শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | ৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা

আরেফিনের মন বড় অস্থির; বড় উচাটন। স্বস্তিতে কোথাও দম নিতে পারছেন না। এই বসছেন। আবার উঠে হাঁটাহাঁটি করছেন। কখনো কখনো বিছানায় শুয়ে বিড় বিড় করে কি যেন বলছেন তিনি। হোটেল কক্ষে তিনি রীতিমতো ছটফট করছেন। জলের মাছ ডাঙায় উঠলে যে রকম অবস্থা হয় সে রকম অবস্থা হয়েছে তার। এর অনেকগুলো কারণ অবশ্য আছে। একটি কারণ হচ্ছে, একা হোটেল কক্ষে বসে থাকা। হোটেল কক্ষে একা কতক্ষণ বসে থাকা যায়! তিনি নিজেকে অসহায় বোধ করেন। অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত নিয়ে ভাবেন। অতীতটা কেমন ছিল? দুঃখ কষ্ট বেদনার সেই অতীতের দিনগুলোর কথা মনে করতে চান না তিনি। তিনি মনে মনে বলেন, এমন অতীত যেন কারো জীবনে না আসে। সে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কথা ভাবে। বর্তমান সময়টা তার কেমন যাচ্ছে? তার ভবিষ্যত কি, কোথায় যাবে সে, কি হবে তার জীবনে এসব নিয়ে ভাবে। কিন্তু ভবিষ্যটাও যেন অতীতের মতো শূন্য মরুদ্যান।

নানারকম হতাশা আরেফিনকে চারদিক থেকে জেঁকে ধরে। হতাশা কাটানোর জন্য তিনি পত্রিকা পড়েন, টিভি দেখেন। তাতেও তিনি হতাশা দূর করতে পারেন না। কারো সঙ্গে যে গল্প করে সময় কাটাবে তাও পারছেন না। অধিকাংশ মানুষই ইংরেজি জানে না। তারা জানার চেষ্টাও করে না। জানলেও কেউ একটি শব্দ মুখ থেকে বের করে না। যে ভাষা তাদের জীবনে কোনো প্রয়োজন নেই, সেই ভাষা তারা শিখবে কোন দুঃখে। কেউ কেউ মনে করেন, চীনা ভাষাই একদিন সারা বিশ্বকে ডোমিনেট করবে। একদিন আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
চীনারা এও মনে করেন, চীন এমন একটা দেশ; বিশ্বের প্রয়োজনেই এই দেশকে গুরুত্ব দেবে। এই দেশের ভাষা অন্য ভাষাভাষিরা শিখতে বাধ্য হবে। নিজেদের স্বার্থেই তারা চীনের দ্বারস্থ হবে। চীন নিজেদের প্রয়োজনে অন্য দেশের মুখাপেক্ষী হবে না। বিগত পঞ্চাশ বছরে চীন নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে। এজন্য চীনের অন্য ভাষা, অন্য দেশ, অন্য দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়নি। বরং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে যাবে। কারণ চীনা সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা। দিনে দিনে এই সভ্যতা আরো বিকাশ লাভ করেছে। বিশ্ব যতদিন টিকে থাকবে ততদিন এই সভ্যতাও টিকে থাকবে।

দেড়শ’ কোটি মানুষের দেশে ধর্মীয় সংস্কৃতি নেই অর্ধেকের বেশি মানুষের মধ্যে। তারা কোনো ধর্মকর্ম করে না। ধর্ম বিশ্বাসই করে না। তাদের কাছে মানবধর্ম অনেক বড়। চীনারা মনে করে, ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। ধর্মে ধর্মে হিংসা হানাহানি বাড়ায়। পৃথিবীতে যতগুলো সংঘাত হয়েছে তার বেশির ভাগই ধর্মকে কেন্দ্র করে। কিন্তু মানবধর্ম মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির সেতুবন্ধন তৈরি করে। চীন যে একটি সুসৃঙ্খল জাতি হিসেবে বিেশ্বর কাজে স্বীকৃত, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানবধর্ম।

আরেফিন বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন। চীনারা অনেক আগেই ভাবে। বিশ^ ভাবে অনেক পড়ে। যদিও এই নিয়ে সুনামটা বাঙালির। বাঙালি নাকি অনেক আগে ভাবে। ভারত ভাবে তার পরে। এটা কখনো কখনো আরেফিনের কাছে ‘বাকওয়াজ বুলি’ মনে হয়। তিনি মনে মনে প্রশ্ন করেন, বাঙালি আগে আগে কি এমন ভেবেছে? বড় কোনো উদাহরণ কি আছে? আমি তো কোনো কিছু খুঁজে পাই না।

এই চিন্তাও আরেফিন বেশিক্ষণ মাথায় নিতে পারে না। তিনি মনে মনে উহানে কোনো বাঙালি পরিবার আছে কি না তা খুঁজে বেড়ান। কতদিন বাংলায় কারো সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারছেন না! বোবা-কালাদের মতো বসে থাকা-এও কি কারো ভালো লাগে! তিনি যতই বকবক করুন তার কথা কেউ বোঝে না। তিনিও কারো কথা বোঝেন না। এ রকম দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়েননি তিনি। বিদেশ-বিভুঁইয়ে গেলে মানুষের মনের দরজা খুলে যায়। বাইরের পৃথিবী দেখার আনন্দে বিভোর থাকে সে। অথচ চীনে এসে আরেফিন নিজেই একটা এলিয়েনে পরিণত হয়েছেন।

উহানে অনেক বাঙালি বসবাস করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে কেউ ঘর থেকেও বের হতে পারছে না। আসলে চীনা ভাষা না জানলে চীনে চলাফেরা করা কঠিন। অন্যান্য দেশে অল্পবিস্তার ইংরেজি সবাই জানে। যানবাহনে চেপে যে কোনো জায়গায় যাওয়া যায় সহজেই। চীনে ঘুরতে ঘুরতে দিন শেষ হয়ে যাবে তারপরও গন্তব্যে পৌছা যাবে না। আরেফিনের এই তীক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বাইরে বের হতেও ভয় পায়।

দেশটাকে আরফিনের কাছে আজব দেশ মনে হয়। পুরো বিশ্ব থেকে আলাদা। চীনই যেন ওদের কাছে আরেক পৃথিবী। আরেক গ্রহ। আরেক জগত। বিশ্বের কোথায় কি ঘটল তা নিয়ে ওদের মাথা ব্যথা নেই। ওরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। চীনের পত্রিকাগুলোও নিজেদের সব খবর তো নয়ই; বহির্বিশ্বের খবরও খুব একটা দেয় না। অন্য কাউকে নিয়ে তারা ভাবে না। সবাই ভাবে নিজেকে নিয়ে। নিজের সুখ-শান্তি, নিজের বাড়ি, নিজের শহর নিজের দেশ। চীনারা রোবটের মতো সারাক্ষণ কাজ করে। আবেগ-অনুভূতি নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তার প্রকাশ খুব কম।

আরেফিন নানাভাবে মোহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কিছুতেই তাকে ধরতে পারলেন না। কেন তাকে ধরতে পারছেন না? মোহিনীই কি তাহলে আরেফিনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখতে চায় না? তিনি গ্রামের বাড়িতে তার মা বাবাকে ফোনে তো ঠিকই পাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন অনেকবার। অথচ মোহিনীকে পাচ্ছেন না। কেন? কেন পাওয়া যাচ্ছে না তাকে? সে কি তাকে ব্লক করে রেখেছে?

আরেফিনের মা বাবা ওর কাছে অনেকবার মোহিনীর কথা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু আরেফিন সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি। তিনি আমতা আমতা করে এটা সেটা বলে এড়িয়ে গেছেন। তারা অশিক্ষিত গ্রামের মানুষ হলেও ছেলের কথা বুঝতে কি আর বাকি আছে? মা বাবাকে কি আর ছেলে ফাঁকি দিতে পারে?

নানা প্রশ্ন আরেফিনের মনে দানা বাঁধে। তিনি মনে মনে বলেন, মোহিনী কি আমাকে নিয়ে একটুও ভাবে! আমার কথা মনে করে! আগের মতো সে কি আমাকে ভালোবাসে! নিশ্চয়ই মনে করে; নিশ্চয়ই ভালোবাসে। তা না হলে মোহিনীর কথা আমার এতোবেশি মনে পড়বে কেন! তা ছাড়া মোহিনীর প্রতি আমার ভালোবাসার তো কোনো কমতি নেই।

মোহিনীর সঙ্গে আরেফিনের কত স্মৃতি। সেই সব স্মৃতি তার মনের আয়নায় ভেসে ওঠে। কখনো ক্যাম্পাসে, কখনো পার্কে আবার কখনো লাইব্রেরিতে বসে পড়ার ফাঁকে গল্প আড্ডায় মেতে থাকার স্মৃতি তাকে আচ্ছন্ন করে। তিনি মনে মনে ভাবেন, ইস! কোথায় হারিয়ে গেলো সেই সময়গুলো! আবার কি কখনো ফিরে আসবে! সেই সময় যদি আবার ফিরে আসতো! কিন্তু যে সময় যায় তা নাকি আর ফিরে আসে না। শুধু স্মৃতিপটে আঁকা থাকে।

এ মুহূর্তে দেশে ফেরাও সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই করোনার প্রকোপ বাড়ছে। উহান থেকে চীনের অন্যান্য অঞ্চলে খুব বেশি না ছড়ালেও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকায়। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আরেফিন কবে দেশে ফিরতে পারবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। হঠাৎ করেই দেশের প্রতি তার টান ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। হোটেল কক্ষের বিছানায় শুয়ে সে অস্থির কণ্ঠে বলে, আমার এমন লাগছে কেন! সবকিছু এমন এলোমেলো হয়ে গেল কেন!

আরেফিন সারারাত ঘুমাতে পারেননি। নানারকম দুশ্চিন্তা ঘূর্ণিঝড়ের মতো তার মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে। উথাল পাতাল অবস্থা হয়েছে তার। মনের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন তিনি। ভয়ঙ্কর সেই যুদ্ধ! সেই যুদ্ধে তিনি হেরে গেছেন। ঝড়ে পড়া পাখির মতো বিধ্বস্ত হয়ে মরার মতো বিছানায় পড়ে আছে। এক পর্যায়ে রাজ্যের ঘুম তার ওপর জেঁকে বসে। তিনি সকালের নাশতা ধরার জন্য সাধারণত ঘড়িতে এ্যালার্ম দিয়ে রাখেন। মনের বিধ্বস্ত অবস্থার কারণে সেটাও তিনি ভুলে যান। সকালের নাশতার সময় পেরিয়ে গেছে। রুম কিপার সকালে কয়েকবার কলিং বেল বাজায়। তারপর দরজা ধাক্কাধাক্কি করে। তাতেও আরেফিনের কোনো সাড়া মেলে না। বেহুঁশের মতো তিনি ঘুমান। কোনো শব্দই তার কানে পৌছায় না। লয়-প্রলয় হলেও তিনি হয়তো কোনো কিছুই টের পাবেন না।

রুম কিপার আবার আরেফিনের কক্ষের সামনে আসে। আবারও সে কলিং বেল চাপে। তারপর দরজা ধাক্কায়। এরপরও যখন দরজা খুলছে না দেখে তার মনে সন্দেহ হয়। সে মনে মনে ভাবে, নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা হয়েছে। সে নিজের চাবি দিয়ে দরজা খোলে। একপা দুইপা করে কক্ষের ভেতরে ঢোকে। বিছানার দিকে তাকাতেই সে দেখে, আরেফিন একেবারে মরা লাশের মতো পড়ে আছেন। সে কক্ষটাকে ভালো করে দেখে। কোনো ড্রিঙ্কস করেছে কি না তা বোঝার চেষ্টা করে। না। সে রকম কোনো আলামত চোখে পড়েনি। কক্ষের কোনো কিছুই এলোমেলো হয়নি।
রুম কিপার বিড়ালের মতো গুটি গুটি পা ফেলে আরেফিনের কাছে এগিয়ে যায়। খুব সাবধানে নাকের কাছে হাত দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে কি না তা ভালো করে দেখে। তার ভেতরে এক ধরনের ভয়, শঙ্কা কাজ করে।

আরেফিন শ্বাস নিচ্ছেন টের পেয়ে রুম কিপার এক রকম লাফিয়ে ওঠে। স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে বলে, না না! কিছু হয়নি। জীবিতই আছে। সুস্থই আছে। সে সত্যিই ঘুমের ঘোরে ডুবে আছে। এটা নিশ্চিত হওয়ার পর রুম কিপার বের হয়। তবে তার মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন বার বার উঁকি দেয়, মানুষ এমন বেঘোরে ঘুমাতে পারে! কি করে সম্ভব! সব মানুষই কি এমনভাবে ঘুমায়! ঘুমাতে পারে! তবে এটা ঠিক, একজন ঘুমন্ত মানুষ আর মরা লাশের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। কিন্তু আরেফিনকে মনে হচ্ছে যেন একটা জিন্দা লাশ!

চলবে...

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

Header Ad
Header Ad

ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া

নায়িকা পরীমনি ও গায়ক শেখ সাদী। ছবি: সংগৃীত

ঢালিউডের আলোচিত নায়িকা পরীমনি ও তরুণ গায়ক শেখ সাদীর প্রেমের গুঞ্জন অনেকদিন ধরেই ছিল ‘ওপেন সিক্রেট’। সোশ্যাল মিডিয়ায় একসঙ্গে সময় কাটানোর ছবি, একে অন্যের পোস্টে ভালোবাসার মন্তব্য, এমনকি সাদীর মায়ের বানানো পিঠার ভিডিও শেয়ার—সবই তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত দিত।

তবে হঠাৎ করেই যেন সেই সম্পর্কের আবহে ছন্দপতন। সম্প্রতি ফেসবুকে পরীমনি ও সাদীর রহস্যময় পোস্ট ঘিরে নেটিজেনদের মনে প্রশ্ন—তবে কি ভেঙে গেল সম্পর্ক?

পরীমনি তার ফেসবুক ওয়ালে কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে লিখেছেন: ‘ব্ল্যাকমেলার’।

অন্যদিকে সাদী পোস্ট করেছেন শুধু তিনটি ডট (...), যা অনেকেই সম্পর্ক ভাঙনের দিকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছেন।

নেটদুনিয়ায় প্রতিক্রিয়াও এসেছে ঝড়ের মতো। একজন মন্তব্য করেছেন, “শেষ পর্যন্ত পরীও ছ্যাঁকা দিয়ে দিল।” আরেকজন লিখেছেন, “এত তাড়াতাড়ি এমন পোস্ট আশা করিনি, সাদী ভাই।”

দুজনের কেউই এখনও সম্পর্ক ভাঙনের ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। তবে পরীর পোস্টে কমেন্ট অপশন বন্ধ থাকলেও, তার ভক্তরা পোস্টটি শেয়ার করে সরাসরি সাদীকে ট্যাগ করছেন।

অনেকে বলছেন, “নিশ্চয়ই সাদী কিছু করেছেন, নইলে এমন পোস্ট দিতেন না পরীমনি।”

চিত্রনায়ক শরীফুল রাজের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের পর গায়ক শেখ সাদীর সঙ্গে পরীমনির ঘনিষ্ঠতা ছিল অনেকটাই প্রকাশ্য। একসঙ্গে ঘোরাঘুরি, পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং এমনকি পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার সময় সাদীর জামিনদার হওয়া—সব মিলিয়ে দুজনের সম্পর্ককে ভরসাময় ও গভীর বলেই মনে করা হতো।

এক সাক্ষাৎকারে পরীমনি বলেছিলেন, “বিপদের সময় যে পাশে থাকেন, সে জীবনের জন্য আশীর্বাদ।”

সাদীও বলেছিলেন, “আমি তার মঙ্গল কামনা করি সবসময়।”

ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, পরীমনির বাসায় কিছুদিন কাজ করা এক গৃহকর্মীর অপপ্রচারে তৈরি হয়েছে ভুল বোঝাবুঝি। ওই কর্মী পরীমনির বাসা থেকে বের হওয়ার পর নানাভাবে তাদের সম্পর্ক নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মুখরোচক কথা ছড়িয়েছেন।

তবে পরীমনির ঘনিষ্ঠজনরা এ অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তাদের মতে, এসব অপপ্রচারই মূলত সম্পর্কের মাঝে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে।

পরীমনি বর্তমানে তার সন্তান ও সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে সাদীও নিজের সংগীতজগতে সক্রিয় আছেন।

Header Ad
Header Ad

বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল

বগুড়া বিমানবন্দর। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ১১ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে বিমানবন্দরের রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে, ডাম্বল এবং এপ্রোন সারফেসের উন্নয়ন কাজ চলছে পুরোদমে। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী জুলাই মাসেই বগুড়া থেকে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল শুরু হবে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ—বেবিচক। শুধু বগুড়াই নয়, দেশের আরও সাতটি পরিত্যক্ত বিমানবন্দর সচল করতে কাজ করছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ঈশ্বরদী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, শমসেরনগর (মৌলভীবাজার) এবং রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর।

বেবিচক সূত্র বলছে, এসব পরিত্যক্ত বিমানবন্দর চালু হলে সড়ক ও রেলপথের ওপর চাপ কমবে এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সংযোগ আরও সহজ হবে। ফলে শিল্প, ব্যবসা ও পর্যটনে নতুন গতি সঞ্চার হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, “বাণিজ্যিকভাবে বিমান পরিচালনার জন্য কিছুটা সময় লাগবে। তবে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে এসব বিমানবন্দর পুরোপুরি সচল করা যাবে।”

তবে এসব বিমানবন্দরে যাত্রী পরিবহনের মতো ফ্লাইট পরিচালনায় সবচেয়ে বড় বাধা রানওয়ের দৈর্ঘ্য ও অবকাঠামো। অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি যাত্রীবাহী বিমানের ওঠানামার জন্য ৬ থেকে ৮ হাজার ফুট রানওয়ে দরকার, অথচ পরিত্যক্ত এই বিমানবন্দরগুলোতে রানওয়ের দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফুট।

বেবিচক জানিয়েছে, ইতোমধ্যে হুদাবাসি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্মের সহায়তায় বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। যেখানে সংস্কার কাজ আগে শেষ হবে, সেখানে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে আগে।

উল্লেখ্য, দেশে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয়েছিল ২৮টি বিমানবন্দর। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজারে। অভ্যন্তরীণ রুটে সচল রয়েছে রাজশাহী, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর।

নতুন করে চালু হতে যাওয়া সাতটি বিমানবন্দর যুক্ত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিমান যোগাযোগে বড় বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Header Ad
Header Ad

বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকে ঢাকা বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কারের কারণ প্রকাশ করেছেন ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট নাসির মাহমুদ। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ক্লাবের রিভারভিউ লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, বেনজীর আহমেদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ক্লাব দখল করে রেখেছিলেন এবং আর্থিক অনিয়মে জড়িত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাসির মাহমুদ বলেন, “বেনজীর আহমেদ কোনো নির্বাচনের মাধ্যমে নয়, জোর করে ক্লাবের সভাপতি পদে বসেছিলেন। সামাজিক সম্মান পেতেই তিনি এই পদে ছিলেন, তবে ক্লাবের নিয়ম-কানুন তিনি মানেননি। এমনকি আমি নিজে তিন বছর ক্লাবে আসার সাহস পাইনি, কারণ তিনি তাঁর প্রভাব খাটিয়ে আমাকে ক্লাবে প্রবেশ করতে দেননি।”

তিনি জানান, ক্লাবের প্রায় ৩২ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে পুনরায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট ফার্ম হুদাবাসিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনিয়মের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

নাসির মাহমুদ অভিযোগ করেন, বেনজীরের ভয়ে তিনি ক্লাবে যাওয়া বন্ধ করে দেন, তবে আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। “তিনবার আমি তাঁকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। পরে তিনি বুঝতে পারেন আমি আইনগতভাবে সঠিক পথে আছি এবং তখনই আলোচনায় বসতে চান।”

তিনি আরও বলেন, “ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হয়ে বেনজীর কেউকেটা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো নিয়ম মানেননি, কোনো রিপোর্ট সাবমিট করেননি। ক্লাবের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল।”

ক্লাবের সাবেক সেক্রেটারি লে. কমান্ডার (অব.) তাহসিন আমিনকেও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ক্লাবের প্রথম নির্বাচিত নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই বহিষ্কার কার্যকর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথাও জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত পরীমনি ঘটনার প্রসঙ্গও আসে। এ নিয়ে নাসির মাহমুদ বলেন, “পরীমনি এই ক্লাবের সদস্য ছিলেন না, তিনি অতিথি হয়ে এসেছিলেন। অনুমতি ছাড়াই ক্লাবে প্রবেশ করেছিলেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় উল্টো আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

নাসির মাহমুদ দাবি করেন, বেনজীরের প্রভাব ও চাপের কারণে তাঁরা একসময় প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। তবে নির্বাচনের দাবিতে বারবার নোটিশ দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ২৪ জুন নির্বাচনের তারিখ দিতে বাধ্য হন বেনজীর।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. নকিব সরকার অপু, মো. জেসমুল হুদা মেহেদী অপু, আসমা আজিজ, এ কে এম আইয়াজ আলী (খোকন), আলীম আল কাজী (তুহিন), খালেদা আক্তার জাহান, মির্জা অনিক ইসলাম প্রমুখ।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভেঙে গেল পরীমনি-সাদীর প্রেম? রহস্যময় পোস্টে তোলপাড় নেটদুনিয়া
বগুড়া বিমানবন্দর চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত, জুলাই থেকেই শুরু হতে পারে ফ্লাইট চলাচল
বেনজীরকে বোট ক্লাব থেকে বহিষ্কার, ৩২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ঢাকায় আবারও আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, ড. ইউনূসের পদত্যাগ দাবি
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আশাবাদী মেসি, সিদ্ধান্ত নেবেন সময়মতো
পশ্চিমবঙ্গে সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশের মন্তব্য ‘অযৌক্তিক’: ভারত
দর্শনা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা
দাদা ও চাচার বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার অভিযোগ
গত ৯ মাসে এক আকাশ ভালোবাসা অর্জন করেছি : প্রেসসচিব
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে আগ্রহ দেখায়নি বেসরকারি চ্যানেল, দেখাবে বিটিভি
সন্ত্রাসী তালিকা থেকে তালেবানকে বাদ দিলো রাশিয়া
ভিনগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে, জানালেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
ব্রাজিলের ভক্তদের ‘বানরের’ সঙ্গে তুলনা, নিষেধাজ্ঞার মুখে আর্জেন্টিনা
নারীরা কেন বয়সে ছোট পুরুষের সঙ্গে প্রেমে জড়াচ্ছেন?
জুলাই-মার্চ মাসে ৩০.২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ
সংঘর্ষে উড়ে গেছে বাসের ছাদ, তবুও ১০ কিলোমিটার চালিয়ে ৬০ যাত্রীকে বাঁচালেন চালক
কোলের সন্তান বিক্রি করে অলংকার, মোবাইল কিনলেন মা
চুয়াডাঙ্গায় বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দু’জন নিহত
ইয়েমেনের তেল বন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩৮
হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ৪