বিয়ে করতে ভয় পাচ্ছেন? আপনি গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্ত নয়তো
প্রতীকী ছবি
বিয়ে করতে ভয় পাওয়াও এক ধরনের ফোবিয়া। এই রোগের নাম হচ্ছে গ্যামোফোবিয়া। গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষের মাঝে বিবাহিত জীবন নিয়ে এক ধরনের ভীতি কাজ করে থাকে সব সময়। নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে চিন্তায় মগ্ন থাকেন এই ধরনের ফোবিয়ায় আক্রান্ত মানুষেরা। যাদের গ্যামোফোবিয়া হয়, তারা সাধারণত সম্পর্কের ব্যাপারে বেশ উদাসীন থাকেন। বিয়ে সংক্রান্ত যেকোনো আলোচনা তারা অপছন্দ করেন। তারা মনে করেন সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়াটা হয়ত ভুল সিদ্ধান্ত হবে।
ডিজএ্যাবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশনের মনোবিজ্ঞানী এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী নাঈমা ইসলাম অন্তরা জানান, গ্যামোফোবিয়া হলো প্রতিশ্রুতির ভয়, বিশেষ করে সম্পর্ক এবং বিয়ের ক্ষেত্রে। এই ফোবিয়া দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি বা বিয়ের ধারণার সাথে সম্পর্কিত। যারা এ ফোবিয়ায় আক্রান্ত তারা অমূলক ও অযৌক্তিক ভয়ে ভীত হয়ে পড়েন।
গ্যামোফোবিয়ার কারণ:
১. অতীতের আঘাত, অতীতের সম্পর্কের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা, অবিশ্বাস বা বেদনাদায়ক বিচ্ছেদের কারণে অনেকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান।
২. ব্যক্তির পারিবারিক ইতিহাসে যদি অস্বাস্থ্যকর সম্পর্ক, বিচ্ছেদ ও এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলেও বিয়ে ভীতি হতে পারে।
৩. ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যও গ্যামোফোবিয়ার কারণ হতে পারে। যেমন অনেকে স্বাভাবিকভাবেই খুব উদ্বিগ্ন থাকেন, আবার তারা প্রচুর স্বাধীনতা চান। এ ধরনের ব্যক্তিরা মনে করেন বিয়ে করলে স্বাধীনভাবে, নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচা যাবে না। তাই বিয়ে ভীতিতে ভীত হন।
৪. সাংস্কৃতিক বা সামাজিক চাপ যেমন বিয়ের বিষয়ে সামাজিক প্রত্যাশা, চাপ, উদ্বেগও ভয়ের কারণ হতে পারে।
যেসব লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনি এ রোগে আক্রান্ত: আপনার মধ্যে যদি কাউকে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ভয় কাজ করে, একজনের সঙ্গে জীবন কাটাতে হবে এ ভয়ে যদি সম্পর্ক থেকে পালাতে চান, বিয়ের পর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে ভেবে ভয় পান, সম্পর্ককে উদ্বেগ ও বিষণ্নতার কারণ মনে করেন তাহলে আপনি গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্ত। ভয় ও উদ্বেগ থেকে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে, ঘাম, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি হতে পারে।
গ্যামোফোবিয়া কাটিয়ে ওঠার উপায়: গ্যামোফোবিয়া থেকে মুক্তি পেতে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। বিশেষজ্ঞ ছাড়া পাড়া-প্রতিবেশী কিংবা বন্ধুদের কাউন্সেলিং নিলে যথেষ্ট হবে না। বিশেষজ্ঞরা কগনিটিভ-বিহেভিয়ারাল থেরাপি বা সিবিটি দিয়ে থাকেন। এছাড়াও আপনার রোগের তীব্রতা বুঝে চিকিৎসা দেবেন।
এর পাশাপাশি মেডিটেশন, ব্যায়াম ইত্যাদি চালিয়ে যেতে পারেন। গ্যামোফোবিয়ায় আক্রান্তদের কোনো গ্রুপ থাকলে সেখানে যুক্ত হতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেখানে একই ধরনের ভয়ের কথা অনেকে শেয়ার করেন, পাশাপাশি ভয় কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ পাওয়া যায়, সেখান থেকে উপকার পাওয়া যেতে পারে। সঙ্গী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভয় ও উদ্বেগ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন।