গুজরাটে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে নদীতে, নিহত বেড়ে ১৪১
গুজরাটের মোরবিতে নদীর উপর ঝুলন্ত সেতু ভেঙে নদীতে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকালে এক প্রতিবেদনে সবশেষ আপডেটে নিহতের এ সংখ্যা জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এর আগে রবিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই প্রাথমিকভাবে নিহতের সংখ্যা ৪০ বলে জানানো হয়েছিল।
যে ঝুলন্ত সেতুটি ভেঙে পড়ে, তা সংস্কারের পর কিছু দিন আগেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তার পর ছয় দিনের মাথায় এ বিপর্যয় ঘটল।
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে আহতও হয়েছেন বহু মানুষ। অভিযোগ, এই সেতু জনসাধারণের জন্য চালু করার আগে প্রশাসনের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত নেওয়া হয়নি। সেতুর ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ নেওয়া হয়নি। রবিবার সন্ধ্যার বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসাবে কর্তৃপক্ষের এই গাফিলতিকে দায়ী করছেন কেউ কেউ।
সঙ্কীর্ণ সেতুটিতে রবিবার সন্ধ্যায় প্রায় ৫০০ মানুষ উঠে পড়েছিলেন বলে দাবি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সেতুর উপর দাঁড়িয়ে অনেকেই লাফালাফি করছিলেন। এর পরেই নদীর উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
জানা গেছে, সেতুটি সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ‘ওরেভা’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থাকে। সংস্কারের জন্য দীর্ঘ ৭ মাস সেতুটি বন্ধ ছিল। গত ২৬ অক্টোবর তা খোলা হয়। মোরবি পুরসভার তরফে সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ওই সংস্থা তাদের কাছ থেকে কোনো প্রশংসাপত্র নেয়নি। এমনকি সেতু সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যও সরকারকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। সরকার এই সেতু সম্পর্কে তেমন কিছুই জানত না, দাবি মোরবি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের।
রবিবার সারারাত উদ্ধারকাজ চলে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং উদ্ধারকারীসহ অন্তত ২০০ জন উদ্ধারকাজে অংশ নেন।
এদিকে তিন দিনের সফরে গুজরাটে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার সফরের মধ্যেই এই বিপর্যয়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলকে ফোন করে রাজ্য প্রশাসনকে উদ্ধারকাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন মোদী। মৃতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে গুজরাট সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া আহতদের ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা করবে সরকার। সেতু বিপর্যয়ে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলের পক্ষ থেকে এক টুইটে জানানো হয় এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত। আহতদের চিকিৎসা এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে গতি আনতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৫০ বছর আগে নির্মিত মোরবির ঝুলন্ত এই সেতু ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় রয়েছে। গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে মেরামতের পর ২৬ অক্টোবর সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।
আরএ/