনই আবার রান্না হবে। পাশে দাঁড়িয়ে ওর বউ বলে, আমরা এভাবে সহযোগিতা করতে ভালোবাসি।

– তাহলে যাই। আমি থাকলে রান্না হতে দেরি হবে।

– আবার দেখা হবে অঞ্জন ভাই।

– কারো শরীর খারাপ হলে আমাকে খবর দিও।

– হ্যাঁ, দিবো। আপনি এখন আমাদের বড় ভরসার মানুষ।

অঞ্জন হেসে বেরিয়ে আসে। বেশ কিছুদূর হেঁটে আসার পরে দেখতে পায় একজন বৃদ্ধ গাছের নিচে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। আশেপাশে কেউ নেই। অঞ্জনের মাথা ঝমঝমিয়ে উঠে। পাশে বসে নাকে হাত দিলে বুঝতে পারে বেঁচে নেই। নিজের হাতের জিনিসপত্র বাড়িতে রেখে আবার আসবে এই চিন্তায় দ্রুত হেঁটে তাঁবুতে যায়। বাবার হাতে খাবার আর চাল-ডাল দিয়ে বলে, মা কি উঠেছে?

– হ্যাঁরে উঠেছি বাবা। আয় ভেতরে আয়। খালিদা ছেলের গায়ে হাত রেখে বলে, বস।

– না মা, এখন বসবনা। রাস্তার ধারে দৌড়ে যাব। একজন মানুষ পড়ে আছে সেখানে। দেখব কি হয়েছে। তোমরা ভাত খাও।

তোজাম্মেল তাঁবুর ভেতর মাথা ঢুকিয়ে বলে, আমি যাব তোর সঙ্গে?

– না, বাবা। তুমি ভাত খাও। আমি একটু পরে ফিরে আসছি।

তাঁবুর ভেতর থেকে বেরিয়ে ও দ্রুতপায়ে হাঁটে। চারদিকে তাকালে বুকের ভেতর অমিয়ার ছবি ভেসে ওঠে। ভারতে আসবে একথা ওকে বলা হয়নি। ও কোথায় আছে তাও জানেনা। অঞ্জন নিজেকে ধমকায়। মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে ও কেন অমিয়ার কথা ভাবছে। গাছতলায় পৌঁছালে একজন মৃত মানুষকে দেখবে। ও নিজের ভেতরের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে ছুটে এসে বসে পড়ে বৃদ্ধের কাছে। ভাবতে থাকে, তার সঙ্গে কেউ কি শরণার্থী শিবিরে আসেনি? কেন কেউ খোঁজ করছে না তার? ও একটুপরে উঠে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চারদিকের লোকজনকে হাত ঈশারায় ডাকে। মানুষেরা এগিয়ে আসে।

– কি হয়েছে?

সমবেত কন্ঠের জিজ্ঞাসা।

– আমি ডাক্তার। যশোর রোডের শরণার্থী। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে চেক করলাম। উনি মারা গিয়েছেন।

চারপাশের দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন জিজ্ঞেস করে, ওনার কি কেউ নেই?

– আমিতো জানিনা।

– তাহলে আমরা কয়েকজন যশোর রোডের এদিক-ওদিক গিয়ে খোঁজ করি যে ওনার কেউ আছে কিনা। একজন বুড়ো মানুষ ছাড়া আমরা কিছু বলতে পারবনা। ওনার নামওতো জানিনা।

অঞ্জন মাথা নেড়ে বলে, গিয়ে দেখেন। জিজ্ঞেস করেন বিভিন্নজনকে। তারা এসে ওনাকে দেখুক। এই খবর পেয়ে লোক চলাচলে সরগরম হয়ে ওঠে যশোর রোড। ছুটতে ছুটতে আসে অনেক মানুষ। কেউ তাকে চিনতে পারেনা। মারুফ বলে, তিনি হয়তো একাই এসেছেন। হাঁটতে হাঁটতে এসে এখানে হয়তো পড়ে গেছেন। কিংবা ওনার কেউ কলকাতায় যেতে পারে। ওনাকে এখানে থাকতে বলে গেছে।

সবাই মিলে জোরে জোরে বলে, আমরা এখন কি করব?

মারুফ বলে, ওনাকে এখানে ঢেকে রেখে দেই আমরা। কেউ যদি খোঁজ করতে আসে, সেজন্য। না আসলে কাল সকালে ওখানে কবর দেয়ার ব্যবস্থা করব।

– ভালো সিদ্ধান্ত। আজকেতো বিকেল হয়ে গেছে। একটুপরে রাত নামবে। অঞ্জন আপনি এখানে অপেক্ষা করেন। আমি একটা মাদুর জোগাড় করার ব্যবস্থা করছি। চলেন সবাই।
মারুফ কথা বলে এগিয়ে যায়। একজন মৃত মানুষকে আগলে রেখে বসে থাকে অঞ্জন। চারদিকে তাকায়। কেউ এখানে আসছে কিনা দেখতে চায়।

কিছুক্ষণ পর দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসে। যশোর রোডের সীমান্তের দিক থেকে নয়, উল্টো দিক থেকে আসছে। ওরা হয়তো দূরে কোথাও গিয়েছিল। ওদের দৌড়ে আসার গতি বিস্মিত করে অঞ্জনকে। ওর মনে হয় ওরা বাবাকে খুঁজতে আসছে। নাকি অন্য কোথাও যাবে? অল্পক্ষণে ওরা পৌঁছে যায় ওদের কাছে। দাঁড়িয়ে থেকে চিৎকার করে, বাবা, বাবা–

অঞ্জন নিজেও উঠে দাঁড়িয়ে বলে, তোমাদের বাবা মারা গেছেন। আমি ওনাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে ওনাকে আগলে রেখে বসে আছি।

ওরা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। চারদিক থেকে অন্যরা এসে জড়ো হয়।

বড় ছেলে সুরঞ্জন কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমরা বাবার জন্য খাবার খুঁজতে গিয়েছিলাম। অঞ্জন বলে, আমি ডাক্তার। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে কাছে এসে চেক করে দেখলাম উনি মারা গেছেন।

তখন মাদুর নিয়ে মারুফ আসে। মাদুর কাছে রেখে ওদের পাশে বসে পড়ে। অঞ্জন বলে, এরা এনার ছেলেমেয়ে।

– আমার বাবার নাম নিরঞ্জন বসু। আমি সুরঞ্জন, ও আমার ছোটভাই দেবপ্রিয়, আর আমাদের ছোটবোন মধুমালা। আমি পড়ালেখা শেষ করেছি। ওরা দুজন কলেজে পড়ে।

কথা শেষ করে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে তিনজন। মধুমালা বাবার গায়ের ওপর গড়িয়ে পড়ে বাবা, বাবা বলে চিৎকার করে। দুই ভাই ওকে টেনে তুলে বসিয়ে দেয়। সুরঞ্জন মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, এখন আর কাঁদিসনা বোন। বাবাকেতো আমরা চিতায় তুলতে পারবনা। কি করব ভাবতে হবে। অঞ্জনদা আপনি কি বলেন?

– আমি কিছু বলতে পারবনা। এমন মৃত্যুতো আমি দেখিনি। দেশে হলে আমরা শ্মশানে নিয়ে যেতাম। বিদেশের মাটিতে আমরা কি করব? এটাতো একটা রাস্তা এখানে শ্মশান ঘাট নাই।
মারুফ এতক্ষণ চুপ করেছিল। অঞ্জনের কথা শেষ হলে বলে, আমার মাথায় একটা চিন্তা এসেছে।

মধুমালা কাঁদতে কাঁদতে বলে, কি চিন্তা দাদা?

– এখান থেকেতো আপনারা বাবাকে নিয়ে কোথায় যেতে পারবেন না।

– হ্যাঁ, তা পারবনা। আপনার চিন্তার কথা বলেন?

– আমি ভাবছি ওনাকে সামনের নদীতে ডুবিয়ে দেব। তাঁকেতো চিতায় ওঠানো হবেনা, সেজন্য নদীতে ডুবিয়ে দেব। তিনি জলের মধ্যে ডুবে থেকে নদীর মাটিতে তলিয়ে যাবেন।

সুরঞ্জন কান্না থামিয়ে বলে, আপনি ভালো চিন্তা করেছেন দাদা। চলেন আমরা বাবাকে নিয়ে নদীর ধারে যাই। সূর্য এখনো ডোবেনি। একটু পরে ডুবে যাবে।

– আমার কাছে একটি মাদুর আছে। ওনাকে মাদুরের ওপরে উঠিয়ে আমরা সবাই মিলে ধরে নিয়ে যাব।

– ঠিক, ঠিক কথা মারুফ। মাদুরটা বিছিয়ে দাও। ওনাকে মাদুরের ওপর ওঠাব তুমি আর আমি।

অঞ্জন তিন ভাইবোনকে বলে, তোমাদের ধরতে হবেনা। আমরা দুজনেই পারব।

দুজনে মাথা আর পা ধরে নিরঞ্জন বাবুকে মাদুরের ওপর ওঠায়। তখন সবাই মিলে মাদুরের চারপাশ ধরে রাস্তার উল্টোদিকে নদীর ধারে যায়। নদীর ধারে মাদুরের ওপর রেখে দিয়ে তিন ভাইবোন বাবার মরদেহ নিয়ে প্রার্থনা করে। নদীর স্রোতের কুলকুল ধ্বনি কান্নার ধ্বনি হয়ে যায় সবার কাছে। বাবাকে চিতায় ওঠানো হলোনা এজন্য তিন ভাইবোন আবার কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে তিনজনই মরদেহ নদীতে নামায়। স্রোতের টানে ডুবে যায় লাশ। সবাই জানে কিছুদূর গিয়ে ভেসে উঠবে। তারপর আবার তলিয়ে যাবে।

মধুমালা বলে, আমরা কি নদীর ধার দিয়ে হেঁটে যাব। দেখব কতদূর গিয়ে ভেসে উঠবে বাবা?
অঞ্জন বলে, এটা ঠিক হবে না। একটুপরই অন্ধকার হয়ে যাবে চারদিক। আমাদের যার যার তাঁবুতে ফিরে যাওয়া উচিত।

আবার কান্নার তোলপাড় ওঠে। মধুমালা নদীর পানি দিয়ে নিজের মুখ ধোয়। অন্যরাও মুখে পানি দেয়। বলে, এই জলে ভেসে যাও বাবা। এই জল বাবার ভালোবাসা। অঞ্জন সুরঞ্জনের মাথায় হাত রেখে বলে, ঠিক আছে তোমরা এখানে কিছুক্ষণ হাত রাখ। আমরা যাচ্ছি।

ওরা কথা বলেনা। অঞ্জন আর মারুফ চলে আসে। একটুখানি এসে, আবার নদীর দিকে তাকিয়ে দাঁড়ায়। সূর্যের শেষ অপরূপ আলোর দিকে তাকিয়ে অঞ্জনের বুকে স্বাধীনতার ছবি ফুটে ওঠে। ভাবে, এই আলোতে জ্বলজ্বল করছে বঙ্গবন্ধুর চেহারা। অন্যদিকে একজন মানুষ যুদ্ধের শরণার্থী হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অঞ্জন নিজেকে বিড়বিড়িয়ে বলে, মৃত্যু ও স্বাধীনতা একই আলোর ছায়া। নদীর বুকে এই ছায়া শরণার্থী শিবিরে সবখানে স্বাধীনতার আলো ফেলে।

অঞ্জন হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসে নিজের তাবুতে। মারুফ চলে যায় ওর তাঁবুতে। দুজনে হাত ধরে বলে, মুক্তিযুদ্ধই আমাদের শেষ ঠিকানা।

বাতাসে উড়ে যায় শব্দ মুক্তিযুদ্ধ। শরণার্থী শিবিরে ছেয়ে যায় শব্দের বাতাস।

চলবে....

এসএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট