ফুলবাড়ীতে কেটে-বেছে বিক্রি হচ্ছে হাঁসের মাংস
হাঁসের মাংস মানেই জিভে জল। আর শীত এলেই হাঁসের মাংস ও রুটি খাওয়ার ধুম পড়ে বাঙালিদের মধ্যে। অথচ আয়েশি ও লোভনীয় এ মাংস খাওয়ার উপযোগী করতে পরিশ্রমের শেষ নেই। তাই অনেকের স্বাদ থাকলেও পরিশ্রমের ভয়ে এড়িয়ে যান হাঁসের মাংস। আর পরিশ্রমহীন সেই স্বাদ মানুষকে দিতেই হাঁস ব্যবসায়ী আবু তাহেরের এ আয়োজন। হাঁস কেটে পরিষ্কার করে কেজি দরে বিক্রি করছেন আবু তাহের।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার পৌরবাজারের হাঁস-মুরগি পট্টিতে তার দোকান। সেখানে দেখা যায়, ট্রে-তে সাজিয়ে রেখেছেন, পুড়িয়ে বাছাই করা হাঁস। পাশে রাখা আছে, কাটার সরঞ্জাম। ক্রেতারা এলে, কেটে কেজি দরে বিক্রি করছেন সেসব হাঁস। পরিষ্কার করে কেটে রাখা প্রতি কেজি মাংসের মূল্য সাড়ে ৬০০ টাকা।
আবু তাহের পৌরএলাকার চকচকা গ্রামের বাসিন্দা। পাইকারি হাঁস ব্যবসায়ী। গ্রাম-গঞ্জ থেকে হাঁস সংগ্রহ করে ফুলবাড়ীসহ আশপাশের উপজেলাগুলোর বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করেন।
আবু তাহেরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে (আঙিনায়) জ্বলছে চুলা। সেখানে কাজ করছেন কিছু নারী। কেউ চুলায় পানি গরম করছেন, কেউ হাঁসের পশম তুলছেন। আবার কেউ আগুন জ্বালিয়ে পশম পোড়াচ্ছেন। নাড়ি-ভুড়িসহ অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেটে ফেলছেন কেউ কেউ।
শুক্রবার দুপুরে বাজারে হাঁস কিনতে এসেছিলেন পলাশ দাস ও নজরুল ইসলাম। তারা বলেন, ‘বহুদিন বাড়িতে হাঁস খাই না। তাই প্রায় সময় হাঁসের স্বাদ মিটাতে আশপাশের খাবার হোটেলগুলো ছুটে যেতে হতো। কিন্তু বাজারে এসে দেখি, কেজি দরে কাটাই-বাছাই করা প্রস্তুত হাঁসের মাংস বিক্রি হচ্ছে। যার প্রতি কেজি সাড়ে ৬০০ টাকা। পরিশ্রম অনুযায়ী বেশ কমদামেই বিক্রি হচ্ছে হাঁসের মাংস। কেটে-বেছে হাঁসের মাংস নিয়ে যাচ্ছি বাড়ি। বাড়ির লোকও খুশি হবে, আর আমরাও খুশি।’
হাঁস ব্যবসায়ী আবু তাহের বলেন, ‘মুরগি কাটা সহজ হলেও হাঁস সবাই কাটতে পারেন না। বিশেষ করে শহুরে বাড়ির বউরা হাঁস দেখলেই তাদের শরীরে জ্বর আসে। এজন্য হাঁস খাওয়ার সাধ থাকলেও পরিশ্রমের ভয়ে এড়িয়ে যান অনেকেই। এর আগে জীবিত হাঁস বিক্রি করলেও এখন বিক্রি করছি কাটাই-বাছাই করা হাঁসের মাংস। ক্রেতারা এ মাংস কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় ১৫-২০ টি হাঁস তৈরি করে আনা হয়। বাজারে প্রায় অধিকাংশই বিক্রি হয়। যা বেঁচে যায় তা পরবর্তীতে খাবারের হোটেলে দেওয়া হয়। প্রথমে নিজের সামান্য ক্ষতি করে হলেও এই ব্যবসার প্রসার ঘটতে কম দামেরই ঝামেলাবিহীন কাটাই-বাছাই করা এ মাংস বিক্রি করছি।’
এসএন