শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৯

বিষাদ বসুধা

মোহিনী সারারাত ঘুমাতে পারেননি। একটা দুঃস্বপ্ন তাকে সারারাত তাড়া করেছে। তিনি ঘুমের ঘোরে দেখেন, আরেফিন তার কাছে এসেছে ক্ষমা চাইতে। তিনি চিরদিনের জন্য মোহিনীকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাবেন। আর কোনোদিন মোহিনীর সঙ্গে দেখা হবে না। কথা হবে না। এটাই তাদের শেষ দেখা। শেষ কথা।

আরেফিনকে হঠাৎ নিজের কক্ষে দেখে ঘুমের ঘোরেই আতকে ওঠেন মোহিনী। এসব তিনি কি দেখছেন! আরেফিন দেশে নেই। দেশে আসার কোনো সুযোগও নেই। কারণ, বিমান চলাচল বন্ধ। বিমান চালু না হলে উহান থেকে তার খুব সহসা দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই। অথচ আরেফিন তার কক্ষে! ঘুমের ঘোরেই তিনি আরেফিনকে ডাকেন। আরেফিন! আরেফিন!

আরেফিন আবেগপ্রবণ কণ্ঠে মোহিনীকে বলেন, আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। বিয়ের পর এতোটুকু সুখও দেইনি। সেই মর্মবেদনায় আমি কেবল পুড়ছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও মোহিনী। তা নাহলে আমার ভেতরের মর্মযাতনা কমবে না। প্লিজ মোহিনী!
আরেফিন আর কথা বলতে পারেননি। কথা বলার এক পর্যায়ে হো হো করে কেঁদে ওঠেন তিনি। তখনই মোহিনীর ঘুম ভেঙে যায়। সেই থেকে আর ঘুমাতে পারেননি। ঘুরেফিরে ওই একটি স্বপ্নই তাকে তাড়া করে ফেরে। দুই চোখের পাতা বন্ধ হলেই যেন আরেফিন তার সামনে এসে দাঁড়ায়। ভয়ঙ্কর একটা অবস্থার মধ্যদিয়ে তার রাত কাটে।

সকালের দিকে রাজ্যের ঘুম নেমে আসে মোহিনীর দুই চোখে। ঠিক সেই সময়ই মোহিনীর মোবাইল বেজে ওঠে। ফোনের রিংটোনটা বড়ই বিরক্তিকর লাগছিল তার কাছে। হাতের কাছে পেলে হয়তো ছুড়ে ফেলতো। আবার এও ভাবে, এই অসময়ে কে ফোন করল? না। ফোন ধরতে মন চাইছে না। কিন্তু বেয়াড়া ফোনটা বেজেই চলছে। ফোন ধরতে হলে তাকে বিছানা থেকে উঠতে হবে। শরীরটাও যেন নেতিয়ে পড়েছে। মোটেই সায় দিচ্ছে না।

মোহিনী ভীষণ বিরক্ত। তিনি মনে মনে ভাবেন, মানুষ এতো বেকুব কেন? সময় বুঝে ফোন দেবে না! তা ছাড়া দেখছে যে আমি ফোনটা ধরছি না। তারপরও বার বার কেন ফোন করতে হবে!

মোহিনী বিরক্ত নিয়েই বিছানা থেকে ওঠেন। টেবিলের ওপরে রাখা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে খাটের ওপর বসেন। কিছুতেই তিনি বসে থাকতে পারছিলেন না। খাটের পাশে বালিশ টেনে তাতে মাথা ঠেকান। তারপর ফোন কানে তোলেন। হ্যালো বলতেই টেলিফোনের অপর প্রান্ত থেকে পুরুষ কণ্ঠ ভেসে আসে। আমি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জুনায়েদ বলছি। অসময়ে ফোন করার জন্য দুঃখিত। আপনি কি মিসেস আরেফিন?
মোহিনী খুবই নিচু স্বরে জবাব দেন। জি।
আপনার হাজবেন্ড; মানে মি. আরেফিন কি চীনের উহানে গিয়েছিলেন?
এবারও মোহিনী নিচু স্বরে বলেন, জি।
আমি আবারও দুঃখিত। এই অসময়ে আপনাকে একটা দুঃসংবাদ দিতে হচ্ছে।
জি! বলেই লাফিয়ে ওঠেন মোহিনী। বিস্ময়ভরা কণ্ঠে তিনি বললেন, কি বললেন? দুঃসংবাদ?
হ্যাঁ। আরেফিন সাহেব মারা গেছেন। আমরা তার মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করছি। খবরটা জানানোর জন্যই আপনাকে ফোন দিয়েছি। স্যরি। অসময়ে ফোন দিয়েছি বলে কিছু মনে করবেন না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার কথা পুরোটা শুনতে পাননি মোহিনী। শুধু আরেফিনের মারা যাওয়ার খবরটুকু শুনেছেন। তারপর মোহিনীর হাত থেকে মোবাইলটা নিচে পড়ে যায়। মোহিনীর মাথাটা ঘুরে যায়। চারদিকে কেবল অন্ধকার দেখে। এ কী হোলো! কেমন করে হোলো! না না! এ হতে পারে না!
আরেফিন মারা গেছে! এ কথা বিশ্বাসই করতে পারছেন না মোহিনী। তিনি আরেফিনের কথা ভাবেন। একেবারে গভীর ভাবনায় তলিয়ে যান। মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন দানা বাঁধে। এজন্যই কি বার বার তিনি আরেফিনকে স্বপ্নে দেখেছেন? তার মানে আরেফিনের মৃত্যুর খবর তার কাছে আগেই পৌঁছেছে! আরেফিনের প্রেতাত্মা মোহিনীর সঙ্গে শেষবারের মতো দেখা করে গেছে!
গভীর বেদনার সঙ্গে মোহিনী বলেন, হায় খোদা! এ তুমি কী করলে!

মোহিনীর সমস্ত সত্তাজুড়ে আরেফিন। তাদের ভালোবাসার মুহূর্তগুলো মনের আয়নায় ভেসে উঠছে। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নানা স্মৃতি তাকে আচ্ছন্ন করছে। কী গভীরভাবে মোহিনীকে ভালোবাসতেন আরেফিন। নেহায়েত পাগলের মতো ছিল সেই ভালোবাসা। মোহিনীকে ছাড়া তিনি কিছুই বুঝতেন না। মোহিনীই ছিল তার ধ্যান-জ্ঞান। আরেফিনের সমস্ত ভালোলাগা অনুভূতিগুলো মোহিনীকে ঘিরে আছে। আর কিছুই ভাবতে পারেন না মোহিনী। আরেফিন আরেফিন বলে তিনি শুধু বিলাপ করেন। আর মনে মনে বলেন, এভাবে তুমি চলে যেতে পারো না আরেফিন! এভাবে চলে যাওয়া যায় না! এতো বড় ফাঁকি তুমি কেন দিলে? যাওয়ার সময়ই তুমি বলে দিতে পারতে, তুমি জীবনের তরে চলে গেছ। আর কখনো ফিরবে না! আমি যে তোমার পথ চেয়ে বসে ছিলাম আরেফিন।
দুঃখ কষ্ট বেদনায় মোহিনীর বুক ফেটে যায়। তিনি তার জন্য চিৎকার দিয়ে কাঁদতে চান। কিন্তু কিছুতেই কাঁদতে পারেন না। কান্না আসছে না। কষ্টের বাষ্প জমছে তার বুকে। ধীরে ধীরে সেই কষ্টগুলো ভারী পাথরের মতো বুকের ওপর চেপে বসে। কথায় বলে না, অল্প সুখে কাতর অধিক শোকে পাথর। অধিক শোকে মোহিনী পাথর হয়ে গেছেন। কাঁদতে পারলে হয়তো কিছুটা হালকা হতে পারতেন তিনি।

মোহিনী এও ভাবেন, কেন সেদিন আরেফিনের ওপর রাগ করে বাসা থেকে চলে এসেছিলাম? এতোটা রাগ না করলেও পারতাম। ও অনেকবার উহান থেকে আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে। সেদিন আমি ফোন ধরিনি। কেন ধরিনি? কি বলতে চেয়েছিল ও? মৃত্যুর আগ মুহূর্তে নিশ্চয়ই ও আমার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল! আহারে! কী কষ্টই না পেয়েছে সে। হে বিধাতা, তুমি আমায় ক্ষমা করো। আমি ভুল করেছি। অন্যায় করেছি। ক্ষমা করো, ক্ষমা করো।

আরেফিনের পরিবারের কথাও ভাবেন মোহিনী। দরিদ্র পরিবারটি আরেফিনের টাকায় চলতো। এখন কি হবে? কিভাবে চলবে? আমি কি টাকা পাঠাবো? এই পরিবারটির সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় ছিল না। শুধু আরেফিনকে দেখে বিয়ে করেছিলাম। তাও আবার কোর্টে গিয়ে। কারো সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতেরও প্রয়োজন ছিল না। আরেফিনও কোনোদিন বলেনি। চাপ দেয়নি। এখন আমি টাকা পাঠালে তারা বিষয়টিকে কিভাবে নেবে?

হঠাৎ আপামনি আপামনি করে রহিমাবিবি ছুটে আসে মোহিনীর কাছে। মোহিনীকে শুয়ে থাকতে দেখে সে বিস্ময়ের সঙ্গে বলে, আপামনি, আপনার কি হইছে? এখনো শুইয়া আছেন কেন?
মোহিনী কোনো কথা বলেন না। তার কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। সে ওকে কি বলবে? ও কি বুঝবে? ওর কাছে বললে কি মোহিনীর কষ্ট দূর হবে? কিন্তু মোহিনী জানেন, রহিমাবিবি নাছোরবান্দা। না জেনে সে যাবে না। তাই তিনি অনিচ্ছা সত্ত্বেও বলেন, আমার মন ভালো নেই। আমার কথা বলতে ইচ্ছা করছে না। তুই এখন যা।
রহিমাবিবি বিস্ময়ের সঙ্গে বলে, আপামনি! আপনার মনও খারাপ হয়!

রহিমাবিবির কথাটা মোহিনীর কানে লাগে। রহিমার মুখ থেকে এই কথা শুনবেন ভাবতেও পারেননি তিনি। বিস্ময়ের সঙ্গে মোহিনী বললেন, কেন আমার মন খারাপ হতে পারে না?
আপনার মন খারাপ হইলে দুনিয়ার সব মানুষের মন খারাপ হবে। রহিমাবিবি বলল।
মোহিনী রহিমাবিবির দিকে বিস্ময়ের দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন। তিনি নিজের শরীরে চিমটি কেটে বোঝার চেষ্টা করছেন, তিনি নিজে ঠিক আছেন কী না। তার মনে প্রশ্ন জাগে, ও কি আসলেই রহিমা; নাকি অন্য কেউ! এমন পরিণত কথা বলার মেয়ে কি রহিমা? বিস্ময়কর ব্যাপার তো!

হন্তদন্ত হয়ে মোহিনীর কক্ষে ঢুকলেন আনোয়ারা বেগম। উদ্বেগের সঙ্গে বললেন, কি রে মোহিনী! কি হয়েছে তোর? একদম ঘর থেকেই বের হচ্ছিস না! কোনো সমস্যা হয়েছে?
উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন মোহিনী। তিনি কোনো কথা বলেন না। আসলে তিনি কথা বলতে পারেন না। আনোয়ারা বেগম মেয়ের পাশে বসে তাকে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেন। গভীর মমতায় মেয়েকে আদর করতে করতে বলেন, তুই আমাকে বল তো! কি হয়েছে মা?

আবেগের দৃষ্টিতে আনোয়ারা বেগমের দিকে তাকান মোহিনী। তবু তিনি তার কষ্টের কথা বলেন না। এই মুহূর্তে তিনি যদি কাঁদতে পারতেন তাহলে খুব ভালো হতো। তিনি নিজে কিছুটা হালকা হতে পারতেন। কিন্তু চেষ্টা করেও তিনি কাঁদতে পারছেন না। কান্নাও যে কঠিন সেটা আজ তিনি বুঝতে পারছেন। ইচ্ছা করলেই কাঁদা যায় না।

আনোয়ারা বেগম মেয়ের চিন্তায় অস্থির। হঠাৎ মেয়েটা এমন উদাসীন হয়ে গেল কেন তা নিয়ে তার দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। কথাটা না জানা পর্যন্ত তিনি স্বস্তি পাচ্ছেন না। এক পর্যায়ে মোহিনীই মুখ খুললেন। তিনি ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বললেন, মা আরেফিন আর নেই!

আনোয়ারা বেগম এসব কী শুনছেন! তিনি নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না। তিনি বিস্ময়ভরা কণ্ঠে বললেন, আরেফিন আর নেই মানে কী? কি হয়েছে আরেফিনের?
আরেফিন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে!
মোহিনীকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে ধরে থাকেন আনোয়ারা বেগম। এ ছাড়া মেয়েকে সান্ত্বনা দেওয়ার আর কিছুই খুঁজে পেলেন না।

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া

নায়িকা পরীমনি ও গায়ক শেখ সাদী। ছবি: সংগৃীত

ঢালিউডের আলোচিত নায়িকা পরীমনি ও তরুণ গায়ক শেখ সাদীর প্রেমের গুঞ্জন অনেকদিন ধরেই ছিল ‘ওপেন সিক্রেট’। সোশ্যাল মিডিয়ায় একসঙ্গে সময় কাটানোর ছবি, একে অন্যের পোস্টে ভালোবাসার মন্তব্য, এমনকি সাদীর মায়ের বানানো পিঠার ভিডিও শেয়ার—সবই তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত দিত।

তবে হঠাৎ করেই যেন সেই সম্পর্কের আবহে ছন্দপতন। সম্প্রতি ফেসবুকে পরীমনি ও সাদীর রহস্যময় পোস্ট ঘিরে নেটিজেনদের মনে প্রশ্ন—তবে কি ভেঙে গেল সম্পর্ক?

পরীমনি তার ফেসবুক ওয়ালে কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে লিখেছেন: ‘ব্ল্যাকমেলার’।

অন্যদিকে সাদী পোস্ট করেছেন শুধু তিনটি ডট (...), যা অনেকেই সম্পর্ক ভাঙনের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন।

নেটদুনিয়ায় প্রতিক্রিয়াও এসেছে ঝড়ের মতো। একজন মন্তব্য করেছেন, “শেষ পর্যন্ত পরীও ছ্যাঁকা দিয়ে দিল।” আরেকজন লিখেছেন, “এত তাড়াতাড়ি এমন পোস্ট আশা করিনি, সাদী ভাই।”

দুজনের কেউই এখনও সম্পর্ক ভাঙনের ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। তবে পরীর পোস্টে কমেন্ট অপশন বন্ধ থাকলেও, তার ভক্তরা পোস্টটি শেয়ার করে সরাসরি সাদীকে ট্যাগ করছেন।

অনেকে বলছেন, “নিশ্চয়ই সাদী কিছু করেছেন, নইলে এমন পোস্ট দিতেন না পরীমনি।”

চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর গায়ক শেখ সাদীর সঙ্গে পরীমনির ঘনিষ্ঠতা ছিল অনেকটাই প্রকাশ্য। একসঙ্গে ঘোরাঘুরি, পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং এমনকি পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার সময় সাদীর জামিনদার হওয়া—সব মিলিয়ে দুজনের সম্পর্ককে ভরসাময় ও গভীর বলেই মনে করা হতো।

এক সাক্ষাৎকারে পরীমনি বলেছিলেন, “বিপদের সময় যে পাশে থাকেন, সে জীবনের জন্য আশীর্বাদ।”

সাদীও বলেছিলেন, “আমি তার মঙ্গল কামনা করি সবসময়।”

ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, পরীমনির বাসায় কিছুদিন কাজ করা এক গৃহকর্মীর অপপ্রচারে তৈরি হয়েছে ভুল বোঝাবুঝি। ওই কর্মী পরীমনির বাসা থেকে বের হওয়ার পর নানাভাবে তাদের সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মুখরোচক কথা ছড়িয়েছেন।

তবে পরীমনির ঘনিষ্ঠজনরা এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাদের মতে, এসব অপপ্রচারই মূলত সম্পর্কের মাঝে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে।

পরীমনি বর্তমানে তার সন্তান ও সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে সাদীও নিজের সংগীতজগতে সক্রিয় আছেন।

Header Ad
Header Ad

বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল

বগুড়া বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ১১ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, ডাম্বল এবং এপ্রোন সারফেসের উন্নয়ন কাজ চলছে পুরোদমে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী জুলাই মাসেই বগুড়া থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হবে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ—বেবিচক। শুধু বগুড়াই নয়, দেশের আরও সাতটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দর সচল করতে কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, শমসেরনগর (মৌলভীবাজার) এবং রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর।

বেবিচক সূত্র বলছে, এসব পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালু হলে সড়ক ও রেলপথের ওপর চাপ কমবে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ আরও সহজ হবে। ফলে শিল্প, ব্যবসা ও পর্যটনে নতুন গতি সঞ্চার হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, “বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। তবে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এসব বিমানবন্দর পুরোপুরি সচল করা যাবে।”

তবে এসব বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহনের মতো ফ্লাইট পরিচালনায় সবচেয়ে বড় বাধা রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও অবকাঠামো। অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি যাত্রীবাহী বিমানের ওঠানামার জন্য ৬ থেকে ৮ হাজার ফুট রানওয়ে দরকার, অথচ পরিত্যক্ত এই বিমানবন্দরগুলোতে রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফুট।

বেবিচক জানিয়েছে, ইতোমধ্যে হুদাবাসি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্মের সহায়তায় বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে সংস্কার কাজ আগে শেষ হবে, সেখানে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে আগে।

উল্লেখ্য, দেশে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়েছিল ২৮টি বিমানবন্দর। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারে। অভ্যন্তরীণ রুটে সচল রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর।

নতুন করে চালু হতে যাওয়া সাতটি বিমানবন্দর যুক্ত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগে বড় বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে ঢাকা বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কারের কারণ প্রকাশ করেছেন ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট নাসির মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ক্লাবের রিভারভিউ লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্লাব দখল করে রেখেছিলেন এবং আর্থিক অনিয়মে জড়িত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাসির মাহমুদ বলেন, “বেনজীর আহমেদ কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, জোর করে ক্লাবের সভাপতি পদে বসেছিলেন। সামাজিক সম্মান পেতেই তিনি এই পদে ছিলেন, তবে ক্লাবের নিয়ম-কানুন তিনি মানেননি। এমনকি আমি নিজে তিন বছর ক্লাবে আসার সাহস পাইনি, কারণ তিনি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে আমাকে ক্লাবে প্রবেশ করতে দেননি।”

তিনি জানান, ক্লাবের প্রায় ৩২ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে পুনরায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম হুদাবাসিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনিয়মের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

নাসির মাহমুদ অভিযোগ করেন, বেনজীরের ভয়ে তিনি ক্লাবে যাওয়া বন্ধ করে দেন, তবে আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। “তিনবার আমি তাঁকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। পরে তিনি বুঝতে পারেন আমি আইনগতভাবে সঠিক পথে আছি এবং তখনই আলোচনায় বসতে চান।”

তিনি আরও বলেন, “ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হয়ে বেনজীর কেউকেটা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো নিয়ম মানেননি, কোনো রিপোর্ট সাবমিট করেননি। ক্লাবের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল।”

ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনকেও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই বহিষ্কার কার্যকর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথাও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত পরীমনি ঘটনার প্রসঙ্গও আসে। এ নিয়ে নাসির মাহমুদ বলেন, “পরীমনি এই ক্লাবের সদস্য ছিলেন না, তিনি অতিথি হয়ে এসেছিলেন। অনুমতি ছাড়াই ক্লাবে প্রবেশ করেছিলেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

নাসির মাহমুদ দাবি করেন, বেনজীরের প্রভাব ও চাপের কারণে তাঁরা একসময় প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে নির্বাচনের দাবিতে বারবার নোটিশ দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৪ জুন নির্বাচনের তারিখ দিতে বাধ্য হন বেনজীর।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নকিব সরকার অপু, মো. জেসমুল হুদা মেহেদী অপু, আসমা আজিজ, এ কে এম আইয়াজ আলী (খোকন), আলীম আল কাজী (তুহিন), খালেদা আক্তার জাহান, মির্জা অনিক ইসলাম প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া
বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪