সুন্দরী স্ত্রী থাকতেও কেন পুরুষরা পরকীয়া করে!
ছবি সংগৃহিত
পরকীয়া শব্দটি এখন অতিপরিচিত। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই অহরহ শোনা যায় পরকীয়ার ঘটনা।পরকীয়ার জন্য ভেঙে যাচ্ছে সংসার, খুন হচ্ছে সন্তান। তবে অনেকে জানতে চায় কেন এই পরকীয়া।পরকীয়ার জন্য দায়ী কোন বিষয়গুলো দায়ী। নাকি সম্পূর্ণ মনের ব্যাপার এটি।আসলে কী কারণে পরকীয়ার জড়ায় পুরুষ।
পরকীয়া কি?
পরকীয়া হলো বিবাহিত কোনো ব্যক্তির (নারী বা পুরুষ) স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকাণ্ড। মানবসমাজে এটি লঘু বা গুরুভাবে নেতিবাচক হিসেবে গণ্য।
বিবাহিত জীবনে সুখী না হওয়ার কারণেই নাকি বিবাহিত পুরুষরা পরকীয়ায় জড়ান, এমনটিই জানাচ্ছেন সম্পর্ক বিষারদরা।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষদের মধ্যে প্রতারণার সম্ভাবনা নারীদের তুলনায় বেশি। একজন বিবাহিত পুরুষ বিভিন্ন কারণে অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট হতে পারেন।
তার মধ্যে অন্যতম হলো দাম্পত্য জীবনে অসন্তুষ্ট হওয়া। এছাড়া একজন বিবাহিত পুরুষ অন্য নারীর প্রতি অভিকর্ষ বোধ করার অন্যতম কারণ হতে পারে শারীরিক আকর্ষণ।
এমনকি একজন পুরুষ অন্য নারীর প্রতি আকৃষ্ট বোধ করতে পারেন যদি তার মধ্যে এমন গুণ থাকে যা তার স্ত্রীর নেই।
এছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে একজন পুরুষ বিবাহিত হয়েও অন্য নারীতে আকৃষ্ট হতে পারে। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এর সম্ভাব্য কারণগুলো সম্পর্কে-
পারিবারিক কলহ
আসলে সম্পর্ক বেঁচে থাকে বোঝাপড়ার উপর। আপনি যদি স্ত্রীয়ের সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে পারেন, তবে অন্য কারও প্রয়োজন পড়ে না। তবে সেই কাজটা সম্ভব না হলেই মন অন্যদিকে ছুটতে পারে। এই সময়টায় যাঁরা নিজেকে ধরে রাখতে পারেন না, তাঁদের সম্পর্কে জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
ভালো সময় কাটানো হয় না
একসঙ্গে থাকা মানেই কিন্তু সুখী সংসার নয়। নিজেদের সময় দিতে হবে। সেই সময়টা আনন্দে কাটাতে হবে। যাকে বলে কোয়ালিটি টাইমস। নিজেদের মধ্যে এই সময়টুকু কাটাতে না পারলেই মন অন্য পথে বেঁকে যায়। তখন আর কিছুই মাথায় থাকে না। এবার থেকে এই বিষয়টি মাথায় রাখুন। তবেই নিজেকে আটকে রাখতে পারবেন।
সময় নেই
ভালো সময় কাটানো বাদ দিন, অনেকের হাতে তো কিছুটা সময়ও নেই। সেই কারণেই সমস্যা তৈরি হয় জীবনে। আসলে এতটা ব্যস্ততা থাকলে সম্পর্ক এগনো যায় না। সময়ের অভাবে রসায়ন তরল হয়ে পড়ে। আকর্ষণ থাকে না। এবার থেকে এই বিষয়টি মাথায় রাখার চেষ্টা আপনাকে করতে হবে। তবেই নিজেদের বাঁচাতে পারবেন।
আগেও এমন অভ্যাস থাকলে
অনেকে একজনের সঙ্গে বেশিদিন থাকতে পারেন না। তাঁরা একঘেয়ে হয়ে যান গোটা বিষয়টি নিয়ে। এবার এমন পুরুষ কিন্তু বিয়ের পরও অন্য নারীর প্রেমে পড়বেন। এখানে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। বরং এমনটা না হলেই বুঝবেন কিছু একটা বদল ঘটল। তাই এই কারণটা অবশ্যই মাথায় ঢুকিয়ে নিন। তবেই সংসার সামলে নিতে পারবেন।
অপূর্ণ প্রত্যাশা
সঙ্গীর কাছ থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা থাকে নারীর। অনেক আশা করে বিয়ে করেছেন, কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। এমন ক্ষেত্রে পুরুষরা শুরু করেন নতুনের খোঁজ।
ডিআরডিফোর জিন
কারো মধ্যে যদি ডিআরডিফোর জিনের উপস্থিতি বেশি হয়, তাদেরও পরকীয়া বা বাড়তি সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা থাকতে পারে।
মানসিক সমস্যা
মানসিক সমস্যার কারণেও মানুষ পরকীয়ায় জড়াতে পারে। যাদের মধ্যে বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার আছে, তাদের পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। তারা কোনো কিছুর মধ্যে স্থিরতা খুঁজে পায় না।
পশ্চিমা সংস্কৃতি
অনেক সময় পশ্চিমা সংস্কৃতির ধাঁচ নিজেদের মধ্যে আনতে চায়, তখন পরকীয়া বাড়ে। এ ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব, দূরত্ব ইত্যাদির জন্যও অন্যের প্রতি আগ্রহ, আসক্তির ঘটনা ঘটে।
শখ থেকে পরকীয়া
অনেকে শখ থেকেও পরকীয়ায় জড়ায়। অন্য আরেকটি শরীর কেমন, একে জানার একটি আগ্রহ থাকে। অনেকে আবার ভাবে, ‘ওরা কি সুখী! এই মানুষটির সঙ্গে থাকতে পারলে হয়তো আমার অনেক সুখ লাগত।’ এ থেকেও অনেকে ওই ব্যক্তির প্রতি আগ্রহ অনুভব করে।
দূরত্ব ও শূন্যতা
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন শূন্যতা তৈরি হয়, তখন আরেকজন সেখানে প্রবেশ করে। হয়তো স্বামী বা স্ত্রীর আর আগের মতো করে কথা বলে না বা আদর করে না। যত্ন কম নেয়। এই বিষয়গুলোর কারণে অন্যের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়।
স্ত্রী দূরে গেলে
স্ত্রী দূরে থাকলেও এ সমস্যা হতে পারে। শুধু যৌনতায় অংশগ্রহণ নয়, কথাবার্তায়ও বিষয়টি থাকতে হয়। তখন যদি অন্য কেউ সেই কথাগুলো শোনায়, তাহলে তার প্রতি আগ্রহ কাজ করে।
সন্তান হওয়ার পর
সন্তান হওয়ার পর অনেক মেয়ে স্থূল হয়ে যায়। এতে স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। আবার নারীর বেলায়ও অনেকে হয়তো খুব হ্যান্ডসাম ছেলে পছন্দ করে, যা হয়তো তার স্বামীর সঙ্গে মেলে না।
তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক প্রয়োজন মেটানোর বিষয়টিই এখানে মুখ্য হয়। এসব ভাবনা ব্যক্তিকে পরকীয়ার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।
ইসলামি রাষ্ট্রসমূহে এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, যা হলো পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান। মনোচিকিৎসায় এ কথা স্বীকৃত যে, বাবা-মার পরকীয়া সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এবং সামাজিক সম্পর্ক ও যোগাযোগে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সন্তানের মানসিক বিষণ্ণতার ও আগ্রাসী মনোভাবের জন্ম দেয়।