শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-২৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা

খালিদা প্রতিদিন আনজুমকে বর্ণমালা শেখায়। সময় ভালোই কাটে। মেয়েটি অল্প সময়ে শিখে ফেলেছে সব বর্ণমালা। পাশাপাশি শিখেছে সংখ্যা এক থেকে একশ পর্যন্ত। বর্ণমালাগুলো এমনভাবে মুখস্থ করেছে যে, গড়গড়িয়ে বলে যেতে পারে। কোনো ভুল করে না। হাতের লেখাও সুন্দর। খালিদা নিজেকে বলে, একে বর্ণমালা শিখিয়ে আনন্দ পেয়েছি। ওকে বকতে হয়নি। গায়ে হাত দিতে হয়নি। বড় হলে ও নিজের মতো করে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে পারবে। তোজাম্মেলও পাশে বসে ওর শেখার আগ্রহ দেখে খুব খুশি হয়।

রাতে বিছানায় একান্ত হয়ে ওঠে। খালিদা বলে, বুঝে গেছি যে আমার গর্ভের সন্তান পাব না। আল্লাহ আমাদের আর একটি দিয়েছেন। ওকে এমনভাবে আপন করব যে, যেন ও মায়ের কথা মনে না করে।

– ওকে তো এখনও বলা হলো না যে ওর মা মরে গেছে।

– থাক, ও যতক্ষণ জিজ্ঞেস না করবে ততক্ষণে ওকে কিছু বলার দরকার নেই।

– ও কিন্তু এখন অঞ্জনকে বলছে না যে মাকে দেখতে হাসপাতালে যাব।

– ও নতুন জামাকাপড়, নানা রকম খেলনা পেয়ে এই বাড়িতে ওর নতুন যাত্রা শুরু করেছে। তাই পেছনের কথা ওর মনে আসছে না।

– কিন্তু মা তো ওর শুধুই পেছন না?

– যাই হোক, বাদ দাও এসব আলোচনা। দেখা যাক ও কী করে। ওকে ওর মতো থাকতে দাও।

একগাদা খেলনা পেয়ে ওর দিন অন্যরকম হয়ে গেছে। নিজের ঘুমানোর জন্য একটি ঘর আছে। ও নিজের মতো নিজের ঘরে কিংবা বৈঠকখানায় সারাদিন কাটায়। খালিদা নিজের সময়মতো ওকে নিয়ে বসে। এখন ছড়া আর গল্পের বই পড়া শিখছে। কী সুন্দর সুন্দর বই এনে দিয়েছে ওকে অঞ্জন। গল্প আর ছড়ার সঙ্গে আঁকা ছবি দেখে ও বিস্মিত হয়। পেন্সিল দিয়ে নিজের খাতায় ছবি আঁকার চেষ্টা করে। আঁকিবুঁকিতে ভরিয়ে তোলে খাতার পৃষ্ঠা। দৌড়ে গিয়ে খালিদাকে বলে, মা দেখতো কেমন হয়েছে?

– বাহ, ভালোই তো হয়েছে। তোকে রংপেন্সিল কিনে দেব, তাহলে আঁকা আরও সুন্দর হবে।

– বা-বা আমি রংপেন্সিল পাব কবে? কবে মাগো?

– দেখি অঞ্জনকে বলব। ও যেদিন আনতে পারে সেদিন নিয়ে আসবে।

– কালকেই আনতে হবে।

– অঞ্জন বাসায় আসুক বলব ওকে।

– কালকে আনার জন্য আমি ভাইয়ার পায়ে ধরব।

– যা, বাইরে বাগানে গিয়ে খেলে আয়। রাস্তায় যাবি না।

আনজুম একছুটে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। জারুল গাছের নিচে গিয়ে দাঁড়ায়। চারপাশে আরও ফুলগাছ আছে। সব গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছোট ছোট ডাল ধরে ঝাঁকায়। গানের মতো করে বলে, আয় পাখি আয় রে–ফুল নিয়ে যাই রে–। এক গাছের ডাল ঝাঁকিয়ে আর এক গাছের কাছে যায়–ফুল টেনে গন্ধ শোঁকে। ছোটাছুটি করতে থাকে বাগানে। খালি পায়ে সবুজ ঘাসের ওপর দৌড়াতে ভীষণ আনন্দ পায়। অনেকক্ষণ দৌড়াদৌড়ি করে। ক্লান্ত হয় না। আকাশে শরতের নীলাভ মেঘ স্নিগ্ধ ছায়া বিস্তার করে রেখেছে।

আনজুমের ছোটাছুটির সময় অঞ্জন এসে দাঁড়ায় গেটের সামনে। হাঁটতে হাঁটতে এসেছে। হেঁটে এসে রাস্তার দু’পাশের ছবি মনে গেঁথে যায়। আজকে অমিয়া ছাড়া মনের ভেতরে আর কিছু নেই। সব দৃশ্য অমিয়ার আড়ালে পড়ে গেছে। প্রেমের চিত্র এভাবে আচ্ছন্ন করেছে ওকে। আজ ওর কোনো ক্লান্তি নেই। হেঁটে আসার সবটুকুই ছিল প্রেমের উৎসব।

বাগানে আনজুমকে দেখে থমকে যায়। ওকে একদিন নিয়ে যেতে হবে আজিমপুর কবরস্থানে। কয়েকটি দিন যাক, এখনই বলার দরকার নেই। মেয়েটি কাঁদবে এমন দৃশ্য দেখার ইচ্ছা হয় না ওর। আনজুম নাকের সামনে লাল জবা ফুল ধরে রেখেছে। পাতার আড়ালে ঢাকা পড়েছে ওর চেহারা। ও অঞ্জনকে দেখতে পাচ্ছে না। অঞ্জন বাগানে ঢুকে চারদিক ঘুরে আসে। এভাবে ঘোরা ওর প্রবল ভালো লাগা। আজকে এই ভালো লাগায় যুক্ত হয় অমিয়ার সৌরভ। মাথার ওপর শরতের নীল মেঘ ভেসে বেড়ায়। ও মাথা পেছনে হেলে তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে। মনে হয় মেঘ নয়, আকাশজুড়ে ভেসে আছে অমিয়া। ও মৃদুস্বরে বলতে থাকে, ও আমার প্রেয়সী তোমার ছায়া সবখানে। শরতের রোদছায়ায় আমার নতুন জীবনের সূচনা হলো।

তখন আনজুম দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে।

অঞ্জন ওর মাথায় হাত রেখে বলে, কি রে ফুলের সঙ্গে খেলা শেষ হয়েছে?

– না, শেষ হয়নি। আরও খেলব। ফুল আমার বন্ধু আমি যখন বস্তিতে ছিলাম তখন ছেলেমেয়ের সঙ্গে খেলতাম।

– তাহলে এই খেলাটা অন্যরকম না?

– হ্যাঁ, একদম অন্যরকম। গাছ আর ফুলের সঙ্গে খেলা। আগের খেলার চেয়ে এই খেলাটা অনেক আনন্দের। মাঝে মাঝে মনে হয় ঘাসের ওপর ঘুমিয়ে থাকব।

– তাই মনে হয়? ভালোই তো। কোনো কোনো দিন দুপুরবেলা গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে থাকবি।

– আচ্ছা, আচ্ছা।

খুশিতে লাফালাফি করে আনজুম। বাগানের চারদিকে দৌড়াতে শুরু করে।

অঞ্জন আবার আকাশের দিকে তাকায়। বলে, তোমাকে মেঘের মাঝে দেখতে পাচ্ছি। তুমি এখন কী করছ অমিয়া?

তারপর হাসতে শুরু করে। এভাবে নিজের অনুভবের টানাপোড়েন কি ঠিক হচ্ছে? পরে মনে হয় একলা থাকার সময়ে অমিয়াকে কাছে পাওয়ার তো এটাই পথ। এই অনুভব ধরে রাখতে হবে। নিজের মানসিক দিকের স্বাচ্ছন্দ্য গড়ে তোলা। প্রেমের স্বপ্নকে ফুলের বাসরঘরে শারীরিক স্পর্শ দেওয়া। অঞ্জন বাগানে আর দাঁড়ায় না। ঘরে ঢোকে। দেখতে পায় কাজরিকে। ওকে জিজ্ঞেস করে, মা কই, বাবা কই?

– শোবার ঘরে।

– কখন ঘুমাতে গেল?

– ভাত খেয়ে।

– এখন আমাকে ভাত দে, কাজরি। আনজুম খেয়েছে?

– হ্যাঁ খেয়েছে।

– ঠিক আছে ও খেলুক। আমি ভাত খাই। হাত-মুখ ধুয়ে আসি।

বাথরুম থেকে ফিরে টেবিলে এলে ও দেখতে পায় আনজুম টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বলে, আমিও তোমার সঙ্গে ভাত খাব।

– তুই খাসনি?

– খেয়েছি একটু। তোমার সঙ্গে খেলে আমার পেট ভরে যায়। নইলে মনে হয় আমি সারাদিন কিছু খাইনি।

– আয়, আয়, হাত-মুখ ধুয়ে আয়। বাথরুমে যা।

আনজুম এক দৌড়ে বাথরুমে যায়।

কাজরি ভাত-তরকারি নিয়ে আসে।

– কী রান্না হয়েছে রে?

– বোয়াল মাছ, করল্লা ভাজি, ডাল, বেগুনের ভর্তা।

– ওহ্, বোয়াল আমার প্রিয় মাছ। এজন্য মা প্রায়ই বোয়াল মাছ কেনে।

– আর একটি থালা দে আনজুমের জন্য।

– ও তো খেয়েছে।

– তাতে কি, আমার সঙ্গে আবার খাবে। ছোট মানুষ একটু একটু খায়। এতক্ষণ বাগানে দৌড়াদৌড়ি করেছে তো, তাই খিদে পেয়ে গেছে।

– বাথরুম থেকে বেরিয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে এসে চেয়ার টেনে বসে আনজুম। কাজরি ওর সামনে একটি থালা এনে দেয়। ও উচ্ছ্বসিত হয়ে বলে, ভাইয়া কাজরি বুবু আমাকে অনেক আদর করে। একবারও বলেনি, তুই এই বাড়িতে থাকতে পারবি না, চলে যা।

– এই এইসব কথা বলবি না।

কাজরি ওর প্লেটে ভাত দেয়। অল্প ভাত খেয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে বাবা-মায়ের ঘরের দরজায় ধাক্কাতে থাকে আনজুম। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পায় না। তখন চিৎকার করে কেঁদে বলে, মা দরজা খোলো। কিন্তু ভেতর থেকে কেউ বের হয় না।

অঞ্জন ধমক দিয়ে বলে, এদিকে আয় কুকড়ি। থাপ্পড় খাবি। বাবা-মাকে ডিস্টার্ব করছিস কেন? খবরদার আর দরজা ধাক্কাবি না।

আনজুম টেবিলের কাছে দৌড়ায়। দু’হাতে চোখের পানি মোছে। কাঁদতে কাঁদতে বলে, আমি তোমার কাছে কুকড়ি না আনজুম?

– তুই আমার কাছে দুটোই। কখনো কুকড়ি, কখনো আনজুম।

– কেন?

– আমি যে তোকে অনেক আদর করি। বল তো তুই গান শিখবি না নাচ শিখবি?

– দুটোই শিখব। গানও গাইব, নাচও করব।

– সামনের জানুয়ারিতে তোকে স্কুলে ভর্তি করা হবে।

– কোন ক্লাসে?

– কেজিতে। আমাদের বাড়ির কাছে যে কেজি স্কুল আছে ওখানে। তুই মায়ের কাছ থেকে এ বি সি ডি শিখেছিস না?

– হ্যাঁ, সব শিখেছি। ওয়ান-টু-থ্রি-ফোরও।

– বাব্বা, তুই তো একটা পফ্ফিত মেয়ে হবি দেখছি।

– পফ্ফিত কী ভাইয়া? ভাইয়া আমার মা কেমন আছে?

– শান্তিতে আছে।

– কবে মাকে দেখতে যাব?

– আগে স্কুলে ভর্তি হবি, তারপরে। মাকে বলবি যে পড়ালেখা শিখছিস।

চলবে....

এসএ/

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১১

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১০

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৯

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৮

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৭

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৬

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৫

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৪

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ৩

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ২

শরণার্থীর সুবর্ণরেখা: পর্ব ১

Header Ad
Header Ad

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো

লিওনেল মেসি। ছবি: সংগৃহীত

কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে—লিওনেল মেসি কি খেলবেন ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে? বারবারই আশাব্যঞ্জক ইঙ্গিত দিয়েছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এবারও তার কথায় সেই সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলেছে।

সম্প্রতি ‘সিম্পিলিমেন্টে ফুটবল’ নামক এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, তিনি ২০২৬ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবছেন এবং দলে থাকতে চান। তবে সিদ্ধান্ত নেবেন নিজের শারীরিক ও মানসিক ফিটনেস বিবেচনা করে।

“নিজের প্রতি সৎ থাকতে হবে আমাকে। আমি যদি দেখি যে বিশ্বকাপে খেলার মতো ফিট আছি, দলকে সাহায্য করতে পারব—তবেই সিদ্ধান্ত নেব। আমি কোনোভাবেই দলের বোঝা হতে চাই না।” — বললেন মেসি।

আগামী জুনে ৩৮ বছরে পা রাখবেন তিনি, আর ২০২৬ বিশ্বকাপে বয়স হবে ৩৯। এমন বয়সে বিশ্বকাপ খেলাটা সহজ নয়। তাই মেসি বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে যাচাই করে এগোচ্ছেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ফিরেছেন ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালের কথায়ও, যেখানে আর্জেন্টিনা হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে। এ প্রসঙ্গে কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে নিজের একটি তুলনা টেনেছেন তিনি।

“এমবাপ্পে ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল করেও জিততে পারেনি। এটা অনেকটা আমার ২০১৪ সালের অনুভূতির মতো। যদিও তার কাছে ২০১৮ সালের একটি বিশ্বকাপ শিরোপা আছে, সেটা একটা সান্ত্বনা। কিন্তু ওই হার আমার জন্য মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক ছিল। এখনো ভাবলে মনে হয়, আমারও দুটি বিশ্বকাপ থাকতে পারত।”

তবে কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের পর মেসি নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করছেন। তিনি বলেন, “আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। ফুটবলে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব, আমি তা পেয়েছি। বিশ্বকাপটাই শুধু ছিল না, সেটাও এখন আছে। ঈশ্বরের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ—তিনি আমাকে সব দিয়েছেন।”

Header Ad
Header Ad

পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের উদ্বেগ প্রকাশের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে মন্তব্য এসেছে, তা ভিত্তিহীন এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর যে নিপীড়ন চলে আসছে, তার প্রতি ভারতের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের সঙ্গে এই বিষয়টির তুলনা টানার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা একেবারেই অসৎ প্রচেষ্টা। এমনকি যেসব অপরাধী ওইসব ঘটনায় জড়িত, তারা আজও বিচার এড়িয়ে চলেছে।”

এর আগে ৮ এপ্রিল, ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সুরক্ষা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

এই মন্তব্যকেই ‘হস্তক্ষেপমূলক’ ও ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশকে দায়ী করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অশান্তি ছড়িয়েছেন।”

প্রসঙ্গত, নতুন ওয়াকফ আইনের বিরোধিতায় মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হুগলি জেলায় ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। আগুন লাগানো, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সড়ক অবরোধের মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।

এই ইস্যু শুধু পশ্চিমবঙ্গেই সীমাবদ্ধ নয়—উত্তর প্রদেশসহ ভারতের আরও কিছু রাজ্যেও সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে অসন্তোষ এবং নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

Header Ad
Header Ad

দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত পুলিশ কনস্টবল শামীম হোসেন (৩০) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে সহকর্মীরা শয়নকক্ষের জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।

নিহত শামীম কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাশেম আলীর ছেলে। তার কনস্টবল নং ৫৩২।

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী জানান, শামীম হত অক্টোবরে দর্শনা ইমিগ্রেশনে যোগদান করে। যোগদানের পর থেকেই গত ৬ মাস ধরে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের ২য় তলার একটি কক্ষে বাস করে আসছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় কয়েকজন সহকর্মী খোঁজ নিতে গেলে শামীম হোসেনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সহকারী পুলিশ সুপার দামুড়হুদা -জীবননগর) সার্কেল জাকিয়া সুলতানা, দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর ঘটনাস্থলে আসেন। এরপর বেলা ১১ টায় মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

পুলিশ কনস্টেবল শামীম হোসেন ২০১৫ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪
সৌদি আরব-মরক্কো থেকে ৪৬৬ কোটি টাকার সার কিনবে সরকার
গাইবান্ধায় মাদক মামলায় ৩ যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
তোপের মুখে ওয়াক্‌ফ আইন স্থগিত করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট