বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

বিষন্নানন্দ

হঠাৎ নিরবতায় আশ্চর্য ওরা। কী হয়েছে পিশাচগুলোর? এদেরও থপ থপ হাঁটাহাঁটি থেমে গেছে। ওরা একই সমতলে। জীবন বিষময় হয়ে গেছে পুরোপুরি।প্রথম দিকে কয়েকজন মৃত্যু বরণ করতে পারলেও পরে আর সম্ভব হয় নি। ওদের গায়ে কোনো কাপড় থাকে না এখন।

ফাঁক ফোকড় দিয়ে আলো ঢোকায় কাজলি বুঝতে পারলো এখন দিন। এই সময় ওদের নাস্তা নিয়ে আসে সশস্ত্র রাজাকার দুটো। ইচ্ছের বিরুদ্ধে ক্রমাগত যৌন নির্যাতন চলতে থাকায় খাদ্য না খেয়ে থাকা যেতো না। প্রথমদিকে কয়েকজন খেতে না চাইলে জোর করে খাইয়ে দিয়েছে।

কাজলি এগিয়ে গেলো দরজার দিকে। দরজা বাইরের দিকে তালাবদ্ধ। ধাক্কা দেয়ায় দুই কপাটের মাঝখানে খানিকটা ফাঁক হলো। সেই ফাঁক দিয়ে বাহির দেখার চেষ্টা করছে। কেউ কোথাও নেই! রাজাকার বা পাকিস্তানি হানাদারগুলোর কাউকেই দেখা যাচ্ছে না। হায়েনাগুলোর বুটের আওয়াজ যত কাছে আসতো, ততো ওদের বুকের কাঁপুনি যেতো বেড়ে।

আরো ভালো করে সামনের আশপাশটা দেখে ফিরে দেখে সবাই তাকিয়ে আছে ওর দিকে। তের জন।

একজন বললো, কী দেখলা? আইতাছে? অহন কার পালা হইবো?

আরেকজন বিষন্ন কণ্ঠে বললো, আমি আর পারছি না রে!

আরেকজন দুই হাতে মুখ ঢেকে কেঁদে দিয়ে বললো, আমাকে নিতে মানা কইরো তোমরা। আমার মাসিক হইছে।

কাজলি কিছু না বলায় একজন এগিয়ে গেলো দরজার দিকে। দরজায় ফাঁক দিয়ে বাইরে কিছু লোককে ছুটাছুটি করতে দেখে আঁতকে উঠে সরে এলো।

নিশ্চয়ই পাক হানাদার আক্রমণ করেছে গ্রামে। আবার কতগুলো অবলা নারীকে এখানে ঢুকানো হবে ইচ্ছেমতো যৌন-অত্যাচার করার জন্য।

কাজলি ওকে জিজ্ঞেস করলো, তুমি ভয় পেয়ে সরে এলে কেনো সাফিয়া? কী দেখেছো?

সাফিয়া বললো, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ফের গ্রাম আক্রমণ করেছে। গ্রামের লোকজন ছুটাছুটি করছে।

কাজলি পড়ে গেলো দ্বিধায়। ক্যাম্পের হানাদারগুলোই কী গ্রাম আক্রমণে গেছে? রাজাকারগুলোও সাথে করে নিয়ে গেছে? এভাবে ক্যাম্পকে অরক্ষিত রেখে? ব্যাপারটা দেখতে হবে ভালো করে।

কাজলি এগিয়ে গেলো ফের দরজার দিকে। বাইরে তাকিয়ে বাস্তবিকই গ্রামের লোকদের ছুটাছুটি করতে দেখছে। তবে ওরা ভয়ার্ত না-চোখে-মুখে আনন্দ। ব্যাপার কী?

কাজলি সাফিয়াকে বললো, লোকগুলোর চোখেমুখে আনন্দ খেলা করছে। পাক বাহিনী আক্রমণ করলে এমনটা হতো না। আমার মনে হয় পাক হানাদার পালিয়ে গেছে এই ক্যাম্প ছেড়ে। আশেপাশে নিশ্চয়ই মুক্তি বাহিনী আছে।
সাফিয়া একটু উল্লসিত স্বরে বললো, তাহলে আমরা ওদের ডাকি! তালা ভেঙ্গে আমাদের এই বদ্ধ ও অভিশপ্ত ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাক!

আরেকজন দুই কদম এগিয়ে এসে বললো, আমাদের গায়ে কোন কাপড় নাই।

সাফিয়া চমকে বললো, তাই তো!

এতক্ষণ ঘরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে ওদের কথাবার্তা শুনছিলো সবাই। একজন এগিয়ে এসে বললো, এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কী আছে! ওরা এলে বলবো আমাদের আগে পরনের কাপড় দেও। তারপর দরজার তালা খোলো।

সাফিয়া বললো, এই সহজ কথাটা আমাদের কারো মাথায় আসছিলো না কেনো রোকেয়া আপা?

রোকেয়া কিছু না বলে এগিয়ে গেলো দরজার দিকে। বাইরে লোকজনের ছুটাছুটি আছে; কিন্তু কেউ এদিকে তাকাচ্ছে না! রোকেয়া চিৎকার দিয়ে ডাক দিলো ওদের, এই যে ভায়েরা! এদিকে আসেন! আমরা এখানে বন্দি হয়ে আছি!

কেউ ওর চিৎকার শুনেছে বলে মনে হলো না। রোকেয়া কয়েকবার চিৎকার দিয়ে ব্যর্থ হয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো, আমার একার চিৎকারে কাজ হচ্ছে না। সবাইকে একসাথে চিৎকার করতে হবে এবং সাথে সাথে দরজায় ধাক্কা দিতে হবে।

তের জন এগিয়ে এলো দরজার কাছে। দরজা ধরে নাড়ানোর সাথে সাথে চিৎকার করতে থাকলো উল্লসিত লোকদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য।এভাবে অনবরত চিৎকার করতে থাকায় একটি বালক এগিয়ে এলো এদিকওদিক তাকাতে তাকাতে।

বালকটি কাছাকাছি এলে রোকেয়া বললো, তোমরা দৌড়াদৌড়ি করছো কেনো? কী হয়েছে?

বালকটি বললো, হুনতাছি দ্যাশ স্বাধীন হয়া গেছে। খুব আনন্দ!

কথাটা শুনে বিড়ম্বিতা নারীগুলোর মুখের বিষন্নতা ছাপিয়ে স্বস্তি ও ভরসার হাসি ফুটে উঠলো-বিষন্নানন্দ। ওরা একে অপরকে কোলাকোলি করতে লাগলো।

রোকেয়া ফের জিজ্ঞেস করলো, এই ক্যাম্পের হায়েনা পাক বাহিনী আর কুত্তা রাজাকারগুলা কই গেলো জানো কিছু?

ছেলেটা বললো, সকালে পালানোর সময় মুক্তিরা ওদের ধইরা ফালাইছে। অহন এদিকে লইয়া আইতাছে।

রোকেয়া স্বস্থির নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো, তাহলে আর চিন্তার কিছু নাই। তুমি এক দৌড় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বলো আমরা এখানে আটকা পড়ে আছি।

জ্বী আইচ্ছা।

ছেলেটা দৌড়াতে লাগলো। এরা খুশিতে ও মুক্তির আনন্দে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কাঁদতে লাগলো।

জয়বাংলা জয়বাংলা শ্লোগান শুনতে পেয়ে সবাই তাকালো দরজার ফাঁক দিয়ে বাইরে।

ওরা আসছে স্কুলের দিকে। সামনে সারিবদ্ধভাবে মাথার উপর দুই হাত তোলা অবস্থায় রাজাকারের পরে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। ওদের পেছনে স্ট্যানগান ও রাইফেল উচিয়ে বাংলার দামাল মুক্তিযোদ্ধাগণ। পরনে হাটু অব্দি গুটানো পেন্ট, কারো গায়ে গেঞ্জি, কারো গায়ে শার্ট-দুটোই ময়লা; ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল ও এলোমেলো মুখভর্তি দাড়ি।

মুক্তিযোদ্ধাগণ সামনে এসে শূয়রগুলোর দিকে অস্ত্র তাক করতেই দাঁড়িয়ে গেলো মাঠের মাঝ বরাবর। মোট পনেরো জন মুক্তিযোদ্ধা। চারজন সরাসরি আসছে ঘরটার দিকে। ঘরটার চারিদিকে একবার দেখে দরজার সামনে দাঁড়ালো চার মুক্তিযোদ্ধা।

একজন রাইফেলের বাট দিয়ে তালা ভাংতে চাইলে ভেতর থেকে রোকেয়া বললো, তালা ভাংবে না মুক্তিযোদ্ধা ভায়েরা!
মুক্তিযোদ্ধাটি রাইফেল নামিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে বললো, কেনো? আপনারা বের হতে চাচ্ছেন না?

আমাদের গায়ে কোনো কাপড় নেই। এ অবস্থায় বের হওয়া কি ঠিক হবে?

মুক্তিযোদ্ধাটি লজ্জা পেয়ে বললো, সরি! আমি এখনই হানাদারদের ক্যাম্প থেকে কিছু কাপড় নিয়ে আসছি। আপনারা কত জন?

কাজলি দ্রুত বললো, না না! এই হায়েনাদের কাপড় আমরা পরবো না! আপনারা পাশের গ্রাম থেকে শাড়ি ছায়া ব্লাউজ লুঙ্গি যা পারেন নিয়ে আসেন। আমরা তের জন।

চার জনই ছুটে চলে গেলো। ওদের মাঝে আজ বিজয়ের শক্তি ও অপার আনন্দ। গ্রামে ঢুকে কয়েকটা বাড়ি থেকে শাড়ি ছায়া ব্লাউজ লুঙ্গি যে যা দিয়েছে তাই নিয়ে ওরা চলে এলো ক্যাম্পে। দরজার ফাঁক দিয়ে একটা একটা করে কাপড় ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা বললো, এবার আপনারা এগুলো পরে ফেলুন।

কাপড় পরা শেষ হলে আমাদের বললে তালা ভেঙ্গে ফেলবো।

রোকেয়া শান্ত কণ্ঠে বললো, একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে যে মুক্তিযোদ্ধা ভায়েরা।

অপর একজন মুক্তিযোদ্ধা বললো, কী সমস্যা বুবু?

রোকেয়া বললো, মাঠের মাঝে মাথার উপর হাত তোলে দাঁড়িয়ে থাকা হায়েনাগুলো মাসের পর মাস আমাদের উপর যৌন নির্যাতন করেছে। ওদের সামনে আমরা যেতে চাই না।

কী করতে বলেন আমাদের বুবু? আপনাদের কথা আমরা রাখতে চেষ্টা করবো।

এবার রোকেয়া ঘৃণামিশ্রিত স্বরে বললো, ঐ কুত্তাগুলোকে আপনারা মেরে ফেলুন! যদি না মারেন তাহলে এই কাপড় গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করবো! এমনিতেই এ অবস্থায় আমাদের সমাজে ঠাঁই হবে কিনা জানি না!

মুক্তিযোদ্ধাটি বললো, এ বিষয়ে আমাদের কোম্পানি কমান্ডারের সাথে কথা বলতে হবে।

তাই করুন মুক্তিযোদ্ধা ভায়েরা। একটা কথা মনে রাখবেন, আমাদের এখান থেকে জোর করে বের করতে পারবেন না! আমরা ভেতর থেকে দরজার খিল আটকে দিচ্ছি। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আমরা সবাই একসাথে ঘরের ধন্নার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করতে থাকবো!

এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ভাবেনি এই চার মুক্তিযোদ্ধা। ওরা অস্ত্র উঁচিয়ে দৌড়ে চলে গেলো মাঠের মাঝখানে কোম্পানি কমান্ডারের কাছে। কোম্পানি কমান্ডারকে কথাগুলো বললে মূহুর্ত মাত্র না ভেবে সিদ্ধান্তঃ নিয়ে ফেললেন কোম্পানি কমান্ডার।

 

ডিএসএস/ 

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’