বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

মস্তিষ্কের ক্ষতি করে যেসব বদ-অভ্যাস

ছবি সংগৃহিত

মাথাই তো সব। মস্তিষ্ক ছাড়া কি আর অস্তিত্ব থাকে? মস্তিষ্ক ১০০ বিলিয়ন কোষ দিয়ে তৈরি। মস্তিষ্ক যতই ব্যবহৃত হয়, ততই শক্তিশালী আর কার্যকর হয়। বয়স ৪০-এর পর মস্তিষ্ক ক্রমশ সংকুচিত হতে থাকে। তাই এ সময় পড়াশোনার ধার কমে আসে। বয়স ৬০-এর পর মস্তিষ্ক দ্রুত সংকুচিত হতে থাকে। তাই এ সময় অনেক স্মৃতি হারিয়ে যায়। অনেকে ডিমেনশিয়া (স্মৃতিভ্রংশ) ও আলঝেইমার রোগে ভোগেন। দৈনন্দিন জীবনে আমরা জেনে না-জেনে এমন সব কাজ করি, যেগুলো আমাদের মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। কী সেগুলো? বিজনেস গ্রোথ মেন্টর অনুসারে জেনে নেওয়া যাক।

অতিরিক্ত অন্ধকারে থাকা

অতিরিক্ত অন্ধকারে থাকার অভ্যাস আমাদের মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি করে। আমাদের ভেতর বিষণ্নতার সৃষ্টি করে। এ বিষণ্নতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা মন্থর করে। এ কারণেই শীতপ্রধান দেশে আত্মহত্যার হার বেশি। প্রাকৃতিক আলোতে থাকলে আমাদের মস্তিষ্ক ভালোভাবে কাজ করে।

দীর্ঘসময় একাকী থাকার অভ্যাস

সামাজিকীকরণ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একা একা খুব বেশি সময় কাটানো মস্তিষ্কের জন্য ঠিক ততটাই খারাপ হতে পারে যতটা পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া। আপনি যখন ক্রমাগত অন্যান্য মানুষের কাছাকাছি থাকেন, তখন আপনার মস্তিষ্ক সামাজিক মিথস্ক্রিয়া থেকে উদ্দীপনা পায়। দীর্ঘসময় একাকী থাকা বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং এমনকি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতেচাইলে নিয়মিত বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর বিকল্প নেই।

অত্যধিক রাগ

বলা হয় রাগ আমাদের বিবেককে ধ্বংস করে। কিন্তু কিছু মানুষ ছোটখাটো বিষয়ে রেগে যায়। রাগের কারণে রক্তের ধমনিতে চাপ পড়ে, যার খারাপ প্রভাব পড়ে মানুষের মনে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তির স্মৃতিশক্তি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই শপথ নিন আপনি অত্যধিক রেগে যাবেন না।

সকালের নাস্তা না খাওয়া

সকালের খাবার শরীরের জন্য জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। এটি গ্রহণ না করলে আপনার মস্তিষ্ক দিনের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না। এর প্রভাব আপনার মস্তিষ্কে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে আপনার মস্তিষ্ক ঠিক মতো কাজ করতে পারে না। তাই স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট খান।

অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্ত্রিনের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম ক্লান্তি এবং অনিদ্রার কারণ হতে পারে। বড়দের মতো শিশুরাও যদি স্ক্রিনে অতিরিক্ত সময় কাটায় তাহলে তা তাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে। এ কারণে সবারই স্ক্রিন টাইম সীমিত করা প্রয়োজন।

কম পানি খাওয়া

পানি মস্তিষ্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অনেকেই দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। এই অভ্যাস আপনার স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগকে প্রভাবিত করতে পারে। এ কারণে সারা দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। বিশেষ করে শারীরিক কার্যকলাপের আগে এবং পরে,মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত রাখতে পানি পান প্রয়োজন।

প্রয়োজনের চেয়ে বেশি চিনি

অতিরিক্ত চিনি খাওয়া শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর। এদিকে বার্গার, ফ্রাই, পটেটো চিপস বা কোমল পানীয়ের মতো জাঙ্ক ফুড শিখন, স্মৃতি ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মস্তিষ্কের কার্যকর অংশগুলোকে ক্রমশ সংকুচিত করে ফেলে। অন্যদিকে সবুজ শাকসবজি, ফল ও বাদামজাতীয় খাবার মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধ করে।

 

অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড খাওয়ার অভ্যাস

যে সমস্ত মানুষের খাদ্য তালিকায় বার্গার, ফ্রাই, পটেটো চিপস বা কোমল পানীয়ের মত খাবার থাকে তাদের শিখন, স্মৃতি ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মস্তিষ্কের কার্যকর অংশগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট হয়ে যায়। অন্যদিকে সবুজ শাকসবজি, বেরি ও বাদামজাতীয় খাবার মস্তিষ্কের ক্ষয় রোধ করে।

হেডফোনে উচ্চ শব্দে গান

হেডফোনে ফুল ভলিউমে গান মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে একজনের শ্রবণশক্তি লোপ ঘটাতে পারে। বয়স্কদের মধ্যে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়ার সাথে মস্তিষ্কের রোগ আলজেইমার ও ব্রেইন টিস্যু নষ্ট হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। এর একটা কারণ হতে পারে, আশপাশের ঘটনাগুলো বোঝার জন্য এ ধরনের সমস্যায় ভোগা লোকজনের মস্তিষ্ককে অধিক পরিশ্রম করতে হয়। তাই ডিভাইসের ভলিউম ৬০% এর বেশি বা একটানা দুই ঘণ্টার বেশি গান শোনা এড়িয়ে চলুন।

শরীরচর্চা না করা

নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে ডিমেনশিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। শুধু মস্তিষ্কের রোগই নয় এর ফলে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। আর এর সবগুলোই আলজেইমারের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এর থেকে মুক্তি পেতে ম্যারাথনের মত দৌড়ের প্রয়োজন নেই। পার্কে বা বাসার আশপাশে আধ ঘণ্টার হাঁটাই এর জন্য যথেষ্ট। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ধূমপান ছাড়তে না পারা

ধূমপান মস্তিষ্কের আয়তন ছোট করে ফেলতে পারে। স্মৃতিশক্তি হ্রাসের জন্য এই বদভ্যাসটিকে দায়ী করা হয়। সেই সাথে ডিমেনশিয়া ও আলজেইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় ধূমপান। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা বৃদ্ধি করে এটি।

 

প্রাকৃতিক আলোর অভাব

পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলোর অভাব বিষণ্ণতা বা অবসাদের মত মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে যা মস্তিষ্ককে মন্থর করে ফেলে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রাকৃতিক আলো থাকলে ভালোভাবে কাজ করে আমাদের মস্তিষ্ক।

 

 

Header Ad
Header Ad

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর

ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে একটি সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রচার বন্ধ হয়ে গেলে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা ব্যাপক ভাঙচুর চালান। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মাছ মহালে অবস্থিত সোনালি টকিজ সিনেমা হলে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ঈদ উপলক্ষে চলমান ‘বরবাদ’ সিনেমার সন্ধ্যার শো দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর দর্শক সমাগম ঘটে। ডিসি, বেলকনি এবং প্রথম শ্রেণির টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু সিনেমার মাঝপথে সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়, ফলে সিনেমা প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকেরা হলে ভাঙচুর শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে চলা এই তাণ্ডবে সিনেমা হলের বসার বেঞ্চ, চেয়ার ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর করা হয়। পাশাপাশি হলের দেয়ালে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নিচতলায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় একদল যুবক বিক্ষুব্ধ দর্শকদের ধাওয়া করলে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।

কিছু দর্শক অভিযোগ করেন, যান্ত্রিক ত্রুটির সময় হল কর্তৃপক্ষ কোনো আশ্বস্ত না করে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে চলে যান। এতে দর্শকেরা আরও বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন এবং হলের বিভিন্ন অংশ ভাঙচুর করেন।

ঘটনার সময় হলে উপস্থিত থাকা একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, উত্তেজিত দর্শকেরা তাকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে তিনি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ কক্ষের লাইট বন্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে ভেতরে বসে থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পান।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রজিত কুমার দাস জানান, সিনেমা চলার সময় সাউন্ড সিস্টেমে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেটি ঠিক করতে না পেরে কর্তৃপক্ষ বাইরে থেকে সাউন্ড সিস্টেম ভাড়া আনতে যান। কিন্তু দর্শকেরা কলাপসিবল গেটে তালা লাগানো দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং পরবর্তীতে ভাঙচুর চালান।

এদিকে, ঘটনার পর সিনেমা হলের দায়িত্বে থাকা হারুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানা যায়, তিনি অসুস্থ হয়ে বিশ্রামে আছেন। হলের অন্যান্য কর্মীরাও ভয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Header Ad
Header Ad

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে এক বক্তৃতায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যকে (সেভেন সিস্টার্স) স্থলবেষ্টিত বলে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এ অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের অভিভাবক হিসেবে বর্ণনা করেন।

ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য সম্পূর্ণরূপে স্থলবেষ্টিত। সমুদ্রের সঙ্গে তাদের কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। ফলে বাংলাদেশ এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র প্রবেশদ্বার এবং অভিভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও কূটনীতিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে অনেক ভারতীয় রাজনীতিবিদ হতাশাজনক এবং নিরাপত্তার জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।

ভারতের আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা মন্তব্য করেছেন, ড. ইউনূসের বক্তব্য ভারতের ‘চিকেনস নেক’ করিডোরের দুর্বলতা নিয়ে পাকিস্তান ও চীনের দীর্ঘদিনের প্রচারণাকে উসকে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ আরও জোরদার করতে শক্তিশালী রেল ও সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।

ত্রিপুরার আদিবাসী দল টিপ্রা মোথার নেতা প্রদ্যোত মানিক্য বলেন, ‘১৯৪৭ সালে চট্টগ্রাম ভারতের অংশ হলে আজ এ সমস্যা হতো না। আমাদের বাংলাদেশের পরিবর্তে নিজস্ব সমুদ্রবন্দর প্রয়োজন।’

বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার বীণা সিক্রি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতের সমুদ্র প্রবেশাধিকার নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ইতোমধ্যেই চুক্তি রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্য অত্যন্ত হতাশাজনক এবং তিনি এ ধরনের মন্তব্য করার অধিকার রাখেন না।’

ড. ইউনূসের বক্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক কংগ্রেস নেতা। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা পবন খেরা মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের অবস্থান উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।’

Header Ad
Header Ad

মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু

সাবেক ইমাম সোয়ে নেই ওও। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। বিদায় নিচ্ছে রহমত, বরকত ও মাগফিরাতের মাস রমজান। শেষ জুমার নামাজ আদায় করতে মুসলমানদের মধ্যে আগ্রহ ছিল চরমে। কিন্তু কে জানত, এই জুমাই শত শত মুসল্লির জীবনের শেষ জুমা হয়ে উঠবে!

গত ২৮ মার্চ, শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। সাগাইং অঞ্চলের পাঁচটি মসজিদে তখন নামাজ আদায় করছিলেন অসংখ্য মুসল্লি। শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিনটি মসজিদ ধসে পড়ে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মায়োমা মসজিদ। এই মসজিদে নামাজরত প্রায় সবাই প্রাণ হারান।

মায়োমা মসজিদের সাবেক ইমাম সোয়ে নাই ওও তখন মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী শহর মায়ে সোতে অবস্থান করছিলেন। সেখানেও তিনি ভূমিকম্প অনুভব করেন, তবে বুঝতে পারেননি কী পরিমাণ বিপর্যয় তার অপেক্ষায় রয়েছে।

সোয়ে নাই ওও একসময় মিয়ানমারের ইমাম ছিলেন, তবে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যান এবং বর্তমানে একটি মানবাধিকার সংস্থায় কাজ করছেন। ভূমিকম্পের পরের দিনগুলোতে একের পর এক শোকসংবাদ পেতে থাকেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি জানতে পেরেছেন, তার প্রায় ১৭০ জন আত্মীয়, বন্ধু ও প্রাক্তন মুসল্লি মারা গেছেন। তাদের বেশিরভাগই মসজিদে অবস্থান করছিলেন, অনেকেই মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোয়ে নাই ওও বিবিসিকে বলেন, ‘আমি প্রাণ হারানো সব মানুষের কথা ভাবছি। তাদের শিশুদের কথা ভাবছি... এই শোক সহ্য করা অসম্ভব।’

সাগাইং অঞ্চল মূলত বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য পরিচিত হলেও এখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। নানা নিপীড়ন ও নির্যাতন সত্ত্বেও তারা এ অঞ্চলে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময় মসজিদে নামাজরত অবস্থায় প্রায় ৫০০ মুসলমান মারা গেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ সংলগ্ন মায়োমা স্ট্রিট ও শহরতলি। ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে।

এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর সাগাইং ও মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনো ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশটির জান্তা সরকার জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪৪১ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৫২১ জন। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং এক টেলিভিশন ভাষণে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, নিহতের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

মিয়ানমারের ভূমিকম্পটি ছিল ৭ দশমিক ৭ মাত্রার। এর কেন্দ্রস্থল ছিল মান্দালয় শহর থেকে ১৭.২ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রথম কম্পনের ১২ মিনিট পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আফটারশক হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই বিধ্বংসী ভূমিকম্পে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকর্মীরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা রয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল
রাশিয়া আমাদের চিরকালের বন্ধু, কখনো শত্রু নয়: চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান খালেদা জিয়ার
দ্বিতীয় দফায় মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা পাঠালো বাংলাদেশ
ভারতে প্রশিক্ষণ প্লেন বিধ্বস্ত, পাইলট আহত
এপ্রিলে ঢাকায় আসছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল
জাপানে মেগা ভূমিকম্পের শঙ্কা, প্রাণহানি হতে পারে ৩ লাখ
জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক পুরস্কার নিয়ে যা জানাল যুক্তরাষ্ট্র
দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা