বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫ | ২১ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস, পর্ব: ১৪

অঘ্রানের অন্ধকারে

টেবিলের ওপর মগে আমার প্রিয় কফি। সুন্দর গন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। কফির গন্ধে মনে চনমনে ভাব আসে। আমার মন যথেষ্ট চনমন করছে। কম্পিউটারে ‘তুরির নোটবুক’ লেখা ফাইল ওপেন করলাম। তুরিকে নিয়ে লেখা গল্পটা আরও খানিকদূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে। যতদূর লিখেছি তারপর লিখলাম, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে এসে শাবিন ভড়কে গেল। এটা ঢাকার কাছাকাছি, মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জাইল্লা গ্রামে। পরিচালনা করেন একজন ব্রাদার। নাম ব্রাদার রোনাল্ড ড্রাহোজাল। ২৫ বছর বয়সে শিক্ষকতা করার উদ্দেশ্যে আমেরিকা ছেড়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন। পরে গড়ে তুলেছেন এই মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র। নাম দিয়েছেন আপনগাঁও। তিন একর জায়গার ওপর ওপর প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে। বিশাল খোলা প্রান্তর। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। আদিগন্ত ধানক্ষেত। মাঝখানে দুটো দালান।
শাবিন ভেবেছিল এখানে হাসপাতালের মতো সিঙ্গেল কেবিনের ব্যবস্থা থাকবে। এসে দেখে বড়ো একটা ঘরে ৭০ জনকে রাখা হয়েছে। সারি সারি বিছানা।
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে শাবিন নিজ ইচ্ছেতে এসেছে। তুরি তাকে আদর করে বলল, তুমি পুন্নিকে ভালোবাসো?
হ্যাঁ বাসি।

বিয়ে করতে চাও পুন্নিকে?
তুমি তো সব ভণ্ডুল করে দিলে।
তুরি এখন ঘরে শাবিনের সঙ্গে ফেনসিডিল খায়। ফেনসিডিল কেনার পয়সা তুরি দেয়। শাবিন কিনে নিয়ে আসে। এই ঘটনা শাবিনের মা জানেন না।
শাবিন তার বন্ধুদের সঙ্গে মেশা কমিয়ে দিয়েছে। সে প্রায় সবসময় ঘরে থাকে। সারাদিন ঘুমায়। মাঝেমধ্যে বাইরে গেলে অনেক রাতে বাড়িতে ফেলে। তুরি জানে শাবিন সেদিন পুন্নির কাছে যায়।
তুরি আর শাবিন বসে একসঙ্গে ফেনসিডিল খাচ্ছে। তুরি বলল, একজনের দুই বউ থাকতেই পারে। তুমি পুন্নিকে বিয়ে করো। আমি তুমি আর পুন্নি তিনজন একসঙ্গে থাকব।
শাবিন অবাক হয়ে হাসছে। হাসতে হাসতে বলল, অ্যাই, তোমার নেশা হয়ে গেছে। আর খেয়ো না।
আমার নেশা হয়নি। বলো, তুমি পুন্নিকে বিয়ে করবে?
মা রাজি হবে?
মাকে আমি রাজি করাব। মায়ের শরীর ভালো নেই। তোমাকে নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তা করেন।
আমাকে নিয়ে না, বাবাকে নিয়ে।
আমার ধারণা বাবা কোথায় আছেন, মা জানেন। তুমি সুস্থ হয়ে উঠলে মা তোমাকে বাবার ঠিকানা দেবেন।
আমি সুস্থ হয়ে উঠব। এই মাল ছুঁয়ে বলছি আগামীকাল থেকে সব বাদ। আর নেশা করব না।
একা একা নেশা ছাড়া যায় না। কষ্ট হয়।
তুমি আছ।
চলো রিহ্যাবে যাই। ওখানে থাকলে তুমি ভালো হয়ে যাবে।
অনেক টাকা লাগবে।
তোমাকে ছয় মাস থাকতে হবে না। পঁচিশ দিন থাকবে।
তাতেও অনেক টাকা দরকার। তিরিশ হাজার টাকার মামলা। পুন্নি চেয়েছিল। ওর জন্য খোঁজ নিয়েছিলাম।
মায়ের জন্য, তোমার আর পুন্নির জন্য টাকা আমি দেব।
শাবিন সকালে তুরির সঙ্গে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে চলে এলো। জায়গাটা ভালো লাগল শাবিনের। গ্রামের ভেতর। চারদিকে ধানক্ষেত। চারদিকে ঘন সবুজ। জানালা দিয়ে হু হু করে বাতাস ঢোকে। বাইরে তাকালে মন ভালো হয়ে যায়।
শাবিনকে রেখে তুরি চলে যাচ্ছে। শাবিন জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। তার মন খারাপ হয়ে গেল। সে বিষণœ চোখে তাকিয়ে থাকল। তুরি মাথা নিচু করে হেঁটে হেঁটে চলে যাচ্ছে। সরু মাটির রাস্তা। শাবিন এতক্ষণ খেয়াল করেনি। এখন দেখল তুরি আজ শাড়ি পরেছে। তার পরনে সবুজ শাড়ি। তুরির হেঁটে যাওয়া দেখতে অপূর্ব লাগছে। শাবিনের চোখ ভরে পানি চলে এলো।

ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। এখানে প্রার্থনা ঘর আছে। সেখানে সবাই গোল হয়ে বসেছে। প্রার্থনা হচ্ছে। অনেক ধরনের প্রার্থনা হয়। যেমন ক্ষমাদানের প্রার্থনা, প্রশান্তির প্রার্থনা, খাবারের প্রার্থনা, আশির্বাদের প্রার্থনা।
এখন আশির্বাদের প্রার্থনা হচ্ছে। হে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা, তুমি সকল আসক্তিদের আশির্বাদ করো। যে যেখানে থাকুক না কেন সেই সমস্ত হতভাগ্য, যাদের আজ সত্যিকারভাবে সুস্থ হওয়া প্রয়োজন, তাদের প্রতি তুমি সহানুভূতিশীল হও, দয়া করো এবং এই সুন্দর পথ দ্বারা পরিচালিত করো, যেমন তুমি আমাকে ও আরও অনেককে সাহায্য করেছ। আশির্বাদ করো, যারা আজ সুস্থ এবং এই সুস্থতার পথ দ্বারা এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রভু, তুমি বিশেষভাবে সহানুভূতিশীল হও, দয়া করো যারা আজ সত্যিকারভাবে অসহায় এবং এখনো জানে না তারা তাদের মুক্তির পথ। আমিন।


শাবিনের পো উঠে গেছে। তার অস্থির লাগছে। হাতপা আড়ষ্ট হয়ে আসছে। নিজের হাত কামড়াচ্ছে। এক হাত দিয়ে আরেক হাত মোচড়াচ্ছে। নাক দিয়ে ঝরঝর করে সর্দি ঝরছে।
শাবিনের মনে হচ্ছে ধারালো কিছু পেলে সে নিজের হাত কেটে ফেলত। ধারালো কিছু পাওয়া গেল না। শাবিন ঘরের দেয়ালের সঙ্গে হাতপা আর শরীর ঘষতে থাকল।
একজন এসে তাকে তিনটা সিগারেট দিয়েছে। সিগারেটের নাম হলিউড। সস্তা দামের সিগারেট। খেতে জঘন্য। সকালে এই সিগারেট দেওয়া হয় তিনটা, বিকালে দুটো। দিনে মোট পাঁচটা। শুধু হলিউড না। সানমুন, ডারবি, পাইলট, শেখ নামের সিগারেটও দেওয়া হয়। সবগুলোই সস্তা দামের সিগারেট আর খেতে একইরকমের বিচ্ছিরি।
সিগারেট খেতে হয় বারান্দায় গিয়ে। সময় পাওয়া যায় ছয় মিনিট। সিগারেট রেখে দেওয়া যায় না। অন্য কাউকে দেওয়াও যায় না। অনেক নিয়ম এখানে। একা টয়লেটে যেতে দেয় না। সঙ্গে কেউ যায়।
লাল রঙের জ্যাকেট পরে একজন দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে। শাবিন জিগ্যেস করল, ওর কী হয়েছে?
সঙ্গে যে ছিল সে বলল, শাস্তি হচ্ছে। এখানে শাস্তি হয় কঠিন। তুমি নিয়ম না মানলে তোমাকে তিন ঘণ্টা দেয়ালের দিকে মুখ করে বসিয়ে রাখবে। খাবার বন্ধ করে দেবে। কেউ তোমার সঙ্গে কথা বলবে না। তুমি কারও সঙ্গে দেখা করতে পারবে না। এটা হচ্ছে কুল আপ। খারাপ কাজের তিরস্কার। আর ভালো কাছের পুরস্কার হচ্ছে পুল আপ।
শাবিনকে খাতা দেওয়া হয়েছে তাতে তার অনুভূতি লেখার জন্য। শাবিন লিখল,
এক দুই তিন
চলে গেল দিন
চার বাদে পাঁচ
ছয় আর সাত
চলে এলো রাত।

ভোর হয়। প্রার্থনা দিয়ে শুরু হয় দিন। তারপর লাইন ধরে ব্রাশে পেস্ট নিয়ে দাঁত মাজা, রুটি-ডাল দিয়ে নাস্তা করা। প্রশিক্ষক বললে নাস্তা শুরু করতে হয়। প্রশিক্ষক যতক্ষণ না বলবেন ততক্ষণ নাস্তা খাওয়া শুরু করা যাবে না।
রুটি বেশি হয়েছে। শাবিনের খেতে ইচ্ছে করছে না। সে বলল, আমি একটা রুটি কাটতে চাই।
এটাই নিয়ম এখানে। পাশেরজনের দরকার হলেও কেউ তাকে রুটি বা ভাত দিতে পারবে না। লিডারকে বলতে হবে। তখন যার প্রয়োজন তাকে লিডার সেই রুটি বা ভাত কিংবা তরকারি পৌঁছে দেবেন।


নিয়ম মেনে চলতে হয়। সবাইকে ‘ভাই’ আর ‘আপনি’ বলে কথা বলতে হয়। রাতের শিফটে গ্রুপ ভাগ করে পাহারার ব্যবস্থা থাকে। অনেকগুলো গ্রæপ আছে। কিচেন গ্রুপ, তরিতরকারি রেডি করা গ্রুপ, টয়লেট পরিষ্কার করা গ্রুপ। গ্রুপের কাজ প্রতি সপ্তাহে পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। কিচেন গ্রæপকে ভোরবেলা উঠে চুলা জ্বলিয়ে রুটি বানাতে হয়। ঘুরেফিরে সবাই সব কাজ করে।


বেলা এগারোটায় চা-মুড়ি। বারোটায় মাদক গ্রহণের কুফল নিয়ে ক্লাস। ভাত রান্নার চাল বেছে পরিষ্কার করা লাগে। সেই চালে ভাত রান্না হয়। খাওয়ার সময় প্রার্থনা করা লাগে। খাবারের প্রার্থনা। হে সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা, এই সুন্দর সকালে/দুপুরে/রাতে যে খাবার তুমি আমাদের দিয়েছ তার জন্য তোমাকে জানাই ধন্যবাদ...।
ভাত খেয়ে বিশ্রাম। ঘর পরিষ্কার করা, ব্যায়াম সেরে বিকাল তিনটায় গোসল। গোসলের সময় দুই মিনিট। বিকেলে গান-বাজনা করা যায়। রাতে টিভি দেখে প্রার্থনার পর ঘুম। সপ্তাহে একদিন ফুটবল খেলতে দেয়।

চলবে..

 

পর্ব ১৩: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১২: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১১: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১০: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৯: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৮ : অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৭ : অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৬: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৫: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৪: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ৩: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ২: অঘ্রানের অন্ধকারে

পর্ব ১: অঘ্রানের অন্ধকারে

Header Ad
Header Ad

ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা মুশফিকের

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অভিজ্ঞ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা ক্রিকেটার এখন শুধুমাত্র টেস্ট ফরম্যাটে খেলবেন। এর আগে, ২০২২ সালে তিনি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া অবসর ঘোষণায় মুশফিক বলেছেন, ‘আমি আজ ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসর ঘোষণা করছি। সবকিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন সীমিত হতে পারে, তবে একটি বিষয় নিশ্চিত, যখনই আমি আমার দেশের জন্য মাঠে নেমেছি, নিষ্ঠা ও সততার সাথে ১০০ ভাগের বেশি দিয়েছি।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বাংলাদেশ দলের জয়হীন বিদায়ের পর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনায় থাকা এই ক্রিকেটার এরপর লিখেছেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল, এবং আমি বুঝতে পেরেছি যে এটাই আমার নিয়তি।’

অবসরের সিদ্ধান্তের ঘোষণায় পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতও উদ্ধৃ্ত করেছেন মুশফিক, ‘ওয়া তুইজ্জু মান তাশা' ওয়া তুযিলু মান তাশা"– এবং তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা অপমানিত করেন।’

২০০৬ সালে প্রথম ওয়ানডে খেলা মুশফিক গত ১৯ বছরে খেলেছেন ২৭৪ ম্যাচ। ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৯ ফিফটিতে ৩৬.৪২ গড়ে করেছেন মোট ৭৭৯৫ রান, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলকে ওয়ানডেতে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি।

গত কিছু দিন রানের মধ্যে ছিলেন না মুশফিক। গত বছরের মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৭৩ রানের পরের ৬ ইনিংসে ফিফটি করতে পারেননি। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দুই ইনিংস ব্যাট করে আউট হয়েছিলেন ০ ও ২ রানে।

বাংলাদেশ দল চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলে দেশে আসার পর সোমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমূল আবেদীন জানিয়েছিল, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবনা জানতে চাওয়া হবে। এর মধ্যেই গতকাল রাত ১১ টার দিকে ওয়ানডেকে বিদায় বলে দিলেন মুশফিক।

Header Ad
Header Ad

অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র  

ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অবৈধ বাংলাদেশিদেরও ফেরত পাঠাবে দেশটি। এ-সংক্রান্ত একটি বার্তা ঢাকাকে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। বাংলাদেশও অবৈধ হয়ে পড়া নিজ নাগরিকদের ফেরত নেবে। তবে অসম্মানজনক উপায়ে যেন ফেরত পাঠানো না হয়, তা নিয়ে এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনকে ফেরত আনার বিষয়ে সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।

ঢাকা ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তাঁরা ধারণা দিয়েছেন, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি রাজ্য নিউইয়র্ক, নিউ জার্সি ও কানেটিকাটে অবৈধ বাংলাদেশিদের সংখ্যা বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, গত মাসে মার্কিন দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, অন্যান্য দেশের মতো অবৈধ হয়ে পড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে ঢাকার সহযোগিতা চেয়েছে ওয়াশিংটন। সরকারও ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সম্মানজনকভাবে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনতে চায় উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ চায় না অন্যান্য দেশের মতো হাতকড়া পরিয়ে বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে আসুক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন কিছু করবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস গত মাসে বাংলাদেশ সরকারকে অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অবহিত করেছে। এ ব্যাপারে সরকারকে একটি কূটনৈতিক পত্র পাঠানো হয়।

Header Ad
Header Ad

প্রকাশ্যে ধুমপান নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে নারীদের মশাল মিছিল  

ছবিঃ সংগৃহীত

প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মশাল মিছিল হয়েছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই নারী। পরে তাদের সংহতি জানিয়ে মিছিলে যোগদেন লালমাটিয়ার স্থানীয় বাসিন্দারাও।

বুধবার (০৫ মার্চ) রাতে লালমাটিয়ায় এই মশাল মিছিল করেন স্থানীয়রা। মোহাম্মদপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়রা ব্যানার নিয়ে লালমাটিয়া এলাকায় একটি মশাল মিছিল করেন। সেই মিছিলে আনুমানিক ২০০ জন অংশ নেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন নারী।

তাদের বিভিন্ন স্লোগানের মধ্যে ছিল— উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান করা যাবে না, যেখানে সেখানে ধূমপান করা চলবে না, লালমাটিয়া এলাকায় মাদকসেবী-মাদক বিক্রেতাদের স্থান নেই, বয়স্কদের সম্মান করতে হবে ইত্যাদি।

মিছিলকারীদের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যকে সমর্থন ও শাহবাগীদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের নিন্দা এবং প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধের দাবিতে’ মশাল মিছিল।

এসময় স্থানীয় নারীরা বলেন, লালমাটিয়াসহ পুরো ঢাকা শহর মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন বয়সের ছেলে-মেয়েরা প্রকাশ্যে মাদক গ্রহণ করছে। তাদের কারণে শিশুরাও বিপথগামী হচ্ছে। এমনকি এসবের প্রতিবাদ করলে তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের নামে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। আর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমেও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে।

মিছিলে অংশ নেওয়া আমেনা ইসলাম নামের এক নারী বলেন, আমাদের মা-বোনেরা কখনোই যেখানে-সেখানে বসে সিগারেট খেতে পারেন না। এটা আমাদের সংস্কৃতি না। এটা আমাদের দেশের মেয়েদের কাজও না। এটা যেমন আমাদের ধর্ম নিষেধ করেছে, আমাদের সমাজেও এটা বেমানান। যারাই এ কাজ করছে, তারা বিদেশি সংস্কৃতি আমদানির মাধ্যমে দেশের মা-বোনদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।

তিনি বলেন, প্রথম কথা হলো পাবলিক প্লেসে ধূমপান আমাদের দেশীয় আইনেই অন্যায় কাজ। কিন্তু কিছু ধর্মবিদ্বেষী নারী সেই অন্যায় কাজটি করেও আবার বিরোধিতা করায় আন্দোলন করছে। আমরা তাদের কাছে কি শিখব? আমাদের ছোটরা তাদের কাছে কি শিখবে? এটা কি কোনো ভালো শিক্ষা? আমরা ছোট থেকেই দেখেছি পুরুষদের কেউ ধূমপান করলেও তারা লুকিয়ে করেন। বড় কেউ দেখে ফেললে তাড়াতাড়ি সেটা ফেলে দেন। এটাই তো আমাদের সমাজের শিক্ষা।

আমেনা ইসলাম আরও বলেন, যেসব নারী প্রকাশ্যে ধূমপান করে আবার গর্ব করে বলে এবং প্রকাশ্যে ধূমপানের সুযোগের দাবিতে আন্দোলন করে তাদের নিশ্চয়ই ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে। তারা আমাদের সমাজকে কলুষিত করতে চায়। তারা বাংলাদেশে বিদেশি সংস্কৃতি-কালচার আমদানি করে নারীদের বাজারের পণ্য বানাতে চায়। আমরা তো চোখের সামনে আমাদের সমাজকে ধ্বংস হতে দিতে পারি না।

এছাড়া সামিনা ইয়াসমিন নামের আরেক নারী বলেন, ধূমপানের কারণে নানাবিধ ক্ষতি হচ্ছে। প্রকাশ্যে ধূমপান শিশুসহ অধূমপায়ীদের বেশি ক্ষতি করছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই সারা দেশে ধূমপান ও মাদক নিষিদ্ধ করা হোক।

তিনি আরও বলেন, আমি একজন নারী, নারী হিসেবে তাদের এসব কাজকর্মের জন্য আমার লজ্জা হচ্ছে। দুই-চারটা সমাজের কীটের কারণে আমরা নারী জাতির সম্মান ভূলুণ্ঠিত হতে দিতে পারি না। যারাই এসব আন্দোলন করছে, সরকারকে আহ্বান করব অবিলম্বে যেন তাদের আইনের আওতায় আনে। নয়ত স্থানীয় এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ মিলে তাদের আমরা প্রতিহত করব।

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক তরুণীর ধূমপান করাকে কেন্দ্র করে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। তার সঙ্গে তার বান্ধবীও ছিলেন।

মোহাম্মদপুরের আসাদগেটের কাছে আড়ং গলির পেছনে ওই তরুণী ধূমপান করছিলেন। এ নিয়ে হট্টগোলের খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা-পুলিশের একটি দল ওই তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

পরে ওই ঘটনা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যতটুকু জানছি ওনারা নাকি সিগারেট খাইতেছিল। ওই সময় কিছু লোক না কি নামাজ পড়তে যাইতেছিল। এ সময় ওনারা (লোকেরা) বাধা দেওয়ায় তাদের ওপর চা ছুড়ে মারছে। ’

‘তো আপনারা জানেন, ওপেন জায়গায় সিগারেট খাওয়া কিন্তু নারী-পুরুষ সবার জন্যই নিষেধ। এটা কিন্তু একটা অফেন্স। এ জন্য আমি অনুরোধ করব, ওপেন যেন কেউ সিগারেটটা না খায়। আর এখন যে রোজার সময় সবাইকে একটু সংযমী হতে হবে। ’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা মুশফিকের
অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র  
প্রকাশ্যে ধুমপান নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে নারীদের মশাল মিছিল  
সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন  
প্রোটিয়াদের হারিয়ে ফাইনালে ভারতের সঙ্গী নিউজিল্যান্ড  
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মাসুদ তালুকদারের পদ স্থগিত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: স্নাতক পাশ না করেও পেল প্রথম শ্রেণীর চাকরী  
সরকারি যানবাহনের চালকরা ট্রাফিক আইন অমান্য করছে : ডিএমপি  
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্ত্রী ও শ্যালিকাকে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বামীর স্বীকারোক্তি
টাঙ্গাইলে পাহাড়ের লাল মাটি কাটার অভিযোগে লাখ টাকা জরিমানা  
জাতিসংঘ মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নয়, তবে বিচার হতে হবে : ভলকার তুর্ক  
রমজানে চুয়াডাঙ্গায় নিয়মিত বাজার মনিটরিং প্রয়োজন: ক্যাব
পবিত্র রমজানে কুবিতে মিলছে ১০ টাকায় ইফতার
নিত্যপণ্যের দাম আগের বছরের চেয়ে বাড়েনি: অর্থ উপদেষ্টা  
জোটে যাবে না এনসিপি, ৩০০ আসনে দেবে প্রার্থী
ফের রিমান্ডে সাবেক বিচারপতি মানিক
শ্রম আইন সংস্কার করে বিশ্বমানের করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
শিগগিরই গঠন করা হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির যুব উইং
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুখবর দিলেন বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা
মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি, রাবির ছাত্রলীগ নেতা আটক