বুধবার, ২ এপ্রিল ২০২৫ | ১৯ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ডায়াবেটিস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, সচেতনতা জরুরি

প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালন করা হয়। বিশ্বের বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও গতকাল (১৪ নভেম্বর) পালিত হয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে’। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘এডুকেশন টু প্রোটেক্ট টুমরো’। আগামীর সু-স্বাস্থ্যের জন্য ডায়াবেটিস বিষয়ে শিক্ষা সবার কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

১৯৯১ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়ে আসছে। ১৯৯১ সালে বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন ও বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এই দিনটিকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা দেন। ডায়াবেটিস বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রাকে এমনভাবে প্রভাবিত করছে যা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। গত দশকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে স্থূলতা, অন্ধত্ব, হার্ট ডিজিজ ও কিডনি রোগ। ডায়াবেটিসের জটিলতা অনেক।
১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালন করার কারণ:

এই দিনে ফ্রেডরিক ব্যান্টিং জন্মগ্রহণ করেন, যিনি তার সহযোগী চার্লস বেল্টকে সঙ্গে নিয়ে অধ্যাপক ম্যাকয়িডের গবেষণাগারে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের মহৌষধ ইনসুলিন আবিষ্কার করেন। এই দিবসটি পালনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিশ্বে প্রায় ৪৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে ৭৯ শতাংশেরই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বসবাস। এ রোগে বছরে মারা যাচ্ছে ১৫ লাখ মানুষ। বেশিরভাগ লোক জানে না যে, তার ডায়াবেটিস রোগ আছে। বছরে এই রোগে প্রায় এক লাখ লোক মারা যাচ্ছে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ৮৪ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আর প্রতি বছর লক্ষাধিক মানুষ ডায়াবেটিস-সংক্রান্ত জটিলতায় মারা যাচ্ছেন। বাংলাদেশে যেমন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ডায়াবেটিস বৃদ্ধির হারও বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে দশম ছিল। কিন্তু আরও ভয়াবহ হলো ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে। পৃথিবীতে বর্তমানে সবচেয়ে উচ্চহারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে।

ডায়াবেটিস দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ১৯৮৫ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় তিন কোটি, আর এখন সেটা দাঁড়িয়েছে ৩৭ কোটিতে। সারাবিশ্বে ডায়াবেটিস রোগী বাড়ছে। ১০ জনের মধ্যে একজন নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এবারের প্রতিপাদ্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, নারীদের ডায়াবেটিসের উপর এবার বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, নগরায়ণ ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণে যেমন ডায়াবেটিস বাড়ছে, তেমনি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের অর্ধেকেরও বেশি পরে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। এমনকি অপরিকল্পিত গর্ভধারণের কারণে শিশু অপুষ্টির শিকার হয় এবং সেই শিশু পূর্ণবয়স্ক হওয়ার পর অতিরিক্ত ওজন হলে তার ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বহুগুণ বেশি থাকে।

ডায়াবেটিস কীভাবে জন্ম হলো: ডায়াবেটিস একটি রোগ কীভাবে জন্ম হলো এ কথা কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারে না। তবে ডায়াবেটিসের ইতিহাস সুপ্রাচীন কালের। সর্বপ্রথম ডায়াবেটিস এর ধারণা পাওয়া যায়, ১৮৬২ সালে মিশরের প্রাচীন নগরী থিবসের একটি পিরামিডের ভেতর থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১৫৫০সালের প্যারিপাস গাছের ছালে একটি রোগ বিবরণী আবিষ্কার করেন। এই রোগবিবরণীতে সর্বপ্রথম বহুমূত্র রোগের উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক প্রাচীন গ্রিসের হিপোক্রেটিস কর্তৃক আবিষ্কৃত ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে ডায়াবেটিসের ধারণা ছিল। তখন এটিকে বলা হতো zia beted যার অর্থ হচ্ছে সুমিষ্ট মূত্র নিঃসরণ। আমাদের শরীরে বিলিয়ন বিলিয়ন কোষে প্রতি মুহূর্তে লক্ষ-কোটি কাজ হয়ে চলেছে। এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাধা হওয়ার জন্য চাই শক্তি। শক্তির সবচেয়ে বড় যোগানদাতা কার্বোহাইড্রেট। এর মধ্যে রয়েছে ভাত, ডাল, আলু, শাকসবজি, গম ভুট্টা প্রভৃতি। জটিল বিক্রিয়া শেষে এগুলো আমাদের শরীরের কোষে গ্রহণ উপযোগী সরল অণুতে পরিণত হয়। এই সরল অণু হচ্ছে গ্লুকোজ। গ্লুকোজ অণুকে শরীরের কোষ গ্রহণ করে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে। এই শক্তি দেহকে সচল রাখে।

কিন্তু কোষে গ্লুকোজ প্রবেশ করতে হলে একটি হরমোন লাগে। এর নাম ইনসুলিন। আমাদের দেহের কোষে একধরনের চ্যানেল থাকে যেটা দিয়ে গ্লুকোজ শরীরে প্রবেশ করে। স্বাভাবিক অবস্থায় চ্যানেলটি বন্ধ থাকে। গোটা ব্যাপারটিকে আমরা নিম্নোক্তভাবে তুলনা করতে পারি।

ধরুন— ঘরের একটি কক্ষ হলো একটি দেহকোষ। আর ঘরের দরজা হচ্ছে ইনসুলিন ঢোকার চ্যানেল। সাধারণত নিরাপত্তার জন্য আমরা ঘরের দরজা যেমন বন্ধ করে তালা মেরে রাখি, তেমন গ্লুকোজ চ্যানেলটিও তালা মারা থাকে অর্থাৎ বন্ধ থাকে। তালা খুলতে যেমন চাবি লাগে, তেমনই গ্লুকোজ চ্যানেল খুলতে চাবি লাগে। এই চাবির নামই হলো ইনসুলিন। ইনসুলিন না থাকলে গ্লুকোজ কোষে প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে কোষে শক্তি উৎপাদন হবে না। আর কোষ শক্তি না পেলে তার কাজ ঠিকমতো করতে পারবে না। অথচ রক্তে অফুরন্ত গ্লুকোজের যোগান রয়েছে। কিন্তু কোষগুলোকে অভুক্ত অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে গেলে প্রস্রাবের সময় এবং ঘনত্ব বেড়ে যায়।এই সামগ্রিক অবস্থাটি ডায়াবেটিস মেলাইটাস বা সংক্ষেপে ডায়াবেটিস নামে পরিচিত। বারে বারে প্রস্রাব করার জন্য এই রোগের আরেক নাম বহুমূত্র রোগ। প্রায় একই ধরনের আরেকটি রোগ আছে যার নাম ডায়াবেটিস ইনকিপিডাস, যেখানেও রোগী বারে বারে প্রস্রাব করে থাকে। কিন্তু আমাদের চারপাশে ডায়াবেটিস নামে যে রোগটির সঙ্গে আমরা পরিচিত সেটি ডায়াবেটিস মেলাইটাস। স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের রক্তে অভুক্ত অবস্থায় প্রতি লিটারে ৫.৬ থেকে ৬.১ মিলি মোল গ্লুকোজ থাকে। খাবার গ্রহণের দুই ঘণ্টা পরে এটা বেড়ে যায়।

প্রকারভেদ

আমরা আবার আগের উদাহরণে ফিরে যাই। ধরুন, আপনার ঘরে তালা দেওয়া রয়েছে। এখন ভাবুন তো, কোন কোন অবস্থায় আপনি ঘরে ঢুকতে পারবেন না? প্রথমত, আপনার কাছে যদি চাবিটাই না থাকে। আর দ্বিতীয়ত, চাবি থাকা সত্ত্বেও যদি তালাটা কাজ না করে। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। এদের মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস। একে ইংরেজিতে বলা হয়। গর্ভবতী নারীদের দেহে স্বাভাবিক প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ইনসুলিন প্রয়োজন হয়। কারণ ইনসুলিন মানবদেহে আরও বেশ কিছু কাজে নিয়োজিত। এখন মাতৃদেহ যদি পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে, তাহলে দেহে স্বভাবতই গ্লুকোজ বেড়ে যাবে। গর্ভবতী নারীদের প্লাসেন্টা থেকেও কিছু হরমোন ক্ষরিত হয় যা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। এ সব নারীদের সন্তান প্রসবের পর আর ডায়াবেটিস থাকে না। এ ছাড়া জেনেটিক কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। অটিজম বা ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম এ আক্রান্ত মানুষের এজন্য ডায়াবেটিসে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। পাশাপাশি অগ্ন্যাশয়ের সমস্যার কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। যেমন— যদি অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সার হয় কিংবা সংক্রমণ হয়, তবে ডায়াবেটিস হতে পারে। হরমোন সমস্যার কারণেও ডায়াবেটিস হতে পারে। কুশিং সিন্ড্রোম বা অ্যাক্রোমেগালি, যা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনের কারণে হয়ে থাকে, এদের ডায়েবেটিসের উপর প্রভাব আছে। কিছু ওষুধও ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ গ্লুকোকর্টিকয়েড, থায়াজাইড কিংবা ফেনাইটইন জাতীয় ওষুধগুলোর ডায়াবেটিসের কারণ হিসেবে ভূমিকা থাকতে পারে। সাইটো-মেগালো-ভাইরাস, জন্মগত রুবেলা ভাইরাস কিংবা কক্সস্যাকি ভাইরাসগুলোর সংক্রমণ ডায়াবেটিসে প্রভাব পড়ে।

ডায়াবেটিসের লক্ষণ

ডায়াবেটিস রোগীরা যে সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভোগেন তা হলো বার বার প্রস্রাব করা। ফলে শরীরে তরল কমে যায় এবং বেশি বেশি পানি তৃষ্ণা পায়। অপরদিকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের দেহে ‘কোষীয় অনাহার’ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ফলে দেহ মস্তিষ্ককে ক্ষুধা লেগেছে বলে মেসেজ দেয়। এজন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষুধা লেগেই থাকে। প্রচুর খাওয়া সত্ত্বেও তাদের ওজন কমে যায়। সারাক্ষণ ক্লান্তি ঘিরে রাখে। কোথাও ক্ষত তৈরি হলে সহজে সারতে চায় না। বিভিন্ন চর্মরোগের আক্রমণ বেড়ে যায়। আস্তে আস্তে যৌন ক্ষমতা হ্রাস পায় ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের।

হোমিও প্রতিকার

রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এই জন্য অভিজ্ঞ হোমিওচিকিৎসকে রোগীর পুরা লক্ষণ নির্বাচন করে ধাতুগত চিকিৎসা দিতে পারলে তাহলে আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথিতে ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সম্ভব। প্রাথমিকভাবে যে সব মেডিসিন অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা নির্বাচন করে থাকে এব্রোমা আগস্ট, সেফালান্ডা ইন্ডিকা, সিজিজিয়ম, এসিড ফস, আর্সেনিক ব্রোমাইড, এসিড ল্যাকটিক, ইউরেনিয়ম নাইট, নাক্স ভূমিকা, এসিড এসেটিক, ক্যালকেরিয়া ফসসহ আরও অনেক ওষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে তাই অভিজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া মেডিসিন নিজে নিজে ব্যবহার করলে রোগ আরও জটিল আকারে পৌঁছাতে পারে।

পরিশেষে বলতে চাই, ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ওজন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । ওজন বেশি থাকলে তা খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে কমানো আবশ্যক। চিনি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। আঁশ যুক্ত খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে। একটি খাদ্যতালিকা মেনে চললে সব থেকে ভালো হয়। কোনো ব্যক্তি যদি ইনসুলিন কিংবা অন্যান্য ওষুধ নিয়মিত গ্রহণ করতে থাকে, তাহলে খাবার নিয়মিত খেতে হবে। কেননা, কোনো বেলার খাবার বাদ দিলে তার প্রতিক্রিয়া মারাত্মক হতে পারে। সুষ্ঠু এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। বর্তমানে ডায়াবেটিস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এজন্য সবার মাঝে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। কারণ সচেতনতাই পারে আমাদের এই বিভীষিকা থেকে দূরে রাখতে পারে।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

আরএ/

Header Ad
Header Ad

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরান, চীন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) একাধিক ব্যক্তি ও সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ইরানের অস্ত্র সংগ্রহ নেটওয়ার্কের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়।

এই পদক্ষেপকে ইরানের ওপর আরও চাপ সৃষ্টির একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর আগে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, নতুন পারমাণবিক চুক্তিতে রাজি না হলে দেশটির ওপর বোমা হামলা চালানো বা নতুন শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ ও বিচার বিভাগ যৌথভাবে জানিয়েছে, ইরানের ড্রোন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান নির্মাতার জন্য মানববিহীন এয়ার ভেহিকল (ইউএভি)–এর উপকরণ সংগ্রহের সঙ্গে যুক্ত ছয়টি সংস্থা ও দুই ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, "ইরান তাদের ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রাশিয়াসহ তাদের প্রক্সিদের সরবরাহ করছে। রুশ বাহিনী এগুলো ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে, যা বেসামরিক নাগরিক, মার্কিন বাহিনী ও মিত্রদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা ইরানের সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স এবং তাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রচলিত অস্ত্রের বিস্তার ব্যাহত করতে কাজ চালিয়ে যাব।"

মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জানিয়েছে, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে একটি ইরান-ভিত্তিক সংস্থা, দুইজন ইরানি নাগরিক, একটি চীন-ভিত্তিক সংস্থা এবং চারটি সংযুক্ত আরব আমিরাত-ভিত্তিক সংস্থা।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

Header Ad
Header Ad

বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, আওয়ামী লীগের দোসররা বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "পরাজিত শক্তি নিউইয়র্ক টাইমসে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রিপোর্ট করিয়েছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। তারা এই অবৈধ টাকা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করতে চায়।"

বুধবার (২ এপ্রিল) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, "শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনের নামে একটি নাটক সাজিয়ে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। এটি মূলত ক্ষমতায় টিকে থাকার একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এমনকি একজন সাবেক আইজিপির বইয়েও এটি উঠে এসেছে।"

তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো উত্থান ঘটেনি। বরং বর্তমানে দেশে ফ্যাসিবাদের কোনো ছোবল নেই, মানুষ নির্বিঘ্নে ধর্মপালন করতে পারছে, কথা বলতে পারছে। এবার মানুষ নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন করেছে, যা অতীতে সম্ভব হয়নি।"

আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, "আওয়ামী লীগ বসে নেই, তারা কালো টাকা ব্যবহার করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তারা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। বিদেশে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।"

তিনি আরও বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে মুগ্ধ ফাইয়াজদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এ নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই। প্রশাসনের চারপাশে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে, যার ফলে দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ভূলুণ্ঠিত হয়েছে।"

রিজভী আহমেদ দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, "নির্বাচনী সরকারই হচ্ছে বৈধ সরকার। নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হবে।"

তিনি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, সরকারের দৃঢ় অবস্থান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকর তৎপরতার ফলে দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায়নি।

বুধবার (২ এপ্রিল) দুপুরে এক ঈদ পুনর্মিলনী ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে থানার পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানেই সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ও অপপ্রচারের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, "কে কী পোস্ট করল, তা নিয়ে মন্তব্য করা আমার দায়িত্ব নয়। তবে কেউ যদি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার মতো কিছু করে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দায়ের করা হত্যা মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের জড়ানোর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এটা সত্য যে, কিছু ক্ষেত্রে নিরীহ মানুষ মামলার আসামি হয়েছেন। এমনকি যাদের নাম এজাহারে নেই, তারাও মামলা মোকাবিলা করছেন। আবার কিছু ব্যক্তির নাম এজাহারে থাকলেও তদন্তে দেখা গেছে তারা ঘটনার সময় দেশে ছিলেন না।"

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, "এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে তদন্ত কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। শুধু থানার পর্যায়ে নয়, নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আলাদা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি সাজা না পান, আবার প্রকৃত অপরাধীরাও যেন আইনের আওতার বাইরে না থাকে।"

পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম আরও সুসংগঠিত ও আধুনিক করতে থানাগুলোকে নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরের ওপর গুরুত্ব দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, "জনগণ যেন আরও দ্রুত ও কার্যকর সেবা পায়, সেজন্য থানাগুলোর নিজস্ব অবকাঠামো থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।"

এ সময় পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবাইকে সতর্কভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইরানের ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র নেটওয়ার্কের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগের দোসররা: রিজভী
দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশে জঙ্গিবাদের উত্থানের ঘটনা ঘটেনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আখাউড়ায় ট্রেনের ছাদে টিকটক বানাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, নিহত ২
বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ভারতের ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের
বিএনপি কখনোই নির্বাচনের পরে সংস্কারের কথা বলেনি: মির্জা ফখরুল
বিরামপুরে জমি নিয়ে বিরোধ, চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় আটক ৫
হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা ভ্যাল কিলমার আর নেই
ময়মনসিংহে সিনেমা হলে যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দর্শকদের ভাঙচুর
সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের মন্তব্যে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের তীব্র প্রতিক্রিয়া
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে এক ইমামের ১৭০ স্বজনের মৃত্যু
ঈদের আনন্দে যমুনার দুর্গম চরে গ্রাম-বাংলার ঘুড়ি উৎসব, আনন্দে মেতে উঠে বিনোদনপ্রেমীরা!
ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে রাজকীয় বিদায়, দেওয়া হলো ৯ লাখ টাকার সংবর্ধনা
লন্ডনে একসঙ্গে দেখা গেলো সাবেক চার আওয়ামী মন্ত্রীকে
ঢাকায় ফিরছে ঈদযাত্রীরা, অনেকে ছুটছেন শহরের বাইরে
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৭
বিটিভিতে আজ প্রচারিত হবে ঈদের বিশেষ ‘ইত্যাদি’
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাকা, নেই যানজটের চিরচেনা দৃশ্য
মাদারীপুরে তিন মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে নিহত ৪, আহত ২
থানায় জিডি করলেন ভোক্তা অধিকারের জব্বার মন্ডল