সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বীরাঙ্গনা মা

মিহির তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। মেধাবী ছাত্র। সেদিনও বরাবরের মতো সন্ধ্যার পড়া শেষ করে রাত দশটায় ঘুমাতে যায়। সাথে মা মরিয়ম বেগম। নানা গল্পে মিহিরকে ঘুম পাড়িয়ে অপেক্ষা করে মিহিরের বাবার জন্য। রাত এগারোটায় মিহিরের বাবা গঞ্জের বাজার থেকে ফিরে। বিদ্যুতের আলোয় ঘুমন্ত মিহিরের মুখটা ঝলমল করছে। বাবা ওদিকটায় চেয়ে আর চোখ ফিরাতে পারে না। পুত্রের কপালে স্নেহের চুম্বন এঁকে বলে, বেঁচে থাকো বাবা।’ খাওয়া শেষে স্বামী-স্ত্রী গা এলিয়ে দেয় বিছানায়। রাতের কোনো একসময় বিশাদের ছায়া নেমে আসে সুখ-সংসারে। হার্ট এ্যাটাকে মৃত্যু হয় মিহিরের বাবার। ঘুমের মধ্যেই।

উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা মরিয়ম। কী করবে- ভেবে পায় না। অবশেষে সেলাই মেশিন চালিয়েই সংসারের হাল ধরেন। মিহিরের পড়াশোনার খরচও চলে এভাবে। মায়ের শত কষ্টেও এতটুকু কষ্টের আচঁড় পড়েনি মিহিরের। কিন্তু মিহির বুঝতে পায় মায়ের কষ্টের পরিধি। মায়ের চোখে তাকিয়ে তার কচি মন কেঁদে ওঠে। ও স্বভাবজাতভাবেই মায়ের বাধ্যগত। পড়াশোনায় বরাবরই মেধাবী।

সময়ের পরিক্রমায় আজ মিহির প্রাচ্যের অক্সফোর্ড-খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার চেতনাজুড়ে বড়ই তাড়া- পড়া শেষ করেই তাকে একটি চাকরি নিতে হবে, মায়ের কষ্ট ঘুচাতে হবে, মায়ের মুুখে হাসি ফুটাতে হবে, মায়ের সাধ পূর্ণ করতে হবে। হাজারো স্বপ্ন, হাজারো কল্পনার প্রজাপতি, রঙিন ডানা মেলে ওড়ে বেড়ায় মিহিরের হৃদয়রাজ্যে।
এরই মাঝে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। রাজপথ শ্লোগানে মুখরিত। পাকিস্তানি হায়েনাদের বুলেটে ঝাঁঝড়া হয় এদেশের শত যুবকের প্রাণ। কত মায়ের বুক খালি হয়। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ। রাতের ঘন-অন্ধকারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে হামলা হয়। অসংখ্য ঘুমন্ত ছাত্রের প্রাণ কেড়ে নেয় ঘাতকের বুলেট। সৌভাগ্যবশত সেদিন মিহির হলে ছিল না। মায়ের আহবানে ছুটে গিয়েছিল কলাবাগানের সেই ছোট্ট নীড়ে। পরদিন প্রত্যুষে ও খবরটা পায়। সূর্য ওঠার আগেই সোহেল আর নাফিজ চলে আসে মিহিরের বাসায়। উসকো-খুসকো চুল। পরনে লুঙ্গি। মিহির ঘুমঘুম চোখে দরজা খোলে হতবাক। ঢকঢক করে কয়েক গ্লাস পানি খেয়ে কেঁদে ফেলে সোহেল। বলে, ‘মনে হয় হলের কেহ আর বেঁচে নেই রে মিহির। আমরা দু’জন কোনোরকমে জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছি। পাকিস্তানি মিলিটারির গুলিতে নিহত হয়েছে সবাই।’ চিন্তার চিকন রেখা ফুটে ওঠে মিহিরের কপালে। মিহির বলে, ‘শুনেছি দক্ষিণ পাড়ার কয়েকজন যুবক ইন্ডিয়া যাবে। সেখান থেকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে। চল, আমরাও তাদের সাথে যোগ দিই।’ সোহেলের চোখে তখনও বিভীষিকার দৃশ্য ভেসে বেড়াচ্ছে। সে কাঁপা কণ্ঠে বলে, ‘ঠিকই বলেছিস। এভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। চল, আজকেই আমরা ওদের সাথে যোগ দিব।’ মিহির বলল, ‘তোরা তো জানিস, আমার পরিবারে মা ছাড়া আর কেউ নেই। যাব, তবে মাকে কিছু জানতে দেয়া যাবে না। মা জানতে পারলে কিছুতেই আমাকে যেতে দিবেন না। মা ভীষণ কষ্ট পাবেন।’ গোপন আলোচনায় হঠাৎ মরিয়ম বেগমের উপস্থিতিতে তারা আশ্চর্য হয়। সকলেই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। মরিয়ম বেগম পাঁচটি এক হাজার টাকার নোট মিহিরের হাতে ধরিয়ে দেন। বলেন, ‘মিহির, তোমাদের সব কথাই আমি শুনেছি। না, আমি তোমাদের বাঁধা দেব না। এই টাকাটা রাখো। কাজে লাগবে।’ মরিয়ম বেগমের এহেন অনুপ্রেরণায় মিহির উত্তেজনায় কাঁপতে থাকে। বলে, ‘মা, যদি আর ফিরে না আসি? মরিয়ম বেগমের চোখ জলে ছলছল, তিনি আচঁল দিয়ে চোখ মুছে বলেন, ‘কত মায়ের বুক ইতিমধ্যে খালি হয়ে গেছে। তাঁদের যে অবস্থা, আমারও না হয় তাই-ই হবে।’

মায়ের দোয়া নিয়ে মিহির চলে যায় ইন্ডিয়া। সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে আসে। সঙ্গে আরো অনেকে। ২৭ অক্টোবর ১৯৭১ সাল। রাত দশটায় মায়ের সাথে খাবার খাচ্ছিল মিহির। কমান্ডারের ফোন- ‘আজ শেষ রাতে বড়বাজারে একটি জরুরি অপারেশনে যেতে হবে। তুমি এই অপারেশনের নেতৃত্ব দিবে। অপারেশন সাকসেসফুল হলে পাক বাহিনীর মনোবল একেবারে ভেঙ্গে পড়বে। জলদি চলে আসো।’
মিহিরের আর খাওয়া হয় না।

মরিয়ম বেগম বাঁধা দেননি বরং বন্দুক এগিয়ে দেন। বলেন, ‘আর ছাড় নয়, এবার রুখে দাঁড়াও।’
মায়ের কপালে চুমু দিয়ে মিহির চলে যায়। মরিয়ম বেগম সারা রাত না ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেন। ফজরের নামায পড়ে তসবিহ হাতে বসেছিলেন। এমন সময় দরজায় আলতো টোকা। চমকে ওঠেন মরিয়ম বেগম। পাকিস্তানিরা আবার তার বাসায় হানা দেয়নি তো? তিনি আস্তে আস্তে দরজা খোলেন। মিহির, সোহেল আর নাফিস দাঁড়িয়ে। আনন্দে মিহিরের চোখ চিকচিক করে ওঠে। ‘মা, অপারেশন সাকসেসফুল।’

মরিয়ম বেগম দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন, বলেন, ‘এখনো অনেক পথ বাকি বাবা। তোমরা ক্ষুধার্ত, একটু বসো। খাবার দিচ্ছি।’
ঘরে খাবার বলতে কিছু নেই। মরিয়ম বেগম খুঁজে খুঁজে কিছু মুড়ি পেলেন। তা-ই খেতে দিলেন। মিহির এক মুঠ মুড়ি মুখে দিবে এমন সময় আবার দরজায় টোকা। সবাই দরজার দিকে তাকাল। চোখে মুখে ভয়। এই অসময়ে আবার কে এল?
মরিয়ম বেগম বললেন, তোমরা বসো। আমি দেখছি।
বন্দুক তাক করে ঘরে ঢুকল পাকিস্তানি বাহিনী। মিহিরের কপালে একজন বন্দুকের নল ঠেকিয়ে বলল, তুই কি মিহির? মিহির, সোহেল, নাফিসের চোখে চোখ রাখে। সবার চোখেই আতঙ্ক। মায়ের পানে তাকায় মিহির। মায়ের চোখে অশ্রু নয়, দেখেছে প্রতিশোধের আগুন। মিথ্যা নয় সত্য বলার সিদ্ধান্ত নেয় মিহির, ‘হ্যাঁ, আমি মিহির।’

বড়বাজার হত্যা কা-ের সন্দেহজনক আসামী হিসেবে মিহিরকে ধরে থানায় নিয়ে গেল পাকিস্তানি বাহিনী।
অমানসিক শারীরিক নির্যাতন চলে তার ওপর। পায়ে রশি বেঁধে মাথা নিচে ঝুলিয়ে রাখা হয়। নখের নিচে সুঁচ বিঁধানো হয়। অসহ্য অত্যাচারেও মিহির দৃঢ় কঠিন প্রতিজ্ঞ। গোপন তথ্য ফাঁস করেনি।

মরিয়ম বেগম তাকে দেখতে থানায় আসেন। একটি আধো-অন্ধকার প্রকোষ্টে শুয়ে আছে মিহির। গায়ে কাপড় বলতে একটি প্যান্ট। মায়ের ডাকে ঘাড় উচিয়ে দেখে। এক বিধবা মা খাবার হাতে দাঁড়িয়ে আছে ওপাশে। ওঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি নেই মিহিরের। পায়ের হাড় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। অতি কষ্টে গ্রিল ধরে দাঁড়ায় মিহির। সারা শরীরের আঘাতের চিহ্ন। চোখের নিচে কালো দাগ। কপাল ফেটে রক্ত পড়ছে তখনও। যে ছেলের শরীরে এতটুকু আচঁড় পড়েনি কোনো দিন, সে ছেলের আজ ক্ষত-বিক্ষত অব¯’া দেখে মরিয়ম বেগমের মন কালবোশেখী ঝড় ওঠে। কিন্তু চোখে জল নেই। প্রতিশোধের আগুন ঝরছে চোখ থেকে। ছেলের কপালে হাত বুলিয়ে মরিয়ম বেগম জানতে চায়।
-ওরা তোমার কাছে কী জানতে চায় মিহির?
-ওই অপারেশনে কে কে ছিল? কে কমান্ডার ছিল? কোথায় মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প- জানতে চায় ওরা।
-তুমি কিছু বলোনি তো?
- মিহির ডানে-বামে মাথা ঝাঁকায়। না।
-তুমি কিছুই বলবে না। ওরা তোমাকে যতই মারুক। তুমি কিছুতেই মুখ খুলবে না। মরিয়ম বেগম মিহিরের পিঠে হাত বুলিয়ে জানতে চান-ওরা তোমাকে খেতে দেয় বাবা?
- দেয় মা, ওরা দিনে একবার খেতে দেয়। পেট ভরে না মা। মিহিরের দু’চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি গড়িয়ে পড়ে। মায়ের চোখে মুখে হাত বুলিয়ে মিহির আবার বলে, কতদিন হল তোমার হাতের পিঠা খাই না মা। তোমার হাতের পিঠা খেতে বড়ই ইচ্ছা করছে। খাওয়াবে মা?
-হে বাবা, খাওয়াব। আমি কালই তোমার জন্য পিঠা নিয়ে আসব। মরিয়ম বেগম শাড়ির আচল দিয়ে ছেলের চোখ মুছেন।

পরের দিন সকাল বেলা। মরিয়ম বেগম পিঠা ভর্তি বাটি নিয়ে দারোয়ানকে মিনতি করে, ‘শুধু একটা পিঠা আমার মিহিরকে খাইয়ে চলে আসব। আমাকে পাঁচ মিনিটের জন্য অনুমতি দিন। অনুগ্রহ করুন।’
-অল্প কিছুক্ষণ আগে ওরা মিহিরকে হাত বেঁধে নিয়ে গেছে। দারোয়ান গোঁফের ফাঁক গলে ফিসফিসিয়ে বলে।
-ওরা কোথায় নিয়ে গেছে মিহিরকে? দারোয়ানের কথায় মরিয়ম বেগম হতবিহবল হয়ে পড়েন।
-বড়বাজার বালুর মাঠে।
মরিয়ম বেগমের মন কেঁদে ওঠে অজানা সঙ্কায়। তিনি এক মুহূর্ত দেরি না করে বালুর মাঠের দিকে হাঁটা দেয়। পাক-বাহিনী মিহিরসহ বহু যুবককে লাইনে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। মাঠের ওপাশ থেকে মরিয়ম বেগম স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন মিহিরকে। হঠাৎ করেই মুহুর্মুহু গুলির শব্দ। মুর্হূতেই ঝরে পরে বহু মিহিরের নিথর দেহ। মরিয়ম বেগম জ্ঞান হারায়। এক সময় জ্ঞান ফিরে আসে কিন্তু স্বাভাবিকতা ফিরে আসেনি।

মিহিরদের তাজা রক্তের বিনিময়ে দেশের স্বাধীনতা এসেছে। স্বাধীন পতাকা এসেছে। কিন্তু মিহির ফিরে আসেনি। সেই থেকে মিহিরের মা মরিয়ম বেগম পাগল। তিনি এখনো শাড়ির আঁচলে পিঠা নিয়ে বসে থাকেন বধ্যভূমির গেটে। তাঁর বিশ্বাস, মিহির কোনোএকদিন পিঠা খাওয়ার বায়না নিয়ে ঠিকই ফিরে আসবে। মিহিরের নামানুসারে পাশের বাজারের নামকরণ করা হয়েছে মিহিরবাজার। এই বধ্যভূমির নামকরণ করা হয়েছে মিহিরবাজার বধ্যভূমি। বধ্যভূমিতে আগত লাখো জনতা আজও মরিয়ম বেগমকে দেখে মমতা ভরা চোখে। পরম শ্রদ্ধা ভরে তাকে ডাকে ‘বীরাঙ্গনা মা’ বলে।

 

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু