সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে রাঙ্গুনিয়ার চাকমা রাজবাড়ী

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে ধুঁকে ধুঁকে নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে চাকমা রাজার সপ্তদশ শতাব্দীর চাকমা রাজবাড়ীটি। সৃষ্টি আর ধ্বংসের খেলায় কালের অতল গহব্বরে হারিয়ে যাচ্ছে ৩০০ বছরের পুরনো ইতিহাসের শেষ স্মৃতি চিহ্ন।

চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কপথে ৩৫ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক পথে ৪৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ইছামতী নদীর তীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে প্রত্ন নির্দশনযুক্ত রাজপ্রসাদের ধ্বংসাবশেষ। অযত্নে-অবহেলায় নিশ্চিহ্ন প্রায় রাজপ্রসাদটি। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নে পা রাখলেই ভেসে আসে ৩০০ বছরের পুরনো এই ঐতিহাসিক প্রত্ন নিদর্শনের গন্ধ। আজও প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলছে রাজবাড়ীটির ক্ষয়ে যাওয়া প্রতিটি ইট-পাথর।

রাজ পরিবারের নথি ঘেঁটে জানা যায়, সতেরো শতকের দিকে ভারতবর্ষ যখন মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনাধীন তখন মোগল বংশধর সেরমুর্ত খাঁ ১৭৩৭ সালে সর্বপ্রথম এখানে রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। মূলত ১৭৩৭ সাল থেকে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় চাকমা রাজত্বের গোড়াপত্তন শুরু হয়। দক্ষিণ চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার মাতামুহুরি নদীর অববাহিকায় আলীকদমে ছিল তার রাজধানী। তার রাজ্যসীমা ছিল উত্তরে ফেনী, দক্ষিণে শঙ্খ নদী, পূর্বে লুসাই পাহাড় এবং পশ্চিমে নিজামপুর রাস্তা। সেই সময় আরাকানিদের অত্যাচারে তিনি মোগল নবাবের সঙ্গে মিত্রতা স্থাপন করেন। তখন চট্টগ্রামের নবাব ছিলেন জুলকদর খাঁ। তিনি সেরমুস্ত খাঁকে রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে বসতি স্থাপনের অনুমতি দেন। ১৭৫৭ সালে সেরমুস্ত খাঁ মৃত্যুর পর রাজা হন শুকদেব রায়। তিনি ছিলেন সেরমুস্ত খাঁর পোষ্যপুত্র। রাজা শুকদেব রায় আলীকদম ছেড়ে চাকমা অধ্যুষিত রাঙ্গুনিয়ার পদুয়ায় শিলক নদীর তীরে প্রাসাদ তৈরি করেন। নাম দেন সুখবিলাস। সেখানেই প্রতিষ্ঠা করেন রাজধানী। তার রানীর নাম ছিল ছেলেমা। রাজা শুকদেব রায়ের সন্তান ছিল না। তিনি তার রানীর নামানুসারে রাজপ্রাসাদের পশ্চিম দিকে একটি পুকুরের নামকরণ করেন ছেলেমা পুকুর।

পরে রাজ্য পরিচালনা ও বসাবাসের জন্য শুকদেব রায় দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের রাজাভূবণ গ্রামে নির্মিত করেন দ্বিতল রাজপ্রাসাদ। এটি সময়ের সেরা কারুকাজ ও শৈল্পিকতায় নির্মাণ করা হয়। এই রাজকুঠিরের নির্মাণ শৈলীর প্রতিটি পরতে পরতে রাখতেন ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য। প্রসাদটির নিচ তলায় ৬টি ও দ্বিতীয় তলায় ৪টি কক্ষ। ভবনটি তৈরি হয় দেয়াঙ পাহাড়ের মাটির চার কোণাকৃতি ইট, চুন, সুরকি ও লোহাবিহীন।

প্রাসাদের প্রবেশ পথে স্থাপন করা হয় রাজদরবার, সৈন্যশালা ও বন্দিশালা। পাশেই আছে একটি সান বাধাঁনো পুকুর। তার পশ্চিম পাশেই আছে শাক্ষ্যমনি বৌদ্ধ-বিহার। তৎসংলগ্ন কালীন্দিরানী ও তার স্বামী রাজা ধরণ বক্স খাঁ এর ২টি চিতা মন্দির। এখানেই অবস্থিত বাংলাদেশের প্রথম থেরবাদী বৌদ্ধদের প্রথম ভিক্ষু সীমাগার।

পরবর্তীতে দক্ষিণ রাজনগরে প্রজা ও সর্বসাধারণের পানির কষ্ট দূরীকরণে রাজপ্রাসাদের পূর্ব পার্শ্বে খনন করেন কালীন্দিনী রানীর নামে সাগর দীঘি। স্থাপিত করেন রাজারহাট এবং কালীন্দিনী রানীর নামানুসারে রানীরহাট ও রাজাভূবণ মোহন রায়ের নামানুসারে রাজাভূবণ উচ্চ বিদ্যালয়।

১৭৭৬ সালে রাজা শুকদেব রায়ের মৃত্যুর পর তাদের বংশধর শের দৌলত খাঁ রাজ্যভার নিয়ে যখন রাঙামাটির রাজবাড়িতে রাজত্ব স্থানান্তর করেন সেই থেকে দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের রাজাভূবণ গ্রামে অবস্থিত রাজপ্রাসাদ, সৈন্যশালা ও বন্দিশালা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।

৫২ একর জায়গাজুড়ে ৩০০ বছরের প্রাচীন এই ঐতিহাসিক রাজপ্রসাদটি বর্তমানে অযত্নে-অবহেলায় ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। তারপরও রাজপ্রাসাদের ধ্বংসাবশেষ আজও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের বহু উত্থান- পতনের ঘটনা ও কালের সাক্ষী হয়ে। রাজপ্রাসাদটি এখন লতাপাতা দিয়ে আচ্ছাদিত। ইট-সুরকি দিয়ে তৈরি করা এই লোহাবিহীন রাজপ্রাসাদটির দেয়ালগুলোর প্রস্থ ছিল দুই হাতেরও বেশি। দেয়ালগুলো এখন নানা রকম আগাছা, তরুলতা ও ঝোপঝাড়ে ঢাকা পড়ে আছে। কালক্রমে খসে পড়েছে প্রাসাদের ছাদ। রোদের তাপে শুকিয়ে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে প্রাসাদটি একেবারে নড়বড়ে অবস্থা। নড়বড়ে অবকাঠামোর কারণে তেমন একটা পরিস্কার করাও সম্ভব হচ্ছে না। তার পরও যতটুকু সম্ভব ঝোপঝাড় পরিস্কার করে ধ্বংসাবশেষ রাজপ্রাসাদটি টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এদিকে কালে কালে রাজার বংশধররা রাজপ্রাসাদটি রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা চালালেও সংরক্ষণের অভাবে শেষ রক্ষা হয়নি। ২০১৩ সালে রাজ বংশধর প্রমতোষ দেওয়ান পরলোকগমন করলে তার ছেলে রুমেল দেওয়ান রাজপ্রাসাদটি আঁকড়ে এখনো পড়ে আছেন। এর মধ্যেও প্রায় হারিয়ে গেছে প্রাসাদটির রাজ দরবার, হাতি-ঘোড়ার পিলখানা, বিখ্যাত সাগরদীঘি, পুরাকীর্তি, বৌদ্ধ-বিহারসহ গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। তবে রাজবাড়ির সান বাঁধানো পুকুর, সাগরদীঘির আংশিক অস্তিত্ব এখনো রয়েছে। অথচ কোনো সরকারই এই রাজপ্রাসাদটি প্রত্ন নির্দশন হিসেবে সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

২০০৭ সালে বর্তমান রাজা দেবাশীষ রায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর রাঙ্গুনিয়ার মানুষ আশা করেছিল সংস্কারের মধ্যমে রাজপ্রাসাদটি গড়ে উঠবে একটি পর্যটন কেন্দ্রে। সরকারিভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে ৩০০ বছরের পুরনো রাজকুঠিরের। ২০০৮ সালের মাঝামাঝিতে তিনি (দেবাশীষ রায়) সরকারিভাবে রাজবাড়ি এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন। সংরক্ষণের কথাও বলেছিলেন। কিন্তু এখনো কোনো সংস্কার করা হয়নি।

সম্প্রতি রাঙ্গুনিয়ার সপ্তদশ শতাব্দীর বিলুপ্ত চাকমা রাষ্ট্রের এ রাজপ্রাসাদটি সংস্কার করে (আধিবাসী ভিলেজ ও রয়েল মিউজিয়াম) জাদুঘরে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নিয়ে সমীক্ষা করছে প্রত্নসম্পদ বিশেষজ্ঞের একটি টিম। খাগড়াছড়ির ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের অর্থায়নে রাঙ্গুনিয়া চাকমা রাজার রাজপ্রাসাদ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সমীক্ষা, মাপ-জোখ, অনুসন্ধান ও উৎখনন শুরু করেন।

গত ২৯ অক্টোবর রাজানগরের রাজপ্রাসাদের প্রাথমিক সমীক্ষা করে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্বতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর মোকাম্মেল হোসেন ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা, স্থপতি আশিষ চাকমা ও প্রত্নসম্পদ বিশেষজ্ঞ টিমসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি টিম।

এ বিষয়ে সমীক্ষা টিমের সদস্য চবির ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা জানান, এটা হলো ঐতিহাসিক সভ্যতার নগরী। এখানে ঐতিহাসিক যে স্থাপনাগুলো রয়েছে সেগুলোকে পরবর্তী প্রজন্মের নিকট পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সংস্কার, মেরামত ও সংরক্ষণের প্রয়োজন। আমরা ইতিহাসবিদ, স্থপতি ও প্রত্নতাত্ত্বিকবিদ মিলে বিষয়টি গবেষণা করে এটার ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক, স্থাপত্য শৈলীর গুরুত্ব, নৃ-তাত্বিক ও স্থানীয় ইতিহাসের গুরুত্বের সবগুলো দিক বিবেচনা করে আমরা মনে করছি এই রাজপ্রাসাদের সংরক্ষণের উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেজন্য আমরা একটা সমীক্ষা প্রকল্প হাতে নিয়েছি।

তিনি আরও জানান, খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউটের অর্থায়নে আমরা এই সমীক্ষা প্রকল্প পরিচালনা করছি। প্রকল্প সমাপনান্তে একটি প্রতিবেদন জমা দেব। ওই প্রতিবেদনের আলোকে তারা একটা বিস্তারিত সংস্কার পরিকল্পনার প্রজেক্ট প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জমা দেবেন। সেই সাথে প্রত্ন সম্পদের মালিক বর্তমান রাজা দেবাশীষ রায়ের সম্মতি ও পরামর্শনুযায়ী তার ব্যবস্থাপনায় এবং সরকারের সহযোগিতায় সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পরমর্শ দেব। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রাজাদের এখানকার ইতিহাসের যে ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পারে। শুধু তাই নয়, এখানে জাদুঘর স্থাপনের মধ্য দিয়ে যাতে একটি ঋতু রাজ্যের যাবতীয় কর্মকাণ্ড গুলো নিদর্শনের আলোকে ফুটিয়ে উঠে। সেই ব্যবস্থা যাতে দ্রুত গ্রহণ করা যায় সেই ব্যাপারে আমরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করব।

এদিকে স্থানীয়দের দাবি, বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিলুপ্ত প্রায় ৩০০ বছরের পুরনো ইতিহাস ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে দক্ষিণ রাজানগরের চাকমা রাজপ্রসাদটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি। প্রাচীন এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে রাজপ্রাসাদটি সংস্কার করলে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে।

এসআইএইচ


Header Ad
Header Ad

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানিয়েছেন, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সরাতে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এজাজ জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অবৈধ অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। তালিকাভুক্ত স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে শিগগিরই যৌথ অভিযান চালানো হবে।

এছাড়া, ডিএনসিসি প্রশাসক আবাসিক এলাকাগুলোতে অবৈধ অটোরিকশা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বাড়ির মালিক সমিতিগুলোকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে তিনি জলাধার রক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নাগরিকদের জমি কেনার আগে মৌজা ম্যাপ যাচাই করার অনুরোধ জানান।

পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সাতটি প্যাকেজে রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ শেষ হলে এলাকাটির জলাবদ্ধতা কমবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। পাশাপাশি বর্ষায় বড় গাছ লাগিয়ে এলাকা সবুজায়নের উদ্যোগ নেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্টের কাছে চাঁদা দাবী করার অভিযোগ উঠেছে দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে। চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকিও দেয়া হয়েছে।সম্প্রতি তাদের কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়েছে।

অভিযুক্তরা হলেন রেলপথ মন্ত্রনালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসান এবং রেজাউল করীম। 

ভাইরাল হওয়া ওই কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চট্টগ্রাম বিভাগের কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর কাছে ১০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় ওই ২ সমন্বয়ক। তবে এটি করবে না যদি বর্তমানে ঢাকায় কর্মরত রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনীর কমান্ড্যান্ট মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম তাদের দাবীকৃত টাকা তাদের বুঝিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলামের সাথে এর আগেও বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছিল ওই দুই সমন্বয়কের।

রেকর্ডে শোনা যায়- কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী হাসানকে বলছেন, ‘‘আমি তো ওইদিন আপনার সামনেই বললাম কোর্টের মধ্যে থেকে যে টাকাটা জমা হয় ওইটা তোলার জন্য। ওইটা না হলে দুই লাখ টাকা দিতে পারবো না, আমার কোন ইনকাম সোর্সও নাই। কমান্ড্যান্ট মো. শহীদ উল্লাহর যেহেতু বলছে তার কাছ থেকে দশ লাখ টাকা নিয়া নেন। সে মাত্র গেছে।’’

ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী বলছে, না। ‘‘সমস্যা নেই আপনার সাথে যে কথা হয়েছে নির্জন (রেজাউল ইসলামের ডাক নাম) ভাইয়ের, ওইটা দিলেই হবে। তাহলে ওইটা হচ্ছে কবে? কালকে?’’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কোর্ট থেকে টাকাটা উঠানোর সাথে সাথে আমি দিয়ে দিবো। যদিও আমার কষ্ট হইতেছে। কারণ এর বাইরে তো আমার কাছে টাকা নেই।’’

এরপর মেহেদী ফোন ধরিয়ে দেয় আরেক ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউলকে, ফোন দিয়ে বলে শফিক ভাই কথা বলবে। এরপর মেহেদী তার মুঠোফোনটি রেজাউলকে দিয়ে দেয়।

এ সময় শফিকুল ইসলাম রেজাউল করীমকে বলেন, ‘‘ভাই কালকে তো আপনার রেস্ট হাউজে গেলাম। গিয়ে বললাম না, আমি কি কালকে আসবো? কোর্টের বেঞ্চ সহকারী বললো আমি লিখে একাউন্টে পাঠাইছি। আমি জানাবো, জানালে আপনি আসবেন, আজকে এখনো জানায়নি কোর্টে যাওয়ার জন্য। জানাইলে আমি আসবো।’’

ছাত্র সমন্বয়ক রেজাউল বলছে- ‘‘এখন ভাই আপনি দেখেন , ওইটা আমার কাছে কিছু বইলেন না। কোন বিষয় কি করবেন। সেইটা আপনার বিষয়। আপনি যেমন বলেছেন সেইটাই করা হয়েছে। এখন কিভাবে কি করবেন সেটা আপনার বিষয় ?’’

এদিকে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম বলেন- হ্যাঁ, ওই কল রেকর্ডটি আমাদের। আমাকে কমলাপুর রেস্ট হাউজে ডেকে নিয়ে ৫ লক্ষ টাকা চেয়েছিলো ছাত্র প্রতিনিধি রেজাউল।

তিনি আরো বলেন, রেজাউল আমাকে বলেছিলো উপদেষ্টাকে আমরা যা বলি, উপদেষ্টা তাই শোনে। চট্রগ্রামে উপদেষ্টা যখন গিয়েছিলো তখন কমান্ড্যান্ট শহীদুল্লাহ শহীদ ঢাকায় আসার জন্য আমাদের কাছে ১০ লক্ষ টাকা অফার করেছে। আপনি ৫ লক্ষ টাকা দিলে আপনাকে ঢাকাতে রাখবো। না হয় শহীদুল্লাহকে নিয়ে আসবো।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি এই ঘটনার স্বাক্ষী প্রমান রাখার জন্য প্রথমে রাজি হয়ে যাই, এক লক্ষ টাকা বলি এবং পরে দুই লক্ষ টাকা বলি। যোগাযোগ দীর্ঘায়িত করি তথ্য প্রমানের জন্য। আর এই রেকর্ডটি আমিই করি এবং অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেই। আজ (মঙ্গলবার) ডিজি মহোদয়ের সাথে সাক্ষাত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।’

এই ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত ছাত্র প্রতিনিধি মেহেদী ও রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

চাঁদা দাবির বিষয়ে ছাত্র প্রতিনিধি আশিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা সকলেই একটি টিমে কাজ করি। আমি চাঁদা চেয়েছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি মেহেদী ও রেজাউলের সাথে জড়িত নই।

তবে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান- ‘আশিকুর রহমান, মেহেদী ও রেজাউলের যোগসাজসে এই চাঁদা দাবি করা হয়েছে।’

সংবাদ সূত্র: রেল নিউজ ২৪

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকি দিলেন দুই সমন্বয়ক
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে