শিশুদের মেজাজের উপর ভিত্তি করে আচরণের বৈচিত্রতা
বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাচ্চা জন্মের পর বাচ্চার আচরণের ধরন অনুযায়ী পরিবর্তনগুলো বাবা-মাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন করে ফেলে। বিশেষ করে নতুন বাবা-মা যারা হয়েছেন তারা বাচ্চাদের আচরণগত পরিবর্তনসমূহ বুঝতে পারেন না।
প্রতিটি শিশু তাদের নিজস্ব আচরণগত বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে। যা সে তাদের জন্মের পর নানা রকম মেজাজের উপর ভিত্তি করে আচরণ সমূহ প্রকাশ করে থাকে। বাচ্চাদের জন্মগত মেজাজের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে শিশুদের তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
কঠিন প্রকৃতির শিশু : এসব শিশুদের ঘুম,খাওয়া-দাওয়া, প্রস্রাব অন পায়খানা অনিয়মিত হয়। এরা অল্পতেই কান্নাকাটি করে এবং সহজে কান্না থামানো যায় না।
সহজ প্রকৃতির শিশু : এসব শিশুদের ঘুম, খাওয়া-দাওয়া, প্রস্রাব পায়খানা নিয়মের মধ্যে থাক। এরা নমনীয় প্রকৃতির হয় যা তাদের যেকোনো নতুন পরিবেশে বা পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। এই শ্রেনীর শিশুরা সাধারণত শান্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে, সহজে ওদের কান্না শান্ত করা যায়।
মিশ্র প্রকৃতির শিশু : এ শ্রেণীর শিশুদের সাধারণত কঠিন প্রকৃতি ও সহজ প্রকৃতির শিশুর বৈশিষ্ট্য গুলোর মিশ্র অবস্থায় থাকে।
সাধারণত মা এবং শিশুদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া না হলে শিশুর গঠন এবং আচরনে সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অনেক বাবা-মা নিজেদের অবস্থান থেকে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। শিশুকে ঘুম পাড়ানো থেকে শুরু করে খাওয়ানো কান্না থামিয়ে শান্ত করানো ইত্যাদি নিয়মিত কাজে সমস্যা হলে বাবা-মা নিজেদেরকে দায়ী করে থাকেন এবং অনুশোচনায় ভোগেন। তাই প্রথমেই যদি বোঝা যায় আপনার শিশুটির কোন প্রকৃতির সেক্ষেত্রে শিশুর লালন পালন সহজ হয়ে থাকে। বিশেষ করে প্রথমেই বোঝার চেষ্টা করতে হবে শিশুটি কঠিন মেজাজের কিনা।
বেশিরভাগ কঠিন প্রকৃতির শিশু পরবর্তীতে নানা রকম মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে।
একটি শিশুর আচরণ গড়ে ওঠে তার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে। যা শিশুর নিজস্ব মেজাজ এবং আচরণ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিহেভিয়ার অ্যাপ্রোচে দেখা যায় যে, শিশুদের ভালো এবং খারাপ ব্যবহার পরিবর্তন করা যায় বিহেভিয়ার মেথড ব্যবহার কর। দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন বিহেভিয়ার মেথড ব্যবহার করে শিশুদের অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যবহার ৫০℅ থেকে ৯০% কমানো সম্ভব হয়েছে।
লেখক: বয়স্ক ও শিশু মনরোগ বিশেষজ্ঞ