হিজাবের পর বোরকাও নিষিদ্ধ হচ্ছে ফ্রান্সের স্কুলে
ছবি সংগৃহিত
ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে হিজাব নিষিদ্ধ হয়েছিল আগেই। এবার বোরকার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চলেছে দেশটি। সেখানে আর বোরকা পরে স্কুলে যেতে পারবে না কোনো মুসলিম ছাত্রী। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের স্কুলে শুরু হতে যাওয়া নতুন বর্ষ থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে। ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে এই নতুন নিয়ম চালু হবে। ফ্রান্সের সরকারি বিদ্যালয় ও সরকারি ভবনে যেকোনো ধরনের ধর্মীয় চিহ্নের ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ জন্য উনিশ শতক থেকে কঠোর আইন করে রেখেছে দেশটি।
গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল পুনরায় খোলার আগেই জাতীয় পর্যায়ে সবার কাছে তিনি নতুন নিয়মটি সুস্পষ্ট করবেন বলে জানান। দেশটির সরকারি স্কুলগুলোতে ২০০৪ সাল থেকে মেয়েদের মাথায় স্কার্ফ বা হিজাব পরিধান নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে বোরকা পরিধান করা মুসলমান মেয়েদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দেশটির বামপন্থী দলগুলো মুসলমান নারী ও মেয়েদের অধিকার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এলেও ডানপন্থী দলগুলো মুসলমান নারীদের এই পোশাক নিষিদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
টিভি চ্যানেল টিএফ১-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্যাব্রিয়েল অ্যাটাল বলেন, 'একটি শ্রেণিকক্ষে গিয়ে শুধু শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়েই তাদের ধর্ম শনাক্ত করতে পারার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে স্কুলে আর আবায়া পরিধান করা যাবে না।'
ফ্রান্সের স্কুলগুলোতে আবায়া বা বোরকা পরিধান নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে বিতর্কের পর দেশটির শিক্ষামন্ত্রী নতুন এই সিদ্ধান্তের কথা জানালেন। এ নিয়ে দেশটির ৫০ লাখ মুসলিম অধিবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
কয়েকটি মুসলিম সংগঠন নিয়ে গঠিত জাতীয় সংস্থা ফ্রেন্স কাউন্সিল অব মুসলিম ফেইথ (সিএফসিএম) জানিয়েছে, শুধু পোশাকের প্রকারভেদগুলো কোনো ধর্মীয় প্রতীক হতে পারে না।
ফরাসি স্কুলগুলোতে আবায়া পরা নিয়ে কয়েক মাস ধরে বিতর্ক চলার প্রেক্ষাপটে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলো। স্কুলগুলোতে অনেক দিন ধরেই হিজাব পরা নিষিদ্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, উনিশ শতক থেকেই ফ্রান্সে সরকারি স্কুল ও ভবনগুলোতে ধর্মীয় প্রতীক বা নিদর্শন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশটির যুক্তি হচ্ছে: ধর্মীয় প্রতীক বা নিদর্শনের ব্যবহার ধর্মনিরপেক্ষতার আইন লঙ্ঘন করে। এমনকি স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্যাথলিক প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে খ্রিষ্টান ধর্মের প্রতীকে গলায় বড় ধরনের ক্রস পরাও নিষিদ্ধ।