সবুজ না গোলাপি- কোন পেয়ারা বেশি পুষ্টিকর?
ছবি সংগৃহিত
সারা বছর পাওয়া যায়, এমন একটি ফল পেয়ারা। দেশীয় এই ফল দামে সস্তা ও সহজলভ্য। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেয়ারার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। পেয়ারায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমলকী ছাড়া অন্য যেকোনো ফলে পাওয়া যায় না। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ পেয়ারার রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা।
পুষ্টিগুণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি পেয়ারায় ৪টি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ, বিশেষ করে ভিটামিন সি রয়েছে। একটি পেয়ারায় রয়েছে চারটি আপেল ও চারটি কমলালেবুর সমান পুষ্টিগুণ। এতে আছে প্রচুর পরিমাণ পানি, ফাইবার, ভিটামিন এ, বি, কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও খনিজ পদার্থ। পেয়ারা ভিটামিন সি–এর ভালো উৎস। এতে ২১১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ভিটামিন সি মুখগহ্বর, দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে।
সাধারণত ফলে ভিটামিন এ সরাসরি পাওয়া যায় না। এটি প্রথমে ক্যারোটিন রূপে থাকে, পরবর্তী সময়ে তা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। ক্যারোটিন শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। চোখের রেটিনা ও কোষের সুস্থতা বজায় রাখতে এটি সাহায্য করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারায় শূন্য দশমিক ২১ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি ওয়ান ও শূন্য দশমিক শূন্য ৯ মিলিগ্রাম বি টু পাওয়া যায়।
পেয়ারা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। এখন সারা বছরই পেয়ারা পাওয়া যায়। পেয়ারা ভিটামিন এ, বি, কে, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস-সহ বহু গুণে সমৃদ্ধ। এই ফল বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী।
বিভিন্ন ধরনের পেয়ারা পাওয়া যায়। একটির ভিতর সাদা বা হলুদ। আর অন্যটির লালচে বা গোলাপি। অনেকেরই প্রশ্ন, সব ধরনের পেয়ারায় কি একই রকম পুষ্টিগুণ থাকে?
রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করতে পেয়ারা দারুণ কাজে লাগে। হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও পেয়ারা উপকারী। এছাড়াও পরিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে পেয়ারা। ওজন কমাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। এর বেশ কিছু উপাদান দাঁত, ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী।
শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা বলছে, পেয়ারার বেশ কয়েকটি উপাদান ক্যান্সারের মতো মারাত্মক অসুখ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদদের মতে, গোলাপি শাঁসযুক্ত পেয়ারায় পানি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। তবে অন্য পেয়ারার তুলনায় শর্করা, ভিটামিন সি-এর পরিমাণ এতে অনেকটাই কম। সাদা শাঁসযুক্ত পেয়ারায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি হলেও তা গোলাপি শাঁসযুক্ত পেয়ারার মতো নয়।
পাশাপাশি আবার ভিটামিন এ, সি, ওমেগা ৩, ওমেগা ৬ পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ডায়েটারি ফাইবারের মতো বহু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মজুত থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গোলাপি শাঁসযুক্ত পেয়ারা খুব ভালো।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে
ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে খুব কাজ দেয় পেয়ারা। পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলিটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারাপাতাও বেশ কার্যকরী।
দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে
কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ–এর ভালো উৎস। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রাতকানা রোগ প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পেয়ারা রাখা প্রয়োজন।