বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার

ছবি সংগৃহিত

পৃথিবীতে কোনো খাবারই ক্যান্সার প্রতিরোধের নিশ্চয়তা দিতে পারে না৷ তবে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন কিছুটা উন্নতি করাতে পারে। মূলত দুই তৃতীয়াংশ সবজি জাতীয় খাবার এবং এ তৃতীয়াংশ প্রাণীজ আমিষের সম্মিলনে আদর্শ খাদ্যতালিকা গড়ে নেওয়া যায়।

চিকিৎসকদের ভাষায় ক্যানসারকে বলা হয়‘মাল্টি ফ্যাকেটেরিয়াল ডিজিজ’। কারণ কোনো নির্দিষ্ট কারণে এ রোগ হয় না। আবার কোনো নির্দিষ্ট খাবার ক্যানসার প্রতিরোধও করতে পারে না। তবে সুষম পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। একদিকে যেমন কিছু কিছু খাবার নিয়মিত পাতে রাখার অভ্যাস করতে হবে, অন্যদিকে কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এমন অনেক খাদ্যই আমাদের আশেপাশে খুঁজে পাওয়া যাবে। নিয়মিত এই খাবারগুলো খেলে আপনার উপকার হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আসুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।

ভিটামিন সি জাতীয় খাবার

ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল প্রাকৃতিকভাবে ডিএনএ মেরামত করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কেমোথেরাপির পর কিউয়ি ফল রোগীর শরীরে খুব ভালো কাজ করে।

রঙিন শাকসবজি ও ফলমূল

দৈনিক একধরনের সবজি না খেয়ে বিভিন্ন ধরনের রঙিন শাকসবজি খেতে হবে। কারণ, একটি রঙিন ডায়েট আপনার ক্যানসার লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। বিভিন্ন রঙিন শাকসবজিতে ক্যারোটিন, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন (সি, ই, ফলিক অ্যাসিড ইত্যাদি), মিনারেল ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, পলিফেনল ও ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। 

টকজাতীয় যেসব ফল ক্যানসাররোধী

টক ফলে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি রয়েছে, যা কোষ রক্ষাকারী হিসেবে ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে। এ ছাড়া ভিটামিন সি কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও অ্যানিমিয়া রোধ করতে সাহায্য করে। সাইট্রাস ফলে ভিটামিন সি ছাড়াও রয়েছে ভিটামিন এ, আঁশ, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম। টকজাতীয় ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আঁশ আছে কমলালেবুতে। এরপরই আছে জাম্বুরা। কমলা ও আঙুরে মোট ফাইবারের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ হলো দ্রবণীয়, যা কোলেস্টেরল কমাতে আর রক্তে শর্করার বৃদ্ধি কমাতে সাহায্য করে। টক ফলের পাল্প ও রসে বিভিন্ন প্রকার ফ্ল্যাভোনয়েড রয়েছে। এ ছাড়া টক ফলের খোসায় লিমোনয়েড ও ট্যানগেরিটিন নামক ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। এসব উপাদান কেমোপ্রতিরোধী এজেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা কোলন ক্যানসারসহ একাধিক ক্যানসারের প্রতিরোধক। জুসের থেকে গোটা ফল খেলে ৫ গুণ বেশি ফ্ল্যাভোনয়েড পাওয়া যায়। ফ্ল্যাভোনয়েডে ভালো অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্যানসারের কার্সিনোজেন নির্মূল করে প্রদাহ কমায়।

নাস্তায় পরিবর্তন আনুন

প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ফোলেট নামক উপাদান একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন বি এর উৎস। এই উপাদান কোলন, রেকটাম এবং ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। নাস্তায় যদি ফাইবারজাতীয় খাবার যেমন ওটস, রুটি বা সিরিয়াল খাওয়া যায়, তাহলে ভালো হয়।

প্রসেস করা মাংস খাওয়া বাদ দিন

প্রসেস করা মাংস যেমন বার্গার, কাবাব, শর্মা খাওয়া বাদ দিন। বাজারে জাংক ফুড বা ফাস্ট ফুডের মাংস সচরাচর বিভিন্ন উপায়ে প্রসেস করা হয়। তাছাড়া প্যাকেটজাত বা ফ্রিজে অনেকদিন সংরক্ষণ করা মাংস স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর। কোলন ক্যান্সার, রেকটাম ক্যান্সারের মতো সমস্যাও হতে পারে৷ তাই প্রসেস করা মাংস খাওয়া বাদ দিতে হবে।

টমেটো

লাইকোপেন নামক পিগমেন্টের কারণে টমেটো লাল বর্ণের হয়। আর বিভিন্ন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে টমেটো বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিশেষত প্রস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে টমেটো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

গ্রিন টি

গ্রিন টি বেশকিছু ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার সহ আরো কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধে গ্রিন টির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। এমনকি ফুসফুসের টিস্যু গঠনেও এর ভূমিকা আছে। তাই নিয়ম করে গ্রিন টি পান করার অভ্যাস করুন।

পরিমিত পানি খান

ব্ল্যাডার ক্যান্সার খুবই ভয়ংকর। মূত্রথলীতে ক্যান্সার হতে পারে এমন উপাদানকে দ্রবীভূত করতে পারে পানি। তাই পরিমিত পানি পান করুন।

মাশরুম

ক্যানসার প্রতিরোধক খাবারের নামের তালিকায় প্রথমেই যে খাবারের নাম চলে আসে, তা হলো মাশরুম। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। শরীরের ক্যানসার প্রতিরোধে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন এই খাবার ডায়েটলিস্টে রাখতে পারেন।

রসুন

ক্যানসার প্রতিরোধে রসুনের বিকল্প নেই। রসুনের অ্যালিসিন নামক যৌগ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে। এটি মূলত ক্যান্সারের কোষগুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাই রান্নায় রসুনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। দুপুরের খাবারে এক কোয়া রসুনও রাখতে পারেন।

তৈলাক্ত মাছ

ইলিশ, পাঙাশ, রুই, স্যামন, সার্ডিনের মতো তৈলাক্ত মাছে ভিটামিন বি, পটাশিয়াম, ওমেগা–থ্রির মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি রয়েছে। গবেষণার তথ্য বলছে, যাঁদের খাবারে এ ধরনের তৈলাক্ত মাছ বেশি ছিল, তাঁদের কোলেরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি ৫৪ শতাংশ কম ছিল; পাশাপাশি প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকিও কম ছিল।

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে অবস্থিত সোনালি টকিজ সিনেমা হলে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘বরবাদ’ সিনেমার সন্ধ্যার শো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। ডিসি, বেলকনি এবং প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা হলে ভাঙচুর শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই তাণ্ডবে সিনেমা হলের বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি হলের দেয়ালে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একদল যুবক বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ধাওয়া করলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

কিছু দর্শক অভিযোগ করেন, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বস্ত না করে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে চলে যান। এতে দর্শকেরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং হলের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন।

ঘটনার সময় হলে উপস্থিত থাকা একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উত্তেজিত দর্শকেরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পান।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস জানান, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি ঠিক করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া আনতে যান। কিন্তু দর্শকেরা কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, ঘটনার পর সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছেন। হলের অন্যান্য কর্মীরাও ভয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেন।

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র প্রবেশদ্বার এবং অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অনেক ভারতীয় রাজনীতিবিদ হতাশাজনক এবং নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে উসকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও জোরদার করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ‘১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হলে আজ এ সমস্যা হতো না। আমাদের বাংলাদেশের পরিবর্তে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং তিনি এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।’

ড. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।’

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা