ঝগড়ার সময় রাগ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল
প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
মানসিক স্বাস্থ্যের স্বাভাবিক একটি আবেগ রাগ। অনেকেই রেগে গেলে ভাঙচুর করেন, উচ্চস্বরে চিৎকার করেন, এমনকি গায়ে হাতও তুলে ফেলেন। অতিরিক্ত রাগের প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। দেখা দিতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, খিটখিটে মেজাজের মতো সমস্যাও। তাই লাগাম টেনে ধরতে হবে এই রাগ নামক আবেগের।
রাগকে বশে আনা বেশ কঠিন ব্যাপার। কিন্তু কয়েকটি সহজ কৌশল মাথায় রাখলে খুব সহজ হয়ে যাবে ব্যাপারটি। চলুন জেনে নিই সেগুলো-
সবচেয়ে জরুরি কথা শোনা
কমবেশি প্রতিবার ঝগড়ার মূলে থাকে দুই পক্ষের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ যোগাযোগের অভাব। মনোযোগ ও ধৈর্য ধরে অপরের কথা শুনলে সহজেই অনেক ঝগড়ার সমাধান করা সম্ভব। ঝগড়ার সময় সবাই বেশ আবেগতাড়িত থাকেন। আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেকেই নিজেদের মনের কথা ঝগড়ার সুরে হলেও খুলে বলেন। তাই ঝগড়ার সময় অন্তত অপর পক্ষকে কথা বলার সুযোগ দিন। প্রয়োজনে নিজের অবস্থানও খুলে বলুন। ফলে দুই পক্ষই নিজেদের অবস্থান বুঝতে সমর্থ হবে।
দ্রুত স্থান ত্যাগ করুন
হঠাৎ বেশি রাগ করে ফেললে সেই সময় ওই স্থান দ্রুত ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে। যে মানুষটির ওপর আপনার রাগ তার কাছ থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে থাকলে কিছুক্ষণ পর রাগ নিজে থেকেই কমে আসতে পারে। নিজেকে পরাজিত মনে করবেন না। বরং ভাবুন আপনি রাগকে পরাজিত করে নিজে জয়ী হয়েছেন। স্থান ত্যাগ করা যদি সম্ভব না হয়, অবস্থান পরিবর্তন করুন। যেমন আপনি দাঁড়িয়ে থাকলে বসে পড়ুন।
উল্টো গণনা শুরু করুন
বহুকাল ধরে প্রচলিত এই প্রক্রিয়াটি রাগ নিয়ন্ত্রণে সত্যিই ভাল কাজ করে। মনে হচ্ছে কোন ঘটনায় আপনি বিরক্ত হচ্ছেন, ভেতরে ভেতরে রেগে যাচ্ছেন তখন পিছন দিক থেকে ১০০ গুনতে শুরু করুন। এটি সাময়িকভাবে আপনার মনোযোগকে সরিয়ে দেবে এবং কোনো নেতিবাচক চিন্তা করার আগে বেশ কিছুটা সময় পাওয়া যাবে রাগকে নিয়ন্ত্রণে আনার।
নিঃশ্বাসের ব্যায়াম
তাৎক্ষণিক রাগ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিঃশ্বাসের ব্যায়াম বেশ পুরনো ও কার্যকরী পদ্ধতি। রাগ থেকে মনটাকে সরিয়ে নিশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। বুক ভরে গভীর নিশ্বাস নিন, সেটাকে কিছুক্ষণ ধরে রাখুন, কিছুক্ষণ পর বাতাস ছেড়ে দিন। এটি রাগ কমাতে সহায়তা করে।
বলার আগে সময় নিন
মুহূর্তের উত্তাপে এমন কিছু বলা উচিত নয় যার জন্য পরবর্তীতে অনুশোচনা করতে হয়। রাগের মুহূর্তে আমরা এমন সব কথা বলে ফেলি যা পরিস্থিতিকে আরও সংকটময় করে তোলে।কিছু বলার আগে নিজে চিন্তা করে নিন কয়েক মুহূর্ত। ভাবুন, আপনার এই কথা বা আচরণে আরেকজনের প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে।
ক্ষমা করতে শিখুন
রাগকে নিজের মধ্যে পুষে না রেখে, ক্ষমা করতে শিখুন। ক্ষমা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। আপনি যদি রাগ বা অন্যান্য নেতিবাচক অনুভূতিগুলোকে নিজের মধ্যে লালন করতে থাকেন তবে নিজের ভেতরের তিক্ততা আপনাকে আরও গ্রাস করবে।