ইসরায়েলের ইলাতে হুথিদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
ফাইল ছবি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে দীর্ঘ চার মাস ধরে চলছে হামাস ও ইসরায়েলের সংঘাত। প্রতিনিয়ত এই সংঘাত আরো তীব্র আকার ধারন করছে। ইসরাইলি নৃশংস হামলায় অঞ্চলটিতে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ছাড়িয়েছে ২৭ হাজার। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে নতুন করে হামলা করেছে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহর ইলাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের ইরান-মিত্র হুথি আন্দোলন শুক্রবার বলেছে, তারা ইসরায়েলি শহর ইলাতের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এছাড়া ইসরায়েল গাজায় তাদের আক্রমণ শেষ না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এর আগে বলেছিল, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘অ্যারো’ শুক্রবার লোহিত সাগর এলাকায় সারফেস টু সারফেস মিসাইল আটকে দিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লোহিত সাগরের গুরুত্বপূর্ণ শিপিং রুটে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই হামলা আরও তীব্র হয়েছে এবং এর মধ্যেই শুক্রবার ইসরায়েলে এই হামলার ঘটনা ঘটল।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরের শেষের দিকে ইসরায়েলের বন্দরনগরী ইলাতকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল হুথিরা। তারও আগে গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকেও ইসরায়েলের এই শহরে ড্রোন হামলা চালানোর কথা জানিয়েছিল ইরান-সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। গাজা যুদ্ধের প্রতিশোধে ইসরায়েলে ওই ড্রোন হামলা চালানো হয় বলেও সেসময় দাবি করে তারা।
মূলত ইলাত শহরটি জর্ডান এবং মিসর— উভয় দেশের সীমানার কাছে লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে শহরটির দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলে বারবারই ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার চেষ্টা করে চলেছে হুথি বিদ্রোহীরা। হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায়ই এসব হামলার চেষ্টা করেছে তারা। এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তাদের নিক্ষেপ করা কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করার দাবিও করেছে ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজারে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন আরও ৬৫ হাজারেরও বেশি মানুষ।
ইসরায়েলের এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার কোনও অবকাঠামো। তারা মসজিদ, গির্জা, স্কুল, হাসপাতাল, শরণার্থী শিবিরসহ বেসামরিক মানুষের বাড়ি-ঘর সব জায়গায় হামলা চালিয়ে আসছে।
হুথিদের সামরিক মুখপাত্র বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় আগ্রাসন বন্ধ এবং অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনী স্থল ও সমুদ্রে ইহুদিবাদী শত্রুর বিরুদ্ধে আরও সামরিক অভিযান চালাতে দ্বিধা করবে না।’
ইসরায়েল-হামাসের মধ্যকার চলমান এই যুদ্ধের মধ্যে হুথিদের এই হুঁশিয়ারি বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে পারে বলেও আশঙ্কা জাগিয়েছে।