শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১৫

বিষাদ বসুধা

আরেফিন জ্বরে কাতর। তিনি থরথর করে কাঁপছেন। তিনি নিজের কপালে হাত দিয়ে দেখেছেন, শরীরে জ্বরের মাত্রা একশ’ তিন চারের কম হবে না। জ্বরটা মাপতে পারলে ভালো হত। কিন্তু তার কোনো উপায় নেই। শেষ রাতের দিকে কাঁপিয়ে জ্বর আসে তার। তখনই তিনি বিছানা থেকে উঠে দুটি প্যারাসিটামল খেয়েছেন। কিন্তু তাতে পুরোপুরি জ্বর সারেনি। তাপমাত্রা কিছুটা কমেছিল। এখন আবার বেড়েছে।

জ্বরের কাঁপুনিতে তার ঘুম ভেঙে যায়। জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা শুরু হয়েছে। মাথাটা মনে হচ্ছে ছিড়ে যাচ্ছে। বিছানা থেকে মাথা তুলতে পারছেন না। মাথায় পানি দিতে পারলে হয়ত জ্বরের মাত্রাটা কমতো। সেজন্য তিনি কয়েকবার চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু মাথার যন্ত্রণা এমন বেড়েছে যে, বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। তাছাড়া শরীরের কাঁপুনিও অনেক বেড়েছে। শ্বাস নিতেও কষ্ট হয় তার।

আরেফিন লেপ গায়ে দিয়ে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। তার মাথায় নানা রকম চিন্তা ঢুকেছে। তিনি মনে মনে ভাবেন, এখন জ্বর মানে করোনা। করোনা হলে আপনজনরাই কাছে আসে না। আর হোটেলের লোকজন তো আসবেই না। হোটেল কক্ষেই মরে পড়ে থাকবো! হায় হায়! এ রকম মৃত্যু খোদা-তায়ালা আমার কপালে লিখল! না না! এ রকম মৃত্যু আমি চাই না!

আরেফিন মাকে ডাকছেন। বাবাকে ডাকছেন। মোহিনীর কথাও বার বার মনে পড়ছে। সবাইকে ছেড়ে তিনি চলে যাবেন! পৃথিবী থেকে শেষ বিদায়ের দিনেও প্রিয়জনরা তার মুখ দেখতে পারবেন না! এটা কিছুতেই মানতে পারেন না আরেফিন। বিছানা থেকে উঠার চেষ্টা করেন আরেফিন। উঠতে গিয়েও উঠতে পারেননি তিনি। তার শরীরে এক রতি বলও নেই। তার কাছে মনে হচ্ছে তিনি শূন্যে ভাসছেন। তিনি চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। কিন্তু সেই চিৎকারের শব্দ যেভাবে বের হচ্ছে তা খুবই আজব ধরনের। আর তার শব্দ কক্ষের বাইরে কেউ শুনতেও পাবে না। কাউকে ডাকলে হয়ত আসত। তার ভালোমন্দ খোঁজখবর নিত। জ্বরের কথা জানার পর হয়ত চলে যেত। কিন্তু হোটেলের লোকজনকে তো জানতে হবে, আরেফিন গভীর সংকটে পড়েছেন!

আরেফিনের প্রচণ্ড পানির পিপাসা লেগেছে। তার দুই ঠোঁট শুকিয়ে যাচ্ছে। গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে, মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তটা সে দেখতে পাচ্ছে। তার মানে মানুষের জীবনের সবচেয়ে কঠিন মৃত্যুর সময়টা! আর সেই সময়ই কি আরেফিনের সামনে সমাগত! আরেফিনের কাছে তাই মনে হচ্ছে। মৃত্যু চিন্তা তাকে কাতর করে তুলেছে। তার ধারণা, মৃত্যু আসবে বলেই তাকে করোনায় ধরেছে। মৃত্যুদূতের তো একটা অজুহাত লাগবে! তা না হলে জান-কবজ করবে কি করে? এখন তার মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। বাঁচার কোনো আশা নেই।

বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন আরেফিন। তিনি যে একদিক থেকে আরেকদিকে ঘুরবেন তাও পারছেন না। শরীর মোটেই সায় দিচ্ছে না। তার মানে কি আজরাইল তার গায়ের উপর চেপে বসেছে? মাথাটা মনে হচ্ছে কেউ লোহার শিক দিয়ে বেঁধে রেখেছে। মোটেই নাড়াতে পারছে না। এটাই কি তার শেষ মুহূর্ত! সে কি মুখে একটু পানিও দিতে পারবে না! বিছানার পাশের টেবিলে পানির বোতল থাকার কথা। পাশ ফিরে না দেখতে পারলে তো বুঝতে পারবে না! অনেক চেষ্টার পর তিনি তার মাথাটা ডানদিকে ঘুরিয়েছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য এদিকে কোনো পানির বোতাল নেই। কথায় বলে, অভাগা যেদিকে তাকায় সাগর শুকিয়ে যায়। আরেফিনের অবস্থা সে রকমই হয়েছে। এক ফোটা পানির জন্য তার কাতর অবস্থা। অথচ পানি মুখে দেওয়ার মতো অবস্থায় তিনি নেই।

এবার আরেফিন অন্যদিকে মাথা ঘোরাবে বলে মনস্থির করেছেন। কিন্তু এখন তার শরীরের যে অবস্থা; তাতে মনে হচ্ছে, তার ইচ্ছায় এখন আর শরীর চলে না। শরীরের ইচ্ছায় তাকে চলতে হয়। শরীর সায় দিলে সে চলে। সায় না দিলে তিনি মরার মতো পড়ে থাকে। এখন তিনি মাথা ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। কতক্ষণে পারবেন তা বুঝতে পারছেন না। গলা লোহার মতো শক্ত হয়ে আছে।

আরেফিন মনে মনে ভাবেন, আজরাইলের কি কোনো মায়াদয়া বলতে কিছু নেই! এতো কষ্ট দেয় মানুষকে! অবশ্য মায়াদয়া থাকলে তো জানকবজই করতে পারত না। তাকে দোষ দিয়ে লাভ কি। সৃষ্টিকর্তা তাকে ওভাবেই তৈরি করেছে। সে শুধু আল্লাহর নির্দেশ পালন করবে। কখন তাতে তুলে নিতে হবে তা নির্ধারিত। তাকে রোধ করার সাধ্য কারো নেই। বিজ্ঞানীরা এতো এতো অস্বাভাবিক এবং বিস্ময়কর জিনিস আবিষ্কার করছে। এক গ্রহ থেকে আরেক গ্রহে যাচ্ছে। অন্য গ্রহে বসাবাসের চিন্তা করছে। অথচ তারা মানুষের মৃত্যু রোধ করতে পারছে না। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি ভাইরাস; যা চোখে দেখা যায় না। সেই ভাইরাসের ভয়ে সারাবিশ্বের মানুষ তটস্থ। সে ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে। সন্দেহ করছে। সামাজিকতা, পারিবারিক আচার-অনুষ্ঠান সব বন্ধ হয়ে গেছে। হোটেল রেস্তোরাঁগুলো খাঁ খাঁ করছে। কোথাও কোনো আড্ডা নেই। গল্প নেই। আলোচনা সমালোচনা নেই। মানুষে মানুষে মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ। কী এক আজব সময় পার করছি আমরা!

আরেফিন এক দুঃসহ যন্ত্রণার সময় কাটাচ্ছেন। এ যে মৃত্যু যন্ত্রণার চেয়েও কঠিন। মৃত্যু চিন্তা যখন মাথায় ঢোকে তখন সব মানুষই হয়ত এমন যন্ত্রণাদায়ক সময় পার করে। তার মাথায় নেতিবাচক চিন্তাগুলো ঢুকতে থাকে। সেগুলো তাকে সারাক্ষণ খোঁচাতে থাকে। তার অঙ্গপ্রতঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করে।

আরেফিন অনেক চেষ্টার পর অন্যপাশে ফিরেছেন। তিনি খাটের পাশের ছোট্ট টেবিলে একটি পানির বোতল দেখেছেন। বোতলটা হাতের নাগালের বাইরে। দুইতিন হাত সামনে না আগালে তিনি বোতলটা হাতে পাবেন না। তিনি আস্তে আস্তে সামনের দিকে আগানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তার শরীর ব্যথায় টুকরো হয়ে আছে। হাত-পা নাড়াতে পারছেন না। এক রাতের জ্বরের শরীর এতো দুর্বল হয় কী করে! সে ভাবনাও তার মাথায় ঘুরপাক খায়। তিনি কি সত্যিই মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তটা পার করছেন!

টানা দুদিন মৃত্যুদূতের সঙ্গে যুদ্ধ করেন আরেফিন। তার প্রতিটি মুহূর্ত কাটে আশা আর দূরাশার দোলাচলে; বাঁচা আর মরার সঙ্গে যুদ্ধ করে। সে এক কঠিন যুদ্ধ। এক এক করে জীবনের সব আলো যখন নিভে যায় তখন টানেলের এক টুকরো আলোও তার মনে বাঁচার আশা জাগায়। আরেফিন মনে মনে ভাবেন, পৃথিবীর মায়া যেভাবে আমাকে টানছে তাতে হয়ত মরতে মরতে বেঁচে যাব আমি! ফিরে যাব আমার ভালোবাসার কাছে; আমার প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে। ফিরে যাব মা বাবার কাছে। যারা আমাকে এই সুন্দর পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলেন। তা না হলে হয়ত দেখাই হত। কিংবা দেখা হত অন্যভাবে। অন্য কোনো পরিবেশে। অন্য কোনো পরিবারে। তাতে পৃথিবীকে উপলব্ধি করার মতো কোনো অনুসঙ্গ খুঁজে পেতাম না। এ যাত্রায় বেঁচে গেলে আমি আমার প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যাব। তারা নিশ্চয়ই অধীর আগ্রহে আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমাকে যেতেই হবে। তা নাহলে যে সবার স্বপ্নভঙ্গ হবে। আমার নীরব প্রস্থানের মধ্যদিয়ে সবার স্বপ্ন অঙ্কুরে বিনাশ হবে তা নিশ্চয়ই প্রকৃতি কিংবা বিধাতা কেউই চাইবেন না। যে পৃথিবীকে আমি এতো ভালোবাসি; সেই পৃথিবী আমাকে এভাবে বিদায় দেবে! না না; তা কিছুতেই হতে পারে না।

আরেফিন ঘোরের মধ্যেই তার মা বাবার সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কাছে ক্ষমা চান। ভুলত্রুটির ক্ষমা। তাদের জন্য কিছু না করতে পারার ক্ষমা। তাদের কারণে অকারণে কষ্ট দেওয়ার ক্ষমা। তার প্রিয়তমা স্ত্রী মোহিনীর কাছেও তিনি ক্ষমা চান। তিনি বলেন, এই জীবনে তো তোমার সঙ্গে আমার সময়টা ভালো গেল না! পরজনমে যেন তোমায় পাই। তুমি কথা দাও। পরজনমে তুমি আমারই থাকবে। আমি ছাড়া তোমাকে এতোবেশি ভালোবাসা কেউ দেবে না; কেউ না। তুমি দেখ। আমি যে কত ভালোবেসেছি তোমাকে; তা তুমি টের পাবে। নিশ্চয়ই টের পাবে। আমার শারীরিক উপস্থিতি হয়ত তখন থাকবে না। কিন্তু তোমার জীবনের পরতে পরতে আমার উপস্থিতি টের পাবে।
আরেফিন হয়ত শেষ নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তেই বললেন, বিদায় পৃথিবী; বিদায়!

চলবে…

আগের পর্বগুলো পড়ুন>>>

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১২

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১১

বিষাদ বসুধা: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

আরএ/

Header Ad
Header Ad

ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া

নায়িকা পরীমনি ও গায়ক শেখ সাদী। ছবি: সংগৃীত

ঢালিউডের আলোচিত নায়িকা পরীমনি ও তরুণ গায়ক শেখ সাদীর প্রেমের গুঞ্জন অনেকদিন ধরেই ছিল ‘ওপেন সিক্রেট’। সোশ্যাল মিডিয়ায় একসঙ্গে সময় কাটানোর ছবি, একে অন্যের পোস্টে ভালোবাসার মন্তব্য, এমনকি সাদীর মায়ের বানানো পিঠার ভিডিও শেয়ার—সবই তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত দিত।

তবে হঠাৎ করেই যেন সেই সম্পর্কের আবহে ছন্দপতন। সম্প্রতি ফেসবুকে পরীমনি ও সাদীর রহস্যময় পোস্ট ঘিরে নেটিজেনদের মনে প্রশ্ন—তবে কি ভেঙে গেল সম্পর্ক?

পরীমনি তার ফেসবুক ওয়ালে কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে লিখেছেন: ‘ব্ল্যাকমেলার’।

অন্যদিকে সাদী পোস্ট করেছেন শুধু তিনটি ডট (...), যা অনেকেই সম্পর্ক ভাঙনের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন।

নেটদুনিয়ায় প্রতিক্রিয়াও এসেছে ঝড়ের মতো। একজন মন্তব্য করেছেন, “শেষ পর্যন্ত পরীও ছ্যাঁকা দিয়ে দিল।” আরেকজন লিখেছেন, “এত তাড়াতাড়ি এমন পোস্ট আশা করিনি, সাদী ভাই।”

দুজনের কেউই এখনও সম্পর্ক ভাঙনের ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। তবে পরীর পোস্টে কমেন্ট অপশন বন্ধ থাকলেও, তার ভক্তরা পোস্টটি শেয়ার করে সরাসরি সাদীকে ট্যাগ করছেন।

অনেকে বলছেন, “নিশ্চয়ই সাদী কিছু করেছেন, নইলে এমন পোস্ট দিতেন না পরীমনি।”

চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর গায়ক শেখ সাদীর সঙ্গে পরীমনির ঘনিষ্ঠতা ছিল অনেকটাই প্রকাশ্য। একসঙ্গে ঘোরাঘুরি, পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং এমনকি পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার সময় সাদীর জামিনদার হওয়া—সব মিলিয়ে দুজনের সম্পর্ককে ভরসাময় ও গভীর বলেই মনে করা হতো।

এক সাক্ষাৎকারে পরীমনি বলেছিলেন, “বিপদের সময় যে পাশে থাকেন, সে জীবনের জন্য আশীর্বাদ।”

সাদীও বলেছিলেন, “আমি তার মঙ্গল কামনা করি সবসময়।”

ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, পরীমনির বাসায় কিছুদিন কাজ করা এক গৃহকর্মীর অপপ্রচারে তৈরি হয়েছে ভুল বোঝাবুঝি। ওই কর্মী পরীমনির বাসা থেকে বের হওয়ার পর নানাভাবে তাদের সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মুখরোচক কথা ছড়িয়েছেন।

তবে পরীমনির ঘনিষ্ঠজনরা এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাদের মতে, এসব অপপ্রচারই মূলত সম্পর্কের মাঝে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে।

পরীমনি বর্তমানে তার সন্তান ও সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে সাদীও নিজের সংগীতজগতে সক্রিয় আছেন।

Header Ad
Header Ad

বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল

বগুড়া বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ১১ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, ডাম্বল এবং এপ্রোন সারফেসের উন্নয়ন কাজ চলছে পুরোদমে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী জুলাই মাসেই বগুড়া থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হবে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ—বেবিচক। শুধু বগুড়াই নয়, দেশের আরও সাতটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দর সচল করতে কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, শমসেরনগর (মৌলভীবাজার) এবং রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর।

বেবিচক সূত্র বলছে, এসব পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালু হলে সড়ক ও রেলপথের ওপর চাপ কমবে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ আরও সহজ হবে। ফলে শিল্প, ব্যবসা ও পর্যটনে নতুন গতি সঞ্চার হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, “বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। তবে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এসব বিমানবন্দর পুরোপুরি সচল করা যাবে।”

তবে এসব বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহনের মতো ফ্লাইট পরিচালনায় সবচেয়ে বড় বাধা রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও অবকাঠামো। অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি যাত্রীবাহী বিমানের ওঠানামার জন্য ৬ থেকে ৮ হাজার ফুট রানওয়ে দরকার, অথচ পরিত্যক্ত এই বিমানবন্দরগুলোতে রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফুট।

বেবিচক জানিয়েছে, ইতোমধ্যে হুদাবাসি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্মের সহায়তায় বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে সংস্কার কাজ আগে শেষ হবে, সেখানে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে আগে।

উল্লেখ্য, দেশে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়েছিল ২৮টি বিমানবন্দর। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারে। অভ্যন্তরীণ রুটে সচল রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর।

নতুন করে চালু হতে যাওয়া সাতটি বিমানবন্দর যুক্ত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগে বড় বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে ঢাকা বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কারের কারণ প্রকাশ করেছেন ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট নাসির মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ক্লাবের রিভারভিউ লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্লাব দখল করে রেখেছিলেন এবং আর্থিক অনিয়মে জড়িত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাসির মাহমুদ বলেন, “বেনজীর আহমেদ কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, জোর করে ক্লাবের সভাপতি পদে বসেছিলেন। সামাজিক সম্মান পেতেই তিনি এই পদে ছিলেন, তবে ক্লাবের নিয়ম-কানুন তিনি মানেননি। এমনকি আমি নিজে তিন বছর ক্লাবে আসার সাহস পাইনি, কারণ তিনি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে আমাকে ক্লাবে প্রবেশ করতে দেননি।”

তিনি জানান, ক্লাবের প্রায় ৩২ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে পুনরায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম হুদাবাসিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনিয়মের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

নাসির মাহমুদ অভিযোগ করেন, বেনজীরের ভয়ে তিনি ক্লাবে যাওয়া বন্ধ করে দেন, তবে আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। “তিনবার আমি তাঁকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। পরে তিনি বুঝতে পারেন আমি আইনগতভাবে সঠিক পথে আছি এবং তখনই আলোচনায় বসতে চান।”

তিনি আরও বলেন, “ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হয়ে বেনজীর কেউকেটা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো নিয়ম মানেননি, কোনো রিপোর্ট সাবমিট করেননি। ক্লাবের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল।”

ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনকেও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই বহিষ্কার কার্যকর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথাও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত পরীমনি ঘটনার প্রসঙ্গও আসে। এ নিয়ে নাসির মাহমুদ বলেন, “পরীমনি এই ক্লাবের সদস্য ছিলেন না, তিনি অতিথি হয়ে এসেছিলেন। অনুমতি ছাড়াই ক্লাবে প্রবেশ করেছিলেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

নাসির মাহমুদ দাবি করেন, বেনজীরের প্রভাব ও চাপের কারণে তাঁরা একসময় প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে নির্বাচনের দাবিতে বারবার নোটিশ দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৪ জুন নির্বাচনের তারিখ দিতে বাধ্য হন বেনজীর।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নকিব সরকার অপু, মো. জেসমুল হুদা মেহেদী অপু, আসমা আজিজ, এ কে এম আইয়াজ আলী (খোকন), আলীম আল কাজী (তুহিন), খালেদা আক্তার জাহান, মির্জা অনিক ইসলাম প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া
বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪