রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা

মোহিনী মা বাবার একমাত্র সন্তান। মোহিনীর বাবা মোহসীন আহমেদ স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। বংশানুক্রমে তারা অভিজাত। তাঁর অর্থবিত্ত আর আভিজাত্যের কাছে নব্য ধনীরা একেবারেই নস্যি। যদিও নব্য ধনীদের হম্বিতম্বি দেখলে মনে হয় মোহসীন সাহেবরা বুঝি ক্ষুদে ব্যবসায়ী। তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েও কখনো টাকার গরম কখনো দেখাননি। খুবই সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছেন। প্রায় বছরই সেরা ট্যাক্সদাতার পদক পান। মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করেন। নিজ এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িত রেখেছেন। মোহিনীর মা মনোয়ারা বেগমও সাধারণ মানুষকে সাহায্য করেন। বিপদ-আপদে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান। হৃদয়বান কিংবা আদর্শ মানুষ হিসেবে যদি কেউ পুরস্কার দেয়া হতো তাহলে মোহসীন আহমেদ পেতেন। অবশ্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি এবং মনোয়ারা বেগম অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

ছোটবেলা থেকেই মোহিনী দেখে এসেছেন মা বাবার মানবিক কাজগুলি। তার মা বাবা তার কাছে আদর্শ। তিনি নিজেও ওই রকম মানবিক হতে চেয়েছেন। মানবিকতা ছাড়া কোনো মানুষই প্রকৃত মানুষ হয় না। মানুষ মানেই তো মানবিক। এ কথা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।

এরকম পরিবার শুধু ঢাকা শহর নয়, পুরো দেশেই হয়তো হাতে গোনা। এই পরিবারে জন্ম নিয়ে মোহিনী নিজেকে ধন্য মনে করেন। মোহিনী কেন, যে কোনো মানুষই ধন্য মনে করতে বাধ্য। মোহিনীর মা বাবার মানবিকতার যেমন তুলনা হয় না; তারও সেরকমই। সেই মানবিকতার কারণেই হয়তো মোহিনী আরেফিনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। তা না হলে জেনেশুনে এরকম একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তানকে ভালোবাসবে কেন? শুধুই কি সামান্য উপকারের জন্য? সেই উপকারের বিনিময়ে তিনি তাকে টাকা দিতে পারতেন। কিংবা কোনো দামি উপহার! তার জন্য নিজেকেই সঁপে দিতে হবে কেন?

মোহিনী অসম্ভব এক আবেগী মেয়ে। একজন কৃতজ্ঞ মানুষও। সামান্য উপকারও তাকে কেউ করলে তা তিনি ভোলেন না। তিনি সব সময় তা মনে রাখেন। তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। মোহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। টানা এক মাস তিনি ক্লাসে যেতে পারেননি। সে সময় নোট দিয়ে মোহিনীকে সহায়তা করেন আরেফিন। আরেফিনের সহযোগিতার কারণেই পরীক্ষায় তিনি ভালো ফল করেন। সেই সহায়তার কথা ভুলতে পারেননি মোহিনী।

মোহিনী যখন আরেফিনকে বলেছিলেন, তুমি যে উপকার করলে তার কোনো বিনিময় মূল্য নেই। তারপরও আমি তোমাকে কিছু উপহার দিতে চাই। তুমি আমার কাছে কি চাও? তুমি যা চাইবে আমি সম্ভব হলে তাই দেবো। মন থেকে বলবে।

আরেফিন বলেছিলেন, তুমি অভয় দিলে বলতে পারি। যদিও চাওয়াটা অনেক বড়। বলতে পারো, আমি দুঃসাহস দেখাচ্ছি। তারপরও আমি বলতে চাই।

মোহিনী আরেফিনকে অভয় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তুমি নির্ভয়েই বলো আরেফিন। আমি কিছু মনে করব না।

আরেফিন তার ভয়, লজ্জা সবকিছুকে দূরে ঠেলে বুকে সাহস নিয়ে বলেছিলেন, আমি তোমাকেই চাই। আর কিছুই আমি চাই না। শুধু তোমাকে।

মোহিনী খুব ভালো করেই জানতেন, আরেফিনের পরিবারে সে-ই একমাত্র শিক্ষিত। তার ভাইবোনরা কেউ হাইস্কুলের গণ্ডিতেও পা রাখতে পারেনি। দরিদ্র পরিবার বলে তার মা বাবা অন্য ভাইবোনদের পড়াতে পারেনি। ওই পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব কল্পনাতীত ব্যাপার। মোহিনী কখনোই ওর মা বাবাকে বলতে পারবেন না। তার মা বাবা কিছুতেই মানবেন না। তাদেরকে আরেফিনের পরিবার সম্পর্কে বললে তারা ভীষণ কষ্ট পাবেন। এই কষ্ট কখনোই তাদের মন থেকে যাবে না।

মোহিনী তার মা বাবাকে অসম্ভব পছন্দ করেন। তাদের কথার বাইরে কখনোই তিনি যাননি। কোনো কিছুই করেননি। মা বাবা তার অন্তপ্রাণ। সেই মা বাবাকে আরেফিনের পরিবারে কথা গোপন রেখেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। তারপরও যখন তারা আরেফনের পরিবার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলেন তখন মোহিনী বলেছিলেন, আমি কি পরিবারকে বিয়ে করব; নাকি আরেফিনকে? পরিবার দেখার দরকার নেই। তোমরা আরেফিনকে দেখ।

এক রকম মা বাবার অমতেই মোহিনী আরেফিনকে বিয়ে করেন। মোহিনীর মা বাবা এতে ভীষণ কষ্ট পান। সেই কষ্ট সহ্য করেও মেয়ের ভালোলাগার বিষয়টি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তারা বলেন, মেয়ের ভালো লাগা মন্দ লাগা তার অভিরুচির ব্যাপার। সেখানে তো আমরা জোর খাটাতে পারি না! তারা জোর খাটানওনি। মেয়ে যাতে ভালো থাকে সেদিকটায় তারা নজর দিয়েছেন। মেয়েকে গাড়ি এবং ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন।

মোহিনী অবশ্য নিজের যোগ্যতা দিয়েই সু ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখান থেকে তিনি সামান্যই বেতন নিতেন। বলা চলে মাসিক সম্মানী। নেহায়েত প্রয়োজন ছাড়া তাও নিতেন না। মোহিনীর সম্মানীর বেতনের টাকা দিয়ে গাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। মোহিনীর বাবা জোর করে কিনিয়েছে; এই যা! বিষয়টি আরেফিন খুব ভালো করেই জানে। এটা জানার পর আরেফিন কেন যে কোনো ছেলেই মোহিনীকে মাথায় করে রাখবে। কিন্তু আরেফিন মাথায় করে রাখা তো দূরের কথা; তিনি তাকে রীতিমতো অবহেলা করছেন। এতো কিছুর পরও আরেফিন কেন অবহেলা করবেন? কেন তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেবেন? তাকে যদি কখনো অসম্মান করা হতো তাহলেও তিনি বলতে পারতেন!

মোহিনী আরেফিনের আচার আচরণে সত্যিই বিস্মিত। যে মানুষটিকে তিনি এতো ভালোবাসা দিয়েছেন; সে মানুষের এমন আচরণ সহ্য করার মতো নয়।

তাছাড়া আরেফিনের পারিবারিক দুরবস্থার কথা মোহিনী জানার পর তাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু আরেফিনের বাবা তার ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাননি। কেন পাঠাননি তা নিয়ে অবশ্য মোহিনী আরেফিনের সঙ্গে দুচার কথা বলেছেন। মোহিনী কথা, আমি টাকা দিয়েছি তো তোমার ভাইবোন যাতে স্কুলে যায়; লেখাপড়াটা অব্যাহত রাখে সেজন্য। তাদের টাকা পয়সা আরো লাগলে বলতে পারতেন!

আরেফিন এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। মোহিনীও এর এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি। অথচ আরেফিন হঠাৎ করেই পাল্টে গেলেন। তার আচার আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলো। তিনি মোহিনীর সঙ্গে এমন আচরণ শুরু করলেন যা মোহিনী মানতে পারেন না। যদিও প্রথম দিকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। আরেফিনকেও বুঝিয়েছেন, মোহিনীর কানটা পছন্দ আর কোনটা পছন্দ নয়। ওকে আসলে সভ্যতা ভব্যতা শেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আরেফিন গোবরে পদ্মফুলের মতোই। পরিবারের একমাত্র ‘গুণধর’ পুত্র। পরিবার থেকে যা শিক্ষা পাওয়ার কথা, তা তো পায়নি। তাই তিনি স্ত্রীর মর্যাদা দিতে জানেন না। এটাই মোহিনী তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন। আরেফিন তা মোটেই কানে তোলেননি।

মোহিনীর এক কথা, আরেফিন যদি তাকে সত্যি সত্যিই ভালোবাসে তাহলে তো তার ত্রুটিগুলি শোধরানোর কথা। আরেফিন তার বদ অভ্যাসগুলো কেন পাল্টাতে পারছেন না। তিনি কি চেষ্টাই করছেন না! নিশ্চয়ই। চেষ্টা করলে না পারার কি আছে? মানুষের চেষ্টার অসাধ্য কি কিছু আছে?

মোহিনী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি সরাসরি আরেফিনের সঙ্গে কথা বলবেন। তার জন্য সংসার করতে ভালো না লাগে তাহলে তিনি খোলাখুলি বলতে পারেন। অশান্তির সংসার শুধু শুধু টেনে নেয়ার মানে হয় না। কেন, কার জন্য?

মোহিনী ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত প্রায় বারটা। আজও আরেফিন বাসায় ফেরেননি। তার মোবাইলে ফোন দিয়েছেন কয়েকবার। ফোনটা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার মানে পুরনো অভ্যাস। তিনি বাসায় ফিরতে দেরি করলেই ফোন বন্ধ রাখেন। একটা ফোন দিয়ে জানাতেও তো পারেন যে, তার দেরি হবে। না, তাও জানাবেন না। স্ত্রীকে উদ্বিগ্ন রাখতে তিনি মজা পান।

মোহিনী মনে মনে ভাবেন, না না! আমি দিনের পর দিন এটা সহ্য করব না। ও আজ ফিরুক। তারপর ওর সঙ্গে বোঝাপড়া হবে। আজ ওর একদিন, কি আমার একদিন!

মোহিনী শোবার ঘর থেকে বারান্দায় যান। বাইরের দিকে উঁকি দিতেই বর্জপাতের শব্দে তিনি লাফিয়ে ওঠেন। এমন শব্দ যেন কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার অবস্থা হয়। এরমধ্যে বিদ্যুতও চলে যায়। মোহিনী ভীষণ ভয় পেয়ে যান। তিনি ভয়ে ভয়ে অন্ধকার ঘরে ঢোকেন। আবারও আকাশ ভেঙেপড়া বর্জপাতের শব্দে তিনি দুই কানে হাত দিয়ে বসে পড়েন। ভয়, শঙ্কা আর অস্থিরতা তাকে পেয়ে বসে।

বাইরে থেকে বাতাসের সঙ্গে ধুলোবালি ঢুকতে থাকে। অন্ধকারে মোহিনী কী করবেন কিছুই বুঝতে পারেন না। তিনি এদিক সেদিক ছোটাছুটি করেন। তার চোখেও ধুলোবালির কণা ঢুকে পড়ে। তিনি ওড়না দিয়ে মুছতে মুছতে বলেন, ও মাই গড! এসব কী শুরু হলো! এ তো দেখছি মহাবিপদ! চার্জার লাইট কোথায় রেখেছি তাও তো মনে নেই। হায় আল্লাহ! কি করবো আমি এখন? আল্লাহ, তুমি রহমত করো!

অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর চার্জার লাইটটি পেয়ে মোহিনী ভীষণ খুশি। তিনি লাইট জ্বলিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, যাক বাবা, আলোটা তো পাওয়া গেলো! আগে জানালাগুলো বন্ধ করি। হঠাৎ এতো ঝড়! চৈত্র মাসে কালবৈশাখী!

মোহিনী জানালা বন্ধ করতে না করতেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তুমুল ঝড়ের সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। যেন আকাশ ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টির ছাট আছড়ে পড়ছে জানালায়। জানালা দিয়ে সেই পানি চুইয়ে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিছানা ভিজে একাকার হয়ে গেছে। মোহিনী অনেক কষ্টে জাজিম তুলে দিয়েছেন। ততক্ষণে তোশক ভিজে চুপচুপে হয়ে গেছে।

কিছুক্ষণ পরপর ভয়ঙ্কর শব্দে বর্জপাত হচ্ছে। মোহিনী বর্জপাতের শব্দে চমকে চমকে উঠছেন। ভয়ে তার বুক কাঁপছে। এতো ভয় আগে কখনো পাননি তিনি। এ সময় আরেফিন বাইরে। তার ভীষণ বিরক্ত লাগছে। আবার খারাপও লাগছে। কোথায় আছেন আরেফিন তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও হচ্ছে তার।

মোহিনী ওর মাকে ফোন দেয়ার জন্য টেলিফোন হাতে নেন। বাসার ল্যান্ডফোনটিও ডেড হয়ে আছে। তিনি এবার মোবাইল হাতে নিয়ে তার মাকে ফোন দেন। তার কাছে পরিস্থিতি জানতে চান।
মোহিনীর মা আনোয়ারা বেগম উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন, মা তুই কেমন আছিস মা! প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেছে দেড় ঘণ্টা আগে। কি যে অবস্থা!

আছি, ভালো আছি মা। আমার কেন জানি ভয় লাগছে। খুব ভয় লাগছে।
কেন মা?

মা মেয়ে কথা বলার সময়ও প্রচন্ড শব্দে বর্জপাত হচ্ছিল। আতঙ্কে তাদের কথা বলাই যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আনোয়ারা বেগম আরেফিনের কথা জানতে চাইতেই মোহিনী তার কথা এড়িয়ে যায়। সে তার বাবার কথা জানতে চায়।

আনোয়ারা বেগম মোবাইল ফোনটি মোহসীন আহমেদের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, এই ধরো, মোহিনী কথা বলবে। ওর নাকি ভয় লাগছে।

মোহসীন আহমেদ ফোন ধরেই বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, কি রে মা! ভয় লাগছে তোর? আরেফিন নেই?

মোহিনী ওর বাবার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টো তার কাছেই জানতে চাইলেন, বাবা, তোমরা কেমন আছো সেটা বলো?

আমরা ভালো আছি মা। শোন, দরজা-জানালা সব ভালো করে বন্ধ করে দে। ঝড়টা কিন্তু ভয়ঙ্কর!

হ্যাঁ বাবা। বন্ধ করেছি। তোমাদের ওই দিকে বৃষ্টি হচ্ছে?

হুম। বৃষ্টি হচ্ছে মানে! এতো বৃষ্টি আমি খুব শিঘ্র দেখিনি।

আমাদের এখানে বিদ্যুৎও নেই। কী যে অবস্থা! ডিনার করেছিস?

না বাবা।

যা অবস্থা দেখছি, এই ঝড় সহসা থামবে না। খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়।

এরমধ্যে ঘুম আসবে? আমার খুব অস্থির লাগছে। বুকটার মধ্যে কেমন ধরফর করছে। কিছুই ভালো লাগছে না।

আরেফিন বাসায় নেই?

বাবা, আমি এখন রাখছি। পরে কথা বলছি।

তড়িঘড়ি করে ফোন রেখে দেন মোহিনী। তিনি আরেফিনের জন্য চিন্তা করেন। তিনি এই ঝড়বাদলের মধ্যে কোথায় আছে তা নিয়ে ভাবেন। আবারও আরেফিনের মোবাইলে ফোন দিয়ে দেখেন। ফোন বন্ধ পেয়ে বিরক্তির সঙ্গে বলেন, কেন ও ফোন বন্ধ রেখেছে? এটা কোনো কথা হলো!

মোহিনী উদ্বেগ আর আতঙ্ক নিয়ে রান্না ঘরে যান। একটা প্লেটে ভাত, মাছ ও মুরগীর ঝোল নিয়ে নিজের ঘরে যান। খাবার টেবিলে বসে কোনো মতে খাবারটা শেষ করেন। তারপর তিনি নিজের ঘরে এসে বিছানার এক পাশে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকেন। নানা দুর্ভাবনা তার মনকে আচ্ছন্ন করে। এক পর্যায়ে তিনি ঘুমের ঘোরে তলিয়ে যান।

 

চলবে....

 

আরও পড়ুন:

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

 

Header Ad
Header Ad

একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। রোববার (২০ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

সভা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বে টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পসহ মোট ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ১৬ হাজার ৭১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪ হাজার ৪২৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা।

এ সময় উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর প্রকল্পে সঠিকভাবে অগ্রগতি না থাকায় এটি “সমুদ্র বন্দরও হবে না, খালের বন্দরও হবে না” - এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প ও গৃহায়ন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, নৌ ও শ্রম উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Header Ad
Header Ad

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের এবং যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল, তাদের তদন্ত করে বিচার করতে হবে।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় নিয়ে গেছে এবং মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে, যার দায় নির্বাচন কমিশনেরও রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান প্রবর্তন, প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিরূপণ, নির্বাচনে সহিংসতা রোধে আচরণবিধি সংস্কার, ঋণখেলাপিদের প্রার্থিতা বাতিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মনিটরিং করা।

এছাড়া একই নামে একাধিক দলের নিবন্ধন, অফিসবিহীন দলকে বৈধতা দেওয়া এবং এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এনসিপি মনে করে, এসব বাস্তবায়ন না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনুভা জাবীন।

Header Ad
Header Ad

এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ছবি: সংগৃহীত

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৯৬৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

রেমিট্যান্সের বড় একটি অংশ এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে—৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো দিয়ে ৯ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে এক মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে—৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও যথাক্রমে ২১৯ কোটি ও ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা, ডলারের ভালো বিনিময় হার এবং রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের বাড়তি পাঠানোর প্রবণতা—এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এপ্রিল শেষে এই প্রবাহ ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে, যা নতুন একটি রেকর্ড হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

একনেকে ২৪ হাজার কোটি টাকার ১৬ প্রকল্প অনুমোদন
বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক