শরীরে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি?
অন্যান্য ভিটামিনের মতোই ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদান। শরীরে হাড়, দাঁত ও মাংসপেশির স্বাস্থ্য রক্ষায় ভিটামিন ডি এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ন। সাধারণত খাবার ও সকালের রোদ থেকে ভিটামিন ডি মেলে।
ভিটামিন ডি আসলে একটি স্টেরয়েড হরমোন যা শরীরে প্রোটিন তৈরিতে নিয়ন্ত্রণকারীর ভূমিকায় থাকে এবং এর ঘাটতি হলে শিশু থেকে বয়স্ক সবারই নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কার শরীরে কতটুকু ভিটামিন ডি প্রয়োজন সেটা নির্ভর করে বয়স অনুযায়ী। পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি এর চাহিদা থাকে। অন্যদিকে ৭০ এর বেশি বয়স যাদের, তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১২০০ মাইক্রোগ্রাম। বয়স অনুপাতে প্রতিদিন ২৫-১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন ডি এর প্রয়োজন।
ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের রিকেট রোগ, বড়দের অস্টিওমিলেশিয়া এবং বয়স্কদের হাড় ক্ষয় রোগ হতে পারে। আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর আভাব আছে কি? বুঝবেন কিভাবে?
শরীরে যদিই এই লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়-
* ভিটামিনের অভাবে শিশুর হাড় নরম থেকে যেতে পারে। এমনকি শিশুর পায়ের হাড় ধনুকের মতো বেঁকে যেতে পারে। বয়স্কদের গাঁটে ব্যথা, বাতের সমস্যা, থাইরয়েডে সমস্যা, মেরুদণ্ডে ব্যথা ও অসময়ে দাঁত পড়ে যেতে পারে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে।
* ভিটামিন ডি এর ঘাটতির হলে ঘনঘন অসুস্থ হওয়া এবং বিভিন্ন রোগ সারতে দেরি হতে পারে। ঘা শুকাতেও অনেকটাই সময় লেগে যায়। শরীরে অকারণে ক্লান্তি ও ম্যাজম্যাজে ভাব, ঝিমুনি এবং শুয়ে বসে থাকার ইচ্ছে হতে পারে।
* অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ হতে পারে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি। খাবারে ভিটামিন ডি কম হলে চুল ঝরে যেতে পারে। হঠাৎ ওজন কমতে থাকা শরীরের জন্য ভালো লক্ষণ নয়। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়ার পরও ওজন কমে যাওয়া ভিটামিন ডি এর আভাবের হতে পারে।
পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পাওয়ার উপায়-
* সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর অন্যতম উৎস। সূর্যের আলো গায়ে লাগলে আমাদের শরীরে তা কোলেস্টেরলে পরিণত করে এবং পরে সেটা ভিটামিন ডি তে পরিণত হয়।
* গরমের দিনে সূর্যের আলোতে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। কিন্তু শীতের সময় বিশেষ করে যখন কুয়াশায় ঢাকা থাকে তখন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য শীতকালে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে বেশি সময় কাটাতে হবে।
* সূর্যের আলো ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হলেও বেশ কিছু খাবারের মাধ্যমেও শরীরে ভিটামিন ডি যায়। তৈলাক্ত মাছ, কড লিভার অয়েল, রেড মিট, খাদ্যশস্য, ডিমের কুসুম, পালং শাক, বাঁধাকপি, ঢেঁড়স ভিটামিন ডি এর ভালো উৎস।
এছাড়া চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
কেএফ/