শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ১০

বিষাদ বসুধা

আরেফিনের মন বড় অস্থির; বড় উচাটন। স্বস্তিতে কোথাও দম নিতে পারছেন না। এই বসছেন। আবার উঠে হাঁটাহাঁটি করছেন। কখনো কখনো বিছানায় শুয়ে বিড় বিড় করে কি যেন বলছেন তিনি। হোটেল কক্ষে তিনি রীতিমতো ছটফট করছেন। জলের মাছ ডাঙায় উঠলে যে রকম অবস্থা হয় সে রকম অবস্থা হয়েছে তার। এর অনেকগুলো কারণ অবশ্য আছে। একটি কারণ হচ্ছে, একা হোটেল কক্ষে বসে থাকা। হোটেল কক্ষে একা কতক্ষণ বসে থাকা যায়! তিনি নিজেকে অসহায় বোধ করেন। অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যত নিয়ে ভাবেন। অতীতটা কেমন ছিল? দুঃখ কষ্ট বেদনার সেই অতীতের দিনগুলোর কথা মনে করতে চান না তিনি। তিনি মনে মনে বলেন, এমন অতীত যেন কারো জীবনে না আসে। সে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের কথা ভাবে। বর্তমান সময়টা তার কেমন যাচ্ছে? তার ভবিষ্যত কি, কোথায় যাবে সে, কি হবে তার জীবনে এসব নিয়ে ভাবে। কিন্তু ভবিষ্যটাও যেন অতীতের মতো শূন্য মরুদ্যান।

নানারকম হতাশা আরেফিনকে চারদিক থেকে জেঁকে ধরে। হতাশা কাটানোর জন্য তিনি পত্রিকা পড়েন, টিভি দেখেন। তাতেও তিনি হতাশা দূর করতে পারেন না। কারো সঙ্গে যে গল্প করে সময় কাটাবে তাও পারছেন না। অধিকাংশ মানুষই ইংরেজি জানে না। তারা জানার চেষ্টাও করে না। জানলেও কেউ একটি শব্দ মুখ থেকে বের করে না। যে ভাষা তাদের জীবনে কোনো প্রয়োজন নেই, সেই ভাষা তারা শিখবে কোন দুঃখে। কেউ কেউ মনে করেন, চীনা ভাষাই একদিন সারা বিশ্বকে ডোমিনেট করবে। একদিন আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
চীনারা এও মনে করেন, চীন এমন একটা দেশ; বিশ্বের প্রয়োজনেই এই দেশকে গুরুত্ব দেবে। এই দেশের ভাষা অন্য ভাষাভাষিরা শিখতে বাধ্য হবে। নিজেদের স্বার্থেই তারা চীনের দ্বারস্থ হবে। চীন নিজেদের প্রয়োজনে অন্য দেশের মুখাপেক্ষী হবে না। বিগত পঞ্চাশ বছরে চীন নিজের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে। এজন্য চীনের অন্য ভাষা, অন্য দেশ, অন্য দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করতে হয়নি। বরং চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে যাবে। কারণ চীনা সভ্যতা পৃথিবীর প্রাচীনতম সভ্যতা। দিনে দিনে এই সভ্যতা আরো বিকাশ লাভ করেছে। বিশ্ব যতদিন টিকে থাকবে ততদিন এই সভ্যতাও টিকে থাকবে।

দেড়শ’ কোটি মানুষের দেশে ধর্মীয় সংস্কৃতি নেই অর্ধেকের বেশি মানুষের মধ্যে। তারা কোনো ধর্মকর্ম করে না। ধর্ম বিশ্বাসই করে না। তাদের কাছে মানবধর্ম অনেক বড়। চীনারা মনে করে, ধর্ম মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। ধর্মে ধর্মে হিংসা হানাহানি বাড়ায়। পৃথিবীতে যতগুলো সংঘাত হয়েছে তার বেশির ভাগই ধর্মকে কেন্দ্র করে। কিন্তু মানবধর্ম মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য সম্প্রীতির সেতুবন্ধন তৈরি করে। চীন যে একটি সুসৃঙ্খল জাতি হিসেবে বিেশ্বর কাজে স্বীকৃত, তার অন্যতম কারণ হচ্ছে মানবধর্ম।

আরেফিন বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন। চীনারা অনেক আগেই ভাবে। বিশ^ ভাবে অনেক পড়ে। যদিও এই নিয়ে সুনামটা বাঙালির। বাঙালি নাকি অনেক আগে ভাবে। ভারত ভাবে তার পরে। এটা কখনো কখনো আরেফিনের কাছে ‘বাকওয়াজ বুলি’ মনে হয়। তিনি মনে মনে প্রশ্ন করেন, বাঙালি আগে আগে কি এমন ভেবেছে? বড় কোনো উদাহরণ কি আছে? আমি তো কোনো কিছু খুঁজে পাই না।

এই চিন্তাও আরেফিন বেশিক্ষণ মাথায় নিতে পারে না। তিনি মনে মনে উহানে কোনো বাঙালি পরিবার আছে কি না তা খুঁজে বেড়ান। কতদিন বাংলায় কারো সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারছেন না! বোবা-কালাদের মতো বসে থাকা-এও কি কারো ভালো লাগে! তিনি যতই বকবক করুন তার কথা কেউ বোঝে না। তিনিও কারো কথা বোঝেন না। এ রকম দমবন্ধকর পরিস্থিতিতে আগে কখনো পড়েননি তিনি। বিদেশ-বিভুঁইয়ে গেলে মানুষের মনের দরজা খুলে যায়। বাইরের পৃথিবী দেখার আনন্দে বিভোর থাকে সে। অথচ চীনে এসে আরেফিন নিজেই একটা এলিয়েনে পরিণত হয়েছেন।

উহানে অনেক বাঙালি বসবাস করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে কেউ ঘর থেকেও বের হতে পারছে না। আসলে চীনা ভাষা না জানলে চীনে চলাফেরা করা কঠিন। অন্যান্য দেশে অল্পবিস্তার ইংরেজি সবাই জানে। যানবাহনে চেপে যে কোনো জায়গায় যাওয়া যায় সহজেই। চীনে ঘুরতে ঘুরতে দিন শেষ হয়ে যাবে তারপরও গন্তব্যে পৌছা যাবে না। আরেফিনের এই তীক্ত অভিজ্ঞতার কারণে বাইরে বের হতেও ভয় পায়।

দেশটাকে আরফিনের কাছে আজব দেশ মনে হয়। পুরো বিশ্ব থেকে আলাদা। চীনই যেন ওদের কাছে আরেক পৃথিবী। আরেক গ্রহ। আরেক জগত। বিশ্বের কোথায় কি ঘটল তা নিয়ে ওদের মাথা ব্যথা নেই। ওরা নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। চীনের পত্রিকাগুলোও নিজেদের সব খবর তো নয়ই; বহির্বিশ্বের খবরও খুব একটা দেয় না। অন্য কাউকে নিয়ে তারা ভাবে না। সবাই ভাবে নিজেকে নিয়ে। নিজের সুখ-শান্তি, নিজের বাড়ি, নিজের শহর নিজের দেশ। চীনারা রোবটের মতো সারাক্ষণ কাজ করে। আবেগ-অনুভূতি নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু তার প্রকাশ খুব কম।

আরেফিন নানাভাবে মোহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কিছুতেই তাকে ধরতে পারলেন না। কেন তাকে ধরতে পারছেন না? মোহিনীই কি তাহলে আরেফিনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখতে চায় না? তিনি গ্রামের বাড়িতে তার মা বাবাকে ফোনে তো ঠিকই পাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন অনেকবার। অথচ মোহিনীকে পাচ্ছেন না। কেন? কেন পাওয়া যাচ্ছে না তাকে? সে কি তাকে ব্লক করে রেখেছে?

আরেফিনের মা বাবা ওর কাছে অনেকবার মোহিনীর কথা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু আরেফিন সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেননি। তিনি আমতা আমতা করে এটা সেটা বলে এড়িয়ে গেছেন। তারা অশিক্ষিত গ্রামের মানুষ হলেও ছেলের কথা বুঝতে কি আর বাকি আছে? মা বাবাকে কি আর ছেলে ফাঁকি দিতে পারে?

নানা প্রশ্ন আরেফিনের মনে দানা বাঁধে। তিনি মনে মনে বলেন, মোহিনী কি আমাকে নিয়ে একটুও ভাবে! আমার কথা মনে করে! আগের মতো সে কি আমাকে ভালোবাসে! নিশ্চয়ই মনে করে; নিশ্চয়ই ভালোবাসে। তা না হলে মোহিনীর কথা আমার এতোবেশি মনে পড়বে কেন! তা ছাড়া মোহিনীর প্রতি আমার ভালোবাসার তো কোনো কমতি নেই।

মোহিনীর সঙ্গে আরেফিনের কত স্মৃতি। সেই সব স্মৃতি তার মনের আয়নায় ভেসে ওঠে। কখনো ক্যাম্পাসে, কখনো পার্কে আবার কখনো লাইব্রেরিতে বসে পড়ার ফাঁকে গল্প আড্ডায় মেতে থাকার স্মৃতি তাকে আচ্ছন্ন করে। তিনি মনে মনে ভাবেন, ইস! কোথায় হারিয়ে গেলো সেই সময়গুলো! আবার কি কখনো ফিরে আসবে! সেই সময় যদি আবার ফিরে আসতো! কিন্তু যে সময় যায় তা নাকি আর ফিরে আসে না। শুধু স্মৃতিপটে আঁকা থাকে।

এ মুহূর্তে দেশে ফেরাও সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই করোনার প্রকোপ বাড়ছে। উহান থেকে চীনের অন্যান্য অঞ্চলে খুব বেশি না ছড়ালেও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। সবচেয়ে দ্রুত ছড়াচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকায়। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। সঙ্গত কারণেই বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। আরেফিন কবে দেশে ফিরতে পারবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। হঠাৎ করেই দেশের প্রতি তার টান ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। হোটেল কক্ষের বিছানায় শুয়ে সে অস্থির কণ্ঠে বলে, আমার এমন লাগছে কেন! সবকিছু এমন এলোমেলো হয়ে গেল কেন!

আরেফিন সারারাত ঘুমাতে পারেননি। নানারকম দুশ্চিন্তা ঘূর্ণিঝড়ের মতো তার মাথায় ঘুরপাক খেয়েছে। উথাল পাতাল অবস্থা হয়েছে তার। মনের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন তিনি। ভয়ঙ্কর সেই যুদ্ধ! সেই যুদ্ধে তিনি হেরে গেছেন। ঝড়ে পড়া পাখির মতো বিধ্বস্ত হয়ে মরার মতো বিছানায় পড়ে আছে। এক পর্যায়ে রাজ্যের ঘুম তার ওপর জেঁকে বসে। তিনি সকালের নাশতা ধরার জন্য সাধারণত ঘড়িতে এ্যালার্ম দিয়ে রাখেন। মনের বিধ্বস্ত অবস্থার কারণে সেটাও তিনি ভুলে যান। সকালের নাশতার সময় পেরিয়ে গেছে। রুম কিপার সকালে কয়েকবার কলিং বেল বাজায়। তারপর দরজা ধাক্কাধাক্কি করে। তাতেও আরেফিনের কোনো সাড়া মেলে না। বেহুঁশের মতো তিনি ঘুমান। কোনো শব্দই তার কানে পৌছায় না। লয়-প্রলয় হলেও তিনি হয়তো কোনো কিছুই টের পাবেন না।

রুম কিপার আবার আরেফিনের কক্ষের সামনে আসে। আবারও সে কলিং বেল চাপে। তারপর দরজা ধাক্কায়। এরপরও যখন দরজা খুলছে না দেখে তার মনে সন্দেহ হয়। সে মনে মনে ভাবে, নিশ্চয়ই কোনো সমস্যা হয়েছে। সে নিজের চাবি দিয়ে দরজা খোলে। একপা দুইপা করে কক্ষের ভেতরে ঢোকে। বিছানার দিকে তাকাতেই সে দেখে, আরেফিন একেবারে মরা লাশের মতো পড়ে আছেন। সে কক্ষটাকে ভালো করে দেখে। কোনো ড্রিঙ্কস করেছে কি না তা বোঝার চেষ্টা করে। না। সে রকম কোনো আলামত চোখে পড়েনি। কক্ষের কোনো কিছুই এলোমেলো হয়নি।
রুম কিপার বিড়ালের মতো গুটি গুটি পা ফেলে আরেফিনের কাছে এগিয়ে যায়। খুব সাবধানে নাকের কাছে হাত দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছে কি না তা ভালো করে দেখে। তার ভেতরে এক ধরনের ভয়, শঙ্কা কাজ করে।

আরেফিন শ্বাস নিচ্ছেন টের পেয়ে রুম কিপার এক রকম লাফিয়ে ওঠে। স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে বলে, না না! কিছু হয়নি। জীবিতই আছে। সুস্থই আছে। সে সত্যিই ঘুমের ঘোরে ডুবে আছে। এটা নিশ্চিত হওয়ার পর রুম কিপার বের হয়। তবে তার মনের মধ্যে নানা প্রশ্ন বার বার উঁকি দেয়, মানুষ এমন বেঘোরে ঘুমাতে পারে! কি করে সম্ভব! সব মানুষই কি এমনভাবে ঘুমায়! ঘুমাতে পারে! তবে এটা ঠিক, একজন ঘুমন্ত মানুষ আর মরা লাশের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। কিন্তু আরেফিনকে মনে হচ্ছে যেন একটা জিন্দা লাশ!

চলবে...

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৯

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৮

বিষাদ বসুধা: পর্ব ৭

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৬

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৫

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৪

বিষাদ বসুধা: পর্ব-৩

বিষাদ বসুধা: পর্ব-২

বিষাদ বসুধা: পর্ব-১

Header Ad

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উদয়খালী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মৃত তিন শিক্ষার্থী হলেন- মোজাম্মেল হোসেন নাঈম (২৪), মোস্তাকিম রহমান মাহিন (২২) ও জোবায়ের আলম সাকিব (২২)।

জানা গেছে, শনিবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের প্রায় ৪৬০ জন শিক্ষার্থী বিআরটিসির ৬টি ডাবল ডেকার বাস ও ৩টি মাইক্রোবাসে করে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামীণ আঞ্চলিক সড়ক ধরে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় উত্তর পেলাইদ গ্রামের উদয়খালী বাজারে পৌঁছালে বিআরটিসির ডাবল ডেকার একটি বাস পল্লী বিদ্যুতের তারের স্পর্শে আসে। এ সময় বাসটি বিদ্যুতায়িত হলে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক জাকিউল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিনজনকেই মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহত সংখ্যা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা জরুরি বিভাগে যাচ্ছি।

Header Ad

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া

ছবি: সংগৃহীত

মিল্ক বিউটিখ্যাত দক্ষিনি অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া নতুন বছরে তার জীবনের একটি বিশেষ অধ্যায়ে পা রাখতে যাচ্ছেন। খলচরিত্র করে আলোড়ন তোলা অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে তার প্রেমের গুঞ্জন চলছিল অনেক দিন ধরেই। তবে এ নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এবার তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তামান্না। এমনকি ২০২৫ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমের এক প্রোমোশনাল ইন্টারভিউতে তামান্না তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জানান, প্রেমের সম্পর্কের জন্য জীবনে দুবার হৃদয় ভেঙেছে তার। সেই সময়টা তামান্নার জন্য খুবই ভয়াবহ ছিল।

তিনি আরও জানান, তিনি খুব কম বয়সে একজন ছেলের সঙ্গে প্রথম ভালোবাসায় জড়িয়েছিলেন এবং তার দ্বিতীয় সম্পর্কটি ছিল তার অভিনয় ক্যারিয়ারের শিখরে থাকা অবস্থায়। তবে সে সময় তিনি অনুভব করেন যে, সেই ছেলে তার সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের জন্য সঠিক ব্যক্তি নয়।

তবে এত কিছুর পরও বাহুবলিখ্যাত তামান্না প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেননি। এর আগে গুঞ্জন ছিল যে, তিনি ভারতীয় অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে ডেট করছেন। পাপারাজ্জিদের ক্যামেরায় বহুবার ফ্রেমবন্দি হয়েছেন তারা। যদিও নিজেদের এ সম্পর্ক আড়ালে রাখতে বদ্ধপরিকর দুজনই। এখন দেখার অপেক্ষা তামান্না জীবনসঙ্গী হিসেবে কাকে বেছে নেন।

সবশেষ তামান্না ভাটিয়াকে আইটেম গার্ল হিসেবে দেখা যায় অমর কৌশিক পরিচালিত ‘স্ত্রী ২’ সিনেমায়। এ সিনেমায় আরও অভিনয় করেন রাজকুমার রাও, শ্রদ্ধা কাপুর, পঙ্ক ত্রিপাঠিসহ আরও অনেকে।

Header Ad

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকার বিনিময়ে নয় মাসের শিশু সন্তানকে দত্তক দেন শরীফা খাতুন নামে মানসিক ভারস্যমহীন এক মা। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই নবজাতককে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশের সহায়তায় ওই শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফেরত দেন।
মানসিক ভারসাম্যহীন নারী শরীফা খাতুন বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের জেমজুট মুসলিমবাগ এলাকায় তিন সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালান।

প্রতিবেশী ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর আগে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় শরীফা খাতুনের। এর পর সন্তানদের নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলত তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার নিজের ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে পঞ্চগড় পৌরসভার দক্ষিণ তেলিপাড়া এলাকায় একটি হলুদ খেতে রেখে ভিক্ষা করতে যান শরীফা খাতুন। এ সময় শিশুটিকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে স্থানীয় রুনা আক্তার নামে এক নারী; একইসঙ্গে শরীফাকেও নিজ বাড়িতে নেন তিনি। রুনা নামে ওই নারীর নিজ সন্তান না থাকায় শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে, ৫০০ টাকার বিনিময়ে রেখে চলে যান শরীফা।

এরপর চার দিন পর অবশেষে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় নিজ পরিবারের কাছে ফিরেছে শিশুটি। বর্তমানে শিশুটিকে দেখভাল করছেন মানসিক ভারসামহীন শরীফার ১৬ বছরের বড় ছেলে নয়ন।

এ বিষয়ে শরীফার ছেলে নয়ন ইসলাম বলেন, গত চার দিন আগে মা বোনকে নিয়ে হঠাৎ পঞ্চগড়ে যান। পরে একসময় বাড়িতে একাই এসে ঘরে তালা লাগিয়ে বন্দি অবস্থায় থাকতে শুরু করেন। বোন কোথায় তা জানতে চাইলে কোনো কিছুই জানাচ্ছিলেন না।

পরে অনেক কৈশলে বোনের অবস্থান জানতে পারি। এরপর সেই বাড়িতে গিয়ে বোনকে ফেরত চাইলে তারা দিতে অস্বীকার করেন। আরও জানতে পারি মা বোনকে নেবেন না বললে তারা ৫০০ টাকা মাকে খেতে দিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর করে নেন। শুক্রবার সাংবাদিক ও পুলিশ এসে তদন্ত করে আমার বোনকে আনতে নির্দেশ দিলে মাকে সঙ্গে নিয়ে বোনকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অনেক আগে থেকে ওই নারীকে দেখছি। তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে পরিবার চালান। তবে কয়েকদিন আগে নিজের সন্তানকে মানুষের কাছে দিয়ে প্রায় পাগল হয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

কাজলা নামে স্থানীয় এক নারী বলেন, সকালে শরিফা আমার কাছে এসে আমার পা জড়িয়ে ধরেছেন আর বলেছেন আপু যেভাবেই পারো আমার মেয়েকে এনে দাও।

প্রতিবেশীরা বলেন, স্বামী না থাকায় পরিবারটা চালাতে শরীফা খাতুন ভিক্ষা করতেন। এর মাঝে এমন কাণ্ড ঘটে তিনি পাগল হয়ে গেছেন। তার তিনটা সন্তান। একটা ছেলে ও দুটি মেয়ে। এদের কি হবে আমরা জানি না। তবে সরকারি সহায়তা পেলে তাদের গতি হতো।

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, আগের বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খবর পাওয়ার পর পঞ্চগড় সদর থানার ওসিকে জানানো হয়। বিষয়টি পুলিশের হস্তক্ষেপে সুষ্ঠু সমাধান করে ভারসাম্যহীন নারীর কাছে তার বাচ্চা ফেরত দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, যেহেতু ওই নারীর বাড়ি বোদা উপজেলায়, সেখানকার ইউএনওকে জানিয়ে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ