এই গরমে সুস্থ থাকতে কী খাবেন,আর কী খাবেন না
ছবি সংগৃহিত
দেশের তাপমাত্রার পারদ কমছেই না। দেশের অনেক জেলায় চলছে তীব্র দাবদাহ। তীব্র গরমে অতীষ্ঠ জনজীবন। গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ঘাম হয়ে বের হয়। এতে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে শরীরে অস্বস্তি, ক্লান্তির মত একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়। তাই শরীর হাইড্রেটেড রাখতে আপনাকে খেতে হবে পানি ও পানিযুক্ত খাবার।
এছাড়া প্রতি বেলার খাবারে শর্করা, প্রোটিন, স্নেহ, ভিটামিন, মিনারেল ও পানি রাখতে হবে। এতে করে শরীরের ক্লান্তি কমে আসবে। গরমে মৌসুমি ফল খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ হবে। সেই সঙ্গে দেহে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
গরমে কী ধরনের খাবার আমাদের শরীরের জন্য ভালো চলুন জেনে নিই সেগুলো–
পানি
পূর্ণবয়স্ক একজন নারীর দিনে অন্তত ২.৫-৩ লিটার, পূর্ণবয়স্ক একজন পুরুষের ৩-৩.৫ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। তবে কিডনি রোগীদের অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করেই পানির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
গরমে লেবু বা ফলের শরবত খাওয়া খুবই উপকারী। ডাবের পানিও খুব দারুণ কার্যকর। এসব পানীয় খুব সহজেই শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করবে। ডাবের পানি ও ফলের শরবত খেলে পানির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের চাহিদাও পূরণ হবে।
সবজি
কাঁচা পেঁপে, পটল, ধুন্দল, শসা, চিভিঙ্গা, গাজর, লাউ, পেঁপে, পালংশাক, টমেটো, শসায় পানির পরিমাণ বেশি থাকে। পানিশূন্যতা দূর করতে এই খাবারগুলো অবশ্যই খাবার তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন।
তাছাড়া পাতলা করে রান্না করা টক ডাল, সজনে ডাল শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। যাদের ইউরিক এসিড বেড়ে যায় তারা এ সময় ঢেঁড়স, বেগুন এড়িয়ে চলুন।
আখের রস
আখের রস শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খুবই কার্যকরী। আখের রসের সঙ্গে বিট লবণ, পুদিনাপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে খেলে এর স্বাদও বাড়ে, পুষ্টিগুণও বাড়ে।
বেলের শরবত
বেলের শরবত পাকস্থলী ঠান্ডা রাখতে খুব কার্যকর। বেলে রয়েছে বিটা-ক্যারোটিন, প্রোটিন, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ এবং বি২, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ফাইবার।
জিরা পানি
নোনতা স্বাদযুক্ত এই পানীয় হজমে সাহায্য করে।তবে ডায়াবেটিস রোগীরা শরবতে আলাদা করে চিনি বা মধু অ্যাড করবেন না।
পুদিনার শরবত
শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে এবং সতেজ অনুভূতির জন্য পুদিনার শরবত অতুলনীয়।
কাঁঠাল
এতে যে পরিমাণ ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট আছে, তা উচ্চ রক্তচাপ, আলসার, ক্যানসার ও বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। পুষ্টিসমৃদ্ধ এই ফল প্রতিদিন যদি কোনো গর্ভবতী ২০০ গ্রাম খান, তাহলে তার ও গর্ভস্থ শিশুর সব পুষ্টির অভাব দূর হবে।
আম
এতে প্রায় ২৫ রকমের ক্যারাটিনয়েড (রঞ্জক) উপকারী ব্যাকটেরিয়া আছে, যা দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে সবল রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজ
এই ফলে ৯২% পানি থাকে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় দেহে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
বাঙ্গি
এতে প্রচুর ফলিক অ্যাসিড রয়েছে। কিশোরী, গর্ভবতীদের জন্য খুবই ভালো। রক্তস্বল্পতা দূর করে। প্রচুর পানি থাকায় দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু রাখতে পারেন খাদ্য তালিকায়। এটি আপনার শরীরের ফাইবারের চাহিদা পূর্ণ করবে।
কোমল পানীয়
লাচ্ছি, তোকমার শরবত, ইসুবগুলের ভুসির শরবত ও তাজা ফলের রসের মতো বেশ কয়েক ধরনের পানীয় খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।
যা খাবেন না
অনেক কার্বনেটেড বেভারেজ আমরা গরমের সময় প্রচুর খেয়ে থাকি,যা ঠিক না। এই পানীয়গুলো শরীরকে সাময়িক চাঙা করলেও এর কোনো পুষ্টিগুণ নেই, বরং শরীরকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করে। ঝাল, বাইরের খোলা শরবত, বাইরের খাবার, ভাজাপোড়া এ সময় যতটা পারেন এড়িয়ে চলুন। পাতলা ঝোল ঝোল খাবার খাওয়া এ সময় সবচেয়ে ভালো।