শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা

মোহিনী মা বাবার একমাত্র সন্তান। মোহিনীর বাবা মোহসীন আহমেদ স্বনামধন্য ব্যবসায়ী। বংশানুক্রমে তারা অভিজাত। তাঁর অর্থবিত্ত আর আভিজাত্যের কাছে নব্য ধনীরা একেবারেই নস্যি। যদিও নব্য ধনীদের হম্বিতম্বি দেখলে মনে হয় মোহসীন সাহেবরা বুঝি ক্ষুদে ব্যবসায়ী। তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েও কখনো টাকার গরম কখনো দেখাননি। খুবই সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছেন। প্রায় বছরই সেরা ট্যাক্সদাতার পদক পান। মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করেন। নিজ এলাকায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছেন। আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িত রেখেছেন। মোহিনীর মা মনোয়ারা বেগমও সাধারণ মানুষকে সাহায্য করেন। বিপদ-আপদে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান। হৃদয়বান কিংবা আদর্শ মানুষ হিসেবে যদি কেউ পুরস্কার দেয়া হতো তাহলে মোহসীন আহমেদ পেতেন। অবশ্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি এবং মনোয়ারা বেগম অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।

ছোটবেলা থেকেই মোহিনী দেখে এসেছেন মা বাবার মানবিক কাজগুলি। তার মা বাবা তার কাছে আদর্শ। তিনি নিজেও ওই রকম মানবিক হতে চেয়েছেন। মানবিকতা ছাড়া কোনো মানুষই প্রকৃত মানুষ হয় না। মানুষ মানেই তো মানবিক। এ কথা তিনি অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।

এরকম পরিবার শুধু ঢাকা শহর নয়, পুরো দেশেই হয়তো হাতে গোনা। এই পরিবারে জন্ম নিয়ে মোহিনী নিজেকে ধন্য মনে করেন। মোহিনী কেন, যে কোনো মানুষই ধন্য মনে করতে বাধ্য। মোহিনীর মা বাবার মানবিকতার যেমন তুলনা হয় না; তারও সেরকমই। সেই মানবিকতার কারণেই হয়তো মোহিনী আরেফিনের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। তা না হলে জেনেশুনে এরকম একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তানকে ভালোবাসবে কেন? শুধুই কি সামান্য উপকারের জন্য? সেই উপকারের বিনিময়ে তিনি তাকে টাকা দিতে পারতেন। কিংবা কোনো দামি উপহার! তার জন্য নিজেকেই সঁপে দিতে হবে কেন?

মোহিনী অসম্ভব এক আবেগী মেয়ে। একজন কৃতজ্ঞ মানুষও। সামান্য উপকারও তাকে কেউ করলে তা তিনি ভোলেন না। তিনি সব সময় তা মনে রাখেন। তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। মোহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় একবার খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। টানা এক মাস তিনি ক্লাসে যেতে পারেননি। সে সময় নোট দিয়ে মোহিনীকে সহায়তা করেন আরেফিন। আরেফিনের সহযোগিতার কারণেই পরীক্ষায় তিনি ভালো ফল করেন। সেই সহায়তার কথা ভুলতে পারেননি মোহিনী।

মোহিনী যখন আরেফিনকে বলেছিলেন, তুমি যে উপকার করলে তার কোনো বিনিময় মূল্য নেই। তারপরও আমি তোমাকে কিছু উপহার দিতে চাই। তুমি আমার কাছে কি চাও? তুমি যা চাইবে আমি সম্ভব হলে তাই দেবো। মন থেকে বলবে।

আরেফিন বলেছিলেন, তুমি অভয় দিলে বলতে পারি। যদিও চাওয়াটা অনেক বড়। বলতে পারো, আমি দুঃসাহস দেখাচ্ছি। তারপরও আমি বলতে চাই।

মোহিনী আরেফিনকে অভয় দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তুমি নির্ভয়েই বলো আরেফিন। আমি কিছু মনে করব না।

আরেফিন তার ভয়, লজ্জা সবকিছুকে দূরে ঠেলে বুকে সাহস নিয়ে বলেছিলেন, আমি তোমাকেই চাই। আর কিছুই আমি চাই না। শুধু তোমাকে।

মোহিনী খুব ভালো করেই জানতেন, আরেফিনের পরিবারে সে-ই একমাত্র শিক্ষিত। তার ভাইবোনরা কেউ হাইস্কুলের গণ্ডিতেও পা রাখতে পারেনি। দরিদ্র পরিবার বলে তার মা বাবা অন্য ভাইবোনদের পড়াতে পারেনি। ওই পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব কল্পনাতীত ব্যাপার। মোহিনী কখনোই ওর মা বাবাকে বলতে পারবেন না। তার মা বাবা কিছুতেই মানবেন না। তাদেরকে আরেফিনের পরিবার সম্পর্কে বললে তারা ভীষণ কষ্ট পাবেন। এই কষ্ট কখনোই তাদের মন থেকে যাবে না।

মোহিনী তার মা বাবাকে অসম্ভব পছন্দ করেন। তাদের কথার বাইরে কখনোই তিনি যাননি। কোনো কিছুই করেননি। মা বাবা তার অন্তপ্রাণ। সেই মা বাবাকে আরেফিনের পরিবারে কথা গোপন রেখেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি ভুল তথ্য দিয়েছিলেন। তারপরও যখন তারা আরেফনের পরিবার সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলেন তখন মোহিনী বলেছিলেন, আমি কি পরিবারকে বিয়ে করব; নাকি আরেফিনকে? পরিবার দেখার দরকার নেই। তোমরা আরেফিনকে দেখ।

এক রকম মা বাবার অমতেই মোহিনী আরেফিনকে বিয়ে করেন। মোহিনীর মা বাবা এতে ভীষণ কষ্ট পান। সেই কষ্ট সহ্য করেও মেয়ের ভালোলাগার বিষয়টি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তারা বলেন, মেয়ের ভালো লাগা মন্দ লাগা তার অভিরুচির ব্যাপার। সেখানে তো আমরা জোর খাটাতে পারি না! তারা জোর খাটানওনি। মেয়ে যাতে ভালো থাকে সেদিকটায় তারা নজর দিয়েছেন। মেয়েকে গাড়ি এবং ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন।

মোহিনী অবশ্য নিজের যোগ্যতা দিয়েই সু ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখান থেকে তিনি সামান্যই বেতন নিতেন। বলা চলে মাসিক সম্মানী। নেহায়েত প্রয়োজন ছাড়া তাও নিতেন না। মোহিনীর সম্মানীর বেতনের টাকা দিয়ে গাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে। মোহিনীর বাবা জোর করে কিনিয়েছে; এই যা! বিষয়টি আরেফিন খুব ভালো করেই জানে। এটা জানার পর আরেফিন কেন যে কোনো ছেলেই মোহিনীকে মাথায় করে রাখবে। কিন্তু আরেফিন মাথায় করে রাখা তো দূরের কথা; তিনি তাকে রীতিমতো অবহেলা করছেন। এতো কিছুর পরও আরেফিন কেন অবহেলা করবেন? কেন তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেবেন? তাকে যদি কখনো অসম্মান করা হতো তাহলেও তিনি বলতে পারতেন!

মোহিনী আরেফিনের আচার আচরণে সত্যিই বিস্মিত। যে মানুষটিকে তিনি এতো ভালোবাসা দিয়েছেন; সে মানুষের এমন আচরণ সহ্য করার মতো নয়।

তাছাড়া আরেফিনের পারিবারিক দুরবস্থার কথা মোহিনী জানার পর তাকে অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। প্রয়োজনে আরো সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু আরেফিনের বাবা তার ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাননি। কেন পাঠাননি তা নিয়ে অবশ্য মোহিনী আরেফিনের সঙ্গে দুচার কথা বলেছেন। মোহিনী কথা, আমি টাকা দিয়েছি তো তোমার ভাইবোন যাতে স্কুলে যায়; লেখাপড়াটা অব্যাহত রাখে সেজন্য। তাদের টাকা পয়সা আরো লাগলে বলতে পারতেন!

আরেফিন এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। মোহিনীও এর এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি। অথচ আরেফিন হঠাৎ করেই পাল্টে গেলেন। তার আচার আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলো। তিনি মোহিনীর সঙ্গে এমন আচরণ শুরু করলেন যা মোহিনী মানতে পারেন না। যদিও প্রথম দিকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। আরেফিনকেও বুঝিয়েছেন, মোহিনীর কানটা পছন্দ আর কোনটা পছন্দ নয়। ওকে আসলে সভ্যতা ভব্যতা শেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আরেফিন গোবরে পদ্মফুলের মতোই। পরিবারের একমাত্র ‘গুণধর’ পুত্র। পরিবার থেকে যা শিক্ষা পাওয়ার কথা, তা তো পায়নি। তাই তিনি স্ত্রীর মর্যাদা দিতে জানেন না। এটাই মোহিনী তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছেন। আরেফিন তা মোটেই কানে তোলেননি।

মোহিনীর এক কথা, আরেফিন যদি তাকে সত্যি সত্যিই ভালোবাসে তাহলে তো তার ত্রুটিগুলি শোধরানোর কথা। আরেফিন তার বদ অভ্যাসগুলো কেন পাল্টাতে পারছেন না। তিনি কি চেষ্টাই করছেন না! নিশ্চয়ই। চেষ্টা করলে না পারার কি আছে? মানুষের চেষ্টার অসাধ্য কি কিছু আছে?

মোহিনী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি সরাসরি আরেফিনের সঙ্গে কথা বলবেন। তার জন্য সংসার করতে ভালো না লাগে তাহলে তিনি খোলাখুলি বলতে পারেন। অশান্তির সংসার শুধু শুধু টেনে নেয়ার মানে হয় না। কেন, কার জন্য?

মোহিনী ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত প্রায় বারটা। আজও আরেফিন বাসায় ফেরেননি। তার মোবাইলে ফোন দিয়েছেন কয়েকবার। ফোনটা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তার মানে পুরনো অভ্যাস। তিনি বাসায় ফিরতে দেরি করলেই ফোন বন্ধ রাখেন। একটা ফোন দিয়ে জানাতেও তো পারেন যে, তার দেরি হবে। না, তাও জানাবেন না। স্ত্রীকে উদ্বিগ্ন রাখতে তিনি মজা পান।

মোহিনী মনে মনে ভাবেন, না না! আমি দিনের পর দিন এটা সহ্য করব না। ও আজ ফিরুক। তারপর ওর সঙ্গে বোঝাপড়া হবে। আজ ওর একদিন, কি আমার একদিন!

মোহিনী শোবার ঘর থেকে বারান্দায় যান। বাইরের দিকে উঁকি দিতেই বর্জপাতের শব্দে তিনি লাফিয়ে ওঠেন। এমন শব্দ যেন কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার অবস্থা হয়। এরমধ্যে বিদ্যুতও চলে যায়। মোহিনী ভীষণ ভয় পেয়ে যান। তিনি ভয়ে ভয়ে অন্ধকার ঘরে ঢোকেন। আবারও আকাশ ভেঙেপড়া বর্জপাতের শব্দে তিনি দুই কানে হাত দিয়ে বসে পড়েন। ভয়, শঙ্কা আর অস্থিরতা তাকে পেয়ে বসে।

বাইরে থেকে বাতাসের সঙ্গে ধুলোবালি ঢুকতে থাকে। অন্ধকারে মোহিনী কী করবেন কিছুই বুঝতে পারেন না। তিনি এদিক সেদিক ছোটাছুটি করেন। তার চোখেও ধুলোবালির কণা ঢুকে পড়ে। তিনি ওড়না দিয়ে মুছতে মুছতে বলেন, ও মাই গড! এসব কী শুরু হলো! এ তো দেখছি মহাবিপদ! চার্জার লাইট কোথায় রেখেছি তাও তো মনে নেই। হায় আল্লাহ! কি করবো আমি এখন? আল্লাহ, তুমি রহমত করো!

অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর চার্জার লাইটটি পেয়ে মোহিনী ভীষণ খুশি। তিনি লাইট জ্বলিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন, যাক বাবা, আলোটা তো পাওয়া গেলো! আগে জানালাগুলো বন্ধ করি। হঠাৎ এতো ঝড়! চৈত্র মাসে কালবৈশাখী!

মোহিনী জানালা বন্ধ করতে না করতেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। তুমুল ঝড়ের সঙ্গে তুমুল বৃষ্টি। যেন আকাশ ফুটো হয়ে গেছে। বৃষ্টির ছাট আছড়ে পড়ছে জানালায়। জানালা দিয়ে সেই পানি চুইয়ে ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বিছানা ভিজে একাকার হয়ে গেছে। মোহিনী অনেক কষ্টে জাজিম তুলে দিয়েছেন। ততক্ষণে তোশক ভিজে চুপচুপে হয়ে গেছে।

কিছুক্ষণ পরপর ভয়ঙ্কর শব্দে বর্জপাত হচ্ছে। মোহিনী বর্জপাতের শব্দে চমকে চমকে উঠছেন। ভয়ে তার বুক কাঁপছে। এতো ভয় আগে কখনো পাননি তিনি। এ সময় আরেফিন বাইরে। তার ভীষণ বিরক্ত লাগছে। আবার খারাপও লাগছে। কোথায় আছেন আরেফিন তা নিয়ে দুশ্চিন্তাও হচ্ছে তার।

মোহিনী ওর মাকে ফোন দেয়ার জন্য টেলিফোন হাতে নেন। বাসার ল্যান্ডফোনটিও ডেড হয়ে আছে। তিনি এবার মোবাইল হাতে নিয়ে তার মাকে ফোন দেন। তার কাছে পরিস্থিতি জানতে চান।
মোহিনীর মা আনোয়ারা বেগম উদ্বিগ্ন কণ্ঠে বললেন, মা তুই কেমন আছিস মা! প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেছে দেড় ঘণ্টা আগে। কি যে অবস্থা!

আছি, ভালো আছি মা। আমার কেন জানি ভয় লাগছে। খুব ভয় লাগছে।
কেন মা?

মা মেয়ে কথা বলার সময়ও প্রচন্ড শব্দে বর্জপাত হচ্ছিল। আতঙ্কে তাদের কথা বলাই যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। আনোয়ারা বেগম আরেফিনের কথা জানতে চাইতেই মোহিনী তার কথা এড়িয়ে যায়। সে তার বাবার কথা জানতে চায়।

আনোয়ারা বেগম মোবাইল ফোনটি মোহসীন আহমেদের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, এই ধরো, মোহিনী কথা বলবে। ওর নাকি ভয় লাগছে।

মোহসীন আহমেদ ফোন ধরেই বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, কি রে মা! ভয় লাগছে তোর? আরেফিন নেই?

মোহিনী ওর বাবার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে উল্টো তার কাছেই জানতে চাইলেন, বাবা, তোমরা কেমন আছো সেটা বলো?

আমরা ভালো আছি মা। শোন, দরজা-জানালা সব ভালো করে বন্ধ করে দে। ঝড়টা কিন্তু ভয়ঙ্কর!

হ্যাঁ বাবা। বন্ধ করেছি। তোমাদের ওই দিকে বৃষ্টি হচ্ছে?

হুম। বৃষ্টি হচ্ছে মানে! এতো বৃষ্টি আমি খুব শিঘ্র দেখিনি।

আমাদের এখানে বিদ্যুৎও নেই। কী যে অবস্থা! ডিনার করেছিস?

না বাবা।

যা অবস্থা দেখছি, এই ঝড় সহসা থামবে না। খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়।

এরমধ্যে ঘুম আসবে? আমার খুব অস্থির লাগছে। বুকটার মধ্যে কেমন ধরফর করছে। কিছুই ভালো লাগছে না।

আরেফিন বাসায় নেই?

বাবা, আমি এখন রাখছি। পরে কথা বলছি।

তড়িঘড়ি করে ফোন রেখে দেন মোহিনী। তিনি আরেফিনের জন্য চিন্তা করেন। তিনি এই ঝড়বাদলের মধ্যে কোথায় আছে তা নিয়ে ভাবেন। আবারও আরেফিনের মোবাইলে ফোন দিয়ে দেখেন। ফোন বন্ধ পেয়ে বিরক্তির সঙ্গে বলেন, কেন ও ফোন বন্ধ রেখেছে? এটা কোনো কথা হলো!

মোহিনী উদ্বেগ আর আতঙ্ক নিয়ে রান্না ঘরে যান। একটা প্লেটে ভাত, মাছ ও মুরগীর ঝোল নিয়ে নিজের ঘরে যান। খাবার টেবিলে বসে কোনো মতে খাবারটা শেষ করেন। তারপর তিনি নিজের ঘরে এসে বিছানার এক পাশে চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকেন। নানা দুর্ভাবনা তার মনকে আচ্ছন্ন করে। এক পর্যায়ে তিনি ঘুমের ঘোরে তলিয়ে যান।

 

চলবে....

 

আরও পড়ুন:

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত