জামিনে বেড়িয়ে আসছে ইন্টারপোলের তালিকায় থাকা ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা
ছবি: সংগৃহীত
ইন্টারপোলের রেড লিস্টে থাকার পরেও একে একে মুক্তি পাচ্ছেন ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। এরইমধ্যে ৬ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।
এতে উদ্বিগ্ন প্রকাশ করে অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসীরা ছাড়া পাওয়ায় অপরাধ বাড়বে, অবনতি হতে পারে আইনশৃঙ্খলার ব্যবস্থার। অবশ্য, কারা কর্তৃপক্ষের দাবি-নিয়ম মেনেই ছাড়া পাচ্ছে আসামিরা। যমুনা টিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকা করে সেসময়কার সরকার। তালিকার একজন আব্বাস উদ্দিন ওরফে কিলার আব্বাস।
গত ১৩ আগস্ট কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্তি পান অর্ধডজন হত্যা মামলার এই আসামি। এর দু’দিন আগে ছাড়া পেয়েছেন, চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ৩৬ মামলার আসামি নাছির উদ্দিন ওরফে শিবির নাসির। চলতি মাসের শুরুর দিকে একই কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯টি হত্যাসহ অন্তত ২২ মামলার আসামি আসলাম হোসেন ওরফে সুইডেন আসলাম।
এর আগে একে একে জামিনে বেরিয়ে আসেন ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইমন, নাইম আহমেদ টিটন, ফ্রিডম রাসু, পিচ্চি হেলালের মত সন্ত্রাসীরা। জামিন নিয়ে লাপাত্তা কয়েকজন। যাদের বেশিরভাগে নামে ঝুলছে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়ার পরই কারামুক্ত হচ্ছে এসব আসামি।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জেলার লুৎফর রহমান বলেন, জামিন ছাড়া কেউ যেতে পারবে না। যারা যারা গিয়েছেন, সবাই সঠিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই গিয়েছেন।
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অনেকটাই নিষ্ক্রিয় পুলিশসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থাগুলো। দাগি সন্ত্রাসীদের এভাবে জামিনে মুক্তি পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে, মনে করছেন অপরাধ বিশ্লেষকরা।
অপরাধ বিশ্লেষক ড. হাফিজুর রহমান কার্জন বলেছেন, ‘আমরা কিন্তু অনেকগুলো ঘটনা জানি যে উচ্চ আদালত থেকে এসব অপরাধীরা হত্যা মামলার আসামি হিসেবে জামিনে বেরিয়ে আসে আবার হত্যা করেছে। এটা প্রযোজ্য যারা সাধারণ হত্যা মামলার আসামি। আর যারা শীর্ষ সন্ত্রাসী রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে-তো শুধুমাত্র হত্যা হয়, নানা ধরনের অপরাধ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। তারপর নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাতে করে তো, দেশের যে সামগ্রিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সেটার-ই অবনতির একটা আশঙ্কা আমরা করছি।’
শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিনের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষেরও দায় আছে বলে মনে করেন আইনের এই অধ্যাপক। তবে, এই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ-র্যাবের উর্ধ্বতন কেউ কথা বলতে রাজি নন বলে এই প্রতিবেদনে জানা গেছে।