যেসব ডাল খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে ৩০ শতাংশ
ছবি সংগৃহিত
ডায়াবিটিসের সমস্যা নিয়ে ভুগছেন অনেকেই। ২০১৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা বিশ্বে ৪০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। ডায়াবিটিস শরীরে বাসা বাঁধলে উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, স্থূলতার মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা মূলত ডায়াবিটিসের অন্যতম কারণ। পরিশ্রম কম করা, অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া, অনিয়মিত জীবনযাপন— এমন কিছু কারণে ডায়াবিটিস আরও জাঁকিয়ে বসে। ফলে সুস্থ থাকতে রোজের জীবনে অনেক নিয়মকানুন মেনে চলা প্রয়োজন। ডায়াবিটিস হলে খাওয়াদাওয়ায় অনেক বদল আনতে হয়। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত ডাল খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবিটিস।
বিভিন্ন ভিটামিন থাকার পাশাপাশি ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম থাকে ডালে। এ ছাড়াও ডালে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ ডালে কম থাকে। অর্থাৎ, ডাল খাওয়ার পর রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ার গতি কমে যায়। ফলে সপ্তাহে এক দিন ডাল খেলেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় প্রায় ৩০ শতাংশ। তবে ডায়াবিটিসের মাত্রা কমাতে সব ডাল সমান উপকারী নয়। ডায়াবেটিক রোগীরা রোজের পাতে কোন ডালগুলি রাখবেন?
মুগডাল
প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে মুগডালে। ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য মুগডাল খুবই উপকারী। কারণ এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৪৩। রক্তে শর্করার মাত্রা প্রতিরোধ করে। পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং কপারের মতো মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট সমৃদ্ধ মুগডাল ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ কার্যকরী।ছোলার ডালছোলার ডালে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ ৮। শরীরের জন্য পুষ্টিকর এই ডাল। পরিমাণে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার পাশাপাশি এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে। ছোলার ডাল আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে। এই ডালে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড শরীরে রক্তাল্পতার সমস্যা দূর করে।
বিউলির ডাল
এই ডালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৪৩। ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য বিউলির ডাল খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। যা রক্তে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ হ্রাস করে। এ ছা়ড়া বিউলির ডালে উপস্থিত পটাশিয়াম রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতেও সমান ভাবে সাহায্য করে বিউলির ডাল।
ছোলার ডাল
ছোলার ডালে সর্বনিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৮। সুস্বাদু হওয়ার পাশাপাশি এটি অত্যন্ত পুষ্টিকরও বটে। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার পাশাপাশি এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে। এটি আপনার কোলেস্টেরল কম রাখে। এছাড়াও, এই ডালে উপস্থিত ফলিক অ্যাসিড আপনার শরীরকে রক্তাল্পতা থেকে রক্ষা করে নতুন লাল রক্তকণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
মসুর ডাল
মসুর ডাল যা সবচেয়ে বেশি খাই আমরা। অন্যান্য ডালের তুলনায় এটি তৈরি করা সবচেয়ে সহজ। মসুর ডালের গ্লাইসেমিক সূচক মাত্র ২৫। এতে কার্বোহাইড্রেট কম এবং ফাইবার বেশি। এছাড়াও এটি প্রোটিনের ভাণ্ডার। বিশেষজ্ঞদের মতে মসুর ডাল রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এতে আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি উপাদান রয়েছে। ফাইবার সমৃদ্ধ এই ডাল আপনাকে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রক্ষা করতেও সহায়ক।
রাজমা ডাল
গ্লাইসেমিক সূচকে নিম্নে রয়েছে রাজমা ডাল। এতে কার্বোহাইড্রেটেড রয়েছে কিন্তু এটি ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপযোগী। রাজমার মধ্যে ভরপুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে, ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
কাবুলি চানা
কাবুলি চানা প্রোটিন ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। তাছাড়া এই ডালে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এই ডাল খুব উপযোগী। কাবুলি চানা সেদ্ধ করে তার স্যালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। এতে বেশি উপকার পাবেন।