শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

তুমি মায়ের কাছে বস বাবা। আমাকে শরণার্থী কার্ড দাও। আমি ঘুরে দেখে আসি কোথাও কিছু খাবার পাই কিনা। এই যে ট্রানজিস্টারটা রেখে গেলাম। নিউজ শোন। নতুন কিছু খবর থাকলে আমাকে জানিও।

– আচ্ছা যা, তাড়াতাড়ি ঘুরে আয়।

– মাকে ঘুম থেকে জাগিওনা বাবা। মা জেগে উঠলে তখন কথা বলবে। আনজুমও যেন মাকে ডিস্টার্ব না করে।

– ঠিক আছে, আমি তাঁবুর বাইরে এখানে বসে থাকছি। তুই খাবার নিয়ে ফিরে আয়, এই দোয়া করি।

অঞ্জন হনহনিয়ে হেঁটে যায়। ফুটে ওঠে নিজের ডাক্তারি সত্তা। চারদিকে তাকায়। কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে কেউ চিকিৎসার জন্য ক্যাম্পে আনেনিতো? যাক, খুঁজতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটা হোক ওর যুদ্ধ। যশোর রোডে দাঁড়িয়ে চারদিকে তাকায়। দেখতে পায় মারুফ এগিয়ে আসছে ওর দিকে। সীমান্তে পরিচয় হওয়ার পর থেকে মারুফকে ওর পছন্দ হয়েছে। বন্ধুত্বের অনাবিল আঁচ আছে ওর মধ্যে।

– কোথায় যাচ্ছেন অঞ্জন ভাই?

– যশোর রোডেই আছি। দূরে কোথাও যাব না। বাবা-মা-বোন ক্ষুধায় কাতর হয়ে আছে।

– ও তাই। চাল-ডাল পাননি?

– না, পাইনি।

– কোথা থেকে নিতে হবে সেখানে আপনাকে নিয়ে যাই।

– চলো, চলো। থ্যাঙ্ক ইউ মারুফ।

মারুফ হেসে অঞ্জনের হাত ধরে। আজ যশোর রোডে কোনো গাড়ি নেই। হাত ধরে নিয়ে যায় মারুফ। একজন ডাক্তার বন্ধুর হাত ছেড়ে দেয় না। ভারতীয় বন্ধুদের স্টক থেকে চাল-ডালসহ সবকিছু নিয়ে ফিরে আসে দুজনে। রান্নার জন্য দুটো মাটির হাঁড়ি সংগ্রহ করে অঞ্জন। হঠাৎ মনে হয় মাতো বেশকিছু হাঁড়ি, প্লেট, গ্লাস এনেছে।

মারুফ বলে, চলেন আমার তাঁবুতে। ভাত-তরকারি রান্না আছে।

– তাই! তাহলেতো খুব ভালো। তাবুতে গিয়ে মা-বোনকে ভাত খাওয়াব। মা পরে রান্না করবে।

দুই মাটির হাঁড়িতে অঞ্জনকে ভাত-তরকারি দেয় মারুফ।

– সব দিয়ে দিলে যে?

– এখনই আবার রান্না হবে। পাশে দাঁড়িয়ে ওর বউ বলে, আমরা এভাবে সহযোগিতা করতে ভালোবাসি।

– তাহলে যাই। আমি থাকলে রান্না হতে দেরি হবে।

– আবার দেখা হবে অঞ্জন ভাই।

– কারো শরীর খারাপ হলে আমাকে খবর দিও।

– হ্যাঁ, দিবো। আপনি এখন আমাদের বড় ভরসার মানুষ।

অঞ্জন হেসে বেরিয়ে আসে। বেশ কিছুদূর হেঁটে আসার পরে দেখতে পায় একজন বৃদ্ধ গাছের নিচে উপুড় হয়ে পড়ে আছে। আশেপাশে কেউ নেই। অঞ্জনের মাথা ঝমঝমিয়ে উঠে। পাশে বসে নাকে হাত দিলে বুঝতে পারে বেঁচে নেই। নিজের হাতের জিনিসপত্র বাড়িতে রেখে আবার আসবে এই চিন্তায় দ্রুত হেঁটে তাঁবুতে যায়। বাবার হাতে খাবার আর চাল-ডাল দিয়ে বলে, মা কি উঠেছে?

– হ্যাঁরে উঠেছি বাবা। আয় ভেতরে আয়। খালিদা ছেলের গায়ে হাত রেখে বলে, বস।

– না মা, এখন বসবনা। রাস্তার ধারে দৌড়ে যাব। একজন মানুষ পড়ে আছে সেখানে। দেখব কি হয়েছে। তোমরা ভাত খাও।

তোজাম্মেল তাঁবুর ভেতর মাথা ঢুকিয়ে বলে, আমি যাব তোর সঙ্গে?

– না, বাবা। তুমি ভাত খাও। আমি একটু পরে ফিরে আসছি।

তাঁবুর ভেতর থেকে বেরিয়ে ও দ্রুতপায়ে হাঁটে। চারদিকে তাকালে বুকের ভেতর অমিয়ার ছবি ভেসে ওঠে। ভারতে আসবে একথা ওকে বলা হয়নি। ও কোথায় আছে তাও জানেনা। অঞ্জন নিজেকে ধমকায়। মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে ও কেন অমিয়ার কথা ভাবছে। গাছতলায় পৌঁছালে একজন মৃত মানুষকে দেখবে। ও নিজের ভেতরের সবকিছু ঝেড়ে ফেলে ছুটে এসে বসে পড়ে বৃদ্ধের কাছে। ভাবতে থাকে, তার সঙ্গে কেউ কি শরণার্থী শিবিরে আসেনি? কেন কেউ খোঁজ করছে না তার? ও একটুপরে উঠে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে চারদিকের লোকজনকে হাত ঈশারায় ডাকে। মানুষেরা এগিয়ে আসে।

– কি হয়েছে?

সমবেত কন্ঠের জিজ্ঞাসা।

– আমি ডাক্তার। যশোর রোডের শরণার্থী। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে চেক করলাম। উনি মারা গিয়েছেন।

চারপাশের দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন জিজ্ঞেস করে, ওনার কি কেউ নেই?

– আমিতো জানিনা।

– তাহলে আমরা কয়েকজন যশোর রোডের এদিক-ওদিক গিয়ে খোঁজ করি যে ওনার কেউ আছে কিনা। একজন বুড়ো মানুষ ছাড়া আমরা কিছু বলতে পারবনা। ওনার নামওতো জানিনা।

অঞ্জন মাথা নেড়ে বলে, গিয়ে দেখেন। জিজ্ঞেস করেন বিভিন্নজনকে। তারা এসে ওনাকে দেখুক। এই খবর পেয়ে লোক চলাচলে সরগরম হয়ে ওঠে যশোর রোড। ছুটতে ছুটতে আসে অনেক মানুষ। কেউ তাকে চিনতে পারেনা। মারুফ বলে, তিনি হয়তো একাই এসেছেন। হাঁটতে হাঁটতে এসে এখানে হয়তো পড়ে গেছেন। কিংবা ওনার কেউ কলকাতায় যেতে পারে। ওনাকে এখানে থাকতে বলে গেছে।

সবাই মিলে জোরে জোরে বলে, আমরা এখন কি করব?

মারুফ বলে, ওনাকে এখানে ঢেকে রেখে দেই আমরা। কেউ যদি খোঁজ করতে আসে, সেজন্য। না আসলে কাল সকালে ওখানে কবর দেয়ার ব্যবস্থা করব।

– ভালো সিদ্ধান্ত। আজকেতো বিকেল হয়ে গেছে। একটুপরে রাত নামবে। অঞ্জন আপনি এখানে অপেক্ষা করেন। আমি একটা মাদুর জোগাড় করার ব্যবস্থা করছি। চলেন সবাই।
মারুফ কথা বলে এগিয়ে যায়। একজন মৃত মানুষকে আগলে রেখে বসে থাকে অঞ্জন। চারদিকে তাকায়। কেউ এখানে আসছে কিনা দেখতে চায়।

কিছুক্ষণ পর দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসে। যশোর রোডের সীমান্তের দিক থেকে নয়, উল্টো দিক থেকে আসছে। ওরা হয়তো দূরে কোথাও গিয়েছিল। ওদের দৌড়ে আসার গতি বিস্মিত করে অঞ্জনকে। ওর মনে হয় ওরা বাবাকে খুঁজতে আসছে। নাকি অন্য কোথাও যাবে? অল্পক্ষণে ওরা পৌঁছে যায় ওদের কাছে। দাঁড়িয়ে থেকে চিৎকার করে, বাবা, বাবা–

অঞ্জন নিজেও উঠে দাঁড়িয়ে বলে, তোমাদের বাবা মারা গেছেন। আমি ওনাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে ওনাকে আগলে রেখে বসে আছি।

ওরা চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। চারদিক থেকে অন্যরা এসে জড়ো হয়।

বড় ছেলে সুরঞ্জন কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমরা বাবার জন্য খাবার খুঁজতে গিয়েছিলাম। অঞ্জন বলে, আমি ডাক্তার। ওনাকে পড়ে থাকতে দেখে কাছে এসে চেক করে দেখলাম উনি মারা গেছেন।

তখন মাদুর নিয়ে মারুফ আসে। মাদুর কাছে রেখে ওদের পাশে বসে পড়ে। অঞ্জন বলে, এরা এনার ছেলেমেয়ে।

– আমার বাবার নাম নিরঞ্জন বসু। আমি সুরঞ্জন, ও আমার ছোটভাই দেবপ্রিয়, আর আমাদের ছোটবোন মধুমালা। আমি পড়ালেখা শেষ করেছি। ওরা দুজন কলেজে পড়ে।

কথা শেষ করে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে তিনজন। মধুমালা বাবার গায়ের ওপর গড়িয়ে পড়ে বাবা, বাবা বলে চিৎকার করে। দুই ভাই ওকে টেনে তুলে বসিয়ে দেয়। সুরঞ্জন মাথায় হাত বুলিয়ে বলে, এখন আর কাঁদিসনা বোন। বাবাকেতো আমরা চিতায় তুলতে পারবনা। কি করব ভাবতে হবে। অঞ্জনদা আপনি কি বলেন?

– আমি কিছু বলতে পারবনা। এমন মৃত্যুতো আমি দেখিনি। দেশে হলে আমরা শ্মশানে নিয়ে যেতাম। বিদেশের মাটিতে আমরা কি করব? এটাতো একটা রাস্তা এখানে শ্মশান ঘাট নাই।
মারুফ এতক্ষণ চুপ করেছিল। অঞ্জনের কথা শেষ হলে বলে, আমার মাথায় একটা চিন্তা এসেছে।

মধুমালা কাঁদতে কাঁদতে বলে, কি চিন্তা দাদা?

– এখান থেকেতো আপনারা বাবাকে নিয়ে কোথায় যেতে পারবেন না।

– হ্যাঁ, তা পারবনা। আপনার চিন্তার কথা বলেন?

– আমি ভাবছি ওনাকে সামনের নদীতে ডুবিয়ে দেব। তাঁকেতো চিতায় ওঠানো হবেনা, সেজন্য নদীতে ডুবিয়ে দেব। তিনি জলের মধ্যে ডুবে থেকে নদীর মাটিতে তলিয়ে যাবেন।

সুরঞ্জন কান্না থামিয়ে বলে, আপনি ভালো চিন্তা করেছেন দাদা। চলেন আমরা বাবাকে নিয়ে নদীর ধারে যাই। সূর্য এখনো ডোবেনি। একটু পরে ডুবে যাবে।

– আমার কাছে একটি মাদুর আছে। ওনাকে মাদুরের ওপরে উঠিয়ে আমরা সবাই মিলে ধরে নিয়ে যাব।

– ঠিক, ঠিক কথা মারুফ। মাদুরটা বিছিয়ে দাও। ওনাকে মাদুরের ওপর ওঠাব তুমি আর আমি।

অঞ্জন তিন ভাইবোনকে বলে, তোমাদের ধরতে হবেনা। আমরা দুজনেই পারব।

দুজনে মাথা আর পা ধরে নিরঞ্জন বাবুকে মাদুরের ওপর ওঠায়। তখন সবাই মিলে মাদুরের চারপাশ ধরে রাস্তার উল্টোদিকে নদীর ধারে যায়। নদীর ধারে মাদুরের ওপর রেখে দিয়ে তিন ভাইবোন বাবার মরদেহ নিয়ে প্রার্থনা করে। নদীর স্রোতের কুলকুল ধ্বনি কান্নার ধ্বনি হয়ে যায় সবার কাছে। বাবাকে চিতায় ওঠানো হলোনা এজন্য তিন ভাইবোন আবার কাঁদতে শুরু করে। কাঁদতে কাঁদতে তিনজনই মরদেহ নদীতে নামায়। স্রোতের টানে ডুবে যায় লাশ। সবাই জানে কিছুদূর গিয়ে ভেসে উঠবে। তারপর আবার তলিয়ে যাবে।

মধুমালা বলে, আমরা কি নদীর ধার দিয়ে হেঁটে যাব। দেখব কতদূর গিয়ে ভেসে উঠবে বাবা?
অঞ্জন বলে, এটা ঠিক হবে না। একটুপরই অন্ধকার হয়ে যাবে চারদিক। আমাদের যার যার তাঁবুতে ফিরে যাওয়া উচিত।

আবার কান্নার তোলপাড় ওঠে। মধুমালা নদীর পানি দিয়ে নিজের মুখ ধোয়। অন্যরাও মুখে পানি দেয়। বলে, এই জলে ভেসে যাও বাবা। এই জল বাবার ভালোবাসা। অঞ্জন সুরঞ্জনের মাথায় হাত রেখে বলে, ঠিক আছে তোমরা এখানে কিছুক্ষণ হাত রাখ। আমরা যাচ্ছি।

ওরা কথা বলেনা। অঞ্জন আর মারুফ চলে আসে। একটুখানি এসে, আবার নদীর দিকে তাকিয়ে দাঁড়ায়। সূর্যের শেষ অপরূপ আলোর দিকে তাকিয়ে অঞ্জনের বুকে স্বাধীনতার ছবি ফুটে ওঠে। ভাবে, এই আলোতে জ্বলজ্বল করছে বঙ্গবন্ধুর চেহারা। অন্যদিকে একজন মানুষ যুদ্ধের শরণার্থী হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অঞ্জন নিজেকে বিড়বিড়িয়ে বলে, মৃত্যু ও স্বাধীনতা একই আলোর ছায়া। নদীর বুকে এই ছায়া শরণার্থী শিবিরে সবখানে স্বাধীনতার আলো ফেলে।

অঞ্জন হাঁটতে হাঁটতে ফিরে আসে নিজের তাবুতে। মারুফ চলে যায় ওর তাঁবুতে। দুজনে হাত ধরে বলে, মুক্তিযুদ্ধই আমাদের শেষ ঠিকানা।

বাতাসে উড়ে যায় শব্দ মুক্তিযুদ্ধ। শরণার্থী শিবিরে ছেয়ে যায় শব্দের বাতাস।

চলবে....

এসএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত