যুদ্ধের জন্য নতুন সেনাদের তালিকা করছে রাশিয়া
ইউক্রেনের মাটিতে সম্মুখযুদ্ধে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে রুশ বাহিনী। নতুন সেনা সমাবেশের ঘোষণার পরপরই তা বাস্তবায়ন শুরু করে দিয়েছে রাশিয়া।
এ লক্ষ্য খসড়া তৈরির কাজও শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়া, ইউক্রেনে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বিশাল ভূখণ্ড রাশিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে সেখানে গণভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
এর মধ্যেই রিজার্ভে থাকা সেনাবাহিনীকে তলব করা শুরু হয়েছে। এ নিয়ে রাশিয়ার মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। সেখানে ব্যাপক ধরপাকড়ও করা হচ্ছে। তবে ইউক্রেনে জয় পেতে ক্রেমলিন তাদের সিদ্ধান্তে অনড়।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) ইউক্রেন যুদ্ধে নতুন করে সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিক্ষোভ শুরু হয় রাশিয়ায়। বিক্ষোভ থেকে এক হাজারের বেশি রুশ নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়ান পুলিশ।
বিক্ষোভের সময় সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার করা হয় মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গ শহর থেকে। রাশিয়ান হিউম্যান রাইটস গ্রুপ ওভিডি-ইনফো জানিয়েছে, সব মিলিয়ে ১ হাজার ৩০০ বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুতিন বুধবার জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে ভাষণ দেন পুতিন। এতে তিনি ‘আংশিক সেনা সমাবেশ’ করার ঘোষণা দেন। এ আংশিক সেনা সমাবেশে তিন লাখ রিজার্ভ সৈন্যকে ডাকা হবে বলে তিনি জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাশিয়ার এ সেনা সমাবেশকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধি হিসেবে দেখা হচ্ছে। পুতিনের এ ঘোষণার পর বিক্ষোভ শুরু করেন যুদ্ধবিরোধী রুশ নাগরিকেরা।
মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গ ছাড়াও বিক্ষোভ হয়েছে সাইবেরিয়ার ইরকুতস্ক শহর ও ইয়েকাতেরিনবার্গের মতো শহরগুলোতে।
অন্যদিকে, পুতিনের এমন ঘোষণার পর রাশিয়া থেকে ছাড়া বিমানের টিকিট বিক্রি বেড়ে গেছে। অনেকেই তড়িঘড়ি করে দেশ ছাড়ছেন। যেসব দেশে ভিসা ছাড়াই রুশ নাগরিকেরা যেতে পারেন, সেখান দিয়েই ছুটছেন তারা।
জর্জিয়া সীমান্ত দিয়ে লোকজন দেশ ছাড়ছেন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ সীমান্ত দিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার লোক দেশ ছেড়েছেন। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ লোকজনের দেশ ছেড়ে পালানোর খবরকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
পুতিন তার ভাষণে ইউক্রেন ও এর পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়ার ভূখণ্ড রক্ষায় সামর্থ্যে থাকা সব উপায় প্রয়োগ করব। প্রয়োজনে পারমাণবিক অস্ত্রও ব্যবহার করা হবে। পশ্চিমারা যদি ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ অব্যাহত রাখে, তাহলে মস্কো তার হাতে থাকা অস্ত্রের বিশাল মজুতের শক্তি দিয়েই জবাব দেবে।’
বিক্ষোভকে অননুমোদিত আখ্যা দিয়ে ওই কার্যালয় থেকে বলা হয়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিক্ষোভে অংশ নিতে আহ্বান করা হলে এবং বিক্ষোভে অংশ নিলে সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীকে অসম্মান করা, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান সম্পর্কে ‘ভুয়া খবর’ ছড়ানো বা অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিক্ষোভে অংশ নিতে উত্সাহিত করার অভিযোগ আনা হতে পারে।
এমএমএ/