কিডনি রোগীদের জরুরি চিকিৎসায় সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি
বিশ্বব্যাপী কিডনি রোগ একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যায় রূপ নিয়েছে। বাংলাদেশে ২ কোটিরও বেশি কিডনি রোগী। কিডনি রোগের ব্যাপক প্রকোপ, এ রোগের মারাত্মক পরিণতি, অতিরিক্ত চিকিৎসার খরচ ও আকস্মিক দুর্যোগকালীন সময়ে জটিল কিডনি রোগীসহ সব ধরনের রোগীদের জরুরি চিকিৎসায় সমন্বিত উদ্যোগসহ ‘ইমারজেন্সি রেসপন্ডস প্লান’ থাকা খুবই জরুরি বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
‘বিশ্ব কিডনি দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এই দাবি করা হয়। দেশের কিডনি বিষয়ক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস), শনিবার (৪ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এর আয়োজন করে।
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাম্পস এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম এ সামাদ। গোল টেবিল বৈঠকে প্যানেল আলোচক ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর মহাপরিচালক মো.মিজানুর রহমান,ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইঞ্জিনিয়ার আলী আহাম্মেদ খান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব, কিডনি ফাউন্ডেশন সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশিদসহ অন্যরা।
ডা. এম এ সামাদ মূল প্রবন্ধে বলেন, কিডনি রোগী দুর্যোগের সময়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। আমরা জানি কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। সারা বিশ্বে ৮৫ কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে ২ কোটিরও অধিক কিডনি রোগী। প্রতি বছর ৩৫ থেকে ৪০ হাজার লোক কিডনি সম্পূর্ণ বিকলের শিকার বাংলাদেশে। আরও ১৫ থেকে ২০ হাজার আকস্মিক কিডনি বিকল হয়। এদের বেঁচে থাকার জন্য ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন প্রয়োজন হয়। কিডনি বিকলের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুর। শতকরা ১০ জন এর ব্যয় সংকুলান করতে পারে। চিকিৎসা করতে গিয়ে অনেক পরিবার আর্থিকভাবে নিংস্ব হয়ে যায়। সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে ডায়ালাইসিস ও কিডনি সংযোজন বীমার আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে ডায়ালাইসিস বন্ধ হলে মৃত্যু এগিয়ে আসবে। তাই কিডনি রোগী দুর্যোগের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে ।
দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, সম্প্রতি তুরস্কের ভূমিকম্প একটি সতর্ক বাণী। কিডনি রোগকে ‘নীরব দুর্যোগ’ বলে উল্লেখ করে কিডনি ফাউন্ডেশন এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন উর রশিদ বলেন, এ রোগের জটিলতা ও চিকিৎসা ব্যায়ের আধিক্য বিবেচনায় প্রতিরোধকেই একমাত্র অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করতে হবে। স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, সব নগরীর সব বড়বড় স্থাপনাকে ভূমিকম্প সহনীয় কি না তা পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
জেডএ/এমএমএ/